সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আরামবাগের দিদি

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ আমার এক দিদির কথা। না, রক্তের কোনও সম্পর্ক নেই তাঁর সঙ্গে আমার কোনোভাবেই। তবু কেমন যেন একটা আলগোছে সম্পর্ক রয়ে গেছে বহুদিন ধরেই সেই কবে থেকে। আসলে কিছু কিছু সম্পর্ক শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, আর হেমন্ত সব ঋতুতেই কেমন করে যেন টিকে থাকে তার নিজের মতো করেই। আপন ছন্দে, তার নিজের আপন চেনা পথ ধরেই। মাঝে মাঝে হয়তো সেই পথে শ্যাওলা জমে একটু পা টিপে টিপে চলতে হয়। হয়তো শরতের নীল আকাশে সাদা মেঘের আড়ালে আবডালে লুকিয়ে থাকে কালো মেঘের ইতিউতি উঁকিঝুঁকি। কিন্তু সেই সবকে এক ফুৎকারে উড়িয়েই বেঁচে থাকে আমাদের এই গভীর গোপন ভালোবাসার অমলিন স্বার্থহীন একটি সম্পর্ক। 

যে সম্পর্কের অবনতি, উন্নতি , অধোগতি কোনো কিছুই বোঝা যায় না একভাবেই প্রায় সে পঁচিশ বছর ধরেই মুন্ডেশ্বরীর তীর ধরে,খানাকুলের সবুজ ধান ক্ষেত ধরে, সেই গৌরহাটি মোড়ের যানজট কাটিয়ে, গোঘাটের সেই গড়মান্দারন এর জঙ্গল পার হয়ে আমাদের দুজনের এই যোগাযোগ এই সম্পর্ক আজও রয়ে গেছে। আর তাই তো আমার মনে হলো আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায় লিখে ফেলি আরামবাগের সেই দিদির কথা। সেই খানকুলের স্কুলের বাংলা দিদিমনি শুক্লাদির কথা। সেই আমার বউকে সোমাকে চাকরি দেওয়া বিদুৎ ভবনের উচ্চপদে কাজ করা গৌতমদার কথা। সেই রিমা আর দিশার কথা।

 আসলে জীবনের এই দ্রুত ফুরিয়ে আসা সময়ে এইভাবেই যে বইয়ের পাতা উল্টে পাল্টে নানা মুখ ভেসে ওঠে আমার সামনে স্মৃতির সরণী বেয়ে। সেই আরামবাগ এর পোস্ট অফিস এর পাশের বাড়ি, সেই একতলার অন্ধকার ঘর, সেই বাড়ির ছাদে সুন্দর ফুলের টব, সেই আরামবাগের এসডিও অফিস, সেই মিলন ডেকরেটার্স এর দোকান, সেই মোটা বৌদি, সেই গরম তেলেভাজা মুড়ি, সেই প্রবল বর্ষায় ভেসে যাওয়া আরামবাগ মহকুমায় খবর করতে গিয়ে দিদির বাড়ী আশ্রয় নেওয়া, সেই রাজনৈতিক খুনোখুনি হলেই শ্রীরামপুর থেকে আরামবাগ ছুটে আসা। আর শেষ বাস না পেলে রাতে আরামবাগ থেকে যাওয়া দিদির বাটি। এটাই যে রুটিন ছিল আমার একসময়। 

সেই সুব্রত যশ এর মাটির বাড়ী, সেই আরামবাগের রিপোর্টার তুহিন, সেই দিব্যেন্দু, সেই আরেফুল এর আমার জন্য উচাটন হয়ে পড়া, সেই গোপাল কচের সাদা পাজামা পাঞ্জাবী পরে এলাকায় সাদা কালো রোদ চশমা পরে ঘুরে বেড়ানো সদর্পে আজ আর সেই দর্প নেই তাঁর, সেই আরামবাগের সিপিএমের পার্টি অফিসের বাইরে মোটর সাইকেলের ভীড়, সেই মোজাম্মেল হোসেনের হাসি মুখে বসে থাকা, সেই কালীপুর ব্রীজ পার হয়ে আরামবাগের দাপুটে বিধায়ক বিনয় দত্তর বাড়িতে তাঁর বাইট আনতে যাওয়া। আর আমায় দেখেই বিনয়দার একগাল হাসি সাংবাদিকরা এসেছে চা খাবে তো তোমরা ভাই সব।

 সেই রাজহাটির মাস্টার হাসান ইমাম, সেই তাঁর ছেলে মহারাজ কদিন আগেই যে জেল থেকে ছাড়া পেল, সেই সমীর ভান্ডারী রাতের অন্ধকারে যে রুটি আলু ভাজা জোগাড় করে আমায় , দেবাঞ্জনকে খেতে দিয়েছিল একরাতে,, সেই সমীরদার পার্টি অফিসে লোক আনাগোনা করা, সেই দিদির বাড়ির পাশেই গোঘাটের বিধায়ক শিবু মালিকের বাড়ী, তাঁর বাড়ি গিয়ে ইন্টারভিউ নিতে গেলে শিবুদার বউ এর খাতির করে হেসে সাংবাদিকদের চা আর বিস্কুট খেতে দেওয়া, সেই গৌতমদার রবিবার সকালে উঠেই বাজার যাওয়া, সেই কত গ্রামে গঞ্জে দৌড়ে চাকরি করা, আর আজ সেই মানুষটাই কেমন বাড়িতে বসে গেছেন একদম।

 সত্যিই জীবন অসাধারন। এই জীবন বড়ই স্মৃতিকাতর আর বড়ো অদ্ভুত। তাই তো আমি এক নিঃশ্বাসে বলে গেলাম নানা কথা। সেই সুব্রত যশ এর মোটর সাইকেল করে ঘুরে বেড়ানো এই গ্রাম থেকে সেই গ্রামে। সেই এসডিও গোপীনাথ মুখোপাধ্যায় এর চেম্বার এ বসে সাংবাদিকদের খিদে পেয়েছে বলে তাঁর এনে দেওয়া মুড়ি আর চপ খাওয়া, গরম মাটির ভাঁড়ে চা খাওয়া। সেই ফাঁকা জায়গায় এসডিপিও অফিস, সেই বিডিও অফিস, হাসপাতাল মোড়। আরামবাগ এর দিদির কথা লিখতে বসে এত কিছু ভেসে এলো আমার কাছে হু হু করে ঠিক যেনো লাভা স্রোতের মতো। একে কি করে আটকাবো আমি জানিনা। 

এই তো সেদিন ও অভ্যাসবসত ফোন করে ফেললাম আমি দিদিকে। তাঁর গলায় কিছুটা অভিমান কিছুটা হতাশা। রিমা বাইরে, দিশাও বাইরে। সেই ছোট্ট দুটো বেণী দুলিয়ে ঘুরে বেড়ানো দিশা এখন কেমন গিন্নী হয়ে গেছে। ওর ফুটফুটে ডল পুতুলের মত মেয়েটি খুব মিষ্টি। রিমা ওর ভালোবাসার পোষ্যকে নিয়ে আর হাই প্রোফাইল চাকরি করে জীবন কাটানো। এক বার দিল্লীর নয়ডা তো আবার দৌড়ে আরামবাগ যাতায়াত করা। আর তার মাঝেই দিদি গৌতমদাকে নিয়ে কিছুটা হলেও যেনো ভালো নেই। একটু ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন আপনমনে। 

একটা দৌড়ে বেড়ানো ছুটে বেড়ানো হেঁটে চলে বেড়ানো, দু হাতে বাজার নিয়ে এসে না হাঁফিয়ে আবার দোকান চলে যাওয়া মানুষটা কেমন যেনো থমকে গেলো তাঁর জীবনটা। সত্যিই আমি ভাবি জীবন বোধহয় এমনই হয়। সেই রিমার বিয়েতে গাড়ি নিয়ে যাওয়া। দিশার চণ্ডীগড় আসা। আরেফুলকে বলে দেওয়া। রাতের অন্ধকারে আরেফুল এর অপেক্ষা করা। সত্যিই এত ঝাপটা আর নানা ঘটনার সাক্ষী আমার এই আরামবাগ। আমার সাংবাদিক জীবনের নানা অধ্যায় এর সাক্ষী এই আরামবাগ। আর আজ সেই আরামবাগ যেনো কেমন দ্রুত বদলে গেছে। 

সিপিএমের লাল পার্টির দুর্গ এই শহর সবুজে ঘেরা শহর হয়েও কেমন যেন চেনা মানুষগুলো সব অচেনা হয়ে গেছে। কই সমীর ভান্ডারী তো আর আরামবাগের চেয়ারম্যান হয়ে আর ফোন করে না একবারও। সেই স্বপন নন্দী তো আর যোগাযোগ রাখে না একদম। আগে কাজ করতাম মিডিয়ায় যখন এরাই কত যে ফোন করতো আমায়। সেই চব্বিশ ঘণ্টার দিব্যেন্দু যে একদম ভুলেই গেছে কথাই বলে না আজকাল আর। সেই তন্ময় বৈরাগী আর প্লাস এ কাজ করত এখন টিভি নাইনে কাজ করে সেও আর ফোন করে না। সেই তুহিন একটু যোগাযোগ রাখে একমাত্র মাঝে মাঝে। আর সুব্রতর সাথে কথা হয় একটু। এটাই তো।আসল।জীবন। 

আর এইসব কিছুর মাঝেই দিদির কথা মনে পড়ে গেলো আমার আজ। মনে হলো লিখে ফেলি তাঁর কথা, সেই গৌতম দার হাসি মুখের কথা। সেই বৃষ্টি ভেজা দুপুরের কথা। যেদিন গৌতম দা নিজে গাড়ি করে সল্টলেকে নিয়ে গিয়ে দেবনাথ স্যার এর কাছে দেখা করিয়ে সোমাকে কাজ এর সুযোগ করে দেবার কথা। সেই আরামবাগে আমায় অনেকবার যেতে বলেছে দিদি, যেতে বলেছে তুহিনও। যাওয়া হয়নি আমার বহুদিন। 

সেই দৌড়ে বাস ধরা, সেই মায়াপুর পার হয়ে গৌরহাটি মোড় এলেই বাস এর কন্ডাক্টার এর চিৎকার হাসপাতাল মোড় বলে। এরপরেই আরামবাগ বাস স্ট্যান্ড। মনটা কেমন বাস থেকে নেমেই ভালো হয়ে যাওয়া। সুব্রতর সেই নীল রঙের মোটরসাইকেল নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা। বহুদিন যাওয়া হয়নি দিদির বাড়িতে আমার। এইবার ট্রেন পথেই যেতে হবে একদিন। ফিরে যেতে হবে সেই ফেলে আসা পথ ধরে, মাঠ ধরে, চাঁদুর ফরেস্টের রাস্তা ধরে অতীত স্মৃতি ধরে সেই আমার বাবার জন্মস্থান, প্রিয় স্থান আরামবাগে। ভালো থাকবেন দিদি আপনি। মন খারাপ না করে বিন্দাস থাকবেন। 

আরামবাগের দিদি - অভিজিৎ বসু।
চব্বিশ ডিসেম্বর দু হাজার চব্বিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ইটিভির পিনাকপাণি ঘোষ

কিছু মানুষ কত কাছে থেকেও পাশাপাশি এক জায়গায় বাস করেও একসাথে একসময় কাজ করেও যে কত দূরে রয়ে যান নিজের হাসিমুখ নিয়ে আর সেই চেনা ছন্দ নিয়ে সত্যিই বেশ ভালো মজার ব্যাপার কিন্তু এটা জীবনের মেঠো পথে। সেই ইটিভির বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে ঘুরে ঘুরে স্ট্রীট ফুডের ছবি তোলা আর নানা খবর করে খাওয়া দাওয়ার এপিসোড করে একসময়ে বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে যাওয়া ইটিভি নিউজে। আর আমাদের জেলায় বসে সেইসব হাঁ করে দেখা আর কেমন মনের ভেতর অস্থিরতা তৈরি হওয়া। একেই বলে কলকাতার রাজপথের সাংবাদিক বলে কথা।  সেই যে বার রাষ্ট্রপতি এলেন জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে সেই অনুষ্ঠানের বিশেষ কার্ড জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করা ইটিভির চাকরি করার সুবাদে। কোনো রকমে সেই কার্ড জোগাড় করে এনে দেওয়া তাঁকে আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য। আর সেই একদিন দুপুর বেলায় খুব সম্ভবত করোনা শেষ পর্বে বালিঘাট স্টেশন থেকে অফিস যাওয়ার সময় এসি পঞ্চাশ এর বাস এর ভিতরে দেখা হওয়ায় কত গল্প করা দুজন মিলে পুরনো দিনের। আবার উত্তরপাড়ার সেই বিখ্যাত চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে হাসি মুখে দেখা হয়ে যাওয়া রাতের বেলায় কাঁঠালবা...

আমাদের সবার মৃনাল দা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক বাবা আর ছেলের লড়াই এর গভীর গোপন কাহিনী। এই সাংবাদিকতার পেশায় এসে কত লড়াই, কত অসম যুদ্ধ, করে যে কেউ সংসার টিকিয়ে রাখতে পারে হাসি মুখে কাউকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে। এমন করে কেউ টিকে থাকার চেষ্টা করেন সেটা বোধহয় আমার জানা হয়ে উঠত না কিছুতেই। যদি না এই পেশায় আমি গা ভাসাতাম এমন করে। জীবনের এই নানা টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ ভেসে ওঠে এই রাতের অন্ধকারে আচমকা আমার মনের মাঝে। আর আমি চমকে উঠি কেমন করে তাদের সেই কোলাজ দেখে।  এমন এক চরিত্র, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়ে কেমন আলগোছে, হাসিমুখে, নির্মোহ ভাবে, শুধু নিজের কাঁচা পাকা দাড়িতে হাত বুলিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিলো সে শুধুই আকাশ পানে তাকিয়ে। যে নীল আকাশের গা ঘেঁষে উড়ে যাওয়া সাদা বকের ডানায় লেগে থাকে মেঘের হালকা টুকরো। একদম যেনো সিনেমার পর্দার হিরোর মতোই। দেখে বোঝার উপায় নেই একদম। পেটে খাবার না থাকলেও মুখের হাসিটা অমলিন হয়েই বেঁচে আছে আজও এতোদিন পরেও। আর সেই বিখ্যাত সাদা পাকা নাসিরউদ্দিন স্টাইলের দাড়ি, কালো চুল, আর সব সময় ধোপদুরস্ত ফিটফাট একজন মানুষ। রাত নটা বাজলেই যাকে শ্রীরামপুরে...

শপিং মলের উদ্বোধনে সিঙ্গুর আন্দোলনের দাপুটে মন্ত্রী

নালিকুল স্টেশন বাজারে একটি শপিং মলের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বেচারাম মান্না হাজির। একসময় যাঁর অন্দোলনের ঠেলায় পড়ে দৌড়ে একপ্রকার পালিয়ে চলে যেতে হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে টাটা কোম্পানিকে। যে আন্দোলনের দগদগে ঘা আর সেই স্মৃতি ধীরে ধীরে আজ প্রায় মিলিয়ে যেতে বসেছে আমাদের কাছ থেকে। আজ সেই চাষার ঘরের মানুষ না হলেও সেই কৃষক আর শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকার নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেন সেই মানুষটাকেই কেমন যেন আজ শপিং মলের উদ্বোধনে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার।  একদম নালিকুল স্টেশনের কাছে ঝাঁ চকচকে শপিং মল। দোকানে সাজানো জিনিস পত্র। আর সেখানেই আমাদের মাননীয় মন্ত্রী বেচারাম মান্না। একদম কেমন একটু আমার অচেনা লাগলো যেন। সেই মুড়ি খেয়ে আলুর তরকারি বা শশা খেয়ে আন্দোলন শুরু করা জমি আন্দোলন এর অন্যতম পথিকৃৎ নেতা আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তাহলে টাটা কোম্পানির বিরুদ্ধে যে জমি দখল নিয়ে আন্দোলন সেই আন্দোলন এর মধ্যে ছিল জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যদিও সেখানেও সেই সময়ের শাসকদলের কর্মসংস্থানের যুক্তি।তবে এই নতুন শপিং মলের উদ্বোধনে তো আর ...

ভীড়ের মাঝে একা

জীবন জুড়ে শুধুই ভীড় আর ভীড়। নানা ধরনের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় মানুষের গন্ধে, বর্ণে , স্বাদের ভীড়ে আমি একদম একা হয়ে যেতে চাই। যে ভীড় উপচে পড়া রাস্তায় শুধুই হেমন্তের ভোরে শিশিরের ফিসফিস শব্দ, পাখির কিচির মিচির আওয়াজ,ধানসিড়ি ওই নদীটির তীর ধরে ঘুঘুর আকুল মন কেমন করা ডাক, উদাসী শালিকের ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া ওই হেমন্তের হলুদ ধানের মাঠ এর পাশ দিয়ে, হলুদ বসন্ত বৌরীর সেই আমলকীর গাছের পাতায়,আড়ালে আবডালে বসে কেমন যেন আমায় দেখে লজ্জা পাওয়া, আর তারপর চোখ নামিয়ে হঠাৎ করেই তার উড়ে চলে যাওয়া। আর মেঘের কোল ঘেঁষে সেই সাদা বকের, বুনো হাঁসের, আর সেই পানকৌড়ির জলে ভেজা ডানা মেলে উড়ে যাওয়া আকাশ জুড়ে। সত্যিই ওরাও যে ভিড়ের মাঝেই বড়ো একা। একা একাই ওদের যে এই বেঁচে থাকা। কেমন নিপাট হৈ চৈ হুল্লোড়হীন একটা জীবন নিয়ে বেশ মজা করে, আনন্দ করে। আর সেই ভোরের আলোয় আলোকিত হয়ে রাস্তার একপাশে গুটি শুটি মেরে শুয়ে থাকা ওই সাদা কালো ভুলো নামের কুকুরের। যে অন্তত এই সব মানুষদের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় একটু যেনো আলাদা , একটু যেনো অন্য রকমের। একটু একা একাই যেনো ওর এই আলগোছে জীবন কাটিয়...

গৌড় প্রাঙ্গণে আনন্দবাজার

গৌরপ্রাঙ্গনে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যের আনন্দের মেলা আনন্দবাজার। মহালয়ার ভোরবেলায় ঢাকের বাদ্যি আর সানাইয়ের মন কেমন করা সুরে মেতে উঠলো শান্তিনিকেতনের গৌড়প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও যে হবে আনন্দমেলা আনন্দবাজার। হ্যাঁ সত্যিই যেনো আনন্দের এই হাটে বেচাকেনার পসরা নিয়ে একদিনের জন্য বসে পড়া মন প্রাণ খুলে হৈ হুল্লোড় করে। এই মেলা শুরু হয় 1915 সালের 15 এপ্রিল নববর্ষের দিনে। কিন্তু আগে এই মেলাকে একসময় বলা হতো বৌঠাকুরাণীর হাট। সেই সময় আশ্রমের মহিলারা নিজেদের হাতের তৈরি জিনিস নিয়ে মেলায় বসতেন। মেলার আয়োজন করতেন তারা। আনন্দ করে বেচাকেনা হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় একবার গরমের ছুটির আগে এমন মেলা নাকি হয়েছিল। যার নাম ছিল আনন্দবাজার। পরে এই মেলার নামে হয়ে যায় আনন্দমেলা। সত্যিই আনন্দের এই মিলন মেলা।  প্রথমদিকে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই মেলা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে বিশ্বভারতীর সব বিভাগের পড়ুয়ারা এই মেলায় যোগদান করে। এই মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের বেচা কেনার লাভের টাকার কিছু অংশ জমা পরে বিশ্বভারতীর সেবা বিভাগে। সেখান থেকে এ...