সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

শুভ জন্মদিন সঞ্চয়ন

ফেসবুকের পর্দায় ওর জন্মদিন দেখে আমার ইচ্ছা হলো ওকে জন্মদিনের একটা শুভেচ্ছা জানাতে। সেই খবরের শেষে ওর সাইন অফ দেওয়া সঞ্চয়ন মিত্র, এবিপি আনন্দ। সেই একদম কলকাতা শহরের রাজপথে সকাল বেলায় হলেই গাড়ী নিয়ে ঘুরে বেড়ানো সুন্দর হাসি মুখের এই মিষ্টি কথাবার্তার এক শুভদ্র, সৌজন্য দেখানো রুচিশীল এক হাসি মুখের সাংবাদিক। সেই বেশ নানা বিষয়ের জ্ঞানী এক মিষ্টি মনের আর মিষ্টি কথার এক সাংবাদিক। 


সেই দূর্গা পূজো এলেই টিভির পর্দায় দেখা যেতো তাকে তার সুন্দর হাসি মুখ নিয়ে এই মণ্ডপ থেকে ওই মণ্ডপে ঘুরে বেড়াতে। সেই দুর্গা পূজোর ভাসান পর্বে ধুতি আর পাঞ্জাবি পরে সেজে গুজে গঙ্গার ঘাটে যার লাইভ দেখে আর তার ব্যাখ্যা শুনে সমৃদ্ধ হওয়া যেতো। যদিও তাঁর সাথে আমার আলাপ, পরিচয়, ঘনিষ্ঠতা, যোগাযোগ এমনকি তার ফোন নম্বর ও নেই আমার কাছে একদম। তবু এই বাংলা মিডিয়ার এক নম্বর চ্যানেলের সেই রিপোর্টারকে আমার জন্মদিনের শুভেচ্ছা। 
কিছু কিছু সাংবাদিক এর সাথে যোগাযোগ না থেকেও কেমন যেন মনে হয় বেশ কাছের জন সে। একসাথে কোনওদিন কাজ না করেও মনে হয় বড়ো চ্যানেলের রিপোর্টার হলেও তার কাছে একটু ঘেঁষা যায়। তার সাথে দু একটা কথা বলা যায়। একটু হেসে দু দণ্ড দাঁড়িয়ে জিজ্ঞাসা করা যায় তাকে, এই খবরটা একটু বলবে কি হলো। আজ আবহাওয়া কেমন গো। 

তাই যেদিন অফিসে কর্মরত থাকা অবস্থায় তাকে দেখলাম কেক কেটে বিদায় জানানো হলো সেটা দেখেই কেমন যেন মনটা খারাপ হয়ে গেলো আমার। হঠাৎ করেই এমন সুন্দর একজন বিখ্যাত বাংলার এক নম্বর মিডিয়ার সাংবাদিক কেনো যে অবসর গ্রহণ করলো সেটা ঠিক বুঝতে পারলাম না আমি। কাউকে জিজ্ঞাসা করা হয়নি আর। কাকেই বা জিজ্ঞাসা করবো এই বিষয়ে। স্বেচ্ছা অবসর গ্রহণ করা নিয়ে কী জিজ্ঞাসা করা যায় কিছু। মনে হয় না। 

তবে সাত সকালেই টিভির পর্দায় সেই আজকের আবহাওয়ার খবরের আপডেট পেতে ভরসা ছিলো এক নম্বর চ্যানেলের সেই অন্যতম সেরা রিপোর্টার সঞ্চয়ন মিত্র, এবিপি আনন্দ। পূজোর ঘন্টা বাজলেই যার ব্যস্ততা বৃদ্ধি হয় খুব। কুমোরপাড়ার গরুর গাড়ীর সেই চেনা ছন্দে যে একের পর এক নানা ঘটনা আর কাহিনী নিয়ে নানা অজানা খবর আমাদের সামনে হাজির করে নিজের দক্ষতায়। দশভূজা মা দুর্গার কাহিনী, শক্তির দেবী মা কালীর আরাধনায় যার মুখ দেখতে অভ্যস্ত আমরা বহুদিন ধরেই। টিভির পর্দায় সেই সঞ্চয়ন মিত্রকে বহুদিন দেখাই যায় না আর। একদম ভ্যানিশ হয়ে গেলো সে। কোথায় গেলো কে জানে। নিজে নিজেই হারিয়ে গেলো সে। 

হয়তো নিজেই সে তার এই স্বেচ্ছা অবসরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সে হাসিমুখেই। সেই কেক কাটার অনুষ্ঠানে তাকে ঘিরে থাকা নানা উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো মানুষের ভীড় আর তাকে শুভেচ্ছা বার্তা দেওয়া দেখে মনটা কেমন যেন খারাপ হয়ে গেছিল আমার। হয়তো ও নিজেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আর খবরের খোঁজে দৌড়ে বেড়াবে না সে কোনোদিন। দেখতে দেখতে কেমন যেন অভ্যাস হয়ে গেলো সবার। সঞ্চয়ন মিত্রকে আর টিভির পর্দায় না দেখেও। তার হাসি মুখ না দেখেও। তার লাইভ না দেখেও। 

সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগে আজ সেই বিখ্যাত সাংবাদিক এর কথাই লিখে ফেললাম আমি সকাল বেলায়। সেই সঞ্চয়ন, আর সেই প্রীতম এর সুন্দর জুটি। সেই একনম্বর আর দু নম্বর চ্যানেলের দুই বিখ্যাত সাংবাদিক এর অমলিন সম্পর্কের মেঠো সুন্দর রাজপথের বন্ধুত্ব। যে বন্ধুত্ব আজও টিকে আছে নিশ্চয়ই। তবু এই জন্মদিনের দিন তাকে আমি জানালাম শুভ জন্মদিন সঞ্চয়ন। বহুদিন দেখাই হয়নি আর তোমার সাথে। কতদিন সেই চায়ের দোকানে আড্ডা দেওয়া হয়নি। সেই তোমার সুন্দর ব্যাখা মূলক পূজোর লাইভ শোনা হয়নি। যেটা বড্ড মিস করি আমি। হ্যাপি বার্থডে সঞ্চয়ন।

শুভ জন্মদিন সঞ্চয়ন - অভিজিৎ বসু।
চব্বিশ জানুয়ারী দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

জামালপুরের প্রদীপ দা

আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায় বর্ধমানের জামালপুরের সেই দাপুটে ঠোঁট কাটা সাংবাদিক প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় এর কথা। সেই বিখ্যাত সুভাষ তালুকদার এর কাগজ সংবাদে মাত্র এক টাকার কাগজে কাজ করা সংবাদ পত্রিকার দাপুটে সাংবাদিক সেই প্রদীপ দা। সেই মুখ্যমন্ত্রীর সভায় বাঁশের ব্যারিকেডের এপারে দূরে দাঁড়িয়েও যে খবর করা যায় সেটা বড়ো মিডিয়ার সাংবাদিকদের হাসি মুখে দেখিয়ে দিয়ে, আর তাদের খবরের ময়দানে গোল দিয়ে শুধু খবরকে ভালোবেসে ছোটো কাগজে কাজ করে চলা সর্বদা হাসি মুখের সেই আমাদের প্রদীপ চ্যাটার্জী দা।  কোথাও কোনো অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদে মুখর হয়ে যাওয়া আর এক দৌড়ে বেরিয়ে পড়া ঝোলা কাঁধে সেই খবরের খোঁজে সেই জামালপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের সেই প্রদীপ দা। সেই বিখ্যাত পন্ডিত রবিশঙ্কর আর উদয়শঙ্কর এর আপন মাসতুত ভাই এর ছেলে সেই প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় দাদা। সেই বামদের আমলে জামালপুরের এলাকায় দাপিয়ে খবর করে ছুটে বেড়ানো সেই প্রদীপ দা। সেই তৃণমূল আমলেও একভাবেই ছুটে বেরিয়ে কাজ করা আমাদের সদা ব্যস্ত প্রদীপ দা।  সেই বাবার অসুস্থতার কারনে বড়ো সংবাদ মাধ্যমে কাজ না করেও...

আমার স্যার কাজীদা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ আমার স্যার এর কথা। যার লেখা আজ হঠাৎ চোখে পড়লো একটি কাগজে। আর স্যার এর নামটা দেখেই মনে পড়ে গেলো নানান কথা। হ্যাঁ, সেই কাজী গোলাম গাউস সিদ্দিকী। যাঁর সাথে আমার আলাপ আর দেখা হয়েছিল সেই অজিতদার ফ্রিল্যান্স ছকু খানসামা লেনের ফ্রীল্যান্স প্রেস ক্লাবের অফিসে খুব সম্ভবত। হাসিখুশি বেশ অজাতশত্রু এই মানুষটিকে দেখেই আমার মনে হয়েছিল যে রিপোর্টারদের প্রভূত ক্ষমতা থাকে বোধহয়। তাই পকেটে পেন আর সেই ফোনের ছোট্টো নোটবুক দেখেই আমার মনে হয়, যে ক্ষমতার স্বাদ পাবার জন্য সেই সদ্য গ্র্যাজুয়েশন করে আমার কচি মনে সাংবাদিক হবার বাসনা জাগে সেই সময়।  কোনো প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক নয়, কোনো অফিসে মাছি মারা দশটা পাঁচটার লোয়ার ডিভিশন এর কেরানি নয়, মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ নয়, ল্যাবরেটরিতে টেকনিশিয়ান এর কাজ নয়, এল আই সি বা পোষ্ট অফিস এর এজেন্ট নয়, কোনো মুদি দোকানে হিসেব পত্র লেখার কাজ নয়, স্বাধীন ব্যবসা করা নয়। শুধুই সাংবাদিক হবার স্বাদ।  কাগজে সাদা কালো অক্ষরে নিজের নাম ছাপা হবে, সেই নাম দেখে বুক ফুলে যাবে, পাড়ায় প্রতিবেশীরা সহ স...

কুড়ি থালা দশ টাকা আর রসিক মুলুর জীবন

নাম মুলু হাঁসদা। বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানার চরিচা গ্রাম পঞ্চায়েত এর চর ইচ্ছা রঘুবরপুরের বাসিন্দা মুলু। আজ মুলুর জীবন কথা। গ্রামের নামটা ভারী অদ্ভুত। চর ইচ্ছা রঘুবরপুর। যে গ্রাম অন্য পাঁচটা গ্রামের মতই।সাদামাটা এই গ্রামে দারিদ্র্য, অপুষ্টি আর কর্মহীন জীবনের জলছবি সুস্পষ্ট। আর সেই গ্রামের মহিলারা নিজেদের সংসার রক্ষা করতে গাছের পাতাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে। গাছের পাতা মুলুদের জীবনের জিয়ন কাঠি। যে জিয়ন কাঠিতে তারা ভোর হতেই পেটের টানে চলে যায় জঙ্গলে। খস খস শব্দ করে পায় হেঁটে তারা পাতা তোলে। গাছ থেকে টুপ টাপ করে ঝড়ে পড়া পাতাকে একটা একটা করে নিজের শাড়ির আঁচলে ভরে নেয়। তার পর সব পাতাকে বস্তায় ভরে ঘরে ফেরে।  ঠিক যেভাবে তারা পুকুরে নেমে শামুক গেঁড়ি আর গুগলি তোলে। যে ভাবে তাদের উদর পূর্তি হবে বলে। আর এই পাতাও যে তাদের পেট ভরায়। একটা একটা পাতাকে নিজের সন্তানের মতো আলগোছে ছুঁয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে চুমু খায় মুলু, বলে তোরা না থাকলে কি করতাম কে জানে। মাথার ওপর শাল সেগুনের বিশাল আকারের গাছগুলো চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে আর তারা চুপ করে শোনে মুলুর কথা।  একে অপ...

শুভ মকর সংক্রান্তি

মকর মানেই নতুন জামা কাক ভোরে স্নান, রাত্রি জেগে মিঠে সুরে টুসুমণির গান। মকর মানেই পিঠে - পুলির গন্ধে ম - ম হাওয়া, ডুলুং পাড়ে টুসুর মেলায় দল বেঁধে যাওয়া। মকর মানেই মোরগ লড়াই পাহুড় জেতার সুখ, সন্ধ্যা - রাতে মাংস পিঠের স্বাদে ভরা মুখ। মকর মানেই হাতি - ঘোড়ার পুজো করম তলে, সান্ধ্য হাওয়ায় মন উদাসী দিমির দিমির বোলে। আসলে আজ এই মকর সংক্রান্তির দিন, টুসু মেলার দিন, টুসু গানে নিজেকে মাতিয়ে দেবার দিন। অজয় এর ধারে জয়দেব কেঁদুলির মেলায় ভীড়ের মাঝে নিজেকে হারিয়ে দেবার দিন। অজয় এর জলে ডুব দিয়ে স্নান করে পূণ্য অর্জনের দিন। আর নদীর ধারে মোরগ লড়াই এর দিন। আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর দিন, সুতো লাটাই হাতে আকাশ পানে তাকিয়ে থাকার দিন। কেমন যেনো রাশির একটি স্থান থেকে অন্য রাশিতে স্থান পরিবর্তনের দিন। সূর্যের দেবতাকে সকালে উঠে স্নান সেরে প্রণাম জানিয়ে শক্তি সঞ্চয় এর দিন। সূর্যের উত্তর দিকে চলে যাবার দিন। ধীরে ধীরে শীতকাল চলে যাওয়ার দিন।  এই মকর সংক্রান্তি এর ইতিহাস ও ভারতীয় ঐতিহ্যের গভীর শিকড় রয়েছে। এটি কৃষি চক্র এবং ফসল কাটার মৌসুমের সাথে জড়িত। এই মকর সংক্রান্তি চ...