যন্ত্রণা, রক্তক্ষরণ, মৃত্যু, আত্মশ্লাঘা এসব আর লিখতে পারছেন না কিছুতেই কবি। সেই মনোবেদনার কথাই কবি বলেছেন তাঁর কলমে চুপিসাড়ে। তিনি একাধারে দাপুটে পুলিশ অফিসার, অন্যদিকে কলম ধরা অনুভূতির রাজ্যে বিচরণ করা এক কবি। আবার ছাত্র জীবনে একসময়ে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতার পাঠশালায় পাশ করা এক ছাত্রও। সব মিলিয়ে একজন নানা স্বাদের মানুষ তিনি।
কবে যে তাঁকে প্রথম দেখলাম আজ আর মনে নেই আমার। হুগলী জেলার শ্রীরামপুর থানায় হবে বোধহয়। একদম দক্ষ ডাকাবুকো এক দীর্ঘদেহী এক পুলিশ অফিসার। যিনি লোকজন বলে শক্তের ভক্ত আর নরমের যম তিনি। সেই রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় দাপটে কাজ করা পুলিশ অফিসার সুকোমল দাস। আমাদের সবার সুকোমল দাদা। অপরাধীদের কাছে আতঙ্কের আর ভয়ের মানুষ তিনি।
আমার জানা ছিল না তিনি তন্ময়ের সাংবাদিকতার ব্যাচমেট। নিজেই সেই কথা বলেছেন তিনি তন্ময়ের লেখা পড়ে। আসলে এই জীবন দেখা আর জীবন খোঁজার মাঝে এমন কত কিছুই যে লুকিয়ে থাকে আমাদের চারপাশে কে জানে। যা আমরা কিছুই জানতে পারিনা। সেই শ্রীরামপুর থেকে বিভিন্ন জায়গায় কাজের সূত্রে ঘোরা আর যোগাযোগ স্থাপন করার নিরন্তর চেষ্টা। মানুষকে আপ্রাণ সাহায্য করার চেষ্টা। আর সেই সাংবাদিকতা পড়ার সুবাদে খবর আর খবরের গন্ধ বোঝার নাক ছিলো তাঁর বরাবরই।
তাই তাঁর অ্যাকশন ও অপারেশনের খবর করতে লিখতে আর বলতে কোনোদিন অসুবিধার সৃষ্টি হয়নি আমাদের মত খবর সংগ্রহ করে বেঁচে থাকা দিন আনা দিন খাওয়া মানুষদের। বেশ ওপরে ওপরে কড়া আর কঠিন, শক্ত মনের মানুষ হলেও সেই ভিতরে মানুষটা যেনো একটু অন্য রকমের একদম নরম মনের মানুষ তিনি। আর তাই মনে হলো আমার সাদা জীবনের কালো কথায় লেখা দরকার সেই বিখ্যাত পুলিশ অফিসার সুকোমল দাসকে নিয়ে কিছু কথা।
খুব বেশী অভিজ্ঞতা, স্মৃতির পাতায় উত্তাপ ছড়িয়ে নেই আজ আর আমার। তবু তো এই জীবন এর মাঝে এমন একজন মানুষ ছিলেন। ভালো কাজের মানুষ ছিলেন। শুধুই কাজকে ভালোবেসে দৌড়ে বেড়ানো আর ছুটে বেড়ানো এক পুলিশ অফিসার ছিলেন। যিনি আরামবাগ, গোঘাট, খানাকুল, বিষ্ণুপুর, উত্তরবঙ্গের নানা জায়গায় অপারেশন করতে যাওয়া এক দাপুটে পুলিশ অফিসার। সেই তাঁর মাকে ভালোবেসে সব কাজ হাসি মুখে সামলে দেওয়া এক দক্ষ পুলিশ অফিসার। সেই তাঁর আমলে তাঁর সাথে কাজ করা নানা নিচু তলার কনস্টেবল, সোর্স, সাংবাদিকদের কাছে আজও হিরো হয়েই আছেন তিনি।
কেনো জানিনা আমিও বেশ তাঁর কাজের ফ্যান বরাবর। হয়তো পুলিশে কাজ না করলে খবরের জগতে কাজ করতেন তিনি। সেই পকেটে হাত দিয়ে বিন্দাস জীবন আর স্টাইল নিয়ে। যা তাঁর একমাত্র ট্রেডমার্ক। যেটার জোরেই তিনি এতদিন ধরে ব্যাট করে যাচ্ছেন কেমন হাসি মুখে। সেই লাল আমল থেকে সবুজ আমলেও। কোনও অসুবিধায় না পড়েই। ভালো থাকবেন আপনি।
এমন হাজারও প্রতিবন্ধকতার মাঝে এইভাবেই হাসিমুখে ব্যাট করে যান আপনি। আর অবসরে লিখে যান আপনার মনের নানা অনুভূতির কথা। যে অনুভূতি ছড়িয়ে পড়ে এই শব্দহীন শীতার্ত ভোরে সাদা কুয়াশার আস্তরণ মেখে টুপটাপ করে কাঁচের জানালার শার্সির ওপর, শিশির ভেজা গাছের পাতার ওপর যা পড়ে আমরা বিমোহিত হই মুগ্ধ হই আর আনন্দ পাই। ভালো থাকবেন আপনি।
পুলিশ ও কবি সুকোমল দাস - অভিজিৎ বসু।
এগারো জানুয়ারী দু হাজার পঁচিশ
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন