সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আমাদের তিন্নি

কিছু কিছু মানুষকে নিয়ে লিখতে চাই কিন্তু পারিনা আমি। কেনো জানিনা একটা অজানা ভয়,আর আতঙ্ক চারিদিক থেকেই গ্রাস করে আমায়, এই শীতের নিশুতি শব্দহীন রাতে। যে নিশুতি রাত আমায় ঘুমোতে দেয় না কিছুতেই। যে রাত আমায় জ্বালিয়ে মারে বারবার। তাই এপাশ ওপাশ করলেও কেমন যেন একটা অজানা অচেনা আতঙ্কে অতীতের স্মৃতিচারণ করি আমি ভয়ে ভয়ে। মনে হয় যদি ভুল করে ফেলি তাহলে কি হবে।


 মানুষকে দেখা তাদের জীবনকে দেখা যে জীবনের আশপাশে কত কিছুই তো আছে। হোকনা সে জীবন সেই মানুষ একদম ঝাঁ চকচকে অন্য গ্রহের এক বাসিন্দা। যে গ্রহের নাগাল পাওয়া ভার আমার মত ছাপোষা মানুষের। তবু তো বামন হয়ে চাঁদ ধরতে সাধ যায় মাঝে মাঝে। ইচ্ছা হয় আমার সাদা জীবনের কালো কথায় সেই এক ভিন গ্রহের বাসিন্দাকে নিয়ে কিছু লিখি আর কী। 

জানিনা এটাও ঠিক হলো কি না সেই টিআরপি নিয়ে লেখার মত হয়তো জীবনে আবারও ভুল করলাম আমি। খালি ভুল আর ভুল। সারা জীবন ধরে খালি ভুল করে গেলাম আমি। জীবনের প্রতি মুহূর্তে তো ভুলের ফাঁদ পাতা আছে এই ভুবনে। যেখানে ঘিরে আছে অনেক কিছুই। যাকগে ধান ভানতে শিবের গীত গাওয়ার কি দরকার। এইবার না হয় আসল কথায় আসা যাক।

ওকে আমি সেই ঝলমলে পোশাকে, একদম আপ টু ডেট ছন্দে দামী জুতোয় পোদ্দার কোর্টের অফিসে দেখলাম। একদম ভোর বেলায় সবার ঘুম ভাঙ্গার আগেই যে অফিস এসে গাড়ির চালক হয়ে স্টিয়ারিং ধরে নিয়ে গাড়ি স্টার্ট দিত সে। কাউকে কোনোদিন বলেনি আজ আমি পারছিনা গাড়িটা একটু স্টার্ট দাও আমি পড়ে আসছি একটু। কেমন অফুরন্ত দম, উৎসাহ আর উদ্দীপনার সাথে হৈ হৈ করে হেডলাইন করতো। কি দ্রুত সুন্দর নখের নিখুঁত নেলপালিশ পড়া আঙুলে টপ টপ করে শব্দের ছন্দ মিলিয়ে হেডলাইন লিখে যেতো। আমি কেমন অবাক হয়ে দেখতাম দুর থেকে আর ভাবতাম সত্যিই এই পোড়া জীবনে কিছুই পারিনা আমি। 

কিন্তু প্রথম প্রথম বুকে সাহস নিয়ে ওকে এগিয়ে গিয়ে ওর টেবিল এর সামনে দাঁড়িয়ে হাত কচলে বলতে পারিনি এই খবরটা একটু ধরানো যাবে কি এটা একটু দেখিয়ে দিলে ভালো হয় দিদি। একে দ্রুত গতিতে ছুটে চলা এক রাজধানী এক্সপ্রেসের মত একজন দ্রুতগামী প্রোডিউসার। বর্তমানের সময়ে যাকে বন্দে ভারতের সাথে তুলনা করতে হয়। আর আমি হলাম মালগাড়ির মত পুরোনো আদ্যিকালের সেই জোর করে কাজ পাইয়ে দিয়ে একটা চাকরি করে দেওয়া মাঠে ময়দানের রিপোর্টার থেকে এক লজঝড়ে অ্যাসাইন মেন্টের বদ্দি বুড়ো। যার কোনও যোগ্যতাই নেই এই বিখ্যাত দু নম্বর চ্যানেলে কাজ করার। 

না হলে কি আর আগে এই চ্যানেলেই আমি তিন বার বাতিল হই লিখিত পরীক্ষা দিয়ে, ইন্টারভিউ বোর্ডে শুধু আমার ঝাঁ ঝাঁ চকচকে চেহারা নেই বলে। সে সব কথা যাকগে বাদ দি কি বলেন আপনারা। নেহাত অনির্বাণ চৌধুরীর হাত ধরে এই চব্বিশ ঘণ্টার চাকরিতে প্রবেশ করেছিলাম আমি তাঁর দয়ায়। তাই হয়তো এই সব নানা দ্রুতগামী ট্রেন মালগাড়িকে ধাক্কা দিয়ে রেল লাইন থেকে ঠেলে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়নি আর কি। কিন্তু ধীরে ধীরে একটু একটু করে ভয় ভীতি কেটে গেলো কাজের সুবাদে। সেই সকাল সকাল সেজেগুজে অফিস এসেই ঘাড় গুঁজে কাজ করা মেয়েটিকে দেখতাম আমি দুর থেকে। খবর নিয়ে দৌড়ে বেড়ানো ছুটে বেড়ানো দেখে বেশ ভালই লাগত আমার সচরাচর এমন দেখা পাওয়া ভার। 

ধীরে ধীরে ভাব হয়ে গেলো অ্যাসাইনমেন্টের সাথে প্রোডিউসার এর। যদিও সাধারণত এটা হয়না। একটা যুদ্ধ একটা লড়াই লেগেই থাকে এই‌ দুজনের মধ্যে। দ্রুতগামী সেই প্রোডিউসার ভাবেন আমিই সেরা। আর অ্যাসাইনমেন্টের টেবিলে বসা মালগাড়িভাবে খবর তো আমার কাছে আসছে তাহলে সেই তো ঠিক করবে খবর নামক জাহাজের ক্যাপ্টেন জাহাজকে কোনদিকে নিয়ে যাবেন। এটা নিয়ে সব জায়গায় দড়ি টানাটানি চলতেই থাকে আর কি। 

কিন্তু দিনের শেষে ক্লান্ত হয়ে বিকেল বেলায় ও যখন বাড়ি ফিরত। সেই আমিও মাঝে মাঝেই শুভ্রনীল এর সাথে নিচে চা খেতে যেতাম। ভাস্করদা ওর সকালের খবরের জুটি। এদের সাথে নিচে চা খেতে যেতাম আমরা সবাই। কেমন ঝাঁ চকচকে একটা দৌড়ে বেড়ানো ছুটে বেড়ানো জীবন এর মাঝেও একটা অন্য জীবনকে দেখতাম তখন। ওর নিজের সংসার সেই ওর ভালোবাসার প্রাণীদের নিয়ে কত চিন্তা ওর। সেই ওর বিখ্যাত মানুষ যিনি ওর বাবা। যাঁর ইন্টারভিউ নেবার জন্য একটা সভা শেষে কলেজ স্ট্রিট এর একটি সভায় আমি দু ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকার পর আমি তাঁর বাইট নিতে পেরেছিলাম। যাঁর কাছে প্রশ্ন করতে গিয়ে অল্প হলেও আমার ভয়ে বুক কেঁপে ছিল সেই দিন। যা কোনো রাজনৈতিক নেতার কাছে হয়নি কোনোদিন আমার। সেই বিখ্যাত মানুষ আজিজুল হকের মেয়ে আমাদের সেই বিখ্যাত দাপুটে প্রোডিউসার তথা সাংবাদিক আমাদের সকলের তিন্নি। 

হ্যাঁ, তিন্নি বলে গলা ছেড়ে ডাকছেন অঞ্জন দা, যিনি আজ আর নেই আমাদের মধ্যে। সেই অনির্বাণ চৌধুরী, সেই ধ্রুবজ্যোতি প্রামাণিক , সেই সুবীর চক্রবর্তী, সেই শুভ্রনীল ঘোষ, সেই শৌনক ঘোষ, সেই বিখ্যাত অমৃতাংশু ভট্টাচার্য্য, শর্মিষ্ঠা ঘোষ চ্যাটার্জী, চারিদিক থেকে শুধু তিন্নি আর তিন্নি। বড়ই ব্যস্ত সে সব সময়। নিউজ রুমের মাঝে বসে থাকা একজন যাকে ভয় পেলেও মনে হয় এমন একজন ব্যক্তি অফিসে সকাল বেলা থেকেই খুব দরকার যে গাড়িটার গতিপথ ঠিক করে দেবে সেই ভোরবেলা থেকেই। না হলে যে কিছুতেই বেলায় আর সেই দ্রুত গতিতে এগিয়ে ছুটে চলা যায়না। তাল মেলানো যায়না।

আমি জানি আমার এই সাদা জীবনের কালো কথা হয়তো অনেকের পছন্দ হয়না। নানা কথা বলেন তাঁরা। কেউ কেউ বলেন কি দরকার এমন জীবন নিয়ে কাটা ছেঁড়া করার। কেউ বলেন এসব লিখে কি লাভ তোমার। কিন্তু একজন মহিলা সাংবাদিক যিনি সারা বছর সকাল বেলায় সাড়ে পাঁচটার শিফট করে গেলেন হাসিমুখে। কাউকে কিচ্ছু বুঝতে না দিয়ে। কতদিন যে ভোরবেলায় একসাথে ডিউটি করেছি আমরা। সেই সব কথা মনে পড়ে যায়।

আসলে সেই সব দিনগুলোর কথা মনে পড়ে যায় এই রাতদুপুরে আমার। মনে হয় মালগাড়ি হলেও চলতো তো। আজ তো একদম চুপ করে দাঁড়িয়ে গেছে সেই গাড়িটা বহুদিন ধরেই। মাঝে মাঝেই মন খারাপ হলে কথা বলি আমরা দুজনে। ভয়টা একদম কেটে গেছে প্রায়। আজকাল আর মনে হয়না ও আমার পরীক্ষা নিচ্ছে। দুজনের গভীর গোপন কথা একে অপরকে বলে কিছুটা হালকা হই আমরা।

 কেউ বলে আমি বাতিল আবার কেউ বলে আমি কাজ করতে জানিনা পারিনা এমন স্বগতোক্তি করে একে অপরকে প্রবোধ দি আমরা একে অপরকে দুর থেকেই। আর মনে মনে বলি সত্যিই সেই ভয় পাওয়া দিনগুলোই বোধহয় ভালো ছিল এমন আজব দিন এর মত ছিল না। যেখানে প্রতিদিন অপমানিত হতে হয়। তাও মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে কাজ করতে হয়। যন্ত্রণায় কুঁকড়ে গিয়েও থমকে থেমে পড়া যায়না কিছুতেই। কাজ থামিয়ে দিয়ে হাজারো দায় আর দায়িত্বকে অবহেলা করে ঠেলে ফেলে দিয়ে পালিয়ে চলে আসা যায়না। চেনা মানুষ গুলো অচেনা হলেও কিছুই মুখ ফুটে বলা যায়না। 

 সত্যিই যে অসম দুটো জীবন একটা বন্দেভারত অন্যটি মালগাড়ি যারা একে অপরকে কিছুটা হলেও কাজের টেবিলে এক হয়ে কাছে আসতে পারেনি কোনোদিন কোনও সময়। সেই তারাই কেমন আজ মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় মাঝে মাঝেই। একজন বলে দাদা তুমি কি করছো এইসব, কি লিখছো তুমি। মেয়ের কথা ভাবো দাদা। আর অন্য প্রান্ত থেকে অন্যজন বলে কি করবে উপায় নেই কোনও। এইভাবেই যে মাথা নিচু করে অপমান নিয়েই কাজ করতে হবে, না হলে চলবে কি করে। 

আসলে দিন যে বদলে গেছে আমাদের অনেক। চারপাশের মানুষগুলো যে বদলে গেছে। চেনা মুখ গুলো যে বড়োই অচেনা হয়ে গেছে। একজন সল্টলেকের সেই নির্জন রাস্তায় হেঁটে যেতে যেতে, বা একা ঘরে বসে চুপ করে শোনে সেই সব কথা। আর অন্যজন বোলপুরের ভাড়া বাড়িতে বসে শোনে এক উদ্বিগ্ন চেনা কন্ঠ স্বর দাদা তুমি কি করছো এইসব। দ্রুত গতিতে ছুটে চলা বন্দে ভারত আর মালগাড়ির‌ এই অসম বন্ধুত্ব টিকে থাকে এই ভাবেই। ভালো থেকো তুমি তিন্নি। কিছুটা ভয় নিয়েই বলে ফেললাম আজ। 

আমাদের তিন্নি- অভিজিৎ বসু।
ছয় ডিসেম্বর, দু হাজার চব্বিশ।
ছবি সৌজন্যে ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ইটিভির পিনাকপাণি ঘোষ

কিছু মানুষ কত কাছে থেকেও পাশাপাশি এক জায়গায় বাস করেও একসাথে একসময় কাজ করেও যে কত দূরে রয়ে যান নিজের হাসিমুখ নিয়ে আর সেই চেনা ছন্দ নিয়ে সত্যিই বেশ ভালো মজার ব্যাপার কিন্তু এটা জীবনের মেঠো পথে। সেই ইটিভির বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে ঘুরে ঘুরে স্ট্রীট ফুডের ছবি তোলা আর নানা খবর করে খাওয়া দাওয়ার এপিসোড করে একসময়ে বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে যাওয়া ইটিভি নিউজে। আর আমাদের জেলায় বসে সেইসব হাঁ করে দেখা আর কেমন মনের ভেতর অস্থিরতা তৈরি হওয়া। একেই বলে কলকাতার রাজপথের সাংবাদিক বলে কথা।  সেই যে বার রাষ্ট্রপতি এলেন জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে সেই অনুষ্ঠানের বিশেষ কার্ড জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করা ইটিভির চাকরি করার সুবাদে। কোনো রকমে সেই কার্ড জোগাড় করে এনে দেওয়া তাঁকে আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য। আর সেই একদিন দুপুর বেলায় খুব সম্ভবত করোনা শেষ পর্বে বালিঘাট স্টেশন থেকে অফিস যাওয়ার সময় এসি পঞ্চাশ এর বাস এর ভিতরে দেখা হওয়ায় কত গল্প করা দুজন মিলে পুরনো দিনের। আবার উত্তরপাড়ার সেই বিখ্যাত চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে হাসি মুখে দেখা হয়ে যাওয়া রাতের বেলায় কাঁঠালবা...

আমাদের সবার মৃনাল দা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক বাবা আর ছেলের লড়াই এর গভীর গোপন কাহিনী। এই সাংবাদিকতার পেশায় এসে কত লড়াই, কত অসম যুদ্ধ, করে যে কেউ সংসার টিকিয়ে রাখতে পারে হাসি মুখে কাউকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে। এমন করে কেউ টিকে থাকার চেষ্টা করেন সেটা বোধহয় আমার জানা হয়ে উঠত না কিছুতেই। যদি না এই পেশায় আমি গা ভাসাতাম এমন করে। জীবনের এই নানা টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ ভেসে ওঠে এই রাতের অন্ধকারে আচমকা আমার মনের মাঝে। আর আমি চমকে উঠি কেমন করে তাদের সেই কোলাজ দেখে।  এমন এক চরিত্র, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়ে কেমন আলগোছে, হাসিমুখে, নির্মোহ ভাবে, শুধু নিজের কাঁচা পাকা দাড়িতে হাত বুলিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিলো সে শুধুই আকাশ পানে তাকিয়ে। যে নীল আকাশের গা ঘেঁষে উড়ে যাওয়া সাদা বকের ডানায় লেগে থাকে মেঘের হালকা টুকরো। একদম যেনো সিনেমার পর্দার হিরোর মতোই। দেখে বোঝার উপায় নেই একদম। পেটে খাবার না থাকলেও মুখের হাসিটা অমলিন হয়েই বেঁচে আছে আজও এতোদিন পরেও। আর সেই বিখ্যাত সাদা পাকা নাসিরউদ্দিন স্টাইলের দাড়ি, কালো চুল, আর সব সময় ধোপদুরস্ত ফিটফাট একজন মানুষ। রাত নটা বাজলেই যাকে শ্রীরামপুরে...

শপিং মলের উদ্বোধনে সিঙ্গুর আন্দোলনের দাপুটে মন্ত্রী

নালিকুল স্টেশন বাজারে একটি শপিং মলের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বেচারাম মান্না হাজির। একসময় যাঁর অন্দোলনের ঠেলায় পড়ে দৌড়ে একপ্রকার পালিয়ে চলে যেতে হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে টাটা কোম্পানিকে। যে আন্দোলনের দগদগে ঘা আর সেই স্মৃতি ধীরে ধীরে আজ প্রায় মিলিয়ে যেতে বসেছে আমাদের কাছ থেকে। আজ সেই চাষার ঘরের মানুষ না হলেও সেই কৃষক আর শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকার নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেন সেই মানুষটাকেই কেমন যেন আজ শপিং মলের উদ্বোধনে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার।  একদম নালিকুল স্টেশনের কাছে ঝাঁ চকচকে শপিং মল। দোকানে সাজানো জিনিস পত্র। আর সেখানেই আমাদের মাননীয় মন্ত্রী বেচারাম মান্না। একদম কেমন একটু আমার অচেনা লাগলো যেন। সেই মুড়ি খেয়ে আলুর তরকারি বা শশা খেয়ে আন্দোলন শুরু করা জমি আন্দোলন এর অন্যতম পথিকৃৎ নেতা আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তাহলে টাটা কোম্পানির বিরুদ্ধে যে জমি দখল নিয়ে আন্দোলন সেই আন্দোলন এর মধ্যে ছিল জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যদিও সেখানেও সেই সময়ের শাসকদলের কর্মসংস্থানের যুক্তি।তবে এই নতুন শপিং মলের উদ্বোধনে তো আর ...

ভীড়ের মাঝে একা

জীবন জুড়ে শুধুই ভীড় আর ভীড়। নানা ধরনের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় মানুষের গন্ধে, বর্ণে , স্বাদের ভীড়ে আমি একদম একা হয়ে যেতে চাই। যে ভীড় উপচে পড়া রাস্তায় শুধুই হেমন্তের ভোরে শিশিরের ফিসফিস শব্দ, পাখির কিচির মিচির আওয়াজ,ধানসিড়ি ওই নদীটির তীর ধরে ঘুঘুর আকুল মন কেমন করা ডাক, উদাসী শালিকের ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া ওই হেমন্তের হলুদ ধানের মাঠ এর পাশ দিয়ে, হলুদ বসন্ত বৌরীর সেই আমলকীর গাছের পাতায়,আড়ালে আবডালে বসে কেমন যেন আমায় দেখে লজ্জা পাওয়া, আর তারপর চোখ নামিয়ে হঠাৎ করেই তার উড়ে চলে যাওয়া। আর মেঘের কোল ঘেঁষে সেই সাদা বকের, বুনো হাঁসের, আর সেই পানকৌড়ির জলে ভেজা ডানা মেলে উড়ে যাওয়া আকাশ জুড়ে। সত্যিই ওরাও যে ভিড়ের মাঝেই বড়ো একা। একা একাই ওদের যে এই বেঁচে থাকা। কেমন নিপাট হৈ চৈ হুল্লোড়হীন একটা জীবন নিয়ে বেশ মজা করে, আনন্দ করে। আর সেই ভোরের আলোয় আলোকিত হয়ে রাস্তার একপাশে গুটি শুটি মেরে শুয়ে থাকা ওই সাদা কালো ভুলো নামের কুকুরের। যে অন্তত এই সব মানুষদের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় একটু যেনো আলাদা , একটু যেনো অন্য রকমের। একটু একা একাই যেনো ওর এই আলগোছে জীবন কাটিয়...

গৌড় প্রাঙ্গণে আনন্দবাজার

গৌরপ্রাঙ্গনে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যের আনন্দের মেলা আনন্দবাজার। মহালয়ার ভোরবেলায় ঢাকের বাদ্যি আর সানাইয়ের মন কেমন করা সুরে মেতে উঠলো শান্তিনিকেতনের গৌড়প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও যে হবে আনন্দমেলা আনন্দবাজার। হ্যাঁ সত্যিই যেনো আনন্দের এই হাটে বেচাকেনার পসরা নিয়ে একদিনের জন্য বসে পড়া মন প্রাণ খুলে হৈ হুল্লোড় করে। এই মেলা শুরু হয় 1915 সালের 15 এপ্রিল নববর্ষের দিনে। কিন্তু আগে এই মেলাকে একসময় বলা হতো বৌঠাকুরাণীর হাট। সেই সময় আশ্রমের মহিলারা নিজেদের হাতের তৈরি জিনিস নিয়ে মেলায় বসতেন। মেলার আয়োজন করতেন তারা। আনন্দ করে বেচাকেনা হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় একবার গরমের ছুটির আগে এমন মেলা নাকি হয়েছিল। যার নাম ছিল আনন্দবাজার। পরে এই মেলার নামে হয়ে যায় আনন্দমেলা। সত্যিই আনন্দের এই মিলন মেলা।  প্রথমদিকে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই মেলা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে বিশ্বভারতীর সব বিভাগের পড়ুয়ারা এই মেলায় যোগদান করে। এই মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের বেচা কেনার লাভের টাকার কিছু অংশ জমা পরে বিশ্বভারতীর সেবা বিভাগে। সেখান থেকে এ...