সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আমাদের সবার প্রিয় লোহা


আজ আমাদের সেই ছটফটে সব সময় ফোন হাতে নিয়ে ঘাঁটা এক ক্রাইম সাংবাদিক শুভ্র চট্টোপাধ্যায় ওরফে লোহার কথা। হ্যাঁ, যার কোনো ছবি উদ্ধার করা গেলো না কোনোভাবেই। কারুর কাছ থেকেই কোনো ছবি পেলাম না আমি।আর যার নাম কেনো যে লোহা হলো তার সুস্পষ্ট কোনো গল্পও নেই আমাদের কাছে। তবু আজ সাদা জীবনের কালো কথায় সেই শুভ্র চট্টোপাধ্যায় এর গল্পকথা। সেই আমাদের সবার পরিচিত বিখ্যাত ক্রাইম রিপোর্টার লোহার গল্প। 

যার সাংবাদিকতার গুরু একজন বিখ্যাত মানুষের হাত ধরে সেই সল্টলেকে ভারতীয় বিদ্যভবন এর সাংবাদিকতার পড়াশোনা শেষ করে সেই সল্টলেকের একটি কাগজে ওর হাতেখড়ি। যে কাগজের দায়িত্বে ছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সাংবাদিক। সে যে কোনো পজিশনে খেলতে পারদর্শী সেই তীর্থঙ্কর বসু। আমার একসময়ের বন্ধু এখন আর যোগাযোগ নেই আমাদের দুজনের কোনো ভাবেই। আগে যদিও রাতে ঘণ্টার পর ঘন্টা কথা হতো আমাদের। বর্তমানে টোটো চালক হয়ে যাবার পর সেই যোগাযোগ একদম বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সেটাই স্বাভাবিক ঘটনা। 

যাকগে সেই সময় সাংবাদিক হতে শুভ্র তখনও সে লোহা হয়নি হাওড়ার সালকিয়া থেকে বাঁধাঘাট হয়ে নিজের সাইকেল লঞ্চে তুলে নিয়ে আহিরীটোলা আসতো। তারপর সে প্যাডেল করে সাইকেল চালিয়ে সল্টলেকে কাগজে কাজ করতে যেতো প্রতিদিন। যেটা শুনে মনে হলো সত্যিই এই খবরের নেশা বড়ই মারাত্মক। যে নেশা একবার কাউকে ধরলে ছাড়ানো মুশকিল আরকি। শুভ্রর সেই নেশায় পেয়ে বসেছিল মনে হয় ওকে। 

 এরপর সেই সল্টলেকের কাগজ ছেড়ে ও কাজে যোগ দিলো হিন্দি চ্যানেলে সেই তাজা খবরে। এটাই ওর প্রথম টিভিতে প্রবেশ। এরপর এগিয়ে গেছে সে ধীরে ধীরে। অতনু হালদার সেই সময় ইটিভিতে কর্মরত একজন ক্রাইম রিপোর্টার নেওয়া হবে শুভ্র পরীক্ষা দিয়ে ইটিভিতে ঢুকে গেলো সেই ওর কলকাতার রাজপথে পা দেওয়া। আর ধীরে ধীরে এগিয়ে চলা ওর।

ওর কানে ফোন, আর মুখে একটাই বুলি দাদা কিছু আছে নাকি। কিছুই নেই দাদা। একটা বাংলাদেশী অ্যারেস্ট নেই দাদা। হ্যাঁ, এটাই হলো আমাদের চেনা শুভ্র। ওর খবরের পেছনে লেগে থাকার এই নিরন্তর চেষ্টা আর সেই পুলিশ অফিসারকে ফোন করে দাদা কিছু আছে বলা আমার বেশ ভালই লাগতো আরকি। 
আর সারাদিন পরে ঘরে ফিরে শরীর ঠিক রাখতে জিম করা আর ব্যয়াম করা। সে লোহা তুলতে না পারলে হাতের কাছে ইট দিয়ে সে কাজ চালিয়ে নেবে। এটাই ওর দ্বিতীয় নেশা।

 প্রথম নেশা যদি হয় দাদা কিছু আছে। কোনো খবর নেই দাদা আজ। ওর দ্বিতীয় নেশা হলো রাতে ঘরে ফিরে জিম করা, লোহা তোলা যা ওর শরীর ঠিক রাখতে সাহায্য করবে। আর শরীর ভালো থাকলেই তো সে অফিস যেতে পারবে রোজ। কোনোদিন কামাই করবে না সে। ছুটি নিতেও অনীহা তার। এক বিচিত্র। জীবন ওর। প্রেম, ভালোবাসা, পরিবার, নিজের প্রতি নজর রাখা, নিজের টাকা আয় করেও কেমন উদাসীন থাকা এটা বেশ ভালো ব্যাপার কিন্তু। সচরাচর এমনটা দেখা মেলে না কিন্তু। নিজের আখের গুছিয়ে নেওয়া দল এর মাঝে একটু সব বিষয়ে উদাসীন যেনো। শুধু ওই দাদা কিছু আছে নাকি। একটা খবর হবে না দাদা।

ইটিভির কাজ করতে এসেই ওর সাথে আমার আলাপ পরিচয়। সেই সময় মৌসুমীও কাজ শুরু করেছে সেই সময় ইটিভি বাংলা নিউজ চ্যানেলে। ওদের দুজনের মধ্যে বেশ ক্রাইম এর খবর কে আগে দেবে যে আগে ধরাবে সেটা নিয়ে দৌড় হতো। পরে অতনু হালদার এবিপিতে চলে যায় ইটিভি ছেড়ে। এইভাবেই ধীরে ধীরে এগিয়ে চলেছে ও। তবে ও রিপোর্টার হিসেবে ভালো যেমন তেমন মানুষ হিসেবেও ভালো। রাতে ফোন করে কত গল্প যে হতো ওর সাথে। দেখলাম একদিন এবিপিতে লাইভ দিচ্ছে ও বেশ ভালই লাগলো। কলকাতা টিভিতেও কাজ করেছে ও বেশ কিছুদিন।

এই সারাদিন ধরে ছুটে বেড়ানো আর দৌড়ে বেড়ানোর নেশায় ওর জীবনে বোধহয় প্রেমটাই ভালো করে এলো না কোনো দিন। কেউ ওকে সেই ভাবে পছন্দই করলো না হয়তো। কিন্তু একজন বন্ধু হিসেবে, মানুষ হিসেবে ও আমায় বহু খবর দিয়েছে উপকার করেছে। যেখানে সব বড়ো বড়ো চেহারার মাতব্বর সাংবাদিকগণ ফোনে এক লাইন ইনফরমেশন দিতে চাইতো না আলাপ পরিচয় থাকলেও সেটা ও কোনোদিন করেনি। আমায় ও যত ব্যস্ত থাক ফোন ধরেই বলতো একটু পরে বলছি আর তারপরেই তথ্য সরবরাহ করে দিত। এমন নানা ধরনের খবর ও কনফার্ম করে দিয়েছে আমায়। 

একদিন তো সেই সময় ও বর্তমান পত্রিকায় কাজ করে বাস ধরে হাওড়া ফেরার সময় ওর সাথে দেখা হলো আমার। রাতের বেলায় দু জন প্রান্তে দেখেই ও এগিয়ে এলো কি খবর তোমাদের। আমি বললাম চলছে। রাতে হাওড়া স্টেশনে বাস স্ট্যান্ডে নেমেই চলো চা খাই। রাত এগারোটার ট্রেন ধরে বাড়ী ফিরবো। ও বললো ঠিক আছে চা এর দোকানে নিজেই দাঁড়িয়ে গেলো। হয়তো বাড়ী ফেরার পথে চা আর ডিম খেয়ে বাড়ী ফিরবে। কারণ সারাদিন ওর ডিম এর কোটা প্রায় হাফ ডজন বা তার বেশি। ডিম ওর সব থেকে প্রিয়। ওদের বাড়িতে ডিমওলা প্রতি সপ্তাহে ডিম সাপ্লাই করে দেয় নিয়ম মেনে আর সময় মেনে ঘরে ডিম শেষ হবার আগেই। যে শুধু বাজারে ডিমের দাম জানে অন্য কিছু সবজির দাম ওর অজানা। হ্যাঁ, এটাই হলো আমাদের ক্রাইম রিপোর্টার শুভ্র চট্টোপাধ্যায় ওরফে লোহা। 

একদিন রাতে ফোন করলাম একটা বাচ্চার কান্নার আওয়াজ পেলাম আমি। পরে শুনলাম ও বিয়ে করেছে। যদিও সেটা নিজে বোধহয় খুব বেশি জনকে বলেনি সেই বিশেষ কথাটা। একটু লুকিয়েই ছিল এই কথা। তবে কলকাতার একজন মহিলা রিপোর্টারকে কাজ দেবার জন্য ও আমায় বলত মাঝে মাঝেই। সেই মহিলা রিপোর্টার অবশ্য পরে ভালো জায়গায় কাজ করত এবিপিতে। পড়ে সে এবিপি ছেড়ে দিলে তাকে আমি গৌহাটির চ্যানেলে কাজের সুযোগ করে দি। আর সেই মহিলা রিপোর্টার শুভ্রর বেশ পরিচিত ছিল তার জন্য আমায় সে অনেকবার বলেছে। তাকে জায়গা দিতে সে সচেষ্ট ছিল নানা ভাবেই। আমিও চেষ্টা করে ওর একটা কাজের সুযোগ হয়ে গেছে। যেটা বেশ ভালই। এই বিষয়ে শুভ্র চট্টোপাধ্যায় অন্যদের তুলনায় বেশ ভালই। অন্যরা যেটা বলতে গিয়ে ভাবে শুভ্রর সেটা নেই। যেটা ওর ভালো গুণ বলেই আমার মনে হয়।

তবে ওর সেই যে কোনো সময় গুরুত্বপূর্ণ মিটিং এর মধ্যে সে অফিস মিটিং হোক বা পুলিশ এর জরুরী ব্রিফিং হোক ফোন ধরে ব্যস্ত হয়ে উঠে যাওয়া। সেই খবরের সোর্সকে বলা দাদা বলুন এটা কিন্তু একদম এক আছে। বদলে যায়নি এখনও এতদিন পরেও। কিন্তু যে রিপোর্টার ফোনে এত সাবলীল ভাবে কথা বলে তার ফিল্ড এর অভিজ্ঞতা কি সমান। তিনি কি সমান পারদর্শী একভাবেই। যে কোনো পরিস্থিতিতে মোকাবিলা করতে। 

কিন্তু নন্দীগ্রাম যাওয়ার একটা অভিজ্ঞতার গল্প শুনে আমার মনে হলো হয়তো ফোনে যতটা সে স্বচ্ছন্দ ফিল্ডে বাঁশ লাঠির সামনে ততটা নয় বোধহয়। তাই বোধহয় গাড়ির সামনে ভীড় দেখে কোথায় যাচ্ছি যেনো আমরা, এই কথা বলে ফেলেছিলেন ড্রাইভার এর সামনে বসে। আর পেছনে বসে ক্যামেরাম্যান হেসে লুটোপুটি। যদিও সেটা দিয়ে হয়তো তার মাপকাঠি করা যায় না। তবু ডাকাবুকো রিপোর্টার হিসেবে কিছুটা স্পটে গিয়ে বুক চিতিয়ে লড়াই করতে গিয়ে যে একটু হলেও থমকে গেছিলেন সেই ঘটনায় সেটাই পরিস্ফুট হয়। 

একটা দুটো ঘটনা তো আর একজন রিপোর্টার এর সারাজীবনের গ্রাফকে তৈরি করে না। তবে কলকাতার রাজপথে ক্রাইম রিপোর্টার হিসেবে একটু হলেও নাম তুলে ফেলেছে শুভ্র চট্টোপাধ্যায়। যার জীবনের কথার অনেকটাই জানে ওর বন্ধু সুজিত ভৌমিক যে বর্তমান পত্রিকায় ওর সাথেই কাজ করে এখন। মাওবাদী নেতা নিয়ে কারবার তার। ওর গল্প অন্য একদিন। শুভ্র এতদিন লালবাজার, ভবানী ভবনে এতদিন ঘুরে একটা ক্রাইম বিটে ভালো জায়গা করে নিয়েছে। তবে ও নিজে পলিটিকাল সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করলেও মাস্টার্স করলেও কোনোদিন ও কিছুতেই রাজনীতির কোনো খবরে যেতে চায়না। ওর নাকি গায়ে জ্বর আসে সেই সব জায়গায় গেলে। ঠিক যেনো জল ছাড়া মাছ এর মত অবস্থা। 

 সত্যিই অসাধারণ এই রিপোর্টার। ক্রাইম বাদে কোনো খবরে যে স্বচ্ছন্দ নয় কিছুতেই। সারা জীবন খবর খবর করে জীবন কাটিয়ে দেওয়া এক রিপোর্টার শুভ্র চট্টোপাধ্যায়। যার ঘর, সংসার সব তার ঘরের লোক সামলায়। একসময় সব বাবা সামলাতেন এখন বউ সামলায়। সে শুধু খবরের দুনিয়ায় ঘুরে বেড়ায় আর উড়ে বেড়ায়। আর ফোনের মধ্য মুখ গুঁজে পড়ে থাকে। খবর খোঁজে চারিদিকে। এমন খবর পাগল দু একজন মানুষ এই খবরের দুনিয়ায় থাকা ভালো। এই সবের মাঝে সে একটু জ্যোতিষকে ভরসা করে। তারা যা বলে তেমন পোশাক পরে তেমন চলে। 


 বহুদিন কথা হয়নি ওর সাথে দেখা হয়নি আমার। গল্প হয়নি আমার। নিশ্চয়ই কোনো দিন দেখা হবে আবার কলকাতার রাস্তায়। দুজনে মিলে গল্প হবে পুরোনো দিনের। মনে পড়বে নানা কথা। ইটিভির কথা। নানা ঘটনার কথা। সেই সব পুরনো দিনের স্মৃতি ঝলমল দিনগুলো আবার ফিরে আসবে হয়তো আমাদের আড্ডার মাঝে। নানা জনের সাথে ওর কথা লিখতে পেরে আমার ভালই লাগলো। কেউ ভাবেন আমি কেউ যদি চাকরি দেয় তারজন্য এইসব মানুষদের নিয়ে লিখি। আবার কেউ বলেন এই উদ্যোগ ভালো। জানিনা কোনটা ভালো আর কোনটা খারাপ। মনে হয় আমার কর্মজীবনে তো শুভ্র ছিল আমার আশপাশে। তাই ওর কথা মনে হলো লিখে ফেললাম তাই। আর কোনো উদ্দ্যেশ্য নেই এই সাদা জীবনের কালো কথা লেখায়।

আমাদের সবার প্রিয় লোহা - অভিজিৎ বসু।
সাতাশে নভেম্বর, দু হাজার চব্বিশ।
ছবি সৌজন্য শুভ্র চট্টোপাধ্যায় এর মোবাইল ফোন থেকে নেওয়া।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

জামালপুরের প্রদীপ দা

আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায় বর্ধমানের জামালপুরের সেই দাপুটে ঠোঁট কাটা সাংবাদিক প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় এর কথা। সেই বিখ্যাত সুভাষ তালুকদার এর কাগজ সংবাদে মাত্র এক টাকার কাগজে কাজ করা সংবাদ পত্রিকার দাপুটে সাংবাদিক সেই প্রদীপ দা। সেই মুখ্যমন্ত্রীর সভায় বাঁশের ব্যারিকেডের এপারে দূরে দাঁড়িয়েও যে খবর করা যায় সেটা বড়ো মিডিয়ার সাংবাদিকদের হাসি মুখে দেখিয়ে দিয়ে, আর তাদের খবরের ময়দানে গোল দিয়ে শুধু খবরকে ভালোবেসে ছোটো কাগজে কাজ করে চলা সর্বদা হাসি মুখের সেই আমাদের প্রদীপ চ্যাটার্জী দা।  কোথাও কোনো অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদে মুখর হয়ে যাওয়া আর এক দৌড়ে বেরিয়ে পড়া ঝোলা কাঁধে সেই খবরের খোঁজে সেই জামালপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের সেই প্রদীপ দা। সেই বিখ্যাত পন্ডিত রবিশঙ্কর আর উদয়শঙ্কর এর আপন মাসতুত ভাই এর ছেলে সেই প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় দাদা। সেই বামদের আমলে জামালপুরের এলাকায় দাপিয়ে খবর করে ছুটে বেড়ানো সেই প্রদীপ দা। সেই তৃণমূল আমলেও একভাবেই ছুটে বেরিয়ে কাজ করা আমাদের সদা ব্যস্ত প্রদীপ দা।  সেই বাবার অসুস্থতার কারনে বড়ো সংবাদ মাধ্যমে কাজ না করেও...

আমার স্যার কাজীদা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ আমার স্যার এর কথা। যার লেখা আজ হঠাৎ চোখে পড়লো একটি কাগজে। আর স্যার এর নামটা দেখেই মনে পড়ে গেলো নানান কথা। হ্যাঁ, সেই কাজী গোলাম গাউস সিদ্দিকী। যাঁর সাথে আমার আলাপ আর দেখা হয়েছিল সেই অজিতদার ফ্রিল্যান্স ছকু খানসামা লেনের ফ্রীল্যান্স প্রেস ক্লাবের অফিসে খুব সম্ভবত। হাসিখুশি বেশ অজাতশত্রু এই মানুষটিকে দেখেই আমার মনে হয়েছিল যে রিপোর্টারদের প্রভূত ক্ষমতা থাকে বোধহয়। তাই পকেটে পেন আর সেই ফোনের ছোট্টো নোটবুক দেখেই আমার মনে হয়, যে ক্ষমতার স্বাদ পাবার জন্য সেই সদ্য গ্র্যাজুয়েশন করে আমার কচি মনে সাংবাদিক হবার বাসনা জাগে সেই সময়।  কোনো প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক নয়, কোনো অফিসে মাছি মারা দশটা পাঁচটার লোয়ার ডিভিশন এর কেরানি নয়, মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ নয়, ল্যাবরেটরিতে টেকনিশিয়ান এর কাজ নয়, এল আই সি বা পোষ্ট অফিস এর এজেন্ট নয়, কোনো মুদি দোকানে হিসেব পত্র লেখার কাজ নয়, স্বাধীন ব্যবসা করা নয়। শুধুই সাংবাদিক হবার স্বাদ।  কাগজে সাদা কালো অক্ষরে নিজের নাম ছাপা হবে, সেই নাম দেখে বুক ফুলে যাবে, পাড়ায় প্রতিবেশীরা সহ স...

কুড়ি থালা দশ টাকা আর রসিক মুলুর জীবন

নাম মুলু হাঁসদা। বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানার চরিচা গ্রাম পঞ্চায়েত এর চর ইচ্ছা রঘুবরপুরের বাসিন্দা মুলু। আজ মুলুর জীবন কথা। গ্রামের নামটা ভারী অদ্ভুত। চর ইচ্ছা রঘুবরপুর। যে গ্রাম অন্য পাঁচটা গ্রামের মতই।সাদামাটা এই গ্রামে দারিদ্র্য, অপুষ্টি আর কর্মহীন জীবনের জলছবি সুস্পষ্ট। আর সেই গ্রামের মহিলারা নিজেদের সংসার রক্ষা করতে গাছের পাতাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে। গাছের পাতা মুলুদের জীবনের জিয়ন কাঠি। যে জিয়ন কাঠিতে তারা ভোর হতেই পেটের টানে চলে যায় জঙ্গলে। খস খস শব্দ করে পায় হেঁটে তারা পাতা তোলে। গাছ থেকে টুপ টাপ করে ঝড়ে পড়া পাতাকে একটা একটা করে নিজের শাড়ির আঁচলে ভরে নেয়। তার পর সব পাতাকে বস্তায় ভরে ঘরে ফেরে।  ঠিক যেভাবে তারা পুকুরে নেমে শামুক গেঁড়ি আর গুগলি তোলে। যে ভাবে তাদের উদর পূর্তি হবে বলে। আর এই পাতাও যে তাদের পেট ভরায়। একটা একটা পাতাকে নিজের সন্তানের মতো আলগোছে ছুঁয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে চুমু খায় মুলু, বলে তোরা না থাকলে কি করতাম কে জানে। মাথার ওপর শাল সেগুনের বিশাল আকারের গাছগুলো চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে আর তারা চুপ করে শোনে মুলুর কথা।  একে অপ...

শুভ মকর সংক্রান্তি

মকর মানেই নতুন জামা কাক ভোরে স্নান, রাত্রি জেগে মিঠে সুরে টুসুমণির গান। মকর মানেই পিঠে - পুলির গন্ধে ম - ম হাওয়া, ডুলুং পাড়ে টুসুর মেলায় দল বেঁধে যাওয়া। মকর মানেই মোরগ লড়াই পাহুড় জেতার সুখ, সন্ধ্যা - রাতে মাংস পিঠের স্বাদে ভরা মুখ। মকর মানেই হাতি - ঘোড়ার পুজো করম তলে, সান্ধ্য হাওয়ায় মন উদাসী দিমির দিমির বোলে। আসলে আজ এই মকর সংক্রান্তির দিন, টুসু মেলার দিন, টুসু গানে নিজেকে মাতিয়ে দেবার দিন। অজয় এর ধারে জয়দেব কেঁদুলির মেলায় ভীড়ের মাঝে নিজেকে হারিয়ে দেবার দিন। অজয় এর জলে ডুব দিয়ে স্নান করে পূণ্য অর্জনের দিন। আর নদীর ধারে মোরগ লড়াই এর দিন। আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর দিন, সুতো লাটাই হাতে আকাশ পানে তাকিয়ে থাকার দিন। কেমন যেনো রাশির একটি স্থান থেকে অন্য রাশিতে স্থান পরিবর্তনের দিন। সূর্যের দেবতাকে সকালে উঠে স্নান সেরে প্রণাম জানিয়ে শক্তি সঞ্চয় এর দিন। সূর্যের উত্তর দিকে চলে যাবার দিন। ধীরে ধীরে শীতকাল চলে যাওয়ার দিন।  এই মকর সংক্রান্তি এর ইতিহাস ও ভারতীয় ঐতিহ্যের গভীর শিকড় রয়েছে। এটি কৃষি চক্র এবং ফসল কাটার মৌসুমের সাথে জড়িত। এই মকর সংক্রান্তি চ...