সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

রিপোর্টার পূজা মেহেতা

একদম সহজ সরল হাসিখুশি একটি মেয়ে। জাতীয় চ্যানেলের প্রথমে সেই জি নিউজ এর পরে টাইমস নাউ এর রিপোর্টার হয়েও একভাবেই না বদলে হাসিমুখে সবার সাথে ব্যবহার করা একজন রিপোর্টার। আর দেশের মাটি ছেড়ে বিদেশের মাটিতে গিয়েও কেমন সেই এক রয়ে যাওয়া আর আমাদের মত পাতি লোকদের চিনতে পারা একভাবেই ভুলে না গিয়ে। সত্যিই এটা ওর একটা বড়ো গুণ কিন্তু। আমি চব্বিশ ঘণ্টার অফিসে প্রথম ওকে দেখেছিলাম সেই এডিটর অনির্বাণ চৌধুরীর কাঁচের ঘরে বসে আছে ও। 


একদম সেই দাদা, দাদা বলে ওর ছোটো মেয়ের মতো বায়না করা। সেই সুন্দর সহজ সরল ভাবে গিফট আদায় করতে হবে যে কোনোভাবেই ওকে। বেশ মজা লেগেছিল আমার সেই ওর ঘড়ি না কি যেনো আবদার ছিল ওর সেদিন। আর অনির্বানদার হাসি মুখে তাকে যে কোনও ভাবে কাঁচি করে দেওয়া। সেই আলাপ শুরু আমার আর ওর। আর এরপর দাদা কাল একটা ক্যামেরা গাড়ি লাগবে আমি ফেসিলিটিকে বলে দিয়েছি তোমায় জানিয়ে দিলাম দাদা বলে অ্যাসাইনমেন্টের টেবিলে এসে বলে যাওয়া আমায় সেই পোদ্দার কোর্টের অফিসে। সেই থেকেই তো শুরু আমাদের চেনা পরিচয় আর আলাপ পর্ব।

 আর সেই আলাপ থেকেই সেই নানা সময়ে রাতে ওর সাথে সেক্টর ফাইভ থেকে গাড়ি করে ফেরা। কোনোদিন বিরক্ত হয়নি তার জন্যে। এসএসকেএম এর সামনে নামিয়ে দেওয়া ঝড় বৃষ্টির মাঝেও হাসি মুখে। সাথে সেই জি নিউজ এর বিখ্যাত ক্যামেরাম্যান দেবু দা থাকতেন। এইভাবেই তো অ্যাসাইনমেন্টের সাথে ওর বেশ ভালো সম্পর্ক গড়ে ওঠে। যে সম্পর্ক আজও রয়ে গেছে আমাদের অনেক উপরে আর দূরে সরে গেলেও। ওর বিদেশের মাটি থেকে উজ্জ্বল ছবি দেখে আমার বেশ ভালো লাগে আজ। মনে হয় সত্যিই তো এই চেনা রিপোর্টার আজ অচেনা হয়ে যায়নি একদম কিন্তু মই বেয়ে অনেক ওপরে উঠেও। যেটা আজকাল আর মনে রাখে না এইভাবেই।

হ্যাঁ আজ সেই বিখ্যাত জী নিউজ এর এক সময়ের বিখ্যাত রিপোর্টার বর্তমানে টাইমস নাউ এর প্রতিনিধি রাজ্যের, সেই হাসি মুখের মেয়ে পূজা মেহেতার কথা আমার সাদা জীবনের কালো কথায়। যে পূজা মেহেতা মুখ্যমন্ত্রীর সাংবাদিক বৈঠকে যে কোনো উপায়ে যে কোনো প্রশ্ন করতে একটুও ভয় পায়না সে কোনো ভাবেই। যে যে প্রশ্ন করতে হবে বিনা ভয়ে বুক ঠুকে করে ফেলে প্রশ্ন সে দিদি বলে। আর দিদিও নিজের এলাকার মেয়ে বলে ভবানীপুর এর মেয়ে পুজা উত্তর দেন হাসিমুখেই। ওর বিয়েতেও মূখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং হাজির হন সপারিষদ।

আর যে পূজা যত ঝামেলার ইন্সিডেন্ট হোক সেখানে গাড়ি আর ক্যামেরা পার্সন নিয়ে পৌঁছে যেতে একবারও তার বুক ভয়ে কেঁপে ওঠে না। যে পূজা সুন্দর ঝরঝরে হিন্দী, বাংলা, ইংরাজি আর গুজরাটি ভাষায় কথা বলতে গিয়ে আটকে যায়না কোনো দিন কোনও সময়। আর এই ধরনের একজন রিপোর্টারকে পছন্দ করে সবাই রাজনৈতিক নেতা, মন্ত্রী, মূখ্যমন্ত্রী স্বয়ং থেকে শুরু করে পুলিশ অফিসার আর আমলা সবাই। আজ সেই পূজার কথা আমার আঁকিবুঁকি ব্লগে।

 
যে এতো বড়ো একজন রিপোর্টার হয়েও কেমন মাটিতে পা রেখেই হেঁটে চলে বেড়ায় সে আপনমনে। কোনো অহংকার আর আত্মগর্বে গর্বিত হয়ে চেনা মানুষদের কাছে অচেনা হয়ে যায় না কিছুতেই। যেটা ওর সব থেকে বড়ো গুণ। যা আজকালকার দিনে দেখা পাওয়া বেশ দুষ্কর। আর তাই ওর এই বিদেশ যাত্রার হাসি মুখের নানা ছবি দেখে মনে মনে বেশ খুশী হলাম আমি। সত্যিই ওর সাথে কত যে নানা স্মৃতি নানা রকম উল্লেখযোগ্য ঘটনার কথা মনে পড়ে যায় আমার আজ। 

সেই প্রেস ক্লাবে ওর সাথে চব্বিশ ঘণ্টা ছেড়ে দিয়ে চলে আসার পর একদিন দেখা হওয়া। ওর হেসে দাঁড়িয়ে দাদা বলে কথা বলা। আমার বেশ ভালো লাগলো সেদিন। যেখানে চব্বিশ ঘণ্টার চ্যানেলে যেখানে কাজ করলাম তারা কেউ চিনতে পারে না পাশ কাটিয়ে চলে যায়। সেখানে এই জাতীয় চ্যানেলের একজন ভিন রাজ্যের বাসিন্দা হয়েও কেমন করে যে আমায় চিনতে পেরে দাঁড়িয়ে কথা বললো ও সত্যিই এই ঘটনায় আমি বেশ অবাক হয়ে যাই। আজকাল আর এমন করে কে আর পুরোনো লোকদের মনে রাখে।

 হয়তো সেই অনির্বাণ চৌধুরীদার কথায় আরে গুজ্জি বলে ডেকে ওঠা হঠাৎ করেই। আর ওর বলা আসছি দাদা। ও নিজেও সেই মোদীর রাজ্যের লোক বলতে দ্বিধা হয়না তার বরং আনন্দের সাথে এটা বলে ও সবাইকে বেশ গর্বের সঙ্গে। বেশ হিসেব করে চলা মেয়ে ও। তবে ধীর পায়ে ধীর গতিতে ওর এই এগিয়ে চলা আর ওর হাসি মুখে সবাইকে জয় করে নেওয়া দেখে মনে হয় ওর এই স্টাইলটা কিন্তু মন্দ নয় বেশ ভালো স্টাইল। 

যেটাকে সামনে রেখে ও কিন্তু নিজেকে একদম না বদলে বেশ সিঁড়ি বেয়ে টপকে এগিয়ে চলেছে সামনের দিকে। ওর এই এগিয়ে চলা আরও সুদৃঢ় হোক। ওর জীবন আরও সুন্দর ও মধুময় হোক। ভালো থেকো তুমি পুজা। নিশ্চয়ই কলকাতা গেলে একদিন দেখা হবে তোমার সাথে। পুরোনো দিনের স্মৃতি মনে পড়বে। আড্ডা হবে আমার তোমার আর বসের। সেই দিন এর অপেক্ষায় রইলাম আমিও। ভালো থেকো তুমি। 

রিপোর্টার পূজা মেহেতা - অভিজিৎ বসু।
ঊনত্রিশ ডিসেম্বর, দু হাজার চব্বিশ ‌
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ইটিভির পিনাকপাণি ঘোষ

কিছু মানুষ কত কাছে থেকেও পাশাপাশি এক জায়গায় বাস করেও একসাথে একসময় কাজ করেও যে কত দূরে রয়ে যান নিজের হাসিমুখ নিয়ে আর সেই চেনা ছন্দ নিয়ে সত্যিই বেশ ভালো মজার ব্যাপার কিন্তু এটা জীবনের মেঠো পথে। সেই ইটিভির বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে ঘুরে ঘুরে স্ট্রীট ফুডের ছবি তোলা আর নানা খবর করে খাওয়া দাওয়ার এপিসোড করে একসময়ে বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে যাওয়া ইটিভি নিউজে। আর আমাদের জেলায় বসে সেইসব হাঁ করে দেখা আর কেমন মনের ভেতর অস্থিরতা তৈরি হওয়া। একেই বলে কলকাতার রাজপথের সাংবাদিক বলে কথা।  সেই যে বার রাষ্ট্রপতি এলেন জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে সেই অনুষ্ঠানের বিশেষ কার্ড জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করা ইটিভির চাকরি করার সুবাদে। কোনো রকমে সেই কার্ড জোগাড় করে এনে দেওয়া তাঁকে আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য। আর সেই একদিন দুপুর বেলায় খুব সম্ভবত করোনা শেষ পর্বে বালিঘাট স্টেশন থেকে অফিস যাওয়ার সময় এসি পঞ্চাশ এর বাস এর ভিতরে দেখা হওয়ায় কত গল্প করা দুজন মিলে পুরনো দিনের। আবার উত্তরপাড়ার সেই বিখ্যাত চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে হাসি মুখে দেখা হয়ে যাওয়া রাতের বেলায় কাঁঠালবা...

আমাদের সবার মৃনাল দা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক বাবা আর ছেলের লড়াই এর গভীর গোপন কাহিনী। এই সাংবাদিকতার পেশায় এসে কত লড়াই, কত অসম যুদ্ধ, করে যে কেউ সংসার টিকিয়ে রাখতে পারে হাসি মুখে কাউকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে। এমন করে কেউ টিকে থাকার চেষ্টা করেন সেটা বোধহয় আমার জানা হয়ে উঠত না কিছুতেই। যদি না এই পেশায় আমি গা ভাসাতাম এমন করে। জীবনের এই নানা টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ ভেসে ওঠে এই রাতের অন্ধকারে আচমকা আমার মনের মাঝে। আর আমি চমকে উঠি কেমন করে তাদের সেই কোলাজ দেখে।  এমন এক চরিত্র, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়ে কেমন আলগোছে, হাসিমুখে, নির্মোহ ভাবে, শুধু নিজের কাঁচা পাকা দাড়িতে হাত বুলিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিলো সে শুধুই আকাশ পানে তাকিয়ে। যে নীল আকাশের গা ঘেঁষে উড়ে যাওয়া সাদা বকের ডানায় লেগে থাকে মেঘের হালকা টুকরো। একদম যেনো সিনেমার পর্দার হিরোর মতোই। দেখে বোঝার উপায় নেই একদম। পেটে খাবার না থাকলেও মুখের হাসিটা অমলিন হয়েই বেঁচে আছে আজও এতোদিন পরেও। আর সেই বিখ্যাত সাদা পাকা নাসিরউদ্দিন স্টাইলের দাড়ি, কালো চুল, আর সব সময় ধোপদুরস্ত ফিটফাট একজন মানুষ। রাত নটা বাজলেই যাকে শ্রীরামপুরে...

শপিং মলের উদ্বোধনে সিঙ্গুর আন্দোলনের দাপুটে মন্ত্রী

নালিকুল স্টেশন বাজারে একটি শপিং মলের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বেচারাম মান্না হাজির। একসময় যাঁর অন্দোলনের ঠেলায় পড়ে দৌড়ে একপ্রকার পালিয়ে চলে যেতে হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে টাটা কোম্পানিকে। যে আন্দোলনের দগদগে ঘা আর সেই স্মৃতি ধীরে ধীরে আজ প্রায় মিলিয়ে যেতে বসেছে আমাদের কাছ থেকে। আজ সেই চাষার ঘরের মানুষ না হলেও সেই কৃষক আর শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকার নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেন সেই মানুষটাকেই কেমন যেন আজ শপিং মলের উদ্বোধনে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার।  একদম নালিকুল স্টেশনের কাছে ঝাঁ চকচকে শপিং মল। দোকানে সাজানো জিনিস পত্র। আর সেখানেই আমাদের মাননীয় মন্ত্রী বেচারাম মান্না। একদম কেমন একটু আমার অচেনা লাগলো যেন। সেই মুড়ি খেয়ে আলুর তরকারি বা শশা খেয়ে আন্দোলন শুরু করা জমি আন্দোলন এর অন্যতম পথিকৃৎ নেতা আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তাহলে টাটা কোম্পানির বিরুদ্ধে যে জমি দখল নিয়ে আন্দোলন সেই আন্দোলন এর মধ্যে ছিল জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যদিও সেখানেও সেই সময়ের শাসকদলের কর্মসংস্থানের যুক্তি।তবে এই নতুন শপিং মলের উদ্বোধনে তো আর ...

ভীড়ের মাঝে একা

জীবন জুড়ে শুধুই ভীড় আর ভীড়। নানা ধরনের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় মানুষের গন্ধে, বর্ণে , স্বাদের ভীড়ে আমি একদম একা হয়ে যেতে চাই। যে ভীড় উপচে পড়া রাস্তায় শুধুই হেমন্তের ভোরে শিশিরের ফিসফিস শব্দ, পাখির কিচির মিচির আওয়াজ,ধানসিড়ি ওই নদীটির তীর ধরে ঘুঘুর আকুল মন কেমন করা ডাক, উদাসী শালিকের ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া ওই হেমন্তের হলুদ ধানের মাঠ এর পাশ দিয়ে, হলুদ বসন্ত বৌরীর সেই আমলকীর গাছের পাতায়,আড়ালে আবডালে বসে কেমন যেন আমায় দেখে লজ্জা পাওয়া, আর তারপর চোখ নামিয়ে হঠাৎ করেই তার উড়ে চলে যাওয়া। আর মেঘের কোল ঘেঁষে সেই সাদা বকের, বুনো হাঁসের, আর সেই পানকৌড়ির জলে ভেজা ডানা মেলে উড়ে যাওয়া আকাশ জুড়ে। সত্যিই ওরাও যে ভিড়ের মাঝেই বড়ো একা। একা একাই ওদের যে এই বেঁচে থাকা। কেমন নিপাট হৈ চৈ হুল্লোড়হীন একটা জীবন নিয়ে বেশ মজা করে, আনন্দ করে। আর সেই ভোরের আলোয় আলোকিত হয়ে রাস্তার একপাশে গুটি শুটি মেরে শুয়ে থাকা ওই সাদা কালো ভুলো নামের কুকুরের। যে অন্তত এই সব মানুষদের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় একটু যেনো আলাদা , একটু যেনো অন্য রকমের। একটু একা একাই যেনো ওর এই আলগোছে জীবন কাটিয়...

গৌড় প্রাঙ্গণে আনন্দবাজার

গৌরপ্রাঙ্গনে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যের আনন্দের মেলা আনন্দবাজার। মহালয়ার ভোরবেলায় ঢাকের বাদ্যি আর সানাইয়ের মন কেমন করা সুরে মেতে উঠলো শান্তিনিকেতনের গৌড়প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও যে হবে আনন্দমেলা আনন্দবাজার। হ্যাঁ সত্যিই যেনো আনন্দের এই হাটে বেচাকেনার পসরা নিয়ে একদিনের জন্য বসে পড়া মন প্রাণ খুলে হৈ হুল্লোড় করে। এই মেলা শুরু হয় 1915 সালের 15 এপ্রিল নববর্ষের দিনে। কিন্তু আগে এই মেলাকে একসময় বলা হতো বৌঠাকুরাণীর হাট। সেই সময় আশ্রমের মহিলারা নিজেদের হাতের তৈরি জিনিস নিয়ে মেলায় বসতেন। মেলার আয়োজন করতেন তারা। আনন্দ করে বেচাকেনা হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় একবার গরমের ছুটির আগে এমন মেলা নাকি হয়েছিল। যার নাম ছিল আনন্দবাজার। পরে এই মেলার নামে হয়ে যায় আনন্দমেলা। সত্যিই আনন্দের এই মিলন মেলা।  প্রথমদিকে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই মেলা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে বিশ্বভারতীর সব বিভাগের পড়ুয়ারা এই মেলায় যোগদান করে। এই মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের বেচা কেনার লাভের টাকার কিছু অংশ জমা পরে বিশ্বভারতীর সেবা বিভাগে। সেখান থেকে এ...