কাল রাতে ফেসবুকের দেওয়ালে এই সাদা কালো অক্ষরে লেখা সাংবাদিক নামক অমিত শক্তিধর এক জীবের অসহায় অবস্থার কথা পড়ে মনটা বড়োই খারাপ হয়ে গেলো। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সেই বাবু শ্রেণীর মতই যে বিশেষ এক শ্রেণীর পদবাচ্য জীব হয়ে। এই ধরণীর বিভিন্ন প্রান্তে মেদিনী কাঁপিয়ে ঘুরে বেড়ায় তারা। যার দোর্দণ্ড প্রতাপে আকাশ বাতাস প্রবাহিত হয়, মুখরিত হয়, কম্পমান হয়।
সেই মানুষটার সত্যিই আজ বোধহয় বড়ই দুর্দিন। হাসিমুখে বিন্দাস এলোমেলো এলেবেলে জীবন নিয়ে যে মাঠে ঘাটে, হাটে বাজারে ঘুরে বেড়িয়ে খবর সংগ্রহ করে বেঁচে থাকার চেষ্টা করত। তার অস্তিত্ব কিছুটা যেনো বিলীন হতে চলেছে ধীরে ধীরে। ঠিক যেনো পৃথিবী থেকে কোনো বহু পুরোনো পাখির, কোনো প্রাণীর অস্তিত্ব বিলুপ্ত হয়ে যাবার সময় হয়ে এসেছে যেন।
যেখানে কাজের কোনও নিশ্চয়তা নেই বলে উল্লেখ করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে খবরকে নেশা করে আকন্ঠ নিমজ্জিত হয়ে মদ্যপান করে বেঁচে থাকার মতই বেঁচে আছে এই বিশেষ শ্রেণীর এক দল মানুষ। যাদের আজ সত্যি বড়ই দুর্দিন। যে ঘোর দুর্যোগ আর দুর্দিনে পড়েও হাসিমুখে তারা টিকে আছে কোনো রকমে। যে টিকে থাকা ছাড়া তো আর কোনও উপায় নেই তাদের। এরমাঝে কেউ সাধের জীবন ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। আবার কেউ জীবনকে আঁকড়ে ধরে কোনও রকমে বেঁচে আছেন।
তবু তো এরা সমাজের বিশেষ আকর্ষণকারী এক বিশেষ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মতই একটি বিরল প্রজাতির জীব। অভিযোজিত হতে হতে যে প্রজাতি ক্রমেই নিজেদের রূপ, চরিত্র, আসল চারিত্রিক গুণাবলী, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য অনেকটাই বদলে ফেলছে ধীরে ধীরে। সেই পুরোনো আদ্যিকালের বদ্দি বুড়োর মতো তো আর এক ভাবেই বেঁচে থাকা যায়না।
তবু এইসব বদলের মাঝেও এই পোস্ট দেখে মনে হলো যাঁরা নিজেকে অভিযোজন করে নিয়ে বদলে ফেলতে পারেন নি এখনও। যাঁরা নিজেকে দুই আর দুই এ চার এর বদলে সারা জীবন পাঁচ হিসেব করেই কাটিয়ে গেছেন। তারা তো সত্যিই বড়ো বিপদেই দিন কাটাচ্ছেন। অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন তারা কোনোরকমে। মুখ ফুটে শিরদাঁড়া ঝুঁকিয়ে কাউকে সে কথা বলতেও পারছেন না তাঁরা কিছুটা লজ্জায় আর কিছুটা লোকে কি বলবে এই কথা ভেবে। তারা যে সত্যিই খুব বিপদেই আছেন।
আর তাই বোধহয় নিজের বুকের মাঝে জগদ্দল পাথরের মতো হাজারো যন্ত্রণা সহ্য করেই চুপচাপ বেঁচে আছেন তাঁরা। নীরবে নিভৃতে গোপনে একা একাই, ঘরের চার দেয়ালের মধ্যে। শুধু ওই নেশার ঘোরে আর নেশার টানে। যে অমোঘ আকর্ষণ এই সাদা কালো চার অক্ষরের বিশেষ প্রজাতির জীব কিছুতেই ছাড়তে পারছে না। হাজারও ঝড় ঝাপটা সামলে নিয়েও কেনো যে এই নেশায় আচ্ছন্ন হয়ে আছে সে কে জানে।
এক সাংবাদিকের পোস্ট ও কিছু কথা - অভিজিৎ বসু।
চার ডিসেম্বর দু হাজার চব্বিশ।
ছবি সৌজন্যে ফেসবুক।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন