সাদা জীবনের কালো কথায় কিছু মানুষের কথা লিখতে বসে মনে হয় কি আর হবে তাদের নিয়ে লিখে ফেলি আমি নানা গভীর গোপন কথা। যাদের আশ পাশে ঘুরে বেড়িয়েছি আমি নিজের ছন্দে। হাসিঠাট্টা করে আপন মনে জীবন কাটিয়েছি সহজ সরল ভাবে একদম ভয় না পেয়ে। তাদের কথা সেই অতীত দিনের কথা মনে পড়ে গেলে আর ক্ষতি কি। সেই সব নানা কথা মনে পড়লে তো ক্ষতি নয় কিছুই লিখলে তাদের কথা। ভয়ের কিছু নেই।
কিন্তু এদের মাঝেও এমন কিছু মানুষ ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকেন আমার জীবনের আশপাশে না হলেও। সেই কাঁটাতারের বেড়ার ওপারে যাঁদের কথা লিখতে বসলে ভয় হয়, হাত কাঁপে, বুকের মাঝে গুরুগুরু শব্দ সৃষ্টি হয়। ঠিক যেনো তাঁর লেখা কবিতার লাইনের মতোই সেই সিঁড়ি স্বপ্ন আর ঢালু স্বপ্নের মতই মনে হয় এই বোধহয় ভুল হলো আর আমি গড়িয়ে গেলাম এক অতলান্ত গহ্বরে। সত্যিই আমার এই রাতদুপুরের লেখার নেশায় আমাকে আচ্ছন্ন করে বারবার। আর নেশার টানে লিখতে বসি আমি ভয়ে ভয়েই।
আজ তেমনি একজন বিখ্যাত সাংবাদিক, কবি, আর নিজের বেড়ার চারপাশে লক্ষণরেখা টেনে কালো রোদচশমার ঘেরা টোপে নিজেকে বন্দী করে ঘুরে বেড়ানো এক গম্ভীর মুখের মানুষের কথা। যাঁর হাসি মুখ দেখার সৌভাগ্য হয়নি আমার কোনোদিন খুব অল্প কিছুদিন কাজ করার সুবাদে। আর তাই আমার অভিজ্ঞতার ঝুলিতে খুব বেশি কিছু জমাও পড়েনি তাঁকে নিয়ে লেখার জন্য। তবু বুকে সাহস সঞ্চয় করে লিখতে বসলাম সেই বিখ্যাত সাংবাদিক সাম্যব্রত জোয়ারদার এর কথা। সবার সেই সাম্যদা।
যাঁর কবিতার লেখায় উঠে আসে দুই স্বপ্নের কথা। যে দুই ধরনের স্বপ্ন দেখে হঠাৎ করেই জেগে ওঠে মাঝ রাতে। সাদা পাতার মাঝে কলমের আঁচড় কেটে আঁকিবুঁকি অক্ষরের জাল বোনে আপনমনে। আর মনে মনে ভাবে সত্যিই যদি এই জীবনে দুই ধরনের স্বপ্ন দেখে এলেবেলে এলোমেলো বিন্দাস জীবন কাটিয়ে দেওয়া যেতো কি ভালই যে হতো তাহলে কে জানে। আর তাই বোধহয় রাতের অন্ধকারে তিনি লিখে ফেলেন, পিচ্ছিল শব্দের ধ্বনি রসাতল করে। না, এই মানুষকে নিয়ে কিছু লেখার সাহস বুকের পাটা যে আমার এই রাতদুপুরে করা উচিত হয়নি সেটা আমার আগেই বোঝা উচিত ছিল কিন্তু।
কি আর করা যাবে যখন শুরু করেছি শেষ তো করতেই হবে এই লেখা লেখা খেলা। সেই রাতের অন্ধকারে দুই বন্ধুর অফিস করে ঘরে ফেরার গল্প। সেই মাঝরাতে আচমকাই গাড়ি থামিয়ে দিয়ে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসুর মূর্তি দেখে গাড়ি থামিয়ে মাঝ রাস্তায় দাঁড়িয়ে পড়া। মাঝরাতের ভবঘুরে জীবন নিয়ে বাড়ী ফেরার আগেই সেই লাইট পোস্ট ধরে দিল্লি চলো ডাক দেওয়া স্বপ্ন দেখানো মানুষটির খুব কাছে পৌঁছে যাওয়া দ্রুততার সাথে। তার কাছে পৌঁছে গিয়ে তাকে একটু মেপে ফেলার চেষ্টাও করা। আর সেই রাতে দুই অভিন্ন হৃদয় বন্ধুর এমন কর্মকাণ্ড দেখে পুলিশের তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে সরে পড়া ঘটনাস্থল থেকে। সত্যিই এমন কত যে ঘটনা এই দুই অভিন্ন হৃদয় বন্ধুর কাছে আজও অমলিন হয়ে বেঁচে আছে এই কলকাতা শহরের নানা রাস্তায় কে জানে।
সেই পিসিআর এর চেয়ারে বসে যে মানুষটা কবিতার ছন্দের মতই খবরের ছন্দ মেলাতে যিনি ওস্তাদ বলেই প্রতিপন্ন হন এই বাংলা মিডিয়াতে এখনও। একসময়ে যে বাংলার এক সময়ের দু নম্বর আর মাঝে কিছুদিন এক নম্বর চ্যানেল করতে সচেষ্ট হন শুধু একজনের নেতৃত্বে কাজ করে। আজ যদিও সেই খবর পাগল মানুষটি আর নেই। সেদিনের তাঁর দুই পাশে থাকা এই দুই স্তম্ভ তো আজও মনে হয় মিস করেন তাঁকে বার বার। সত্যিই এমন মানুষদের সাথে আমার খুব বেশি কাজ করা হয়নি। ধমক খাওয়া হয়নি তাঁদের কাছে। আর তাই একটু সাহস নিয়েই মাত্র কিছুদিনের কাজের সুযোগ পেয়ে কাজ করতে গিয়ে যেটুকু দেখলাম সেটাই লিখে ফেললাম আমি এই সাদা জীবনের কালো কথায়।
সেই পোদ্দার কোর্টের পুরোনো অফিস। সেই অ্যাসাইনমেন্টের টেবিলে আমার বসে থাকা। সামনে ভিডিও দেওয়ালে ঝুলে থাকা নানা টিভি চ্যানেলের সব আউটপুট। সেদিকে নজর রাখা কোন চ্যানেলে কি খবর ধরালো। কিন্তু এই জায়গায় পার্থক্য শুধু একটাই যে নিজের হাতে টাইপ করে ব্রেকিং নিউজ লিখে দ্রুত ধরিয়ে দেওয়া নিজের চ্যানেলে। সেরকম এক বিকেলের সময় দ্রুত ঘটনার ঘনঘটা। বিজেপির নেতা শুভেন্দু অধিকারী নেতৃত্বে মিটিং হবে কি হবে না সেটা নিয়ে নানা আপডেট। আমায় লিখতে বলা হয়েছে শুভেন্দু অধিকারীর লাইন। আমিও তাঁর নির্দেশ পেয়ে লিখে চলেছি নানা খবরের আপডেট।
আর তার মাঝেই হাসি মুখে আমার কাঁচের ঘরে ডাক পড়া। কেনো শুভেন্দু লেখা হচ্ছে উত্তরপ্রদেশের অ্যাম্বুলেন্স উল্টে যাওয়ার খবর ছেড়ে। যিনি আমায় লিখতে বলেছিলেন তিনিও চুপ। আমি তো টাইপিস্ট এর কাজ করছিলাম মাত্র। খবরের প্রকাশের বিষয় সমূহ নিয়ে ভাবনা তো অন্যদের বড়দের আমার মত টাইপিস্ট এর নয়। আমি শুনলাম কিছু টাকার চাকরি দেওয়ার জন্য কটু মন্তব্য।আর ঘর থেকে বেরিয়ে ব্যাগ কাঁধে বেরিয়ে পড়লাম আমি অফিস ছেড়ে পোদ্দার কোর্ট ছেড়ে সেই সন্ধ্যায়। সবাইকে ছেড়ে। যদিও সেই মুহূর্তে শুভেন্দু অধিকারীর খবর ছিল ঠিক খবর যা ধরানো দরকার ছিল। যা আমায় লিখতে বলা হয়েছিল সেই সময়।
না, তারপর কেউই আর ফোন করেন নি আমায় কোনোদিন। সেই বিখ্যাত কবি ও সাংবাদিক কোনও মন্তব্য করেননি আর। কথাও হয়নি আর তাঁর সাথে আমার বহুদিন। যা আমাদের দুজনের এমন নিগূঢ় বন্ধন এর সম্পর্কও আমাদের দুজনের ছিলনা তেমন কিছুই যে পরে কথা হবে আবার। বানান নিয়ে জিজ্ঞাসা করলে কিছুটা হয়তো বলে দিতেন তিনি একটু হাসি হেসেই। আর নিজের কম জানা নিয়ে আত্মগ্লানি আর লজ্জায় মরে যেতাম আমি সেই সময়। কি করবো পেট যে বড়ো বালাই। স্বপ্ন দেখে কি আর পেট ভরে শুধুই।
তবুও আজ এই রাতের অন্ধকারে আচমকা মনে পড়ে গেলো আমার এই কবির কথা, সেই সাংবাদিকের কথা। এই বিখ্যাত খবর নিয়ে কাটাছেঁড়া করা আর পোস্টমর্টেম করা সেই মানুষটার কথা। যাঁর খবরের প্রতি ভালোবাসা আর খবরের পায়ের আওয়াজ শুনে যাঁর প্রতিবর্ত ক্রিয়া বা রিফ্লেক্স অ্যাকশন ছিল দেখার
মতই নিউজ রুমে।
যা দেখেই হয়তো সেই হারিয়ে যাওয়া মানুষটা তাঁকে পছন্দ করতেন আর বড়ো ভরসা করতেন। জানি না কেমন হলো আমার এই আঁকাবাঁকা অক্ষরে আঁকি বুঁকি ব্লগের এই লেখা। ভুল হলে ক্ষমা করে দিও তুমি। ভালো থেকো। আর মাঝে মাঝেই আশ্রয় চাইলে বুকে নয়, তোমার পায়ে আশ্রয় দিও তুমি। যদি বুড়ো বয়সে এসে কিছু শিখতে পারি আমি তোমার থেকে। ভালো থেকো দাদা তুমি।
খবরের ও শব্দের জাদুকর সাম্যব্রত জোয়ারদার - অভিজিৎ বসু।
ঊনত্রিশ ডিসেম্বর দু হাজার চব্বিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন