শীতের হাড়কাঁপানো সকালে আলপথ বেয়ে এমন সর্ষে ফুল এর গন্ধকে গায়ে মেখে আমার হেঁটে বেড়াতে বড়োই ভালো লাগে। দূরের কুয়াশা মাখা পথ মাড়িয়ে শালিখের উড়ে যাওয়া আর সাদা বকের শিশির ভেজা ডানা ঝাপটানো দেখে মনে হয় এমন শীতের সকালটা কিন্তু বেশ লোভনীয়। থাকনা লেপের আড়াল থেকে নরম ওমের হাতছানি। থাকনা ভেজা শিশিরের আলগোছে স্পর্শ। এসবের মাঝে আদিগন্ত মাঠ, হলুদ সবুজ ডোরা কাটা দাগ। আর মন কেমন করা আলসেমির সকাল বেশ মন প্রানকে কেমন করে যেন আন্দোলিত করে।
বিধুর মনের ধূসর রাস্তায় কেমন যেন একটা হাসিখুশি ভাব। জড়তা কাটিয়ে শীতের সকালে তাই বেরিয়ে পড়া এদিক থেকে ওদিক। মনের মাঝে ডুবে থাকা সেই আলসেমির সকাল রোদের স্পর্শে কেমন সবুজ মাঠে টাটকা চাষের সবজির মতই সুস্পষ্ট তরতাজা হয়ে ওঠে। সত্যিই কে বলে শীতকাল জড়তার। কে বলে শীতকাল মায়া মমতা মাখা হরিনীর চাউনির মতই ভীরুতার। কে বলে শীতকাল বড়ই কষ্টদায়ক। যাকে বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরতে কাঁপন ধরে।
না, এই শীতের ঘুম ভাঙা সকালে সবুজ মাঠে হলুদ ফুলের মাথা দোলানো দেখে মনে হয় ভাগ্যিস সে এসেছিল। না হলে কি আর ওই দূরে মাঠের ধারে কুয়াশার চাদরে মোড়া সর্ষে ক্ষেতের উজ্জ্বল সকাল দর্শন হতো আমার। মাঠের ধারে ভেজা মাটির সোঁদা গন্ধ গায়ে মেখে হেঁটে চলে বেড়াতে পারতাম আমি। এই চোখ জুড়ানো সকাল কি আর পাবো কোনও কালে।কদিন বাদেই বসন্তের বাতাস আছড়ে পড়বে মাঠের ধারে। উধাও হয়ে যাবে হলদে সবুজ ডোরা কাটা দাগ এর চিহ্ন। উধাও হয়ে যাবে সাদা কুয়াশার আস্তরণ। লাল পলাশের পদাবলীর সুর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়বে এদিক থেকে ওদিক। তবু তো এই শীতের সকালের নরম রোদ, হলুদ ফুলের মিষ্টি গন্ধ, ভেজা মাটির নরম আলপথ বেয়ে কুয়াশার ঝাপটা যে বড়ই মধুর। যে পথ বেয়ে এগিয়ে চলি আমি একা একদম একা।
শীতের সকাল - অভিজিৎ বসু।
ছয় জানুয়ারি, দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন