সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

হারিয়ে যাওয়া মুঠ পূজো

মুঠপুজো - গ্রামবাংলার এই যে আদিম লক্ষ্মী-আরাধনা সেই মাস শুরু হয় এই কার্তিক মাসের সংক্রান্তির দিন। আসলে গ্রাম বাংলার এই নানা উৎসব, অনুষ্ঠান, আচার সব তো ধীরে ধীরে বিলুপ্তির পথেই। হারিয়ে যাচ্ছে সব কিছুই। তবু তার মাঝে টিকে আছে এমন কিছু অনুষ্ঠান যা আজও আমাদের হৃদয়ে দোলা দেয়। যা মনে করিয়ে দেয় যে গ্রাম বাংলার এই চিত্র সত্যিই অসাধারণ। 


হেমন্তের ভোরে পাকা ধানের ডগায় লেগে আছে শিশিরের বিন্দু। উদাসী শালিখ পাখির উড়ে যাওয়া, আলতো ঠাণ্ডা হাওয়ায় উদ্বেলিত হয়ে যাওয়া খেজুর পাতার ডগায় কাঁপন দেখে বোঝা যায় সে আসছে। হেমন্তের ভোরের ছোঁয়ায় কেমন শীতের আভাস পাওয়া যাচ্ছে চারিদিক থেকেই ধীরে ধীরে। শহুরে জীবনে আর এসবের দেখা মেলে না যে কিছুতেই আজকাল।

‘কার্তিক সংক্রান্তির দিনে কল্যাণ করিয়া আড়াই মুঠা কাটিয়া লক্ষীপূজা হইয়া গিয়াছে...’ - গণদেবতা উপন্যাসে প্রখ্যাত সাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দোপাধ্যায় এক ছত্রে লিখে রেখে গেছেন এই উদ্ধৃতিটি। স্বাভাবিক ভাবেই, আজকের দিনে দাঁড়িয়ে কোনো কংক্রিটের শহরে বসে তরুণ প্রজন্ম যখন এই লাইন পড়বে, তখন তাদের মনে এই লাইনের অর্থ বোঝার কৌতূহল জাগতেই পারে। লেখক কার্তিক সংক্রান্তির দিনে কীসের কল্যাণে, কী কাটিয়া লক্ষীপূজোর কথা তুললেন? সেটা ভেবেই সারা হবেন হয়তো নব্য প্রজন্মের যুবক যুবতীরা। 

তারাশঙ্কর বন্দোপাধ্যায় গ্রাম-বাংলার এক প্রচলিত উজ্জ্বল ঐতিহ্যবাহী রীতির সংলাপ এখানে তুলে ধরেছেন। লেখক এখানে কার্তিক সংক্রান্তির দিনে এক লক্ষীপূজোর কথা বলেছেন এবং সংক্ষেপে সেই পুজোর বর্ণনাও বর্ণিত করেছেন তিনি। আসলে কার্তিক সংক্রান্তিতে অর্থাৎ অঘ্রাণ মাসের প্রথম দিনে গাঁয়ের মানুষেরা প্রত্যেকে নিজ নিজ ক্ষেত থেকে আড়াই মুঠা করে ধান কেটে, সেই ধানের সমষ্টি বাড়ির পবিত্রস্থানে রেখে লক্ষীরূপে পুজো করে। এ এক অদ্ভুত সংস্কৃতি, অদ্ভুত বিশ্বাস গ্রামের মানুষের।

অঘ্রাণ মাস মানেই তো নবান্নের মাস। শ্রাবণের শুরুতে প্রবল বৃষ্টিপাতের দ্বারা, এ ধরণীর মাটি যখন গর্ভবতী হয়। অন্তত কৃষকেরা তখন সঠিক সময় বুঝতে পেরে, মাটিতে ছড়িয়ে দেয় ধানের বীজ। কয়েকদিন পর, দিগন্তের ক্ষেত বিদীর্ণ করে সবুজে-শ্যামলে-নীলিমায় সেই ক্ষেত ভরে ওঠে কানায় কানায়। কোজাগরীর চাঁদের আলো সেই ধরণীর ক্ষেতে এসে লাগলেই, সোনালি রং ধরে ধানের শিসে। যে ধানের শিসে ছোঁয়া লাগে হেমন্তের বাতাস। মাথা দুলিয়ে দুলিয়ে মাঠের ধারে হেসে ওঠে সবুজ পাকা ধানের হলুদ ছড়া। আর সেটা দেখেই হেসে ওঠে কৃষকেরা, তারা বুঝে যায় এবার সুদিন আসছে, মুখে হাসি ফোটে তাদের, গোলাভরা ধান মানেই তো সমস্ত ঋণের অবসান। শুরু হয়ে যায় নবান্নের আয়োজন। কিন্তু তারও আগে অর্থাৎ কার্তিক সংক্রান্তিকে কেন্দ্র করে, অঘ্রাণের প্রথম দিনে তারা পালন করে এই মুঠ পুজো। অর্থাৎ তাদের ভাষায়, সংক্রান্তি তিথি অনুসারে এই মুঠো পুজো হল এ বাংলার প্রথম লক্ষীপুজো।

ক্ষেতের সোনালি ধান খামারের গোলায় তোলার আগে যাতে কোন বিপত্তি সৃষ্টি না হয়, তার জন্য প্রথমেই মা লক্ষীর পুজো করা হয়, শ্রদ্ধাভরে পালন করে কৃষকরা সেই পূজো। অঘ্রাণের প্রথম সকাল, ভোরের কুয়াশায় ভিজে যায় মাঠ-ঘাট। আজও গাঁয়ের ক্ষেত-খামারে অপলক অপেক্ষা নিয়ে বসে থাকে হয়তো সেই আমার প্রিয় কবি জীবনানন্দের সেই প্রিয় গাংচিল মাঠের ধারে। তার গায়ে এসে লাগে ঠান্ডা হাওয়ার ঝাপটা। 

এদিন বেলা বাড়লেই কৃষকের ঘরে ঘরে শুরু হয়ে যায় মুঠপুজোর আয়োজন। সকালবেলা স্নান সেরে, পবিত্র সাদা পোশাক পরিহিত হয়ে, হাতের কাস্তেটি বাগিয়ে নিয়ে কৃষকেরা চলে যায় যে যার নিজের ক্ষেতে। তারপর ক্ষেতের এক কোণে আড়াই মুঠা ধান কেটে, ভক্তিভরে প্রণাম করে, সেই ধানের সমষ্টিকে মাথায় তুলে, বাড়ি ফেরার গন্তব্যে পা বাড়ায় তারা নিঃশব্দে।

 নিজের বাড়ির দরজায় এসে দাঁড়ালেই কৃষকের স্ত্রী অর্থাৎ বাড়ির গৃহবধূরা একটা কাঠের পিড়েতে তাদের দাঁড় করায়, তারপর মাটির মঙ্গলঘটের জল দিয়ে কৃষকের পা ধুইয়ে, নিজের কাপড়ের আঁচল দিয়ে মুছিয়ে দেয় কৃষকের পা। তারপর সেই গৃহবধূ ভক্তিভরে প্রণাম সেরে, মা লক্ষীকে সাদরে আহ্বান জানায় নিজের ঘরে। এবং অবশেষে সেই ধানের সমষ্টিকে বাড়ির পবিত্র স্থানে রেখে দিয়ে পুজো করে।আজ তো গ্রামের ঘরে ঘরে সেই মুঠ পূজোর দিন। 

কালের নিয়মে হয়তো ক্ষয়ে গেছে এই প্রথার রেওয়াজ, হয়তো একদিন সম্পূর্ণই হারিয়ে যাবে এই মুঠ পূজো গ্রাম বাংলা থেকে। শহুরে সভ্যতার আগামী প্রজন্ম হয়তো এই রীতি জানবেই না কোনোদিন৷ আর সেদিনও হয়তো সেই প্রজন্ম, তারাশঙ্করের ‘গণদেবতা’র ওই লাইনটুকু পড়ে জানতে চাইবে তার অন্তর্নিহিত অর্থ। হারালেও, এভাবে কিছু কিছু থেকে যায়। থেকে তো যায়ই আমাদের জীবনে একটু ওই হৃদয়ের গভীরে মুঠোর মধ্য। 

ঘরের কোণে দাঁড়িয়ে থাকা পাকা ধানের শীষের সোঁদা গন্ধ, মাটির মিষ্টি ভেজা গন্ধের সুবাস, মাঠের ধারে গাঙচিলের অপেক্ষা, শালিখ পাখির আনমনে উড়ে যাওয়া, উত্তুরে বাতাসের খোঁজে সাদা বকের মেঘের কোলে ভেসে বেড়ানো, সব যে ওই মুঠো ফোনের দৌলতে টিকে থাকবে আমাদের কাছে বহুদিন ধরেই। মুঠ পূজো হারিয়ে গেলেও মুঠো ফোন তো আর হারিয়ে যাবে না আমাদের জীবন থেকে।

"আবার আসিব ফিরে ধান সিঁড়িটির তীরে এই বাংলায় 
মানুষ নয় হয়তোবা শঙ্খচিল শালিকের বেশে , হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিকের নবান্নের দেশে ,, 

....জীবনানন্দ দাশ

হারিয়ে যাওয়া মুঠ পূজো - অভিজিৎ বসু।
ষোলো নভেম্বর, দু হাজার চব্বিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক ও গুগল।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ইটিভির পিনাকপাণি ঘোষ

কিছু মানুষ কত কাছে থেকেও পাশাপাশি এক জায়গায় বাস করেও একসাথে একসময় কাজ করেও যে কত দূরে রয়ে যান নিজের হাসিমুখ নিয়ে আর সেই চেনা ছন্দ নিয়ে সত্যিই বেশ ভালো মজার ব্যাপার কিন্তু এটা জীবনের মেঠো পথে। সেই ইটিভির বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে ঘুরে ঘুরে স্ট্রীট ফুডের ছবি তোলা আর নানা খবর করে খাওয়া দাওয়ার এপিসোড করে একসময়ে বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে যাওয়া ইটিভি নিউজে। আর আমাদের জেলায় বসে সেইসব হাঁ করে দেখা আর কেমন মনের ভেতর অস্থিরতা তৈরি হওয়া। একেই বলে কলকাতার রাজপথের সাংবাদিক বলে কথা।  সেই যে বার রাষ্ট্রপতি এলেন জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে সেই অনুষ্ঠানের বিশেষ কার্ড জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করা ইটিভির চাকরি করার সুবাদে। কোনো রকমে সেই কার্ড জোগাড় করে এনে দেওয়া তাঁকে আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য। আর সেই একদিন দুপুর বেলায় খুব সম্ভবত করোনা শেষ পর্বে বালিঘাট স্টেশন থেকে অফিস যাওয়ার সময় এসি পঞ্চাশ এর বাস এর ভিতরে দেখা হওয়ায় কত গল্প করা দুজন মিলে পুরনো দিনের। আবার উত্তরপাড়ার সেই বিখ্যাত চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে হাসি মুখে দেখা হয়ে যাওয়া রাতের বেলায় কাঁঠালবা...

আমাদের সবার মৃনাল দা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক বাবা আর ছেলের লড়াই এর গভীর গোপন কাহিনী। এই সাংবাদিকতার পেশায় এসে কত লড়াই, কত অসম যুদ্ধ, করে যে কেউ সংসার টিকিয়ে রাখতে পারে হাসি মুখে কাউকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে। এমন করে কেউ টিকে থাকার চেষ্টা করেন সেটা বোধহয় আমার জানা হয়ে উঠত না কিছুতেই। যদি না এই পেশায় আমি গা ভাসাতাম এমন করে। জীবনের এই নানা টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ ভেসে ওঠে এই রাতের অন্ধকারে আচমকা আমার মনের মাঝে। আর আমি চমকে উঠি কেমন করে তাদের সেই কোলাজ দেখে।  এমন এক চরিত্র, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়ে কেমন আলগোছে, হাসিমুখে, নির্মোহ ভাবে, শুধু নিজের কাঁচা পাকা দাড়িতে হাত বুলিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিলো সে শুধুই আকাশ পানে তাকিয়ে। যে নীল আকাশের গা ঘেঁষে উড়ে যাওয়া সাদা বকের ডানায় লেগে থাকে মেঘের হালকা টুকরো। একদম যেনো সিনেমার পর্দার হিরোর মতোই। দেখে বোঝার উপায় নেই একদম। পেটে খাবার না থাকলেও মুখের হাসিটা অমলিন হয়েই বেঁচে আছে আজও এতোদিন পরেও। আর সেই বিখ্যাত সাদা পাকা নাসিরউদ্দিন স্টাইলের দাড়ি, কালো চুল, আর সব সময় ধোপদুরস্ত ফিটফাট একজন মানুষ। রাত নটা বাজলেই যাকে শ্রীরামপুরে...

শপিং মলের উদ্বোধনে সিঙ্গুর আন্দোলনের দাপুটে মন্ত্রী

নালিকুল স্টেশন বাজারে একটি শপিং মলের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বেচারাম মান্না হাজির। একসময় যাঁর অন্দোলনের ঠেলায় পড়ে দৌড়ে একপ্রকার পালিয়ে চলে যেতে হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে টাটা কোম্পানিকে। যে আন্দোলনের দগদগে ঘা আর সেই স্মৃতি ধীরে ধীরে আজ প্রায় মিলিয়ে যেতে বসেছে আমাদের কাছ থেকে। আজ সেই চাষার ঘরের মানুষ না হলেও সেই কৃষক আর শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকার নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেন সেই মানুষটাকেই কেমন যেন আজ শপিং মলের উদ্বোধনে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার।  একদম নালিকুল স্টেশনের কাছে ঝাঁ চকচকে শপিং মল। দোকানে সাজানো জিনিস পত্র। আর সেখানেই আমাদের মাননীয় মন্ত্রী বেচারাম মান্না। একদম কেমন একটু আমার অচেনা লাগলো যেন। সেই মুড়ি খেয়ে আলুর তরকারি বা শশা খেয়ে আন্দোলন শুরু করা জমি আন্দোলন এর অন্যতম পথিকৃৎ নেতা আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তাহলে টাটা কোম্পানির বিরুদ্ধে যে জমি দখল নিয়ে আন্দোলন সেই আন্দোলন এর মধ্যে ছিল জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যদিও সেখানেও সেই সময়ের শাসকদলের কর্মসংস্থানের যুক্তি।তবে এই নতুন শপিং মলের উদ্বোধনে তো আর ...

ভীড়ের মাঝে একা

জীবন জুড়ে শুধুই ভীড় আর ভীড়। নানা ধরনের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় মানুষের গন্ধে, বর্ণে , স্বাদের ভীড়ে আমি একদম একা হয়ে যেতে চাই। যে ভীড় উপচে পড়া রাস্তায় শুধুই হেমন্তের ভোরে শিশিরের ফিসফিস শব্দ, পাখির কিচির মিচির আওয়াজ,ধানসিড়ি ওই নদীটির তীর ধরে ঘুঘুর আকুল মন কেমন করা ডাক, উদাসী শালিকের ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া ওই হেমন্তের হলুদ ধানের মাঠ এর পাশ দিয়ে, হলুদ বসন্ত বৌরীর সেই আমলকীর গাছের পাতায়,আড়ালে আবডালে বসে কেমন যেন আমায় দেখে লজ্জা পাওয়া, আর তারপর চোখ নামিয়ে হঠাৎ করেই তার উড়ে চলে যাওয়া। আর মেঘের কোল ঘেঁষে সেই সাদা বকের, বুনো হাঁসের, আর সেই পানকৌড়ির জলে ভেজা ডানা মেলে উড়ে যাওয়া আকাশ জুড়ে। সত্যিই ওরাও যে ভিড়ের মাঝেই বড়ো একা। একা একাই ওদের যে এই বেঁচে থাকা। কেমন নিপাট হৈ চৈ হুল্লোড়হীন একটা জীবন নিয়ে বেশ মজা করে, আনন্দ করে। আর সেই ভোরের আলোয় আলোকিত হয়ে রাস্তার একপাশে গুটি শুটি মেরে শুয়ে থাকা ওই সাদা কালো ভুলো নামের কুকুরের। যে অন্তত এই সব মানুষদের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় একটু যেনো আলাদা , একটু যেনো অন্য রকমের। একটু একা একাই যেনো ওর এই আলগোছে জীবন কাটিয়...

গৌড় প্রাঙ্গণে আনন্দবাজার

গৌরপ্রাঙ্গনে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যের আনন্দের মেলা আনন্দবাজার। মহালয়ার ভোরবেলায় ঢাকের বাদ্যি আর সানাইয়ের মন কেমন করা সুরে মেতে উঠলো শান্তিনিকেতনের গৌড়প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও যে হবে আনন্দমেলা আনন্দবাজার। হ্যাঁ সত্যিই যেনো আনন্দের এই হাটে বেচাকেনার পসরা নিয়ে একদিনের জন্য বসে পড়া মন প্রাণ খুলে হৈ হুল্লোড় করে। এই মেলা শুরু হয় 1915 সালের 15 এপ্রিল নববর্ষের দিনে। কিন্তু আগে এই মেলাকে একসময় বলা হতো বৌঠাকুরাণীর হাট। সেই সময় আশ্রমের মহিলারা নিজেদের হাতের তৈরি জিনিস নিয়ে মেলায় বসতেন। মেলার আয়োজন করতেন তারা। আনন্দ করে বেচাকেনা হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় একবার গরমের ছুটির আগে এমন মেলা নাকি হয়েছিল। যার নাম ছিল আনন্দবাজার। পরে এই মেলার নামে হয়ে যায় আনন্দমেলা। সত্যিই আনন্দের এই মিলন মেলা।  প্রথমদিকে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই মেলা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে বিশ্বভারতীর সব বিভাগের পড়ুয়ারা এই মেলায় যোগদান করে। এই মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের বেচা কেনার লাভের টাকার কিছু অংশ জমা পরে বিশ্বভারতীর সেবা বিভাগে। সেখান থেকে এ...