সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

রাত পোহালেই বড়দিন


রাত পোহালেই সেই বড়দিন। বছর শেষের বড়দিন। জীবনের হাজারো সুখ দুঃখ, ঝড় ঝাপটা সামলানোর বড় দিন। আনন্দ আর নিরানন্দের মাঝে মেরি ক্রিসমাস আর জিঙ্গেল বেলের শব্দের মূর্ছনায় শীতার্ত হৃদয়ের বড়দিন। চারিদিক জুড়ে সমাজ মাধ্যমে শুধুই বড়দিনের বড়ো বড়ো ছবির উচ্ছাস আর তার মাঝে নিজেকে নিপুণ সাজে প্রস্ফুটিত করা ঠিক যেনো লাল গোলাপের মতো। লাল পোশাকে, লাল ঠোঁটে লন্ডনের টেমসের ধারে দাঁড়িয়ে বড়দিন পালনের মেরি ক্রিসমাস এর মিষ্টি হাসি। কেউ আবার নিউইয়র্ক এর সু উচ্চ টাওয়ার এর নিচে দাঁড়িয়ে দু হাত ছড়িয়ে বড়দিনের শুভেচ্ছা বার্তা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করা দুর দেশ থেকে নিজের দেশে। কেউ আবার পৌষ মেলার মাঠে পৌঁছে গিয়ে মেলার ভীড়ে হাজির হয়ে বড়দিনের শুভেচ্ছা জানাতে প্রহর গোনা। 


আসলে এই বছর শেষের কটা দিনের মাঝে বড়ো দিন যে সত্যিই আমাদের কাছে বেশ বড়ো একটা দিন। যে দিন প্রভু যীশুর জন্মদিন। কেউ কেউ বলেন সেটা নিয়েও নাকি আবার জোর যুক্তি তর্ক আর আলোচনা আছে বিতর্কও আছে। কিন্তু এই বড়ো দিন তো সেই ক্রুশবিদ্ধ প্রভু যীশুর হাসি মুখে সবাইকে ক্ষমা করে দেওয়ার একটা দিন। বিশ্বাসঘাতকদের চোখ বুজে হাসি মুখে বন্ধু বলে মেনে নেওয়ার একটা দিন। সত্যিই অসাধারণ এই বড়দিনের ভাবনা, আয়োজন, উচ্ছাস, জিঙ্গেল বেল,জিঙ্গেল বেল এর মন মাতানো সুরের জাদু, মধ্যরাতে গির্জার ঘণ্টার আওয়াজ, প্রভু যীশুর কাছে হাতজোড় করে প্রার্থনা, সেই প্রভুর বিখ্যাত উক্তি, ওরা জানেনা ওরা কি অপরাধ করেছে, ওদের ক্ষমা করে দাও তুমি।


 সত্যিই অসাধারণ এই বড়দিনের বার্তা। সকলকে ভালোবেসে অপরাধীকে জেনেও, চিনেও বুকে টেনে নিয়ে হাসি মুখে ক্ষমা করার বার্তা। আমার মনটা কেমন যেন বিধুর হয়ে ওঠে। সেই বারোজন বন্ধুর একসাথে দেখা হওয়া। কেমন হাসি, আনন্দ গানে মশগুল হয়ে যাওয়া আর সেই বন্ধুত্বের মাঝেই কেমন তাল কেটে বিশ্বাসঘাতকতার বর্ম পড়ে মুখ লুকিয়ে বন্ধুকেই ছুরি মারা। আর রক্তাক্ত হয়েও কেমন অনাবিল আনন্দের জোয়ারে ভেসে প্রভুর কাছে ভালোবাসার স্পর্শ মাখা হৃদয়ের উত্তাপ ছড়িয়ে দেওয়া। সত্যিই এই দিনটা বেশ বড়ই একটা দিন। যে দিনটা কিছুতেই অন্যদিনের মতো ছোটো হতেই পারে না যে।

মনে পড়ে গেলো আমার সেই ছোটবেলার বড়দিনের কথা। সেই ছোটো বেলার বড়ো দিনের আশপাশে এত হৈ চৈ হুল্লোড় ছিলনা একদমই। ছিলনা এত উৎসবের এত আয়োজনও। হাজার দুঃখ কষ্ট সহ্য করেও নিজেকে প্রস্ফুটিত করার এত যাতনা ছিলনা সেই সময় কারুরই। কেমন হাসিমুখেই নীরবে নিভৃতে চার্চের গেট সেজে উঠত লাল,নীল, সবুজ নানা রঙের সুদৃশ্য কাগজে। উত্তুরে হাওয়া বুঝিয়ে দিত বড়দিনের শুভেচ্ছা জানানোর দিন হাজির হয়েছে আমাদের দরজায়। 


রাত বাড়লেই উপহার নিয়ে হাজির হওয়ার দিন সেই আমলে তখনও এত বেশি করে জনপ্রিয় হয়নি সান্তা বুড়োর আগমন বার্তা বাড়ির দরজায় দরজায়। আমাদের শ্রীরামপুরের ভাড়া বাড়ির পাশে সেই এঁদো পুকুরের ধারে অমিতা বেকারীর ভাঙা জানলা গলে মিষ্টি কেকের সুবাস গলে গলে ছড়িয়ে পড়তো সাড়া পাড়াময়। আর আমরা সেটা টের পেয়ে বুঝতাম বড়দিন এসে গেছে খুব কাছেই। তারপর সত্যিই বড়দিন জানলায় এসে টোকা মারতো। কেমন আনন্দে উচ্ছাসে সেই ছোটো কম টাকার মিস্টি কেক, কেকের ভিতর লাল এক টুকরো চেরির স্বাদ, শুকনো কিসমিসের মন ভালো করা স্বাদ আজও কেমন করে যেনো মুখে লেগে আছে আমার। সত্যিই ছোটো বেলার সেই বড়ো দিনটা বোধহয় সত্যিই বেশ ভালো ছিল। 


দিন বদলে গেছে ছোটকাল এখন বুড়ো বয়সে এসে পৌঁছে গেছে আমার সেই বড়দিন। যে দিন আর নতুন করে প্রাপ্তি আর অপ্রাপ্তির সীমারেখা টেনে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েই বেঁচে থাকার চেষ্টা করতে হয়। সম্পর্কের সরু সুতোয় জং ধরেছে অনেক আগেই। তবু এর মাঝেই দরজার বেল বেজে ওঠে বড়দিনের আগের সন্ধ্যায়। হাসি মুখে দরজা খুলি আমি। দেখি সেই শামীম যার সাথে শুধুই আমার ফোনে পরিচয় মহম্মদ বাজারের এক অঙ্গারগোড়িয়া গ্রামের ছেলে। সে আমার জন্যে বড়দিনের কেক পাঠিয়ে দিয়েছে। আমি কেমন অবাক হই। বিহ্বল হই।


ফিরে যাই আমার ছোটবেলায়। সেই বেকারীর ভাঙা জানলা, সেই উত্তুরে হাওয়া, সেই কেকের মিষ্টি সুবাস আমার সারা ঘরময় ছড়িয়ে পড়ে বড়দিনের ঠিক আগেই। দু চোখ ঝাপসা হয়ে আসে আমার। কেকের মিষ্টি সুবাস আর নোনতা জল কেমন মিলে মিশে একাকার হয়ে যায়। আমি মনে মনে ভাবি সত্যিই আজ আমার জীবনের বিশেষ একটা বড়দিন। যে দিনটা আমি এই বুড়ো বয়সে এসে পেলাম। যে দিনটাকে ভুলতে পারবো না আমি কোনোদিনই। আমি প্রভু যীশুর কাছে হাতজোড় করে নমস্কার জানাই। দূরে বেজে ওঠে জিঙ্গেল বেল এর সুর, গির্জায় বেজে ওঠে ঘণ্টার ধ্বনি। জানলা দিয়ে দেখি কুয়াশা মাখা পথ ধরে আমার সান্তা কেমন করে যেনো শামীম হয়ে গেছে। হেঁটে চলেছে ধীর পায়ে গীর্জা পার হয়ে, মন্দির পার হয়ে, মসজিদের দিকে। গির্জার ঘণ্টার আওয়াজ, মন্দিরের প্রদীপের আলো, মসজিদের নামাজ  এর সুর সব মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়।

রাত পোহালেই বড়দিন - অভিজিৎ বসু।
চব্বিশ ডিসেম্বর, দু হাজার চব্বিশ।
ছবি নিজের ক্যামেরায় তোলা।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

জামালপুরের প্রদীপ দা

আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায় বর্ধমানের জামালপুরের সেই দাপুটে ঠোঁট কাটা সাংবাদিক প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় এর কথা। সেই বিখ্যাত সুভাষ তালুকদার এর কাগজ সংবাদে মাত্র এক টাকার কাগজে কাজ করা সংবাদ পত্রিকার দাপুটে সাংবাদিক সেই প্রদীপ দা। সেই মুখ্যমন্ত্রীর সভায় বাঁশের ব্যারিকেডের এপারে দূরে দাঁড়িয়েও যে খবর করা যায় সেটা বড়ো মিডিয়ার সাংবাদিকদের হাসি মুখে দেখিয়ে দিয়ে, আর তাদের খবরের ময়দানে গোল দিয়ে শুধু খবরকে ভালোবেসে ছোটো কাগজে কাজ করে চলা সর্বদা হাসি মুখের সেই আমাদের প্রদীপ চ্যাটার্জী দা।  কোথাও কোনো অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদে মুখর হয়ে যাওয়া আর এক দৌড়ে বেরিয়ে পড়া ঝোলা কাঁধে সেই খবরের খোঁজে সেই জামালপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের সেই প্রদীপ দা। সেই বিখ্যাত পন্ডিত রবিশঙ্কর আর উদয়শঙ্কর এর আপন মাসতুত ভাই এর ছেলে সেই প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় দাদা। সেই বামদের আমলে জামালপুরের এলাকায় দাপিয়ে খবর করে ছুটে বেড়ানো সেই প্রদীপ দা। সেই তৃণমূল আমলেও একভাবেই ছুটে বেরিয়ে কাজ করা আমাদের সদা ব্যস্ত প্রদীপ দা।  সেই বাবার অসুস্থতার কারনে বড়ো সংবাদ মাধ্যমে কাজ না করেও...

আমার স্যার কাজীদা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ আমার স্যার এর কথা। যার লেখা আজ হঠাৎ চোখে পড়লো একটি কাগজে। আর স্যার এর নামটা দেখেই মনে পড়ে গেলো নানান কথা। হ্যাঁ, সেই কাজী গোলাম গাউস সিদ্দিকী। যাঁর সাথে আমার আলাপ আর দেখা হয়েছিল সেই অজিতদার ফ্রিল্যান্স ছকু খানসামা লেনের ফ্রীল্যান্স প্রেস ক্লাবের অফিসে খুব সম্ভবত। হাসিখুশি বেশ অজাতশত্রু এই মানুষটিকে দেখেই আমার মনে হয়েছিল যে রিপোর্টারদের প্রভূত ক্ষমতা থাকে বোধহয়। তাই পকেটে পেন আর সেই ফোনের ছোট্টো নোটবুক দেখেই আমার মনে হয়, যে ক্ষমতার স্বাদ পাবার জন্য সেই সদ্য গ্র্যাজুয়েশন করে আমার কচি মনে সাংবাদিক হবার বাসনা জাগে সেই সময়।  কোনো প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক নয়, কোনো অফিসে মাছি মারা দশটা পাঁচটার লোয়ার ডিভিশন এর কেরানি নয়, মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ নয়, ল্যাবরেটরিতে টেকনিশিয়ান এর কাজ নয়, এল আই সি বা পোষ্ট অফিস এর এজেন্ট নয়, কোনো মুদি দোকানে হিসেব পত্র লেখার কাজ নয়, স্বাধীন ব্যবসা করা নয়। শুধুই সাংবাদিক হবার স্বাদ।  কাগজে সাদা কালো অক্ষরে নিজের নাম ছাপা হবে, সেই নাম দেখে বুক ফুলে যাবে, পাড়ায় প্রতিবেশীরা সহ স...

কুড়ি থালা দশ টাকা আর রসিক মুলুর জীবন

নাম মুলু হাঁসদা। বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানার চরিচা গ্রাম পঞ্চায়েত এর চর ইচ্ছা রঘুবরপুরের বাসিন্দা মুলু। আজ মুলুর জীবন কথা। গ্রামের নামটা ভারী অদ্ভুত। চর ইচ্ছা রঘুবরপুর। যে গ্রাম অন্য পাঁচটা গ্রামের মতই।সাদামাটা এই গ্রামে দারিদ্র্য, অপুষ্টি আর কর্মহীন জীবনের জলছবি সুস্পষ্ট। আর সেই গ্রামের মহিলারা নিজেদের সংসার রক্ষা করতে গাছের পাতাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে। গাছের পাতা মুলুদের জীবনের জিয়ন কাঠি। যে জিয়ন কাঠিতে তারা ভোর হতেই পেটের টানে চলে যায় জঙ্গলে। খস খস শব্দ করে পায় হেঁটে তারা পাতা তোলে। গাছ থেকে টুপ টাপ করে ঝড়ে পড়া পাতাকে একটা একটা করে নিজের শাড়ির আঁচলে ভরে নেয়। তার পর সব পাতাকে বস্তায় ভরে ঘরে ফেরে।  ঠিক যেভাবে তারা পুকুরে নেমে শামুক গেঁড়ি আর গুগলি তোলে। যে ভাবে তাদের উদর পূর্তি হবে বলে। আর এই পাতাও যে তাদের পেট ভরায়। একটা একটা পাতাকে নিজের সন্তানের মতো আলগোছে ছুঁয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে চুমু খায় মুলু, বলে তোরা না থাকলে কি করতাম কে জানে। মাথার ওপর শাল সেগুনের বিশাল আকারের গাছগুলো চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে আর তারা চুপ করে শোনে মুলুর কথা।  একে অপ...

শুভ মকর সংক্রান্তি

মকর মানেই নতুন জামা কাক ভোরে স্নান, রাত্রি জেগে মিঠে সুরে টুসুমণির গান। মকর মানেই পিঠে - পুলির গন্ধে ম - ম হাওয়া, ডুলুং পাড়ে টুসুর মেলায় দল বেঁধে যাওয়া। মকর মানেই মোরগ লড়াই পাহুড় জেতার সুখ, সন্ধ্যা - রাতে মাংস পিঠের স্বাদে ভরা মুখ। মকর মানেই হাতি - ঘোড়ার পুজো করম তলে, সান্ধ্য হাওয়ায় মন উদাসী দিমির দিমির বোলে। আসলে আজ এই মকর সংক্রান্তির দিন, টুসু মেলার দিন, টুসু গানে নিজেকে মাতিয়ে দেবার দিন। অজয় এর ধারে জয়দেব কেঁদুলির মেলায় ভীড়ের মাঝে নিজেকে হারিয়ে দেবার দিন। অজয় এর জলে ডুব দিয়ে স্নান করে পূণ্য অর্জনের দিন। আর নদীর ধারে মোরগ লড়াই এর দিন। আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর দিন, সুতো লাটাই হাতে আকাশ পানে তাকিয়ে থাকার দিন। কেমন যেনো রাশির একটি স্থান থেকে অন্য রাশিতে স্থান পরিবর্তনের দিন। সূর্যের দেবতাকে সকালে উঠে স্নান সেরে প্রণাম জানিয়ে শক্তি সঞ্চয় এর দিন। সূর্যের উত্তর দিকে চলে যাবার দিন। ধীরে ধীরে শীতকাল চলে যাওয়ার দিন।  এই মকর সংক্রান্তি এর ইতিহাস ও ভারতীয় ঐতিহ্যের গভীর শিকড় রয়েছে। এটি কৃষি চক্র এবং ফসল কাটার মৌসুমের সাথে জড়িত। এই মকর সংক্রান্তি চ...