আজ ওর জন্মদিন। মহাকরণে বারন্দায় শীতের দুপুরে এই হাসিখুশি মানুষটিকে দেখতাম আমি। পকেটে ছোটো নোটবুক আর কলম নিয়ে। বেশ সবার সাথে আলাপ করা, কথা বলা হাসি মুখে, একদম লো প্রোফাইলে থাকা আর এদিক ওদিক খবর সংগ্রহে ঘুরে বেড়ানো একজনকে। সেই যে শ্রীরামপুরে মনোরম এর দোকানে বাবুয়ার দোকানের সামনে বেশ কয়েক বার দেখাও হয়েছে মাঝে মাঝে আমার ওর সাথে। নৈহাটি তে বাড়ী ওর।
সেই বিখ্যাত আকবর ই কি বেশ নাম কাগজের সেই কাগজেই লিখে সারাটা জীবন হাসিমুখে কাটিয়ে দিলো সে। নানা বড়ো বড়ো সাংবাদিক এর সাথে তার আলাপ যেনো একদম জলভাত। সে প্রবীর ঘোষাল, জীবানন্দ বসু, রন্তিদেব সেনগুপ্ত। আর এরা সবাই বেশ এক কথায় পছন্দও করে তাকে। তার দৌড়ে এগিয়ে যাওয়ার তাড়া নেই কোনও। ছুটে সবাইকে টপকে মন্ত্রীর সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ার তাড়া নেই কোনও। শুধু মহাকরণে করিডোরে ভীড়ের মাঝে মন্ত্রী বেচারাম মান্না দাঁড়িয়ে পড়লে তার মুখের কথা শুনে দ্রুত পকেট থেকে ডট পেন বের করে লিখে নেওয়া। নোট করে নেওয়া।
আর তারপর হেসে বলা ভালই খবর দিলো বেচারাম তোর লোক, কি বল অভিজিৎ। তুই তো সেই সিঙ্গুর থেকেই ওকে দেখে যাচ্ছিস আজ তো মন্ত্রী হয়ে গেলো রে। তরুণ দা যে কোন ঘরে গেলো কে জানে। দেবাঞ্জন এখনও এসে পৌঁছলো না। আর হ্যাঁ, এই ভাবেই কোনো খবর পেলে নিজের উদ্যোগে সকলকে বিলি করে দিতেও কোনো দিন দু বার ভাবতে হয়নি তাকে। হ্যাঁ, সেই আমাদের হাসিমুখের সবার বেশ প্রিয় সার্থক সেনগুপ্ত। আজ যার জন্মদিন।
দুর থেকে আমার কোনও লেখা দেখলেই ভাই ভালো থাক তুই। ভাইঝি কেমন আছে বলে জিজ্ঞাসা করা। তুই তো হুগলী জেলার সেরা রিপোর্টার ভাই। টোটো চালকের কথা বললেও এমন বাজে কথায় কান না দিয়ে বলে চলা তার। সত্যিই কিছু কিছু মানুষ বোধহয় এই ভাবেই কারুর দোষ ত্রুটি না দেখে এমন আলগোছে জীবন কাটিয়ে দেয় হাসিমুখে। আর জীবনের আশেপাশে হাজার বড়ো ছোটো সেজো মেজো লোকদের একদম হাসি মুখে এক সুন্দর মিষ্টি ব্যবহার করেই মন জয় করে নেয় তাদের। কিন্তু একজন মাস্টার ডিগ্রি করা লোক কেনো যে সাংবাদিকতার মোহে পড়ে গেলো কে জানে। কেনো যে আর অন্য কোনও জায়গায় কাজ করলো না কে জানে। হয়তো তার এই কাগজ তাকে অনেক সম্মান দিয়েছে জীবনে। আর তাই ছাড়তে পারে নি এই কাগজ।
সেই হাফ শার্ট, কালো প্যান্ট, খুব ঝাঁ চকচকে জীবন নয়। একদম সাধারণ পরিবারের থেকে উঠে আসা এই সার্থক বেশ ভালো মনের ছেলে। আসলে আজকাল কার দিনে এমন মানুষের সাক্ষাৎ পাওয়া বেশ কষ্টের। অন্যকে সম্মান দিয়ে, নিজের ঢাক না পিটিয়ে শুধুই হাসি মুখে খবরের স্রোতে ভেসে যাওয়া। শুনলাম শ্রীরামপুরে বিবাহের সূত্রে বাবুয়াদার কোনও আত্মীয় হয়। তাই সে মাঝে মাঝেই হুগলী জেলায় যেতো।
আজ ওর জন্মদিন উপলক্ষে সবার ওকে শুভেচ্ছা জানানো দেখে মনে হলো সার্থক এর কথা লিখলে কেমন হয় আমার এই আঁকিবুঁকি ব্লগে। আমার সেই সাদা জীবনের কালো কথায়। যে জীবনের হাজারও মানুষের ভীড়ে সার্থক ছিল চুপ চাপ ফুলে ছাপ এর মতই হাসি মুখে। একদম সহজ সরল মানুষ হয়ে। ভালো থেকো তুমি। শুভ জন্মদিন।
কতদিন যে দেখা হয়নি ওর সাথে। আড্ডা হয়নি দুজনের। চা খেতে যাওয়া হয়নি মহাকরণে পেছন গেট দিয়ে। মিস করি আমি ফেলে আসা সেই দিনগুলো। মহাকরণের লম্বা করিডোর, সেই মন্ত্রীর দ্রুত পায়ে হেঁটে যাওয়া, সেই চেনা প্রেস কর্নার, সাংবাদিকদের ভীড়, আর তার মাঝেই সার্থক কেমন হাসি মুখে ঘুরে ঘুরে খবর সংগ্রহ করে বেড়াচ্ছে। কতো যে এমন মানুষ খবরকে ভালোবেসে সারা জীবন ঘুরে বেড়ায় তাদের খোঁজ আর কে রাখে। ভালো থেকো তুমি সার্থক।
জন্মদিনের শুভেচ্ছা সার্থককে - অভিজিৎ বসু।
আটাশ ডিসেম্বর দু হাজার চব্বিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন