কিছু কিছু মানুষ থাকেন তাঁরা বোধহয় আর নিজেকে বদলাতে পারেন না সারা জীবনে কিছুতেই। যে হাত ধরে পথ চলা শুরু করেন তাঁরা সেই হাত আর ছাড়তে পারেন না কিছুতেই। জীবনে যতই ঝড় ঝঞ্ঝা যাই আসুক একভাবেই পথ চলেন তাঁরা। হয়তো প্রাপ্তির ভাঁড়ার শূন্যই থেকে যায় অপ্রাপ্তির বেড়াজালে আটকা পড়ে। তবুও নিজেদের বদলে ফেলে হাত ছেড়ে ঘাস ফুলের গন্ধ গায়ে মেখে হাসি মুখে পথ চলা শুরু করেন না তিনি কিছুতেই।
আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথাতে এমন একজন মানুষের কথা। যিনি একাধারে কংগ্রেস এর নেতা। একাধারে আমার বন্ধু। একাধারে আমার প্রতিবেশী। আবার একাধারে আমার বিপদের দিনের একমাত্র পাশে থাকা মানুষ। মা আজ নেই, বাবার কোনো সমস্যা হলেই আমি তাঁকেই ফোন করে বলি দাদা একটু দেখে দাও তুমি। পারলে একটু ওষুধ দিয়ে আসবে বাবাকে। হাসি মুখে রাত বারোটা বেজে গেলেও যে বাড়ী গিয়ে ওষুধ দিয়ে আসে কোনো কিছু মনে না করেই।
আবার আমার সেই সাংবাদিকতা শুরুর কঠিন দিনে যখন একটাও ফোন করার পয়সা থাকতো না আমার পকেটে। কিন্তু সকাল হলেই খবর পাঠাতে হতো অফিসে। কি করে খবর পাঠাবো সেটা ভাবতাম আমি। তখন তাঁর বাড়িতে টেলিফোন এর সামনে বসেই খবর পাঠাতাম তাঁর বাড়ির ফোন থেকে। সেই বোধহয় ২৬৭২৪৯০৭ বা এমন কিছু একটা নম্বর ছিল তাঁর বাড়ির ল্যান্ড ফোনের নম্বর। আজ আর মনে পড়ছে না আমার সেই নম্বর কিছুতেই। দিনের পর দিন সেই তাঁর বাড়ী থেকেই খবর পাঠিয়ে ফোন করে নিজের কাজ বাঁচিয়েছি কোনরকমে। আবার সেই মার কাজে এসে দেখা করা।
আজ সেই বদলে না যাওয়া এক নেতার কথা আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগে। সেই রিষড়ার কংগ্রেস নেতা সাবির আলী। যিনি একটা আদর্শকে আঁকড়ে ধরেই সারাটা জীবন হাসি মুখে কাটিয়ে দিলেন তিনি একভাবেই। কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমুল। আবার তৃণমূল ছেড়ে অন্য কোনও দল কোথাও আর যেতে পারলেন না তিনি নিজের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে। বেশ হাসিমুখেই সংবিধান রক্ষা করতে রাস্তায় হাঁটলেন হাসিমুখে। হয়তো এই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করে কোনও পরিবর্তন হবে না তাঁর নিজের। তাঁর দলের। ভোটের ময়দানে জেতা হয়নি তাঁর। তবুও বেশ হাসি মুখেই নিজের পুরোনো দলকে ছেড়ে চলে যাননি আজও।
সেই রিষড়ার সেই প্রায় পঁচিশ বছর ধরে রাজত্ব করা দাপুটে সিপিএমের চেয়ারম্যান দিলীপ সরকার। সেই রিষড়ার কঠিন বাম রাজনীতির ময়দানে ঘুরে বেড়াচ্ছে কংগ্রেস এর ঝাণ্ডা নিয়ে সাবির আলী। আসলে এটা বোধহয় কিছুটা রাজনৈতিক আদর্শের প্রতি বিশ্বাস রাখা আর লয়াল থাকা। নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করতে হবে সেটা ভেবে একবার এই ঝাণ্ডা আর ওই ঝাণ্ডা নিয়ে ঘুরে বেড়ানো নয়। যদিও এটা করে হয়তো তাঁর ক্ষতি হয়েছে রাজনৈতিক জীবনে অনেক। তবুও সেই আদর্শকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকা এটা বেশ ভালো ব্যাপার। বদলে না গিয়ে এই এক থেকে যাওয়া। ভালো থেকো তুমি সাবিরদা। এমন করেই বদলে না গিয়ে এক থেকে যাও এইভাবেই আদর্শকে আঁকড়ে ধরে।
ভালো থেকো সাবির দা - অভিজিৎ বসু।
তেইশ ডিসেম্বর, দু হাজার চব্বিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন