সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

খেলার আসর ও আমরা

খবরের দুনিয়ায় সেই আমাদের ছোটবেলায় আমার বয়স তখন নয় বা দশ বছর হবে। সেই সময়ে এত টিভির আর মোবাইল এর নেট দুনিয়ায় ভেসে যায়নি গোটা গ্রাম আর শহরের বিভিন্ন এলাকা। সেই বিখ্যাত ইত্যাদি প্রকাশনীর খেলার আসর এর কি রমরমা ছিল তখন সেই সময়। তিন বা পাঁচ টাকার এই সাপ্তাহিক পত্রিকা খেলার আসর বের হলেই কাগজওলার ব্যাগে উঁকি দিয়ে দেখতাম বা দেখার চেষ্টা করতাম আমরা এই সংখ্যার সামনের পাতার রঙিন ছবিতে কার ছবি ছাপা হয়েছে।


সেই আমাদের সেই সময়ের হিরো গোলকিপার প্রতাপ ঘোষ নাকি ভাস্কর গাঙ্গুলীর ছবি। নাকি সেই পাঞ্জাব থেকে খেলতে আসা হরজিন্দর সিং এর ছবি। যার বিরুদ্ধে মাঠে নানা অভিযোগ ওঠে একসময়। পাঞ্জাবের খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে সেই সমকামিতার অভিযোগ ওঠে সেই সময় খেলার মাঠে। সেই ভরা মাঠে প্রতাপ এর লাফিয়ে চিল এর মতো এক ছুটে বল ধরা। আর সেই সব ছবি খেলার আসরে দেখে মনে মনে উত্তেজিত হয়ে পড়া আমাদের সেই সুন্দর ছোট বেলায়। সেই সাবির আলী, মহম্মদ হাবিব, জামশেদ নাসিরি আর মজিদ বাসকার। এদিকে সুধীর কর্মকার, মনোরঞ্জন ভট্টাচার্য্য, সুব্রত ভট্টাচার্য্য, সুরজিৎ সেনগুপ্ত, গৌতম সরকার, প্রশান্ত, বিদেশ,মানস বহু পড়ে বিকাশ আর কৃশানুর সেই অমলিন খেলার জুটি।‌

সেই সময় মোহনবাগান ইস্টবেঙ্গল এর খেলায় উপচে পড়া ভীড় মাঠে। সেই আমলের বিখ্যাত সাংবাদিক চিরঞ্জীব নামেই যাঁকে সবাই চেনেন একডাকে। সেই বিখ্যাত চিত্তরঞ্জন বিশ্বাস। সেই প্রথমে তিনিই বের করলেন ইত্যাদি প্রকাশনীর বিখ্যাত পত্রিকা খেলার আসর।‌ যে প্রকাশনীর বিখ্যাত ম্যাগাজিন ছিল সেই সময় পরিবর্তন। সেই খেলার আসরে লিখতেন সব নামজাদা সব দিকপাল সাংবাদিক। পবিত্র দাস, অমল ত্রিবেদী সহ অনেকেই ছিলেন সেই সময়।

 আর এর অনেক অনেক পরে খেলার কথা বের হয় কলকাতা থেকে। আজকাল বের করে খেলা নামের একটি পত্রিকা। সে একটা দিন ছিল খেলার রঙিন ম্যাগাজিন হিট একদম সুপারহিট এই বাংলা বাজারে। মাঠের এক্সক্লুসিভ সব গরম টাটকা খবর। আর যে খবর পড়ে মুগ্ধ হয়ে নিজের দলকে সাপোর্ট করা এই আমাদের মত খেলা পাগল কিছু আট থেকে আশির লোকজনের দল এর। সেই খেলার আসরকে বিট করেছে কোনো খেলার ম্যাগাজিন সেটা আর হয়নি কোনোদিনই।

হ্যাঁ, এটাই হলো আমাদের সেই খেলার মাঠের শৈশবের নানা স্মৃতিঘেরা ছোটো বেলার জীবন। যেখানে এমন নানা ছবির কোলাজ আজও ঝাপসা হয়ে সাদা কালো ফ্রেমে ধরা আছে আমার মনের মণিকোঠায়। সেই সাদা কালো সব নানা উজ্জ্বল ছবি। একদিন বন্ধ হলো সেই বিখ্যাত খেলার আসর পত্রিকা হঠাৎ করেই। সেই সময় নতুন করে সেই অজিত কুমার ভাওয়াল এর সেই সময়ের ওভারল্যান্ড পত্রিকা বের হবার আগেই শুধু খেলার মাঠের খবর নিয়ে বের হলো আট পাতার ক্রীড়া সংবাদ নামের পত্রিকা।

 আর এই আট পাতার খেলার কাগজ সেই সময় যিনি শুরু করলেন সেই চিরঞ্জীব সেই বিখ্যাত সাংবাদিক সুরবেক বিশ্বাস এর বাবা। আর সেই ক্রীড়া সংবাদে স্টাফ হয়ে কাজ শুরু করলেন নতুন সাংবাদিক স্পোর্টস এর সদ্য রিপোর্টার হয়ে মাঠে ঘুরে বেড়ানো উৎপল পট্টনায়ক। আর এই কাগজে ছিলেন রত্না সুর,বর্তমানে কলকাতা পুরসভার পদে আছেন তিনি। ছিলেন সেই সময়ে বিখ্যাত পবিত্র দাস, অমল ত্রিবেদী সহ অনেকেই। সেই পুরুলিয়ার অমলদা বিভিন্ন বাইরের রাজ্যে যিনি ঘুরে ঘুরে খেলার মাঠের সব এক্সক্লুসিভ খবর জোগাড় করতেন যে খবর আর কেউ করবে না কোনোদিন। আর সেই খবর গোগ্রাসে গিলে খেতো এই বাংলার পাঠকরা, খেলা পাগল মানুষরা তখনও এত মোবাইল এ পাগল হয়নি এই খেলার মাঠের দর্শক কূল। সত্যিই অসাধারণ ছিল সেই দিন গুলো।

সত্যিই সে একটা দিন ছিল বটে। শুধুই প্রথম পাতার খুন জখম আর রাজনীতির খবর করাই নয়। প্রথম পাতার হার্ড নিউজ এর সাথে আট পাতার খেলার খবরের জোর একদম জোর কাঁটে কা টক্কর লেগে যাওয়া। একদম সেয়ানে সেয়ানে লড়াই, ঠিক যেনো মোহনবাগান আর ইস্টবেঙ্গল এর মাঝমাঠের বল দখল এর লড়াই। ঠিক সেই রোজ এক পাতার সাথে আট পাতার জোড় লড়াই। 

নতুন কাগজ ওভারল্যান্ড বাজারে এলো প্রথমে সপ্তাহে তিনদিন করে। পড়ে রোজ সেই গ্রামের মেঠো খবরের কাগজ ওভারল্যান্ড। ক্রীড়া সংবাদ বন্ধ হলো সেই সময় ওভারল্যান্ড কাগজে সবাই কাজ শুরু করলেন খেলার পাতায়। নানা এক্সক্লুসিভ খবর করে আর দ্রুত গ্রামের বাজার ধরে রাতারাতি করেই জনপ্রিয় হলো সেই ছোট্টো কাগজ ওভারল্যান্ড। এই কাগজে রতন দা মানে আমাদের সবার প্রিয় রতন চক্রবর্তী কাজ করেছেন। অমলদা, পবিত্রদা কাজ করেছেন। যাঁরা আজ দুজনেই আজ আর নেই আমাদের মাঝে। সেই বিখ্যাত হীরক কর, অতীন দা, হিমাংশু দা কাজ করেছেন। ছিলেন রত্না মিত্র, দেবরাণী কর, কথা হচ্ছিল উৎপলদার সাথে আমার এই কাগজ নিয়ে। সত্যিই অসাধারণ সেই সব মাঠের দিনগুলো ছিল কিন্তু আজ থেকে প্রায় ৪৫ বছর আগের সময়ে। 

যে খেলার কাগজের মাধ্যমেই একদিন বাংলা মিডিয়ায় হৈ চৈ ফেলে দিলেন চিরঞ্জীব সেই সময়ের বিখ্যাত সাংবাদিক। যে ভাবনা, যে চিন্তা, যে মাঠের দুর্দান্ত সব স্কুপ নিউজ তিনি নিজের রিপোর্টারদের দিয়ে তৈরি করে কাগজে ছাপলেন তিনি আর হৈ হুল্লোড় ফেলে দিলেন সেই সময়ে। আর আজ কোথায় সেই সব খেলার মাঠের নানা জনপ্রিয় ম্যাগাজিন। দ্রুত কমছে বাংলার নানা ম্যাগাজিন এর সংখ্যা। যে ম্যাগাজিনে লিখে একসময়ে বিখ্যাত হয়েছেন অনেকেই। সেই মাঠের চেনা গন্ধকে আজও মিস করেন উৎপল পট্টনায়ক কাকদ্বীপের নিজের বাড়ীতে বসে এই এতোদিন পরেও। সেই দিনগুলো বেশ ভালই ছিল তাঁর কাছেও সেই সময়। 

এরপর এলো টিভির দুনিয়া। বোকা বাক্স কাগজের সাথে পাল্লা দিয়েই শুরু করে খেলার বিভাগ, খেলার রিপোর্টার নিয়োগহলো টিভির মিডিয়ায়, খেলার জন্যে আলাদা বুলেটিন তৈরি করা শুরু হলো। খবরের দৌড়ের মাঝে খেলার খবরের দৌড়ও রয়ে গেলো সব জায়গায়। সেই একটা অফিসের মাঝেই যেনো ভিন্ন গ্রহের আলাদা এক অচেনা সংসার। যে সংসারে একজন বড়দাদা ভাইদের কাছে দাদা হয়েই বেঁচে রইলেন তিনি হাসিমুখে চিরকাল। না বলা অনেক কথা না বলেই দিব্যি হাসিমুখেই কাটিয়ে দিলেন তিনি গোটা একটা জীবন। ধীরে ধীরে কমলো খেলার ম্যাগাজিনের দাপট। বাড়ল টিভির দাপট। আজকাল পত্রিকা যদিও এখনও খেলা পত্রিকা বের করে তারা। ধীরে ধীরেই কমলো মাঠের ভীড়, উত্তেজনা, আর সেই বিখ্যাত খেলার আসর এর প্রভাবও। 

সত্যিই এই লেখা কোনো মানুষকে খুঁজে বেরিয়ে শুধু তাঁকে নিয়ে এই আমার লেখা নয়। এই লেখা শুধুই সাদা জীবনের কালো কথা লেখার জন্য লেখা নয়। এই লেখা সেই পুরোনো দিনের সময়কে মনে রেখে একটা লেখা, যে লেখায় লুকিয়ে আছে কত মিষ্টি মধুর নানা স্মৃতি। সেই মানস, বিদেশ এর দৌড় এর মতই ছুটে চলা একটা স্মৃতিময় জীবন। আর সেই খেলার মাঠের সময়ের বিখ্যাত দিনযাপন। 

সেই খেলার মাঠের পত্রিকার পাঠক কমে গেলো। ধীরে ধীরে বন্ধ হলো এই বাংলা ম্যাগাজিন এর কালচার। টিভির মিডিয়ার লোকজন কলম ছেড়ে ক্যামেরা নিয়ে আর নিজের চ্যানেলের বুম নিয়ে সকাল হতেই মাঠে ময়দানে ঘুরে বেড়ান খবরের সন্ধানে। আর রাতের বেলায় আস্ত একটা খেলার খবরের বুলেটিন নিয়ে এই বাংলা টিভির অফিসে কি হুলুস্থূল ব্যাপার যেন। যাঁরা একদিন কাগজে কাজ করলেন দাপটে তারাই কেমন যেনো বদলে গেছেন তাঁরা ধীরে সুস্থে। 

আর সেই ফেলে আসা সময়, ফেলে আশা সেই কাল, সেই খেলার আসরের সময়কে ধরে রাখলাম আমি আমার সাদা জীবনের কালো কথায়। আমার এই আঁকিবুঁকি ব্লগের কালো অক্ষরের জাদুতে। যেখানে ধীরে ধীরে এই আমলে উবে গেছে কেমন করে খেলার মাঠের গন্ধ, মাঠের খবর। শুধুই খেলার খবরকে বিখ্যাত করে দিয়ে একটা রঙিন পোশাক পড়া ম্যগাজিন এর সুন্দর ঝকঝকে কিছু পাতায় মোড়া অক্ষরের দাগ কাটা মাধ্যম। আজ সেই খেলা যে অনেকটাই ব্রাত্য এই বাংলার খবরের দুনিয়ায়। ক্রমেই জনপ্রিয় এই খেলা যে আজ অনেকটাই পিছনের সারিতে সরে গেছে। এখন শুধুই রাজনীতি আর খুন জখমের খবরে ভর্তি এই দ্রুত বদলে যাওয়া বাংলার মিডিয়া। আজ হারিয়ে গেছে একপাতার সাথে আট পাতার সেই লড়াই।

খেলার আসর ও আমরা - অভিজিৎ বসু।
পঁচিশ জানুয়ারী দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ইটিভির পিনাকপাণি ঘোষ

কিছু মানুষ কত কাছে থেকেও পাশাপাশি এক জায়গায় বাস করেও একসাথে একসময় কাজ করেও যে কত দূরে রয়ে যান নিজের হাসিমুখ নিয়ে আর সেই চেনা ছন্দ নিয়ে সত্যিই বেশ ভালো মজার ব্যাপার কিন্তু এটা জীবনের মেঠো পথে। সেই ইটিভির বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে ঘুরে ঘুরে স্ট্রীট ফুডের ছবি তোলা আর নানা খবর করে খাওয়া দাওয়ার এপিসোড করে একসময়ে বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে যাওয়া ইটিভি নিউজে। আর আমাদের জেলায় বসে সেইসব হাঁ করে দেখা আর কেমন মনের ভেতর অস্থিরতা তৈরি হওয়া। একেই বলে কলকাতার রাজপথের সাংবাদিক বলে কথা।  সেই যে বার রাষ্ট্রপতি এলেন জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে সেই অনুষ্ঠানের বিশেষ কার্ড জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করা ইটিভির চাকরি করার সুবাদে। কোনো রকমে সেই কার্ড জোগাড় করে এনে দেওয়া তাঁকে আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য। আর সেই একদিন দুপুর বেলায় খুব সম্ভবত করোনা শেষ পর্বে বালিঘাট স্টেশন থেকে অফিস যাওয়ার সময় এসি পঞ্চাশ এর বাস এর ভিতরে দেখা হওয়ায় কত গল্প করা দুজন মিলে পুরনো দিনের। আবার উত্তরপাড়ার সেই বিখ্যাত চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে হাসি মুখে দেখা হয়ে যাওয়া রাতের বেলায় কাঁঠালবা...

আমাদের সবার মৃনাল দা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক বাবা আর ছেলের লড়াই এর গভীর গোপন কাহিনী। এই সাংবাদিকতার পেশায় এসে কত লড়াই, কত অসম যুদ্ধ, করে যে কেউ সংসার টিকিয়ে রাখতে পারে হাসি মুখে কাউকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে। এমন করে কেউ টিকে থাকার চেষ্টা করেন সেটা বোধহয় আমার জানা হয়ে উঠত না কিছুতেই। যদি না এই পেশায় আমি গা ভাসাতাম এমন করে। জীবনের এই নানা টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ ভেসে ওঠে এই রাতের অন্ধকারে আচমকা আমার মনের মাঝে। আর আমি চমকে উঠি কেমন করে তাদের সেই কোলাজ দেখে।  এমন এক চরিত্র, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়ে কেমন আলগোছে, হাসিমুখে, নির্মোহ ভাবে, শুধু নিজের কাঁচা পাকা দাড়িতে হাত বুলিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিলো সে শুধুই আকাশ পানে তাকিয়ে। যে নীল আকাশের গা ঘেঁষে উড়ে যাওয়া সাদা বকের ডানায় লেগে থাকে মেঘের হালকা টুকরো। একদম যেনো সিনেমার পর্দার হিরোর মতোই। দেখে বোঝার উপায় নেই একদম। পেটে খাবার না থাকলেও মুখের হাসিটা অমলিন হয়েই বেঁচে আছে আজও এতোদিন পরেও। আর সেই বিখ্যাত সাদা পাকা নাসিরউদ্দিন স্টাইলের দাড়ি, কালো চুল, আর সব সময় ধোপদুরস্ত ফিটফাট একজন মানুষ। রাত নটা বাজলেই যাকে শ্রীরামপুরে...

শপিং মলের উদ্বোধনে সিঙ্গুর আন্দোলনের দাপুটে মন্ত্রী

নালিকুল স্টেশন বাজারে একটি শপিং মলের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বেচারাম মান্না হাজির। একসময় যাঁর অন্দোলনের ঠেলায় পড়ে দৌড়ে একপ্রকার পালিয়ে চলে যেতে হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে টাটা কোম্পানিকে। যে আন্দোলনের দগদগে ঘা আর সেই স্মৃতি ধীরে ধীরে আজ প্রায় মিলিয়ে যেতে বসেছে আমাদের কাছ থেকে। আজ সেই চাষার ঘরের মানুষ না হলেও সেই কৃষক আর শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকার নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেন সেই মানুষটাকেই কেমন যেন আজ শপিং মলের উদ্বোধনে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার।  একদম নালিকুল স্টেশনের কাছে ঝাঁ চকচকে শপিং মল। দোকানে সাজানো জিনিস পত্র। আর সেখানেই আমাদের মাননীয় মন্ত্রী বেচারাম মান্না। একদম কেমন একটু আমার অচেনা লাগলো যেন। সেই মুড়ি খেয়ে আলুর তরকারি বা শশা খেয়ে আন্দোলন শুরু করা জমি আন্দোলন এর অন্যতম পথিকৃৎ নেতা আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তাহলে টাটা কোম্পানির বিরুদ্ধে যে জমি দখল নিয়ে আন্দোলন সেই আন্দোলন এর মধ্যে ছিল জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যদিও সেখানেও সেই সময়ের শাসকদলের কর্মসংস্থানের যুক্তি।তবে এই নতুন শপিং মলের উদ্বোধনে তো আর ...

ভীড়ের মাঝে একা

জীবন জুড়ে শুধুই ভীড় আর ভীড়। নানা ধরনের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় মানুষের গন্ধে, বর্ণে , স্বাদের ভীড়ে আমি একদম একা হয়ে যেতে চাই। যে ভীড় উপচে পড়া রাস্তায় শুধুই হেমন্তের ভোরে শিশিরের ফিসফিস শব্দ, পাখির কিচির মিচির আওয়াজ,ধানসিড়ি ওই নদীটির তীর ধরে ঘুঘুর আকুল মন কেমন করা ডাক, উদাসী শালিকের ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া ওই হেমন্তের হলুদ ধানের মাঠ এর পাশ দিয়ে, হলুদ বসন্ত বৌরীর সেই আমলকীর গাছের পাতায়,আড়ালে আবডালে বসে কেমন যেন আমায় দেখে লজ্জা পাওয়া, আর তারপর চোখ নামিয়ে হঠাৎ করেই তার উড়ে চলে যাওয়া। আর মেঘের কোল ঘেঁষে সেই সাদা বকের, বুনো হাঁসের, আর সেই পানকৌড়ির জলে ভেজা ডানা মেলে উড়ে যাওয়া আকাশ জুড়ে। সত্যিই ওরাও যে ভিড়ের মাঝেই বড়ো একা। একা একাই ওদের যে এই বেঁচে থাকা। কেমন নিপাট হৈ চৈ হুল্লোড়হীন একটা জীবন নিয়ে বেশ মজা করে, আনন্দ করে। আর সেই ভোরের আলোয় আলোকিত হয়ে রাস্তার একপাশে গুটি শুটি মেরে শুয়ে থাকা ওই সাদা কালো ভুলো নামের কুকুরের। যে অন্তত এই সব মানুষদের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় একটু যেনো আলাদা , একটু যেনো অন্য রকমের। একটু একা একাই যেনো ওর এই আলগোছে জীবন কাটিয়...

গৌড় প্রাঙ্গণে আনন্দবাজার

গৌরপ্রাঙ্গনে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যের আনন্দের মেলা আনন্দবাজার। মহালয়ার ভোরবেলায় ঢাকের বাদ্যি আর সানাইয়ের মন কেমন করা সুরে মেতে উঠলো শান্তিনিকেতনের গৌড়প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও যে হবে আনন্দমেলা আনন্দবাজার। হ্যাঁ সত্যিই যেনো আনন্দের এই হাটে বেচাকেনার পসরা নিয়ে একদিনের জন্য বসে পড়া মন প্রাণ খুলে হৈ হুল্লোড় করে। এই মেলা শুরু হয় 1915 সালের 15 এপ্রিল নববর্ষের দিনে। কিন্তু আগে এই মেলাকে একসময় বলা হতো বৌঠাকুরাণীর হাট। সেই সময় আশ্রমের মহিলারা নিজেদের হাতের তৈরি জিনিস নিয়ে মেলায় বসতেন। মেলার আয়োজন করতেন তারা। আনন্দ করে বেচাকেনা হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় একবার গরমের ছুটির আগে এমন মেলা নাকি হয়েছিল। যার নাম ছিল আনন্দবাজার। পরে এই মেলার নামে হয়ে যায় আনন্দমেলা। সত্যিই আনন্দের এই মিলন মেলা।  প্রথমদিকে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই মেলা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে বিশ্বভারতীর সব বিভাগের পড়ুয়ারা এই মেলায় যোগদান করে। এই মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের বেচা কেনার লাভের টাকার কিছু অংশ জমা পরে বিশ্বভারতীর সেবা বিভাগে। সেখান থেকে এ...