সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আজ সেই আজহারউদ্দিন এর গল্প

নতুন বছরের প্রথম দিনে মহম্মদ আজহারউদ্দিন এর গল্প। হ্যাঁ, ওর গল্প দিয়েই শুরু হোক আমার সাদা জীবনের কালো কথা। ২০২৫ এর প্রথম লেখা আমার ওকে নিয়েই আমার এই আঁকিবুঁকি ব্লগে, আঁকাবাঁকা অক্ষরে। সত্যিই ওর যেমন নাম তেমন খেলাই খেলে চলেছে ও এই কড়া শীতের রাতে হাসিমুখে। শুধুই মাঠে ব্যাট হাতে নয়, অন্ধকার ঠাণ্ডা রাস্তায় টোটো চালকের কাজ করে স্টিয়ারিং ধরে চোয়াল শক্ত করা মুখে। 

হাজার চরিত্রের মাঝে হাজার ছবির মাঝে এই আজহারউদ্দিন যেনো ঠিক সেই দেবদূতের মতই হাজির হলো পয়লা জানুয়ারীর রাতে আমাদের সামনে। প্রবল ঠাণ্ডায় উত্তুরে হাওয়ায় আমরা তখন রাস্তায় দাঁড়িয়ে ইলামবাজার এর জঙ্গলের কিছুটা আগেই বিশ্ববাংলা বিশ্ববিদ্যালয় আর বিশ্ব ক্ষুদ্র বাজার এর সামনে। এই বিশ্বময় বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে এদিক ওদিক ঘুরে পয়লা জানুয়ারির সন্ধ্যায় হস্তশিল্প মেলার হস্তি দর্শন করে রাস্তায় বেরিয়ে তখন আমি টোটোর জন্য দৌড়ে মরছি এদিক আর ওদিক। কিন্তু কেউ কোথাও নেই যে। কে নিয়ে যাবে ঘরের পথে।

গাড়ি নিয়ে শীতের রাতে সবার এই বিশ্বদর্শন করে বিশ্ব বাংলার হাট আর ক্ষুদ্র বাজার দর্শন করে তখন আর আমার মতো অবস্থা নয় কারুরই। বোলপুরে ফিরব কি করে। বাস নেই আর এলেও কখন কেউ জানে না যে তার খবর। রাস্তায় দাঁড়িয়ে হাওয়ার ঝাপটা খাচ্ছি আর অপেক্ষা করছি আমরা। হঠাৎ করেই একজন টোটো নিয়ে হাজির হলো। তাঁর বাড়ি ইলামবাজারে, বোলপুর থেকে যাত্রী নামিয়ে সে ঘরে ফিরছে একটু তাড়াতাড়ি। তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম এই একটু আবার কি বোলপুরে যাওয়া যাবে ভাই। একটু আমাদের পৌঁছে দিতে পারবে সে। কিন্তু একটু অপেক্ষা করে তার জবাব না, তার টোটোতে বিশেষ চার্জ নেই যে। একটু রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছে সে চা খাবে বলে এই প্রবল ঠাণ্ডায়। ঘরে ফিরছে সে নতুন বছরের প্রথম দিনে পকেটে দু পয়সা রোজগার করে।

অগত্যা উপায় নেই আবারও অপেক্ষা করা। কিন্তু আজহারদের বোধহয় চার্জ ফুরিয়ে যায়না সেই মাঠে ব্যাট করতে নেমেও। এরা বোধহয় আমার মতই ভয় পেয়ে মাঠে খেলতে নেমে মাঠ ছেড়ে চলে আসে না। আজহারের বোধহয় সেই কঠিন বলকে তুলে মাঠের বাইরে মাতব্বরি চালে ওভার বাউন্ডারি মেরে ফেলে দিয়ে হাসি মুখে ব্যাট ঠুকে কলার তুলে আবার ক্রিজে দাঁড়িয়ে পড়াই তাঁর অভ্যাস। আর সেই অভ্যাস মতই যে এই আজহারউদ্দিন বললো চলুন আপনাদের পৌঁছে দি। দশটা টাকা বেশি দেবেন কিন্তু। উঠে পড়লাম ওর টোটোতে আমরা তিনজন।

আমার নিজের অভ্যাস মতই আজহারের পাশে সামনে বসে পড়লাম আমি। ঠাণ্ডা হাওয়ায় ঝাপটা খেতে খেতে দৌড়ে চলেছে ওর টোটো। আমি কেমন যেন সহজ করেই ওর নাম, ঠিকানা, ঘরের কথা জিজ্ঞাসা করে ফেললাম নিজের স্বভাববশেই গল্প করবো বলে। দ্রুত গতিতে গাড়ি চালাতে চালাতে আজহারের গল্প শুনতে বেশ ভালো লাগলো আমার। ওদের সেই চার ভাই এর সংসার। ছোটো বেলায় বাবা মাকে হারিয়েছে তারা সবাই। লেখাপড়া আর শিখতে পারেনি তেমন সে।
 
সিউড়ি সদরে প্রথমে থাকলেও পরে তারা সব এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে বীরভূমের নানা জায়গায়। কেউ বোলপুরে, কেউ ইলমবাজার এর জঙ্গলের কাছে থাকে। কেউ নিজের ঘর করে বাস করে। আবার কেউ একচিলতে ভাড়া বাড়িতে থাকে কষ্ট করেই। আমাদের টোটো ছুটে চলেছে হু হু করে।‌ একমনে নিজের জীবনের গল্প বলে চলেছে আজহার নতুন বছরের প্রথম দিনে। আর আমি ওর পাশে বসে শুনছি সেই গল্প একমনে। ওর জীবনের গল্প, ওর জীবনের এবড়ো খেবড়ো মাঠে কলার তুলে ব্যাট করার গল্প। 

আজহারের বড় ছেলে ক্লাস সেভেনে পড়ে। খুব ভালো পড়াশোনায় সে। ক্লাসে ফার্স্ট হয়। বৃত্তি পায়। নিজের টাকায় পড়ে সে। হোস্টেলে থাকে। এই কথা বলতে বলতে ওর গর্বে বুক ভরে ওঠে। খড়গপুরে মিশনে চান্স পেলেও প্রথম হলেও ভর্তির সময় ষাট হাজার টাকা চায় আর তাতেই সে একটু দমে যায়। কি করে সে এই টাকা জোগাড় করবে। ছেলে বলে, বাবা আমি নিজের 
যোগ্যতায় ফার্স্ট হলাম চান্স পেলাম এরপর আবার টাকা দেবে কেনো তুমি। তারপর অন্য মিশনে বিনা টাকা ঘুষ দিয়ে সে ভর্তি হয় বাড়ির কাছেই। আর এই কথা বলতে গিয়ে হাসি ফোটে আজহারের গলায়। বুঝলেন নিজে পড়তে পারিনি আমি। তাই ছেলেকে ভালো করে পড়াই। ও তো নিজের টাকায় পড়াশোনা করে। যদি একটু দাঁড়াতে পারে বড়ো হয়ে। আমার মত টোটো চালকের কাজ না করতে হয়।

দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে টোটো। বাড়ির কাছে এসে গেছি আমি। আজহারউদ্দিন বলে চলেছে মেয়েটা ছোটো। ওকে আর পড়াবো না বলেছিলাম। গ্রামের এক দিদিমনি আমসি বলেছে তুই ভর্তি করে দে মেয়েকে। আমি সব দেখবো। স্কুলে পাঠাস মেয়েকে কিন্তু। আজহারের মেয়ে স্কুলে যায়। মাঝে মাঝেই সেই দিদিমনিকে একটু টোটো করে এদিক ওদিক পৌঁছে দেয় আজহার। নিজের একটা টোটো কিনে এই ভাবেই লড়াই করে সংসার চালাচ্ছি আমি বুঝলেন। কিকরবো উপায় নেই যে।

আমি চুপ করে ওর পাশে বসে আছি এক মনে শুনছি ওর কথা। ভাড়া বাড়িতে টাকা বাঁচাতে ছোট্টো এক চিলতে জমিতে ঘর তুলছি ধীরে ধীরে। সেটা হলে ঘর ভাড়ার টাকা কিছুটা তো বাঁচবে। ছেলে-মেয়েকে একটু সুখের মুখ দেখাতে পারবো আমি তাহলে। আমি চুপ ওর এই কথা শুনে। আজহারউদ্দিন এসে গেলো রামকৃষ্ণ রোডে। আমরা নেমে পড়লাম সবাই। ও আবার ফিরতি পথে ভাড়া পেলো। হাসি মুখে বিদায় নিল আমার কাছে। যাবার আগে নিজের মুঠোফোনে ওকে পাশে নিয়ে একটা ছবি তুলে নিলাম আমি। 

নতুন বছরের এই প্রথম দিনে খেলার মাঠে নয়, জীবনের এই এবড়ো খেবড়ো মাঠে কলার তুলে ব্যাট করা এই আজহারউদ্দিন এর সাথে। যে জীবনের মাঠের আজহারউদ্দিন শক্ত হাতে স্টিয়ারিং ধরে এগিয়ে চলে গেল তার নিজের ঘরে, নিজের পথে। বছরের প্রথম দিনে এই রাতে আজহারউদ্দিন এর দেখা পেয়ে বেশ ভালই লাগলো আমার। মাঠের আজহারউদ্দিন এর খেলা দেখে অভিভূত হতাম, উচ্ছ্বসিত হতাম ছোটো বেলায় হাততালি দিতাম। আর আজ এই বুড়ো বয়সে এই রাস্তার তিন চাকার টোটো নিয়ে হাসি মুখে ছুটে চলা আজহারউদ্দিনকে দেখে বেশ ভালো লাগলো আমার। মনে মনে ওকে স্যালুট জানালাম। আজহারউদ্দিন ধীরে ধীরে মিলিয়ে গেলো আমার চোখের সামনে থেকে। 

আজ সেই আজহারউদ্দিন এর গল্প - অভিজিৎ বসু।
দোসরা জানুয়ারী, দু হাজার পঁচিশ।
ছবি নিজের মোবাইল ক্যামেরায় তোলা।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

জামালপুরের প্রদীপ দা

আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায় বর্ধমানের জামালপুরের সেই দাপুটে ঠোঁট কাটা সাংবাদিক প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় এর কথা। সেই বিখ্যাত সুভাষ তালুকদার এর কাগজ সংবাদে মাত্র এক টাকার কাগজে কাজ করা সংবাদ পত্রিকার দাপুটে সাংবাদিক সেই প্রদীপ দা। সেই মুখ্যমন্ত্রীর সভায় বাঁশের ব্যারিকেডের এপারে দূরে দাঁড়িয়েও যে খবর করা যায় সেটা বড়ো মিডিয়ার সাংবাদিকদের হাসি মুখে দেখিয়ে দিয়ে, আর তাদের খবরের ময়দানে গোল দিয়ে শুধু খবরকে ভালোবেসে ছোটো কাগজে কাজ করে চলা সর্বদা হাসি মুখের সেই আমাদের প্রদীপ চ্যাটার্জী দা।  কোথাও কোনো অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদে মুখর হয়ে যাওয়া আর এক দৌড়ে বেরিয়ে পড়া ঝোলা কাঁধে সেই খবরের খোঁজে সেই জামালপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের সেই প্রদীপ দা। সেই বিখ্যাত পন্ডিত রবিশঙ্কর আর উদয়শঙ্কর এর আপন মাসতুত ভাই এর ছেলে সেই প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় দাদা। সেই বামদের আমলে জামালপুরের এলাকায় দাপিয়ে খবর করে ছুটে বেড়ানো সেই প্রদীপ দা। সেই তৃণমূল আমলেও একভাবেই ছুটে বেরিয়ে কাজ করা আমাদের সদা ব্যস্ত প্রদীপ দা।  সেই বাবার অসুস্থতার কারনে বড়ো সংবাদ মাধ্যমে কাজ না করেও...

আমার স্যার কাজীদা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ আমার স্যার এর কথা। যার লেখা আজ হঠাৎ চোখে পড়লো একটি কাগজে। আর স্যার এর নামটা দেখেই মনে পড়ে গেলো নানান কথা। হ্যাঁ, সেই কাজী গোলাম গাউস সিদ্দিকী। যাঁর সাথে আমার আলাপ আর দেখা হয়েছিল সেই অজিতদার ফ্রিল্যান্স ছকু খানসামা লেনের ফ্রীল্যান্স প্রেস ক্লাবের অফিসে খুব সম্ভবত। হাসিখুশি বেশ অজাতশত্রু এই মানুষটিকে দেখেই আমার মনে হয়েছিল যে রিপোর্টারদের প্রভূত ক্ষমতা থাকে বোধহয়। তাই পকেটে পেন আর সেই ফোনের ছোট্টো নোটবুক দেখেই আমার মনে হয়, যে ক্ষমতার স্বাদ পাবার জন্য সেই সদ্য গ্র্যাজুয়েশন করে আমার কচি মনে সাংবাদিক হবার বাসনা জাগে সেই সময়।  কোনো প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক নয়, কোনো অফিসে মাছি মারা দশটা পাঁচটার লোয়ার ডিভিশন এর কেরানি নয়, মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ নয়, ল্যাবরেটরিতে টেকনিশিয়ান এর কাজ নয়, এল আই সি বা পোষ্ট অফিস এর এজেন্ট নয়, কোনো মুদি দোকানে হিসেব পত্র লেখার কাজ নয়, স্বাধীন ব্যবসা করা নয়। শুধুই সাংবাদিক হবার স্বাদ।  কাগজে সাদা কালো অক্ষরে নিজের নাম ছাপা হবে, সেই নাম দেখে বুক ফুলে যাবে, পাড়ায় প্রতিবেশীরা সহ স...

কুড়ি থালা দশ টাকা আর রসিক মুলুর জীবন

নাম মুলু হাঁসদা। বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানার চরিচা গ্রাম পঞ্চায়েত এর চর ইচ্ছা রঘুবরপুরের বাসিন্দা মুলু। আজ মুলুর জীবন কথা। গ্রামের নামটা ভারী অদ্ভুত। চর ইচ্ছা রঘুবরপুর। যে গ্রাম অন্য পাঁচটা গ্রামের মতই।সাদামাটা এই গ্রামে দারিদ্র্য, অপুষ্টি আর কর্মহীন জীবনের জলছবি সুস্পষ্ট। আর সেই গ্রামের মহিলারা নিজেদের সংসার রক্ষা করতে গাছের পাতাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে। গাছের পাতা মুলুদের জীবনের জিয়ন কাঠি। যে জিয়ন কাঠিতে তারা ভোর হতেই পেটের টানে চলে যায় জঙ্গলে। খস খস শব্দ করে পায় হেঁটে তারা পাতা তোলে। গাছ থেকে টুপ টাপ করে ঝড়ে পড়া পাতাকে একটা একটা করে নিজের শাড়ির আঁচলে ভরে নেয়। তার পর সব পাতাকে বস্তায় ভরে ঘরে ফেরে।  ঠিক যেভাবে তারা পুকুরে নেমে শামুক গেঁড়ি আর গুগলি তোলে। যে ভাবে তাদের উদর পূর্তি হবে বলে। আর এই পাতাও যে তাদের পেট ভরায়। একটা একটা পাতাকে নিজের সন্তানের মতো আলগোছে ছুঁয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে চুমু খায় মুলু, বলে তোরা না থাকলে কি করতাম কে জানে। মাথার ওপর শাল সেগুনের বিশাল আকারের গাছগুলো চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে আর তারা চুপ করে শোনে মুলুর কথা।  একে অপ...

শুভ মকর সংক্রান্তি

মকর মানেই নতুন জামা কাক ভোরে স্নান, রাত্রি জেগে মিঠে সুরে টুসুমণির গান। মকর মানেই পিঠে - পুলির গন্ধে ম - ম হাওয়া, ডুলুং পাড়ে টুসুর মেলায় দল বেঁধে যাওয়া। মকর মানেই মোরগ লড়াই পাহুড় জেতার সুখ, সন্ধ্যা - রাতে মাংস পিঠের স্বাদে ভরা মুখ। মকর মানেই হাতি - ঘোড়ার পুজো করম তলে, সান্ধ্য হাওয়ায় মন উদাসী দিমির দিমির বোলে। আসলে আজ এই মকর সংক্রান্তির দিন, টুসু মেলার দিন, টুসু গানে নিজেকে মাতিয়ে দেবার দিন। অজয় এর ধারে জয়দেব কেঁদুলির মেলায় ভীড়ের মাঝে নিজেকে হারিয়ে দেবার দিন। অজয় এর জলে ডুব দিয়ে স্নান করে পূণ্য অর্জনের দিন। আর নদীর ধারে মোরগ লড়াই এর দিন। আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর দিন, সুতো লাটাই হাতে আকাশ পানে তাকিয়ে থাকার দিন। কেমন যেনো রাশির একটি স্থান থেকে অন্য রাশিতে স্থান পরিবর্তনের দিন। সূর্যের দেবতাকে সকালে উঠে স্নান সেরে প্রণাম জানিয়ে শক্তি সঞ্চয় এর দিন। সূর্যের উত্তর দিকে চলে যাবার দিন। ধীরে ধীরে শীতকাল চলে যাওয়ার দিন।  এই মকর সংক্রান্তি এর ইতিহাস ও ভারতীয় ঐতিহ্যের গভীর শিকড় রয়েছে। এটি কৃষি চক্র এবং ফসল কাটার মৌসুমের সাথে জড়িত। এই মকর সংক্রান্তি চ...