সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আকাশ বাংলার তন্ময়

বিবিভিএন

সেই বর্ধমানের তন্ময়। সেই আকাশ বাংলার তন্ময়। সেই চব্বিশ ঘণ্টার তন্ময়। সেই টিভি নাইন এর তন্ময়। সেই হুগলীর চাঁপাডাঙ্গার মোড়ে আকাশ বাংলার বুম হাতে দাঁড়িয়ে থাকা তন্ময়। সেই খোয়াই এর ক্যানালের ধারে সোনাঝুড়ি জঙ্গলের পাশে এক চায়ের দোকানে দুজনে সন্ধ্যায় বসে মনের সুখে আড্ডা দেওয়া তন্ময়। সাংবাদিকতা জীবনের এমন নানা অধ্যায়ে নানা জনের সাথে আলাপ আর পরিচয় আমার। 

সেই ওর একগাল দাড়ি মুখে উদাস করা দৃষ্টি। আর অল্প একটু হাসি নিয়ে ঘুরে বেড়ানো এই হাসপাতাল থেকে আর এক অন্য হাসপাতালে। খবরের সন্ধানে আর খাবারের সন্ধানে। ইমার্জেন্সী থেকে হাসপাতালের মর্গে। ছুটে বেড়ানো এক জেলা থেকে অন্য জেলায়। বোধহয় পুরুলিয়া জেলায় কাজ করে ওর যাত্রা শুরু হয় ওর প্রথম জীবনে। সেই খবরের শেষে শুনতাম ওর নাম পুরুলিয়া থেকে তন্ময় প্রামাণিক এর রিপোর্ট। 

দু চোখে দেখিনি তখনও। ভাবতাম তালেবর রিপোর্টার বটেক গো রোজ নাম খায়। সেই জেলা ছেড়ে কলকাতায় চলে আসা ওর। এক পেট খবরের খিদে নিয়ে আর নিজের ভুখা পেটের ক্ষিধে নিয়ে। আর সেটা নজরেও পড়ে যায় খবর চালানো কর্তাদের নজরে সেই সময়। বসদের নজরে পড়ে দ্রুত উত্থান ওর প্রথমে কিছুটা শ্লথ গতি পড়ে সেটা দ্রুত গতিতে এগিয়ে যায় সে অনেকটাই অন্যদের পিছনে ফেলে। যদিও সবটাই ওর নিজের পরিশ্রম আর কর্মনিষ্ঠার ফল। যেটা আমার নেই জীবনে। 

সেই তন্ময়কে দেখলাম হুগলী জেলার চাঁপাডাঙ্গার মোড়ে। একবছর বা দু বছর পর আরামবাগ মহকুমায় ঢুকতে পারবে এই মা মাটি মানুষের এই সেই আদি কালের ভীরু তৃণমূল। আরামবাগের মাঠে সভা করবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাই বাস করে হাজার হাজার সমর্থক এর উল্লাস আর বাসের ছাদে ভীড়। বাসের ছাদে অস্ত্র হাতে নাচন কোদন সেই আদি ভীরু তৃণমূলীদের। হেরে যাওয়া আর পিছিয়ে যাওয়া এলাকায় প্রবেশাধিকার এর উল্লাস বলে কথা। আর প্রবল পরাক্রমশালী অমিত শক্তিধর ডাকাবুকো দাপুটে সিপিএমের তখন অন্য রূপ। তারা সবাই সেই তিন রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে দুর হঠো আর গো ব্যাক স্লোগান দিতে ব্যস্ত নিজেদের ক্যাম্প করে। রাজনৈতিক জমি হারানোর পথে এ এক অন্য ছবি সিপিএমের।

সে একটা দিন বটে। চারিদিকেই তো প্রবল শক্তিধর ডাকাবুকো সিপিএমের ক্যাডার আর তৃণমূলের একটু কম দাপুটে কর্মীর ভীড়। এই নিয়েই এলাকা দখলের যুদ্ধ। কার দখলে থাকবে কতগুলি গ্রাম, ব্লক, মহকুমা আর জেলা। আর সেটা নিয়েই বন্দুক আর গুলি, আর হাত কামানের লড়াই লেগেই আছে। সেটা নিয়েই রাজনৈতিক হিংসা আর খুনোখুনি। সেটা নিয়েই তো গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়া আর কান্নার রোল ওঠা গ্রামে গিয়ে রাজনৈতিক সৌজন্য দেখিয়ে হাসিমুখে সাহায্য করা কিছু টাকা দিয়ে। কে কত কাছের সেটা প্রমাণ করার সগর্ব মরিয়া চেষ্টা। 

সকালে সিপিএমের সমর্থক পাঁচু হাঁসদা মারা গেলে সন্ধ্যায় মারা যায় দেবু সোরেন। সকালে আরামবাগে ডোঙ্গল এ লোক মরলে সন্ধ্যায় শহীদ হয় খানাকুলের রাজহাটির লোক। আর ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় রাজনৈতিক দলের নেতাদের। ক্ষমতা আর প্রভাব প্রতিপত্তি বাড়ে এলাকায় নেতাদের। আর প্রাণ যায় দিন আনা খাওয়া মানুষের। এই তো ছিল এই বাংলার এক সময়ের জনপ্রিয় রাজনীতি। যে রাজনীতি আজ আর দেখাই যায়না। কপূরের মত উবে গেছে সেই রাজনীতি। বর্তমানে অন্য ঘরানার ভিন্ন স্বাদের রাজনীতি মা মাটি আর মানুষের কল্যাণের রাজনীতি।

যাই হোক সেই মিছিল করে যাওয়া তৃণমূলের দল। আকাশ বাংলার সেই রিপোর্টারকে দেখেই ঝাঁপিয়ে পড়া। তেড়ে মারতে উদ্যত হয়ে লাঠি নিয়ে এগিয়ে আসা। আর আমার সেই ঘটনা দেখেই প্রতিবাদে মুখর হয়ে লাঠি আটকে ঝাঁপিয়ে পড়া। আসলে এটাই তো ছিল সেই সময়ের সাংবাদিকতার মূল আকর্ষণ। সিপিএম চ্যানেলে কর্মরত রিপোর্টারকে বাঁচাবে অন্য এক রিপোর্টার। এই সৌজন্যে নিয়েই তো বাংলার সংবাদ মাধ্যম কাজ করে এসেছে এতদিন ধরে। আর সেই ঘটনার কথা উল্লেখ করে তন্ময় কতদিন যে বলেছে অভিজিৎ না থাকলে সেদিন কি হতো জানি না আমি। মনে মনে ভেবেছি ওর কথা শুনে এটা করেই তো এতগুলো বছর হাসিমুখে দিব্যি কাটিয়ে দিলাম আমি। 

হঠাৎ করেই সবকিছু যেনো বদলে গেলো। এই বাংলার মেঠো সাংবাদিকতার গায়ে লেগে গেলো আমরা আর ওরার দাগ। একপক্ষ এদিকের আর অন্য পক্ষ ওদিকের। সত্যিই অসাধারণ এই ভাগাভাগি। একপক্ষ শাসক দলের মন্ত্রীকে প্রশ্ন করলে, মন্ত্রীর আগে উত্তর দিয়ে তাঁকে ধমকে কেনো এমন প্রশ্ন করা হলো বলে ধমকে থামিয়ে দেয় অন্যপক্ষ। সত্যিই অসাধারণ এই বাংলার সাংবাদিকতা। যেখানে গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভের মাঝেও কেমন সরু চুলের মতো ফাটল ধরে গেছে যেনো। জানিনা এর আমদানি কি করে হলো হঠাৎ করে। তবে আজ এই শীতের নিশুতি রাতে স্মৃতিকে আগলে নিয়ে মনে হলো, দিনকাল বেশ বদলে গেছে অনেকটাই, সাবধান। এই আমল আর ওই আমলের ফারাক অনেকটাই। 

আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথা লিখতে বসে তন্ময় প্রামাণিক এর কথা লিখতে বসে মনে পড়ে গেলো এমন কিছু ফেলে আসা সময়ের আর দিনের কথা। যে সময় আমরা হৈ চৈ হুল্লোড় করে কাজ করেছি। গ্রামে শহরে ঘুরেছি। তৃণমূল, সিপিএমকে মোকাবিলা করেছি কিন্তু এই বাংলার সাংবাদিকদের গায়ে ওরা আর আমরার তকমা লেগে যায়নি কিছুতেই। ওরা মার খেলে ঝাঁপিয়ে পড়েছে অন্যরা বুক চিতিয়ে লড়াই করেছে সবাই মিলে। আর সাংবাদিক দের সেই বিখ্যাত কলকাতার প্রেস ক্লাব মিছিল করেছে প্রতিবাদ করেছে নির্ভয়ে। যেটা আজকাল আর দেখাই যায়না প্রায় একদম। 
সত্যিই অসাধারণ দিনযাপন করেছি আমরা সেই সময়। সেই ওর আমায় বলা অভিজিৎ একবার বলে দেখো বোলপুরে আমাদের রিপোর্টার লাগবে নির্বাচনের সময়। আমি হবে না জেনেও আকুল আবেদন করেছি ওদের চ্যানেলের বাবুদের কাছে। কিন্তু না সেই আবেদনে সাড়া দেয়নি চ্যানেলের কর্তারা আমার একসময়ের চেনা বাবুরা। উল্টে শুনেছি না, আমি পারবো না কাজ করতে। আসলে এখন এই সাংবাদিকতার পাঠশালায় সবটাই ভাগাভাগির সংসার। সেই সংসারে আমি এখন বাতিলের দলে আর একদম ব্রাত্য হয়ে গেছি। তবু তো এই এক সময়ের এই জোড়া লাগা আনন্দের মিলেমিশে থাকা সংসারে একদিন ছিলাম আমিও সবার সাথেই হাসিমুখে একসাথে। ভালো থেকো তুমি তন্ময়। 

আকাশ বাংলার তন্ময় - অভিজিৎ বসু।
নয় জানুয়ারী, দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ইটিভির পিনাকপাণি ঘোষ

কিছু মানুষ কত কাছে থেকেও পাশাপাশি এক জায়গায় বাস করেও একসাথে একসময় কাজ করেও যে কত দূরে রয়ে যান নিজের হাসিমুখ নিয়ে আর সেই চেনা ছন্দ নিয়ে সত্যিই বেশ ভালো মজার ব্যাপার কিন্তু এটা জীবনের মেঠো পথে। সেই ইটিভির বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে ঘুরে ঘুরে স্ট্রীট ফুডের ছবি তোলা আর নানা খবর করে খাওয়া দাওয়ার এপিসোড করে একসময়ে বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে যাওয়া ইটিভি নিউজে। আর আমাদের জেলায় বসে সেইসব হাঁ করে দেখা আর কেমন মনের ভেতর অস্থিরতা তৈরি হওয়া। একেই বলে কলকাতার রাজপথের সাংবাদিক বলে কথা।  সেই যে বার রাষ্ট্রপতি এলেন জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে সেই অনুষ্ঠানের বিশেষ কার্ড জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করা ইটিভির চাকরি করার সুবাদে। কোনো রকমে সেই কার্ড জোগাড় করে এনে দেওয়া তাঁকে আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য। আর সেই একদিন দুপুর বেলায় খুব সম্ভবত করোনা শেষ পর্বে বালিঘাট স্টেশন থেকে অফিস যাওয়ার সময় এসি পঞ্চাশ এর বাস এর ভিতরে দেখা হওয়ায় কত গল্প করা দুজন মিলে পুরনো দিনের। আবার উত্তরপাড়ার সেই বিখ্যাত চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে হাসি মুখে দেখা হয়ে যাওয়া রাতের বেলায় কাঁঠালবা...

আমাদের সবার মৃনাল দা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক বাবা আর ছেলের লড়াই এর গভীর গোপন কাহিনী। এই সাংবাদিকতার পেশায় এসে কত লড়াই, কত অসম যুদ্ধ, করে যে কেউ সংসার টিকিয়ে রাখতে পারে হাসি মুখে কাউকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে। এমন করে কেউ টিকে থাকার চেষ্টা করেন সেটা বোধহয় আমার জানা হয়ে উঠত না কিছুতেই। যদি না এই পেশায় আমি গা ভাসাতাম এমন করে। জীবনের এই নানা টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ ভেসে ওঠে এই রাতের অন্ধকারে আচমকা আমার মনের মাঝে। আর আমি চমকে উঠি কেমন করে তাদের সেই কোলাজ দেখে।  এমন এক চরিত্র, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়ে কেমন আলগোছে, হাসিমুখে, নির্মোহ ভাবে, শুধু নিজের কাঁচা পাকা দাড়িতে হাত বুলিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিলো সে শুধুই আকাশ পানে তাকিয়ে। যে নীল আকাশের গা ঘেঁষে উড়ে যাওয়া সাদা বকের ডানায় লেগে থাকে মেঘের হালকা টুকরো। একদম যেনো সিনেমার পর্দার হিরোর মতোই। দেখে বোঝার উপায় নেই একদম। পেটে খাবার না থাকলেও মুখের হাসিটা অমলিন হয়েই বেঁচে আছে আজও এতোদিন পরেও। আর সেই বিখ্যাত সাদা পাকা নাসিরউদ্দিন স্টাইলের দাড়ি, কালো চুল, আর সব সময় ধোপদুরস্ত ফিটফাট একজন মানুষ। রাত নটা বাজলেই যাকে শ্রীরামপুরে...

শপিং মলের উদ্বোধনে সিঙ্গুর আন্দোলনের দাপুটে মন্ত্রী

নালিকুল স্টেশন বাজারে একটি শপিং মলের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বেচারাম মান্না হাজির। একসময় যাঁর অন্দোলনের ঠেলায় পড়ে দৌড়ে একপ্রকার পালিয়ে চলে যেতে হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে টাটা কোম্পানিকে। যে আন্দোলনের দগদগে ঘা আর সেই স্মৃতি ধীরে ধীরে আজ প্রায় মিলিয়ে যেতে বসেছে আমাদের কাছ থেকে। আজ সেই চাষার ঘরের মানুষ না হলেও সেই কৃষক আর শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকার নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেন সেই মানুষটাকেই কেমন যেন আজ শপিং মলের উদ্বোধনে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার।  একদম নালিকুল স্টেশনের কাছে ঝাঁ চকচকে শপিং মল। দোকানে সাজানো জিনিস পত্র। আর সেখানেই আমাদের মাননীয় মন্ত্রী বেচারাম মান্না। একদম কেমন একটু আমার অচেনা লাগলো যেন। সেই মুড়ি খেয়ে আলুর তরকারি বা শশা খেয়ে আন্দোলন শুরু করা জমি আন্দোলন এর অন্যতম পথিকৃৎ নেতা আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তাহলে টাটা কোম্পানির বিরুদ্ধে যে জমি দখল নিয়ে আন্দোলন সেই আন্দোলন এর মধ্যে ছিল জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যদিও সেখানেও সেই সময়ের শাসকদলের কর্মসংস্থানের যুক্তি।তবে এই নতুন শপিং মলের উদ্বোধনে তো আর ...

ভীড়ের মাঝে একা

জীবন জুড়ে শুধুই ভীড় আর ভীড়। নানা ধরনের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় মানুষের গন্ধে, বর্ণে , স্বাদের ভীড়ে আমি একদম একা হয়ে যেতে চাই। যে ভীড় উপচে পড়া রাস্তায় শুধুই হেমন্তের ভোরে শিশিরের ফিসফিস শব্দ, পাখির কিচির মিচির আওয়াজ,ধানসিড়ি ওই নদীটির তীর ধরে ঘুঘুর আকুল মন কেমন করা ডাক, উদাসী শালিকের ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া ওই হেমন্তের হলুদ ধানের মাঠ এর পাশ দিয়ে, হলুদ বসন্ত বৌরীর সেই আমলকীর গাছের পাতায়,আড়ালে আবডালে বসে কেমন যেন আমায় দেখে লজ্জা পাওয়া, আর তারপর চোখ নামিয়ে হঠাৎ করেই তার উড়ে চলে যাওয়া। আর মেঘের কোল ঘেঁষে সেই সাদা বকের, বুনো হাঁসের, আর সেই পানকৌড়ির জলে ভেজা ডানা মেলে উড়ে যাওয়া আকাশ জুড়ে। সত্যিই ওরাও যে ভিড়ের মাঝেই বড়ো একা। একা একাই ওদের যে এই বেঁচে থাকা। কেমন নিপাট হৈ চৈ হুল্লোড়হীন একটা জীবন নিয়ে বেশ মজা করে, আনন্দ করে। আর সেই ভোরের আলোয় আলোকিত হয়ে রাস্তার একপাশে গুটি শুটি মেরে শুয়ে থাকা ওই সাদা কালো ভুলো নামের কুকুরের। যে অন্তত এই সব মানুষদের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় একটু যেনো আলাদা , একটু যেনো অন্য রকমের। একটু একা একাই যেনো ওর এই আলগোছে জীবন কাটিয়...

গৌড় প্রাঙ্গণে আনন্দবাজার

গৌরপ্রাঙ্গনে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যের আনন্দের মেলা আনন্দবাজার। মহালয়ার ভোরবেলায় ঢাকের বাদ্যি আর সানাইয়ের মন কেমন করা সুরে মেতে উঠলো শান্তিনিকেতনের গৌড়প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও যে হবে আনন্দমেলা আনন্দবাজার। হ্যাঁ সত্যিই যেনো আনন্দের এই হাটে বেচাকেনার পসরা নিয়ে একদিনের জন্য বসে পড়া মন প্রাণ খুলে হৈ হুল্লোড় করে। এই মেলা শুরু হয় 1915 সালের 15 এপ্রিল নববর্ষের দিনে। কিন্তু আগে এই মেলাকে একসময় বলা হতো বৌঠাকুরাণীর হাট। সেই সময় আশ্রমের মহিলারা নিজেদের হাতের তৈরি জিনিস নিয়ে মেলায় বসতেন। মেলার আয়োজন করতেন তারা। আনন্দ করে বেচাকেনা হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় একবার গরমের ছুটির আগে এমন মেলা নাকি হয়েছিল। যার নাম ছিল আনন্দবাজার। পরে এই মেলার নামে হয়ে যায় আনন্দমেলা। সত্যিই আনন্দের এই মিলন মেলা।  প্রথমদিকে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই মেলা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে বিশ্বভারতীর সব বিভাগের পড়ুয়ারা এই মেলায় যোগদান করে। এই মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের বেচা কেনার লাভের টাকার কিছু অংশ জমা পরে বিশ্বভারতীর সেবা বিভাগে। সেখান থেকে এ...