সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ইটিভির দীপালি মিত্র

আমার সাদা জীবনের কালো কথায় যাঁর কথা না লিখলে ইটিভি বাংলার অফিসের কাহিনীকে এই পুরনো আমলের মিডিয়ার ব্রতকথাকে শেষ করা যাবে না কিছুতেই। যাঁর কথা না লিখলে রামোজি রাও এর সাম্রাজ্যের কথা বলে শেষ করা যাবে না বা ইতি টানা যাবে না কোনমতেই কোনোদিনই। যাঁর কথা লিখতে বসে ভয় পেলেও মনে হয় কি লিখবো, কিন্তু কিছু তো লিখতেই হবে না হলে যে রক্ষে পাবো না আমি তাঁর হাত থেকে একদমই। কারণ ভয় পেয়েই চলতে হয়েছে বরাবর সে কর্মজীবনে হোক আবার কর্মজীবনের বাইরেও হোক। কিছু জনকে ভয় পেয়েই চলতে হয় হাসি মুখে সে বহু পুরোনো দিনের বন্ধু হলেও। 


সেই পাহাড়, পর্বত, জঙ্গল, জল, সমুদ্র যে কোনো জায়গায় যে সমানভাবে স্বচ্ছন্দ বোধ করে হেঁটে, চলে, হেসে, খেলে বেড়াতে আপনমনে নিজের মতো করেই। সেই খেলার মাঠের ঘুর্ণি পিচে, এবড়ো খেবড়ো পিচে ব্যাট করতে পারে যে হাসি মুখেই একদম কাউকে ভয় না পেয়েই। যে কোনো পরিস্থিতিতে, যে কোনও ভাবে, যে কোনোও উপায়ে, যে কোনো গুণেই সে টিকে থাকে শুধুই তাঁর নিজের গুণে আর কর্মদক্ষতায় আর নিজের কাজের সুবাদে। সে রাস্তায় বুম হাতে নিয়ে হোক বা অফিসে বসে লেখার কাজ করে হোক। কিম্বা ভোটের সময় দিল্লী গিয়ে ভোটের ডেস্কে বিশেষ নির্বাচনী ফল প্রকাশের কাজ করেই হোক। আর কোনো সময় বিশেষ স্পেশাল স্টোরি করে হোক। এটাই যে তাঁর আসল ক্যারিশমা। 

বাংলা মিডিয়ার জগতে সেই দু হাজার সালের ছয় জুন বা নয় জুন এর সেই ইটিভির প্রথম ব্যাচের স্টুডেন্ট থেকে আজ দীর্ঘ পঁচিশ বছর কাটিয়ে দেওয়া একটি ইউনিভার্সিটির বর্তমানে গবেষক সে। একটি অফিসে এই দীর্ঘ সময়ে কাজ করে একদম আদর্শ ছাত্রীর জীবন কাটিয়ে দিলো সে হাসিমুখেই। একদম আউট না হয়ে সব বোলারকে হাসি মুখে সামলে দিয়ে ঝাঁ চকচকে একটি জীবন নিয়ে কেমন বিন্দাস হয়ে ঘুরে বেড়ালো এদিক ওদিক নিজের মতো করেই। 

আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায়, আমার আঁকিবুঁকি ব্লগে সেই ইটিভি বাংলার স্বর্ণযুগের সেই পুরোনো দিনের ক্যাডার দীপালী মিত্রর কথা। সেই একদম পঁচিশ বছর আগে ওকে যা দেখেছিলাম সেই এক ভাবেই কেমন নিজেকে আজও একভাবেই হাসিখুশি হয়েই আছে ও। সেই লাল পার্টির আমলেও যেমন হাসিমুখে ব্যাট চালিয়ে খেলেছে সে। আর আজ ঘাস ফুলের আমলেও একভাবেই ব্যাট করতে কোনো অসুবিধা হয় নি তাঁর একদমই। 

সেই আশীষ ঘোষ, অনির্বাণ চৌধুরী, অম্বরীষ দত্ত, শুভাশিস মৈত্র, মৃত্যুঞ্জয় চ্যাটার্জি,সিদ্ধার্থ সরকার, সৌম্য সিনহা, নবেন্দু গুহ, হীরক কর, জয়ন্ত চৌধুরী, বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য, রবিশঙ্কর দত্ত,সুবীর চক্রবর্তী, সেই ধ্রুবজ্যোতি প্রামাণিক, বিশ্ব মজুমদার সবার সাথেই কেমন হাসিখুশি হয়েই কাটিয়ে দিতে পেরেছে সে এই দীর্ঘ পঁচিশ বছরের তাঁর কর্ম জীবন। সেই ম্যানেজার বিশ্বজিৎ গুহ রায়, সেই ম্যানেজার সুদীপ্ত রায় চৌধুরী সবার সাথেই সমান সখ্যতা ওর একভাবেই। সেই রাজেশ রায়না আর পি বি নরেন্দ্র কেউই অপছন্দ করে নি কোনোদিন তাকে কোনো সময়। সেই হায়দরাবাদ থেকে আসা অনির্বাণ শ্যাম এর পছন্দের রিপোর্টার ছিল সেই দীপালি মিত্র। সত্যিই অসাধারণ ওর এই অভিজ্ঞতা। এই বর্ণময় উজ্জ্বল অভিজ্ঞতার বিকল্প কিছুই হয় না। সত্যিই বলতে কি লুকিয়ে লাভ নেই এর জন্য আমার মাঝে মাঝে ওকে একটু হিংসাও হয়। 

সেই সেক্টর ফাইভের কলেজ মোড়ের রাস্তা দিয়ে আমি হেঁটে আসছি। সেই ওর সিঁড়ি দিয়ে সন্ধ্যা বেলায় একটু ধীরে ধীরে হেঁটে নেমে আসা। আমি রাস্তায় দুর থেকে ওকে দেখে দাঁড়িয়ে গেলাম। একটু কি হাঁটার গতি শ্লথ ওর। আমায় দেখেই একগাল হাসি। কি খবর তোমার। বোধহয় সেই সময় আমি ২৪ ঘণ্টার কর্মী ছিলাম। মুড়ি আর চপ খেতে ওই পাড়ায় হাজির হয়েছিলাম আমি সেই বিখ্যাত গলিপথ পার হয়ে। সাড়ে নটা সাড়ে ছটার ডিউটি শেষ করে বাড়ী ফিরছে সে। অল্প কিছু সময় কথা হলো ওর সাথে। তারপর ট্যাক্সি করে চলে গেল বাড়ী। 

সেই তিন নম্বর চৌরঙ্গী স্কোয়ার এর অফিসে উপচে পড়া ভীড়। সেই ৫৫ বি মির্জ্জা গালিব স্ট্রীট এর ইটিভির অফিসে গুটিকয় লোক, কম আলোর অনুজ্জ্বল ম্যাড়মেড়ে একটা অফিস। কিছু পুরোনো কর্মীর ইটিভিকে ভালবেসে কাজ করে যাওয়া চুপ চাপ মুখ বুজে। মাসের শেষে ত্রিশ তারিখে বেতন মেলার আশায়। কিছু পুরোনো লোকের এদিক ওদিক ছিটকে যাওয়া। এটাই তো সেই ইটিভির পুরোনো দিনের একান্নবর্তী পরিবারের, ভেঙে পড়া জমিদার বাড়ীর টুকরো টুকরো সংসার। যে সংসারের টুকরো ছবি, টুকরো কোলাজ আজ আমার এই আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় কালো অক্ষরের জাল বোনার চেষ্টা করা। 

সেই একদিন কিছুদিন আগেই ভোরবেলায় সুনীত জানালো দীপালির বাবা মারা গেলেন। সেই করোনার সময় ওর বাবা মার অসুস্থ হওয়া। সেই দুজনের হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা করে বাড়ী ফিরে আসা। এই কথা শুনেছিলাম ওর কোনোও সহকর্মীর কাছেই। আমি ভেবেছিলাম যে দুদিন পর ওকে ফোন করবো কথা বলবো ওর সাথে একটু। বাবার খবর শুনে কিন্তু আর করা হয়ে ওঠেনি আমার। সেই ইটিভির পুরোনো নম্বরটা আজও মনে আছে আমার। যতদূর সম্ভব শেষ তিনটি নম্বর ৪৫৪ বোধহয়। খুব ভুল আমার না হলে।


আজ নানা কথা মনে পড়ে যায় আমার। কিছু কথা ঝাপসা হয়ে গেছে। সেই অফিস এর নিচে চা খেতে যাওয়া। সেই মৌসুমী, পিয়ালী, দীপালি, শাবানার জুটি। সেই অফিস এর রিসেপশন এর মিঠু। সেই মনীশ কুমার। সেই অমিতাভ ভি স্যাট এর। সেই জগদীশ চন্দ্র কলকাতা অফিস এলে ধ্রুবর ওকে সিনিয়র ডেস্ক পার্সন বলে পরিচয় করিয়ে দেওয়া। সেই নানা ঘটনার কথা মনে পড়ে যায় আমার। এই ইটিভির সংসার, যে ভরা সংসার একদিন আনন্দে ভরপুর ছিল গমগম করতো চেনা মানুষের হাসি আর হুল্লোড়ে। সেই সংসারে হঠাৎ করেই ভাঙন ধরলো। সেই রামোজি রাওয়ের স্বপ্নের ইটিভি নিউজ বাংলা ধীরে ধীরে কেমন বদলে গেলো। বদলে গেলো চেনা অফিসের ছবি। বদলে গেলো সেই অচেনা অফিসের রাজনীতি আর আশপাশের চেনা মানুষগুলোও। 

সত্যিই আজ এই সব কথা মনে পড়লে বেশ লাগে ভালো লাগে আমার। জীবনের খাতার এই দীর্ঘ পঁচিশটি বসন্ত, শীত, হেমন্ত, শরৎ, বর্ষা কেটে গেছে কেমন দেখতে দেখতে আজ। সেই সাংবাদিক জীবনের শুরুর প্রথম চাকরীর সুযোগ পাওয়া এই ইটিভিতে, সেই ট্রেনি রিপোর্টার এর চাকরির তিন হাজার তিনশো টাকার বেতন এর পে স্লিপ, সেই নিউজ টুডে ডিরেক্টর এস আর রামানুজন এর সই করা অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার। সেই মাসের ত্রিশ তারিখে বেতন পেয়ে কি আনন্দ, সেই মাসের কুড়ি তারিখের পর ইন্দ্রর দেওয়া টি এ বিলের দু আড়াই হাজার টাকা পাওয়া। আর ইন্দ্রর সাথে একসাথে বাড়ী ফেরা। আর সেটা দেখে সেই পিয়ালীর বর সন্দীপ এর আওয়াজ দেওয়া। আর টাক মাথার আশীষের মুচকি হাসা।

দৌড়ে দৌড়ে শ্রীরামপুর থেকে ট্রেন ধরে হাওড়া গিয়ে ক্যাসেট নিয়ে যাওয়া ধর্মতলার ভীড় করা অফিসে পৌঁছে যাওয়া। ক্যাসেট দেখেই দৌড়ে এসে আশীষ দার একগাল হেসে বলা কি রে বড্ড দেরী হয়ে গেলো রে আজ। আমার বাংলায় ধরাতে হবে যে এটা। সেই প্রোডাকশন এর মহুয়া আর মৌমিতার সংসারে খবরের ক্যাসেট পৌঁছে যাওয়া সুরুৎ করে। সেই বিখ্যাত ছোটো মা আর বড়ো মার সংসারে। সত্যিই কি ভালো যে ছিল সেই দিনগুলো। আজ দীপালির কথা লিখতে বসে এমন নানা স্মৃতি ভেসে আসছে আমার এই বুড়ো বয়সে। ভালো থেকো তুমি। এমন হাসিমুখেই ব্যাট করে যাও এই ঘাসফুলের কঠিন এবড়ো খেবড়ো পিচে। দেখো তুমি যেনো আমার মত আউট হয়ে যেও না কিছুতেই। ভালো থেকো তুমি দিদি।

ইটিভির দীপালি মিত্র - অভিজিৎ বসু।
একুশে জানুয়ারী দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ইটিভির পিনাকপাণি ঘোষ

কিছু মানুষ কত কাছে থেকেও পাশাপাশি এক জায়গায় বাস করেও একসাথে একসময় কাজ করেও যে কত দূরে রয়ে যান নিজের হাসিমুখ নিয়ে আর সেই চেনা ছন্দ নিয়ে সত্যিই বেশ ভালো মজার ব্যাপার কিন্তু এটা জীবনের মেঠো পথে। সেই ইটিভির বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে ঘুরে ঘুরে স্ট্রীট ফুডের ছবি তোলা আর নানা খবর করে খাওয়া দাওয়ার এপিসোড করে একসময়ে বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে যাওয়া ইটিভি নিউজে। আর আমাদের জেলায় বসে সেইসব হাঁ করে দেখা আর কেমন মনের ভেতর অস্থিরতা তৈরি হওয়া। একেই বলে কলকাতার রাজপথের সাংবাদিক বলে কথা।  সেই যে বার রাষ্ট্রপতি এলেন জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে সেই অনুষ্ঠানের বিশেষ কার্ড জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করা ইটিভির চাকরি করার সুবাদে। কোনো রকমে সেই কার্ড জোগাড় করে এনে দেওয়া তাঁকে আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য। আর সেই একদিন দুপুর বেলায় খুব সম্ভবত করোনা শেষ পর্বে বালিঘাট স্টেশন থেকে অফিস যাওয়ার সময় এসি পঞ্চাশ এর বাস এর ভিতরে দেখা হওয়ায় কত গল্প করা দুজন মিলে পুরনো দিনের। আবার উত্তরপাড়ার সেই বিখ্যাত চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে হাসি মুখে দেখা হয়ে যাওয়া রাতের বেলায় কাঁঠালবা...

আমাদের সবার মৃনাল দা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক বাবা আর ছেলের লড়াই এর গভীর গোপন কাহিনী। এই সাংবাদিকতার পেশায় এসে কত লড়াই, কত অসম যুদ্ধ, করে যে কেউ সংসার টিকিয়ে রাখতে পারে হাসি মুখে কাউকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে। এমন করে কেউ টিকে থাকার চেষ্টা করেন সেটা বোধহয় আমার জানা হয়ে উঠত না কিছুতেই। যদি না এই পেশায় আমি গা ভাসাতাম এমন করে। জীবনের এই নানা টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ ভেসে ওঠে এই রাতের অন্ধকারে আচমকা আমার মনের মাঝে। আর আমি চমকে উঠি কেমন করে তাদের সেই কোলাজ দেখে।  এমন এক চরিত্র, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়ে কেমন আলগোছে, হাসিমুখে, নির্মোহ ভাবে, শুধু নিজের কাঁচা পাকা দাড়িতে হাত বুলিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিলো সে শুধুই আকাশ পানে তাকিয়ে। যে নীল আকাশের গা ঘেঁষে উড়ে যাওয়া সাদা বকের ডানায় লেগে থাকে মেঘের হালকা টুকরো। একদম যেনো সিনেমার পর্দার হিরোর মতোই। দেখে বোঝার উপায় নেই একদম। পেটে খাবার না থাকলেও মুখের হাসিটা অমলিন হয়েই বেঁচে আছে আজও এতোদিন পরেও। আর সেই বিখ্যাত সাদা পাকা নাসিরউদ্দিন স্টাইলের দাড়ি, কালো চুল, আর সব সময় ধোপদুরস্ত ফিটফাট একজন মানুষ। রাত নটা বাজলেই যাকে শ্রীরামপুরে...

শপিং মলের উদ্বোধনে সিঙ্গুর আন্দোলনের দাপুটে মন্ত্রী

নালিকুল স্টেশন বাজারে একটি শপিং মলের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বেচারাম মান্না হাজির। একসময় যাঁর অন্দোলনের ঠেলায় পড়ে দৌড়ে একপ্রকার পালিয়ে চলে যেতে হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে টাটা কোম্পানিকে। যে আন্দোলনের দগদগে ঘা আর সেই স্মৃতি ধীরে ধীরে আজ প্রায় মিলিয়ে যেতে বসেছে আমাদের কাছ থেকে। আজ সেই চাষার ঘরের মানুষ না হলেও সেই কৃষক আর শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকার নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেন সেই মানুষটাকেই কেমন যেন আজ শপিং মলের উদ্বোধনে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার।  একদম নালিকুল স্টেশনের কাছে ঝাঁ চকচকে শপিং মল। দোকানে সাজানো জিনিস পত্র। আর সেখানেই আমাদের মাননীয় মন্ত্রী বেচারাম মান্না। একদম কেমন একটু আমার অচেনা লাগলো যেন। সেই মুড়ি খেয়ে আলুর তরকারি বা শশা খেয়ে আন্দোলন শুরু করা জমি আন্দোলন এর অন্যতম পথিকৃৎ নেতা আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তাহলে টাটা কোম্পানির বিরুদ্ধে যে জমি দখল নিয়ে আন্দোলন সেই আন্দোলন এর মধ্যে ছিল জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যদিও সেখানেও সেই সময়ের শাসকদলের কর্মসংস্থানের যুক্তি।তবে এই নতুন শপিং মলের উদ্বোধনে তো আর ...

ভীড়ের মাঝে একা

জীবন জুড়ে শুধুই ভীড় আর ভীড়। নানা ধরনের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় মানুষের গন্ধে, বর্ণে , স্বাদের ভীড়ে আমি একদম একা হয়ে যেতে চাই। যে ভীড় উপচে পড়া রাস্তায় শুধুই হেমন্তের ভোরে শিশিরের ফিসফিস শব্দ, পাখির কিচির মিচির আওয়াজ,ধানসিড়ি ওই নদীটির তীর ধরে ঘুঘুর আকুল মন কেমন করা ডাক, উদাসী শালিকের ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া ওই হেমন্তের হলুদ ধানের মাঠ এর পাশ দিয়ে, হলুদ বসন্ত বৌরীর সেই আমলকীর গাছের পাতায়,আড়ালে আবডালে বসে কেমন যেন আমায় দেখে লজ্জা পাওয়া, আর তারপর চোখ নামিয়ে হঠাৎ করেই তার উড়ে চলে যাওয়া। আর মেঘের কোল ঘেঁষে সেই সাদা বকের, বুনো হাঁসের, আর সেই পানকৌড়ির জলে ভেজা ডানা মেলে উড়ে যাওয়া আকাশ জুড়ে। সত্যিই ওরাও যে ভিড়ের মাঝেই বড়ো একা। একা একাই ওদের যে এই বেঁচে থাকা। কেমন নিপাট হৈ চৈ হুল্লোড়হীন একটা জীবন নিয়ে বেশ মজা করে, আনন্দ করে। আর সেই ভোরের আলোয় আলোকিত হয়ে রাস্তার একপাশে গুটি শুটি মেরে শুয়ে থাকা ওই সাদা কালো ভুলো নামের কুকুরের। যে অন্তত এই সব মানুষদের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় একটু যেনো আলাদা , একটু যেনো অন্য রকমের। একটু একা একাই যেনো ওর এই আলগোছে জীবন কাটিয়...

গৌড় প্রাঙ্গণে আনন্দবাজার

গৌরপ্রাঙ্গনে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যের আনন্দের মেলা আনন্দবাজার। মহালয়ার ভোরবেলায় ঢাকের বাদ্যি আর সানাইয়ের মন কেমন করা সুরে মেতে উঠলো শান্তিনিকেতনের গৌড়প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও যে হবে আনন্দমেলা আনন্দবাজার। হ্যাঁ সত্যিই যেনো আনন্দের এই হাটে বেচাকেনার পসরা নিয়ে একদিনের জন্য বসে পড়া মন প্রাণ খুলে হৈ হুল্লোড় করে। এই মেলা শুরু হয় 1915 সালের 15 এপ্রিল নববর্ষের দিনে। কিন্তু আগে এই মেলাকে একসময় বলা হতো বৌঠাকুরাণীর হাট। সেই সময় আশ্রমের মহিলারা নিজেদের হাতের তৈরি জিনিস নিয়ে মেলায় বসতেন। মেলার আয়োজন করতেন তারা। আনন্দ করে বেচাকেনা হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় একবার গরমের ছুটির আগে এমন মেলা নাকি হয়েছিল। যার নাম ছিল আনন্দবাজার। পরে এই মেলার নামে হয়ে যায় আনন্দমেলা। সত্যিই আনন্দের এই মিলন মেলা।  প্রথমদিকে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই মেলা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে বিশ্বভারতীর সব বিভাগের পড়ুয়ারা এই মেলায় যোগদান করে। এই মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের বেচা কেনার লাভের টাকার কিছু অংশ জমা পরে বিশ্বভারতীর সেবা বিভাগে। সেখান থেকে এ...