সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ইটিভির অভিজিৎ বিশ্বাস

হাতে সেই চেনা লাল ইটিভির বিখ্যাত লোগো নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে সে। ঘামে ভেজা শরীর। তার গায়ে এলো মেলো জামা পড়া। কোনও জামার হাতা গুটোনো আবার কোনোও জামা আবার না গুঁজে হাতা ছেড়ে দিয়ে পড়া। গালে অল্প দাড়ি। পায়ে তার সস্তার জুতো। সারাদিন খবরের সন্ধানে মাঠে ময়দানে ঘুরে বেড়ানো এক খবর পাগল সাংবাদিক এর ক্লান্ত ঘেমো মুখ। সকাল থেকে শুধু যার মাঠে ম টায়দানে দৌড় আর দৌড়। একটু দাঁড়াবার সময় নেই। যে দৌড় ঝাঁপ করেই কেটে গেল সেই সাংবাদিকের গোটা একটা মাঠের সাংবাদিকতার জীবন।


 হ্যাঁ, আজ সেই সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগে সেই ইটিভির স্পোর্টস রিপোর্টার অভিজিৎ বিশ্বাস এর কথা মনে পড়ে গেলো আমার। যাকে আমরা কথায় কথায় এই বিশ্বাস বলে ডেকে বসতাম কখনও কখনও। সেই আমাদের সবার কাছের, আদরের, ভালোবাসার, কাজের ছেলে এই বিশ্বাস। সেই কলকাতার মাঠের চেনা খাটিয়ে ঝাঁ চকচকে রিপোর্টার না হলেও সেই কাজের রিপোর্টার অভিজিৎ বিশ্বাস। সেই অফিস এর দাদাদের থেকে দূরে থাকা ভালো মানের রিপোর্টার অভিজিৎ বিশ্বাস। সেই ম্যানেজার সুদীপ্ত রায়চৌধুরী ও বিশ্বজিৎ গুহরায় এর টেবিল এর সামনে হাতজোড় করে তেল দিতে না দাঁড়িয়ে থাকা রিপোর্টার অভিজিৎ বিশ্বাস। সেই সবার থেকে একটু দূরে সরে থাকা শুধুই কাজে মাঠে ময়দানে ডুবে থাকা রিপোর্টার অভিজিৎ বিশ্বাস। 

আজ রাতে হঠাৎ করেই কেনো জানি না আমার মনে পড়ে গেলো ওর কথা। সেই ইটিভির মির্জা গালিব স্ট্রীট এর অফিস। সেই অফিসে হায়দরাবাদ থেকে সিদ্ধার্থ সরকারের মিটিং করতে আসা। দরজা বন্ধ করে কলকাতার রিপোর্টারদের নিয়ে জোর আলোচনা করা। সেই ভি স্যাট দফতরের হেড অমিতাভ সেনগুপ্তর অভিজিৎ বিশ্বাসকে নানা ভাবে উত্যক্ত করার চেষ্টা করা। আর ওর হাসি মুখে পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে আসা। সেই পাটনা থেকে আগত মনীশ কুমার এর অভিজিৎ বিশ্বাসকে অফিস এর নানা গভীর গোপন কথা শেয়ার করা হাসি মুখে। কিন্তু সবকিছু শুনেও কেমন নির্লিপ্ত হয়ে বেঁচে থাকতে জানা সেই আমলের বিখ্যাত খেলার মাঠের রিপোর্টার সেই কর্মবীর অভিজিৎ বিশ্বাস। 


যে সাংবাদিককে মিডিয়ার ছোটো বড়ো সবাই বেশ পছন্দ করে ওর এই কাজের জন্য। সেই সাধন, সুদীপ, সেই ভি স্যাট এর নানা লোক সুফল, অভিজিৎ আরো কতজন যে ছিল নাম মনে নেই আমার আজ আর। সেই হায়দ্রাবাদ থেকে আসা পি বি নরেন্দ্র মিটিং করতে এসেছেন কলকাতায়। টেনশন হচ্ছে আমাদের সবার কী বলবেন তিনি। খেলার মাঠে টেনশন হলেও বিশ্বাস কেমন যেন বিন্দাস ঘুরে বেড়াচ্ছে এদিক ওদিক। সেই কৌশিক গিরি, নবেন্দু গুহ, জয়ন্ত চৌধুরী, বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য, রবি শঙ্কর দত্ত, সেই হীরক কর আরও কতজন যে ছিল সেই সময় কে জানে। 

সেই চেনা অভিজিৎ বিশ্বাস একদিন কোথায় যে হারিয়ে গেলো কে জানে। ওর সেই চেনা ফোন নম্বরও আর নেই আমার কাছে। ওর পরিবারের সাথে ওর দুই মেয়ের সাথে ওর নানা ছবি দেখে মনটা বেশ ভালো হয়ে যায় আমার আজকাল এই বুড়ো বয়সে। আবার মনে হয় সেই মির্জা গালিব স্ট্রিট এর অফিসে ফিরে যাই আমি। বেশ ভালই লাগত তাহলে আমাদের।

 সেই সবার প্রিয় হাসি মুখের সবার দিদি কোয়ার্টার সেঞ্চুরি করা দীপালি মিত্র, সেই মিষ্টি গলার পিয়ালী, পুলিশে রিপোর্টার মৌসুমী, সেই বিখ্যাত অরূপ দত্ত, সেই বিখ্যাত মনিরুল হোসেন, সেই শুভ্র মানে লোহা সেই ইটিভি উর্দুর শাবানা।। আরও কত চেনা নাম ছিল মনে নেই আজ আর। সেই ক্যামেরা রুমের চেনা দেবাশীষ মৈত্রর কড়া নজরদারির সিসিটিভির নজরে চলা সংসার। সেই বিখ্যাত রাও, সেই মানস দা, ফান্টা দা, সৌমেন, মনোজ, আশীষ, জয়, শুভেন্দু যদিও সে ছেড়ে দিয়েছে চাকরি বর্তমানে। একদিন কি করে যে ভেঙে গেলো ইটিভির এই একান্নবর্তী পরিবার কে জানে। হারিয়ে গেলো পরিবারের সব সদস্যরা এদিক ওদিক। কে কোথায় ছিটকে গেলো কে জানে। 

ঠিক তেমনি করেই আমরা দুই অভিজিৎ বোস আর বিশ্বাস হারিয়ে গেছি আজ বহুদিন হলো খেলার মাঠ থেকে। কর্মঠ দুই সাংবাদিক কেমন যেন হারিয়ে গেছে এই বাংলা মিডিয়া থেকে। যদিও বিশ্বাস হয়তো বর্তমানে দূরদর্শনে কাজ করে কিছুদিন হলো। তবে সেই আমলে ওর মতো ভালো ছুটে বেড়ানো স্পোর্টস রিপোর্টার কিন্তু দেখিনি আমি। সেই সময় ছিল উৎপল পট্টনায়ক। যাঁর কথা আগেই লিখেছি আমি। তবু আজ এই রাতের‌ বেলায় ঘুম ঘুম চোখে লিখে ফেললাম আমি আমার হারিয়ে যাওয়া আর এক অভিজিৎ এর কথা। তুমি ভালো থেকো অভিজিৎ। শুভ জন্মদিন। ভালো থেকো তুমি।

ইটিভির অভিজিৎ বিশ্বাস - অভিজিৎ বসু।
একুশে জানুয়ারী, দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

অমৃত কুম্ভের সন্ধানে চন্দ্রাণী

কখনও কুম্ভ মেলায় হাজির। আবার কখনও রাজনৈতিক দলের ঝাণ্ডা কাঁধে দৃপ্ত ভঙ্গিতে এগিয়ে চলেছেন তিনি রাস্তা দিয়ে একমনে ধীর পায়ে। আবার কোনোও সময় গঙ্গাসাগর সঙ্গমে তো আবার কোনোও সময় হঠাৎ করেই শান্তিনিকেতনের পৌষ মেলার মাঠে কিম্বা সোনাঝুড়ির হাটে পৌঁছে গেছেন তিনি হাসি মুখে পরিবার নিয়ে। আর এইসবের মাঝে কেউ অসুস্থ হয়েছেন শুনে তাঁকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে হঠাৎ করেই অ্যাম্বুলেন্স করে সোজা অন্য দূরের উত্তরপাড়া হাসপাতালে চলে গেছেন তিনি বাড়ীর কাউকে কিছুই না জানিয়েই। একদম স্বতস্ফূর্ত ভাবেই অন্য কারুর বিপদে এই ভাবেই ঝাঁপিয়ে পড়া হাসি মুখেই। যা আমার মার অসুস্থ অবস্থায় করেছিলেন তিনি কাউকে কিছুই না জানিয়ে রিষড়ার হাসপাতাল থেকে সোজা উত্তরপাড়ার হাসপাতালে চলে গেলেন সেদিন। আবার কোনো সময় সাংবাদিকদের কোনও অনুষ্ঠানে হাসিমুখেই হাজির হয়েছেন তিনি সবার সাথে মিলেমিশে। আর সেই তাঁর সোজা গাড়ী করে ছেলে আর মেয়েকে নিয়ে রিষড়া রেলগেট পার হয়ে সোজা, একদম সোজা সটান অমৃত কুম্ভের সন্ধানে কুম্ভ মেলায় হাজির হলেন তিনি কোনোও কিছু না ভেবেই চিন্তা না করেই। এতো পাপ মোচন করতে বা পূণ্য সংগ্রহ করতে ...

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

আমাদের সবার মিল্টনদা

“স্মৃতি ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হবে। নতুন স্মৃতির পলি পড়বে। কোনও একদিন যক্ষের মতো কোনও এক নির্জন ঘরে সিন্দুকের ডালা খুলব। ক্যাঁচ করে শব্দ হবে। ভেতরে দেখব থরে থরে সাজানো আমার জীবনের মৃতঝরা মুহূর্ত। মাকড়সার ঝুলে ঢাকা, ধূসর। তখন আমি বৃদ্ধ; হাত কাঁপছে, পা কাঁপছে। চুল সাদা। চোখদুটো মৃত মাছের মতো। এই তো মানুষের জীবন, মানুষের নিয়তি। এই পথেই সকলকে চলতে হবে। বর্তমানের নেশায় বুঁদ হয়ে থাকতে না পারলে, অতীত বড় কষ্ট দেয়।” ― সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় , লোটাকম্বল হ্যাঁ, সত্যিই তো, অতীত বড়ো কষ্ট দেয় আমাদের এই রাত বিরেতে। দু চোখের পাতা এক হয় না কিছুতেই। রাত কেটে ভোর হয়, আলো ফোটে তবু সিন্দুকের ডালা খুলে বেরিয়ে আসে নানা স্মৃতি, নানা মুখ, নানা চরিত্র, নানা ঘটনা। হ্যাঁ, আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় হুগলীর বিখ্যাত দাপুটে সাংবাদিক মিল্টন সেন এর কথা। ওর সেই হাসি খুশি মিষ্টি ভদ্র ব্যবহার, সব সময় মুখে ভালো কথা। আমার মত খারাপ বদনাম নেই ওর কোথাও। সবার সাথে নেতা, মন্ত্রী, পুলিশ অফিসার সবার সাথে ভালো সম্পর্ক রেখে এগিয়ে চলা মিল্টন এর বড়ো প্লাস পয়েন্ট।  সে যাক প্রথম ওর...

আইচ আর মাটির সংসার

আইচ আর মাটি। ফ ব মানে সেই বিখ্যাত কুচবিহার জেলার কমল গুহ আর মাটি মনে দেবমতী এই দুজনের বিখ্যাত মিডিয়ার জুটি। সেই সব সময় যে আইচ অফিস, বাড়ী নিয়ে নানা ভাবেই চাপে নাজেহাল হয়ে থাকে সব সময়। বর্তমানে কাগজে কাজ পেয়েও যে পরে চার কোনা বোকা বাক্স টিভির দুনিয়ায় ঢুকে পড়ল যে আইচ বলে ছেলেটি। যে রাজনীতির পাঠশালায় বেশ ভালই। সেই আমাদের এক সময়ের বিখ্যাত চ্যানেল এর পোদ্দার কোর্টের অফিসে সেই ২৪ ঘণ্টায় বিখ্যাত লোকজনের সাথে ওর কাজ করা। সব আকাশ থেকে নেমে আসা লোকজন আর স্বর্ণযুগের সেই বিখ্যাত সংসার। যে সংসার একদিন আবার ভেঙেও গেলো কেমন করে যেন। যে ভাঙা সংসারে ভাঙনের মুখে আমার কাজের সুযোগও ঘটে।  সেখানেই শুভ্রজিৎ আইচ আর দেবমতীর আলাপ, ঘর, মাটির সংসার পাতা আর নানা ভাবেই ওদের বেড়ে ওঠা একটা সুন্দর পরিবারকে নিজের মত করে গড়ে নিয়ে। কখনও এক মিডিয়ার অফিসে কাজ করে এক দফতর বা সেই ডেস্ক ডিপার্টমেন্ট থেকে অ্যাসাইন মেন্টের টেবিলে বদলি হয়ে চাকরি করা ওদের দুজনের একে অপরকে দূরে সরে গিয়ে। আবার সেখানেও জলের নিচে পা কাটা হাঙ্গরের দলবল ঘুরছে বলে এক চেনা অফিস ছেড়ে অন্য অফিসে চলে যাওয়া ওর ...

ওই খানে মা পুকুর পাড়ে

ওইখানে মা পুকুর-পাড়ে জিয়ল গাছের বেড়ার ধারে হোথায় হবে বনবাসী,           কেউ কোত্থাও নেই। ওইখানে ঝাউতলা জুড়ে বাঁধব তোমার ছোট্ট কুঁড়ে, শুকনো পাতা বিছিয়ে ঘরে           থাকব দুজনেই। বাঘ ভাল্লুক অনেক আছে- আসবে না কেউ তোমার কাছে, দিনরাত্তির কোমর বেঁধে           থাকব পাহারাতে। রাক্ষসেরা ঝোপে-ঝাড়ে মারবে উঁকি আড়ে আড়ে, দেখবে আমি দাঁড়িয়ে আছি           ধনুক নিয়ে হাতে। .......রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর টুপ টুপ বৃষ্টির দুপুরে এই কবিতার লাইন গুলো দেখে। মনে পড়ে গেলো মার কথা। বাইরে একটানা বৃষ্টির একটা অদ্ভুত আওয়াজ। কখনো কখনো বেশ জোরে, কোনো সময় একটু কম। মাথার মধ্যে কেমন ঝিম ঝিম করছে এই বৃষ্টির টানা আওয়াজ শুনে।  একটানা আওয়াজে কেমন যেন একটা অস্বস্তি ভাব। গাছের পাতাগুলো বৃষ্টির জলে ভিজে একদম চুপ চুপে হয়ে গেছে। পাতার ডগা থেকে ফোঁটা ফোঁটা জল ঝরে পড়ছে নিচে।গাছের পাতাগুলোর অসময়ে স্নান করে ওদের আবার শরীর খারাপ না হয়।  জানলার ধারে সারাদিন ধরে যে পায়রা গুলো বসে থাকতো আর বক বকম করতো।...