সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আমাদের সবার প্রিয় লোহা


আজ আমাদের সেই ছটফটে সব সময় ফোন হাতে নিয়ে ঘাঁটা এক ক্রাইম সাংবাদিক শুভ্র চট্টোপাধ্যায় ওরফে লোহার কথা। হ্যাঁ, যার কোনো ছবি উদ্ধার করা গেলো না কোনোভাবেই। কারুর কাছ থেকেই কোনো ছবি পেলাম না আমি।আর যার নাম কেনো যে লোহা হলো তার সুস্পষ্ট কোনো গল্পও নেই আমাদের কাছে। তবু আজ সাদা জীবনের কালো কথায় সেই শুভ্র চট্টোপাধ্যায় এর গল্পকথা। সেই আমাদের সবার পরিচিত বিখ্যাত ক্রাইম রিপোর্টার লোহার গল্প। 

যার সাংবাদিকতার গুরু একজন বিখ্যাত মানুষের হাত ধরে সেই সল্টলেকে ভারতীয় বিদ্যভবন এর সাংবাদিকতার পড়াশোনা শেষ করে সেই সল্টলেকের একটি কাগজে ওর হাতেখড়ি। যে কাগজের দায়িত্বে ছিলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ সাংবাদিক। সে যে কোনো পজিশনে খেলতে পারদর্শী সেই তীর্থঙ্কর বসু। আমার একসময়ের বন্ধু এখন আর যোগাযোগ নেই আমাদের দুজনের কোনো ভাবেই। আগে যদিও রাতে ঘণ্টার পর ঘন্টা কথা হতো আমাদের। বর্তমানে টোটো চালক হয়ে যাবার পর সেই যোগাযোগ একদম বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সেটাই স্বাভাবিক ঘটনা। 

যাকগে সেই সময় সাংবাদিক হতে শুভ্র তখনও সে লোহা হয়নি হাওড়ার সালকিয়া থেকে বাঁধাঘাট হয়ে নিজের সাইকেল লঞ্চে তুলে নিয়ে আহিরীটোলা আসতো। তারপর সে প্যাডেল করে সাইকেল চালিয়ে সল্টলেকে কাগজে কাজ করতে যেতো প্রতিদিন। যেটা শুনে মনে হলো সত্যিই এই খবরের নেশা বড়ই মারাত্মক। যে নেশা একবার কাউকে ধরলে ছাড়ানো মুশকিল আরকি। শুভ্রর সেই নেশায় পেয়ে বসেছিল মনে হয় ওকে। 

 এরপর সেই সল্টলেকের কাগজ ছেড়ে ও কাজে যোগ দিলো হিন্দি চ্যানেলে সেই তাজা খবরে। এটাই ওর প্রথম টিভিতে প্রবেশ। এরপর এগিয়ে গেছে সে ধীরে ধীরে। অতনু হালদার সেই সময় ইটিভিতে কর্মরত একজন ক্রাইম রিপোর্টার নেওয়া হবে শুভ্র পরীক্ষা দিয়ে ইটিভিতে ঢুকে গেলো সেই ওর কলকাতার রাজপথে পা দেওয়া। আর ধীরে ধীরে এগিয়ে চলা ওর।

ওর কানে ফোন, আর মুখে একটাই বুলি দাদা কিছু আছে নাকি। কিছুই নেই দাদা। একটা বাংলাদেশী অ্যারেস্ট নেই দাদা। হ্যাঁ, এটাই হলো আমাদের চেনা শুভ্র। ওর খবরের পেছনে লেগে থাকার এই নিরন্তর চেষ্টা আর সেই পুলিশ অফিসারকে ফোন করে দাদা কিছু আছে বলা আমার বেশ ভালই লাগতো আরকি। 
আর সারাদিন পরে ঘরে ফিরে শরীর ঠিক রাখতে জিম করা আর ব্যয়াম করা। সে লোহা তুলতে না পারলে হাতের কাছে ইট দিয়ে সে কাজ চালিয়ে নেবে। এটাই ওর দ্বিতীয় নেশা।

 প্রথম নেশা যদি হয় দাদা কিছু আছে। কোনো খবর নেই দাদা আজ। ওর দ্বিতীয় নেশা হলো রাতে ঘরে ফিরে জিম করা, লোহা তোলা যা ওর শরীর ঠিক রাখতে সাহায্য করবে। আর শরীর ভালো থাকলেই তো সে অফিস যেতে পারবে রোজ। কোনোদিন কামাই করবে না সে। ছুটি নিতেও অনীহা তার। এক বিচিত্র। জীবন ওর। প্রেম, ভালোবাসা, পরিবার, নিজের প্রতি নজর রাখা, নিজের টাকা আয় করেও কেমন উদাসীন থাকা এটা বেশ ভালো ব্যাপার কিন্তু। সচরাচর এমনটা দেখা মেলে না কিন্তু। নিজের আখের গুছিয়ে নেওয়া দল এর মাঝে একটু সব বিষয়ে উদাসীন যেনো। শুধু ওই দাদা কিছু আছে নাকি। একটা খবর হবে না দাদা।

ইটিভির কাজ করতে এসেই ওর সাথে আমার আলাপ পরিচয়। সেই সময় মৌসুমীও কাজ শুরু করেছে সেই সময় ইটিভি বাংলা নিউজ চ্যানেলে। ওদের দুজনের মধ্যে বেশ ক্রাইম এর খবর কে আগে দেবে যে আগে ধরাবে সেটা নিয়ে দৌড় হতো। পরে অতনু হালদার এবিপিতে চলে যায় ইটিভি ছেড়ে। এইভাবেই ধীরে ধীরে এগিয়ে চলেছে ও। তবে ও রিপোর্টার হিসেবে ভালো যেমন তেমন মানুষ হিসেবেও ভালো। রাতে ফোন করে কত গল্প যে হতো ওর সাথে। দেখলাম একদিন এবিপিতে লাইভ দিচ্ছে ও বেশ ভালই লাগলো। কলকাতা টিভিতেও কাজ করেছে ও বেশ কিছুদিন।

এই সারাদিন ধরে ছুটে বেড়ানো আর দৌড়ে বেড়ানোর নেশায় ওর জীবনে বোধহয় প্রেমটাই ভালো করে এলো না কোনো দিন। কেউ ওকে সেই ভাবে পছন্দই করলো না হয়তো। কিন্তু একজন বন্ধু হিসেবে, মানুষ হিসেবে ও আমায় বহু খবর দিয়েছে উপকার করেছে। যেখানে সব বড়ো বড়ো চেহারার মাতব্বর সাংবাদিকগণ ফোনে এক লাইন ইনফরমেশন দিতে চাইতো না আলাপ পরিচয় থাকলেও সেটা ও কোনোদিন করেনি। আমায় ও যত ব্যস্ত থাক ফোন ধরেই বলতো একটু পরে বলছি আর তারপরেই তথ্য সরবরাহ করে দিত। এমন নানা ধরনের খবর ও কনফার্ম করে দিয়েছে আমায়। 

একদিন তো সেই সময় ও বর্তমান পত্রিকায় কাজ করে বাস ধরে হাওড়া ফেরার সময় ওর সাথে দেখা হলো আমার। রাতের বেলায় দু জন প্রান্তে দেখেই ও এগিয়ে এলো কি খবর তোমাদের। আমি বললাম চলছে। রাতে হাওড়া স্টেশনে বাস স্ট্যান্ডে নেমেই চলো চা খাই। রাত এগারোটার ট্রেন ধরে বাড়ী ফিরবো। ও বললো ঠিক আছে চা এর দোকানে নিজেই দাঁড়িয়ে গেলো। হয়তো বাড়ী ফেরার পথে চা আর ডিম খেয়ে বাড়ী ফিরবে। কারণ সারাদিন ওর ডিম এর কোটা প্রায় হাফ ডজন বা তার বেশি। ডিম ওর সব থেকে প্রিয়। ওদের বাড়িতে ডিমওলা প্রতি সপ্তাহে ডিম সাপ্লাই করে দেয় নিয়ম মেনে আর সময় মেনে ঘরে ডিম শেষ হবার আগেই। যে শুধু বাজারে ডিমের দাম জানে অন্য কিছু সবজির দাম ওর অজানা। হ্যাঁ, এটাই হলো আমাদের ক্রাইম রিপোর্টার শুভ্র চট্টোপাধ্যায় ওরফে লোহা। 

একদিন রাতে ফোন করলাম একটা বাচ্চার কান্নার আওয়াজ পেলাম আমি। পরে শুনলাম ও বিয়ে করেছে। যদিও সেটা নিজে বোধহয় খুব বেশি জনকে বলেনি সেই বিশেষ কথাটা। একটু লুকিয়েই ছিল এই কথা। তবে কলকাতার একজন মহিলা রিপোর্টারকে কাজ দেবার জন্য ও আমায় বলত মাঝে মাঝেই। সেই মহিলা রিপোর্টার অবশ্য পরে ভালো জায়গায় কাজ করত এবিপিতে। পড়ে সে এবিপি ছেড়ে দিলে তাকে আমি গৌহাটির চ্যানেলে কাজের সুযোগ করে দি। আর সেই মহিলা রিপোর্টার শুভ্রর বেশ পরিচিত ছিল তার জন্য আমায় সে অনেকবার বলেছে। তাকে জায়গা দিতে সে সচেষ্ট ছিল নানা ভাবেই। আমিও চেষ্টা করে ওর একটা কাজের সুযোগ হয়ে গেছে। যেটা বেশ ভালই। এই বিষয়ে শুভ্র চট্টোপাধ্যায় অন্যদের তুলনায় বেশ ভালই। অন্যরা যেটা বলতে গিয়ে ভাবে শুভ্রর সেটা নেই। যেটা ওর ভালো গুণ বলেই আমার মনে হয়।

তবে ওর সেই যে কোনো সময় গুরুত্বপূর্ণ মিটিং এর মধ্যে সে অফিস মিটিং হোক বা পুলিশ এর জরুরী ব্রিফিং হোক ফোন ধরে ব্যস্ত হয়ে উঠে যাওয়া। সেই খবরের সোর্সকে বলা দাদা বলুন এটা কিন্তু একদম এক আছে। বদলে যায়নি এখনও এতদিন পরেও। কিন্তু যে রিপোর্টার ফোনে এত সাবলীল ভাবে কথা বলে তার ফিল্ড এর অভিজ্ঞতা কি সমান। তিনি কি সমান পারদর্শী একভাবেই। যে কোনো পরিস্থিতিতে মোকাবিলা করতে। 

কিন্তু নন্দীগ্রাম যাওয়ার একটা অভিজ্ঞতার গল্প শুনে আমার মনে হলো হয়তো ফোনে যতটা সে স্বচ্ছন্দ ফিল্ডে বাঁশ লাঠির সামনে ততটা নয় বোধহয়। তাই বোধহয় গাড়ির সামনে ভীড় দেখে কোথায় যাচ্ছি যেনো আমরা, এই কথা বলে ফেলেছিলেন ড্রাইভার এর সামনে বসে। আর পেছনে বসে ক্যামেরাম্যান হেসে লুটোপুটি। যদিও সেটা দিয়ে হয়তো তার মাপকাঠি করা যায় না। তবু ডাকাবুকো রিপোর্টার হিসেবে কিছুটা স্পটে গিয়ে বুক চিতিয়ে লড়াই করতে গিয়ে যে একটু হলেও থমকে গেছিলেন সেই ঘটনায় সেটাই পরিস্ফুট হয়। 

একটা দুটো ঘটনা তো আর একজন রিপোর্টার এর সারাজীবনের গ্রাফকে তৈরি করে না। তবে কলকাতার রাজপথে ক্রাইম রিপোর্টার হিসেবে একটু হলেও নাম তুলে ফেলেছে শুভ্র চট্টোপাধ্যায়। যার জীবনের কথার অনেকটাই জানে ওর বন্ধু সুজিত ভৌমিক যে বর্তমান পত্রিকায় ওর সাথেই কাজ করে এখন। মাওবাদী নেতা নিয়ে কারবার তার। ওর গল্প অন্য একদিন। শুভ্র এতদিন লালবাজার, ভবানী ভবনে এতদিন ঘুরে একটা ক্রাইম বিটে ভালো জায়গা করে নিয়েছে। তবে ও নিজে পলিটিকাল সায়েন্স নিয়ে পড়াশোনা করলেও মাস্টার্স করলেও কোনোদিন ও কিছুতেই রাজনীতির কোনো খবরে যেতে চায়না। ওর নাকি গায়ে জ্বর আসে সেই সব জায়গায় গেলে। ঠিক যেনো জল ছাড়া মাছ এর মত অবস্থা। 

 সত্যিই অসাধারণ এই রিপোর্টার। ক্রাইম বাদে কোনো খবরে যে স্বচ্ছন্দ নয় কিছুতেই। সারা জীবন খবর খবর করে জীবন কাটিয়ে দেওয়া এক রিপোর্টার শুভ্র চট্টোপাধ্যায়। যার ঘর, সংসার সব তার ঘরের লোক সামলায়। একসময় সব বাবা সামলাতেন এখন বউ সামলায়। সে শুধু খবরের দুনিয়ায় ঘুরে বেড়ায় আর উড়ে বেড়ায়। আর ফোনের মধ্য মুখ গুঁজে পড়ে থাকে। খবর খোঁজে চারিদিকে। এমন খবর পাগল দু একজন মানুষ এই খবরের দুনিয়ায় থাকা ভালো। এই সবের মাঝে সে একটু জ্যোতিষকে ভরসা করে। তারা যা বলে তেমন পোশাক পরে তেমন চলে। 


 বহুদিন কথা হয়নি ওর সাথে দেখা হয়নি আমার। গল্প হয়নি আমার। নিশ্চয়ই কোনো দিন দেখা হবে আবার কলকাতার রাস্তায়। দুজনে মিলে গল্প হবে পুরোনো দিনের। মনে পড়বে নানা কথা। ইটিভির কথা। নানা ঘটনার কথা। সেই সব পুরনো দিনের স্মৃতি ঝলমল দিনগুলো আবার ফিরে আসবে হয়তো আমাদের আড্ডার মাঝে। নানা জনের সাথে ওর কথা লিখতে পেরে আমার ভালই লাগলো। কেউ ভাবেন আমি কেউ যদি চাকরি দেয় তারজন্য এইসব মানুষদের নিয়ে লিখি। আবার কেউ বলেন এই উদ্যোগ ভালো। জানিনা কোনটা ভালো আর কোনটা খারাপ। মনে হয় আমার কর্মজীবনে তো শুভ্র ছিল আমার আশপাশে। তাই ওর কথা মনে হলো লিখে ফেললাম তাই। আর কোনো উদ্দ্যেশ্য নেই এই সাদা জীবনের কালো কথা লেখায়।

আমাদের সবার প্রিয় লোহা - অভিজিৎ বসু।
সাতাশে নভেম্বর, দু হাজার চব্বিশ।
ছবি সৌজন্য শুভ্র চট্টোপাধ্যায় এর মোবাইল ফোন থেকে নেওয়া।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ইটিভির পিনাকপাণি ঘোষ

কিছু মানুষ কত কাছে থেকেও পাশাপাশি এক জায়গায় বাস করেও একসাথে একসময় কাজ করেও যে কত দূরে রয়ে যান নিজের হাসিমুখ নিয়ে আর সেই চেনা ছন্দ নিয়ে সত্যিই বেশ ভালো মজার ব্যাপার কিন্তু এটা জীবনের মেঠো পথে। সেই ইটিভির বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে ঘুরে ঘুরে স্ট্রীট ফুডের ছবি তোলা আর নানা খবর করে খাওয়া দাওয়ার এপিসোড করে একসময়ে বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে যাওয়া ইটিভি নিউজে। আর আমাদের জেলায় বসে সেইসব হাঁ করে দেখা আর কেমন মনের ভেতর অস্থিরতা তৈরি হওয়া। একেই বলে কলকাতার রাজপথের সাংবাদিক বলে কথা।  সেই যে বার রাষ্ট্রপতি এলেন জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে সেই অনুষ্ঠানের বিশেষ কার্ড জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করা ইটিভির চাকরি করার সুবাদে। কোনো রকমে সেই কার্ড জোগাড় করে এনে দেওয়া তাঁকে আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য। আর সেই একদিন দুপুর বেলায় খুব সম্ভবত করোনা শেষ পর্বে বালিঘাট স্টেশন থেকে অফিস যাওয়ার সময় এসি পঞ্চাশ এর বাস এর ভিতরে দেখা হওয়ায় কত গল্প করা দুজন মিলে পুরনো দিনের। আবার উত্তরপাড়ার সেই বিখ্যাত চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে হাসি মুখে দেখা হয়ে যাওয়া রাতের বেলায় কাঁঠালবা...

আমাদের সবার মৃনাল দা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক বাবা আর ছেলের লড়াই এর গভীর গোপন কাহিনী। এই সাংবাদিকতার পেশায় এসে কত লড়াই, কত অসম যুদ্ধ, করে যে কেউ সংসার টিকিয়ে রাখতে পারে হাসি মুখে কাউকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে। এমন করে কেউ টিকে থাকার চেষ্টা করেন সেটা বোধহয় আমার জানা হয়ে উঠত না কিছুতেই। যদি না এই পেশায় আমি গা ভাসাতাম এমন করে। জীবনের এই নানা টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ ভেসে ওঠে এই রাতের অন্ধকারে আচমকা আমার মনের মাঝে। আর আমি চমকে উঠি কেমন করে তাদের সেই কোলাজ দেখে।  এমন এক চরিত্র, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়ে কেমন আলগোছে, হাসিমুখে, নির্মোহ ভাবে, শুধু নিজের কাঁচা পাকা দাড়িতে হাত বুলিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিলো সে শুধুই আকাশ পানে তাকিয়ে। যে নীল আকাশের গা ঘেঁষে উড়ে যাওয়া সাদা বকের ডানায় লেগে থাকে মেঘের হালকা টুকরো। একদম যেনো সিনেমার পর্দার হিরোর মতোই। দেখে বোঝার উপায় নেই একদম। পেটে খাবার না থাকলেও মুখের হাসিটা অমলিন হয়েই বেঁচে আছে আজও এতোদিন পরেও। আর সেই বিখ্যাত সাদা পাকা নাসিরউদ্দিন স্টাইলের দাড়ি, কালো চুল, আর সব সময় ধোপদুরস্ত ফিটফাট একজন মানুষ। রাত নটা বাজলেই যাকে শ্রীরামপুরে...

শপিং মলের উদ্বোধনে সিঙ্গুর আন্দোলনের দাপুটে মন্ত্রী

নালিকুল স্টেশন বাজারে একটি শপিং মলের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বেচারাম মান্না হাজির। একসময় যাঁর অন্দোলনের ঠেলায় পড়ে দৌড়ে একপ্রকার পালিয়ে চলে যেতে হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে টাটা কোম্পানিকে। যে আন্দোলনের দগদগে ঘা আর সেই স্মৃতি ধীরে ধীরে আজ প্রায় মিলিয়ে যেতে বসেছে আমাদের কাছ থেকে। আজ সেই চাষার ঘরের মানুষ না হলেও সেই কৃষক আর শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকার নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেন সেই মানুষটাকেই কেমন যেন আজ শপিং মলের উদ্বোধনে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার।  একদম নালিকুল স্টেশনের কাছে ঝাঁ চকচকে শপিং মল। দোকানে সাজানো জিনিস পত্র। আর সেখানেই আমাদের মাননীয় মন্ত্রী বেচারাম মান্না। একদম কেমন একটু আমার অচেনা লাগলো যেন। সেই মুড়ি খেয়ে আলুর তরকারি বা শশা খেয়ে আন্দোলন শুরু করা জমি আন্দোলন এর অন্যতম পথিকৃৎ নেতা আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তাহলে টাটা কোম্পানির বিরুদ্ধে যে জমি দখল নিয়ে আন্দোলন সেই আন্দোলন এর মধ্যে ছিল জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যদিও সেখানেও সেই সময়ের শাসকদলের কর্মসংস্থানের যুক্তি।তবে এই নতুন শপিং মলের উদ্বোধনে তো আর ...

ভীড়ের মাঝে একা

জীবন জুড়ে শুধুই ভীড় আর ভীড়। নানা ধরনের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় মানুষের গন্ধে, বর্ণে , স্বাদের ভীড়ে আমি একদম একা হয়ে যেতে চাই। যে ভীড় উপচে পড়া রাস্তায় শুধুই হেমন্তের ভোরে শিশিরের ফিসফিস শব্দ, পাখির কিচির মিচির আওয়াজ,ধানসিড়ি ওই নদীটির তীর ধরে ঘুঘুর আকুল মন কেমন করা ডাক, উদাসী শালিকের ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া ওই হেমন্তের হলুদ ধানের মাঠ এর পাশ দিয়ে, হলুদ বসন্ত বৌরীর সেই আমলকীর গাছের পাতায়,আড়ালে আবডালে বসে কেমন যেন আমায় দেখে লজ্জা পাওয়া, আর তারপর চোখ নামিয়ে হঠাৎ করেই তার উড়ে চলে যাওয়া। আর মেঘের কোল ঘেঁষে সেই সাদা বকের, বুনো হাঁসের, আর সেই পানকৌড়ির জলে ভেজা ডানা মেলে উড়ে যাওয়া আকাশ জুড়ে। সত্যিই ওরাও যে ভিড়ের মাঝেই বড়ো একা। একা একাই ওদের যে এই বেঁচে থাকা। কেমন নিপাট হৈ চৈ হুল্লোড়হীন একটা জীবন নিয়ে বেশ মজা করে, আনন্দ করে। আর সেই ভোরের আলোয় আলোকিত হয়ে রাস্তার একপাশে গুটি শুটি মেরে শুয়ে থাকা ওই সাদা কালো ভুলো নামের কুকুরের। যে অন্তত এই সব মানুষদের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় একটু যেনো আলাদা , একটু যেনো অন্য রকমের। একটু একা একাই যেনো ওর এই আলগোছে জীবন কাটিয়...

গৌড় প্রাঙ্গণে আনন্দবাজার

গৌরপ্রাঙ্গনে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যের আনন্দের মেলা আনন্দবাজার। মহালয়ার ভোরবেলায় ঢাকের বাদ্যি আর সানাইয়ের মন কেমন করা সুরে মেতে উঠলো শান্তিনিকেতনের গৌড়প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও যে হবে আনন্দমেলা আনন্দবাজার। হ্যাঁ সত্যিই যেনো আনন্দের এই হাটে বেচাকেনার পসরা নিয়ে একদিনের জন্য বসে পড়া মন প্রাণ খুলে হৈ হুল্লোড় করে। এই মেলা শুরু হয় 1915 সালের 15 এপ্রিল নববর্ষের দিনে। কিন্তু আগে এই মেলাকে একসময় বলা হতো বৌঠাকুরাণীর হাট। সেই সময় আশ্রমের মহিলারা নিজেদের হাতের তৈরি জিনিস নিয়ে মেলায় বসতেন। মেলার আয়োজন করতেন তারা। আনন্দ করে বেচাকেনা হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় একবার গরমের ছুটির আগে এমন মেলা নাকি হয়েছিল। যার নাম ছিল আনন্দবাজার। পরে এই মেলার নামে হয়ে যায় আনন্দমেলা। সত্যিই আনন্দের এই মিলন মেলা।  প্রথমদিকে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই মেলা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে বিশ্বভারতীর সব বিভাগের পড়ুয়ারা এই মেলায় যোগদান করে। এই মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের বেচা কেনার লাভের টাকার কিছু অংশ জমা পরে বিশ্বভারতীর সেবা বিভাগে। সেখান থেকে এ...