আজ তাঁর জন্মদিন বলেই এই লেখা নয়। আজ তাঁর বয়স বেড়ে যাওয়া বলেই এই লেখা নয়। আজ সেই মানুষটার বুড়ো হয়ে যাওয়া বলেই এই লেখা নয়। যাঁকে যখন তখন ফোন করে দাদা বলে বিরক্ত করা যায় বলেই এই লেখা নয়। আদ্যন্ত বাম আমলের একজন দাপুটে সাংবাদিক আর চিফ রিপোর্টারকে নিজের মনের কথা, গোপন কথা, নিজের ক্ষোভের কথা, দুঃখের কথা, পাওয়া আর না পাওয়ার কথা, কোনও চাকরীর সুযোগ আছে কি না সেটা জানার কথা বলে ফেলা যায় কিছু সাতপাঁচ না ভেবেই একদম। আর তাই তাঁকে নিয়ে এই লেখা আমার সাদা জীবনের কালো কথায়। আমার আঁকিবুঁকি ব্লগে, কিছু অক্ষরের দাগ কেটে জাল বোনার চেস্টা করা মাত্র।
আজ তেমনি একজন কলকাতার বিখ্যাত এক সাংবাদিকের জন্মদিন। বাম আমলের সব থেকে ভালো সময়েও যে বেশ হাসি মুখেই পোদ্দার কোর্টের সেই বিখ্যাত ২৪ ঘন্টার অফিস সামলেছেন নিজের হাতে নিজের তালুর মধ্যে নিয়ে। একদম চুপ চাপ কাউকে কিছু বুঝতে না দিয়েই সব বাঘা বাঘা রিপোর্টারদের সামলে গেছেন। শুধু মাত্র সেই আমলের বিখ্যাত হয়নি তখনও সেই রিপোর্টার কমলাক্ষকে অ্যাসিস্ট্যান্ট করে মাঝে মাঝে খুব প্রয়োজন পড়লে। বেশ সুন্দর সুদর্শন একজন মানুষ। যে কোনও অফিস এর মহিলা মহলে ব্যাপক জনপ্রিয়তা যাঁর এমন একজন ব্যক্তি। আর তাঁর বাড়ী থেকে নিয়ে আসা টিফিন বক্স খুললেই ভীড় জমে যায় সেই বিখ্যাত সাংবাদিক এর টেবিল এর সামনে গোল হয়ে দাদা আজ কি এনেছো বলে। আর দাদার বোনদের দৌড়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে ভীড় করা টিফিন বক্সের একদম সামনে। আর ভাইদের সেই চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকা টিফিন বক্সের সামনে একটু দূরে দাঁড়িয়ে পরোটা বা লুচির গন্ধ শোঁকা। যদি কিছু পাওয়া যায় এই আশায়।
সত্যিই অসাধারণ এই আমাদের সাংবাদিক জীবনের নানা রঙের রঙিন সব জলছবি। যে ছবির পরতে পরতে জড়িয়ে আছে কত মিষ্টি ঘটনা, কত গভীর গোপন ভালোবাসা, কত ভালো লাগা, কত স্মৃতি রোমন্থন এর অনাবিল সুখস্মৃতির স্পর্শ। সেই বিজেপির মুরলীধর লেনের অফিসে বসে তিনজন বিখ্যাত রিপোর্টার এর আড্ডা সুখের বাসর বসা। সেই কোনো বড়ো খবর ব্রেক করে নিউজ রুম দেবার পর সিগারেট ধরিয়ে বারান্দায় দাঁড়িয়ে আকাশ পানে একমনে তাঁর তাকিয়ে থাকা। আর কাছে গিয়ে দাঁড়ালেই বলা অ্যাসাইনমেন্টের লোক বলে তোরা সব বিরাট এক একজন বোদ্ধা হয়ে গেছিস খবরের বিষয় সমূহ নিয়ে। এই খবরটা তোরা সব দেখাচ্ছিলিস না। দেখ আমি এডিটরকে বললাম আর অমনি চললো খবরটা।
আর সেই সময় দাদা বলে একবার ডাকলেই হলো। একবার দাদা বলে ডাকলেই কিন্তু কোনও রাগ নেই, প্রতিহিংসা নেই, তোদের দেখে নেবো বলে গাল দেওয়া নেই, একদম দাদার রাগ কিন্তু গলে জল হয়ে গেছে ততক্ষণে। হ্যাঁ, সেটাই হলো আমাদের সবার প্রিয় অঞ্জন রায় দা। সেই ২৪ ঘণ্টার অঞ্জন দা। সেই প্রিয় ২৪ ঘন্টা ছেড়ে টিভি নাইন এর চ্যানেলে অঞ্জন বন্দোপাধ্যায় এর হাত ধরে চলে যাওয়া অঞ্জন রায়দা। সেই বর্তমানে কলকাতা টিভি চ্যানেলের অঞ্জন দা। সেই বিজেপি বিটের বিখ্যাত সাংবাদিক দিলীপ ঘোষ এর খুব কাছের সাংবাদিক অঞ্জন দা। সেই অরূপ দত্ত, দীপক ঘোষ আর অঞ্জন রায় দা। কলকাতা বিজেপি বিটে যাঁদের ব্রহ্মা, বিষ্ণু আর মহেশ্বর বলে জানে সবাই। সেই আমাদের সবার প্রিয় অঞ্জন রায় দা।
আজ সেই অঞ্জন রায়দার জন্মদিন। সেই বাবুর বাবার জন্মদিন। সেই চেনা একজন মানুষ যাঁকে তাঁর সাথে খুব বেশিদিন কাজ না করলেও আমার ঘরের কথা, সংসারের কথা বলে ফেলা যায় কিছু সাতপাঁচ না ভেবেই। কি ভাববেন সেটা মনে না করেই। আজ কাল এমন মানুষ যে দিন দিন কমছে খুব এই বাংলা মিডিয়ায়। চারিদিক জুড়ে মাতব্বর সাংবাদিক মানুষদের ভীড় আর তাদের পদধ্বনি। তাদের সবার হাতে চাবুক নিয়ে রিং মাস্টার এর মতো ঘুরে বেড়ানো আর দেখে নেওয়ার চেষ্টা।
এই সব নানা অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ ছবির মাঝে তবু সেই অভীক দত্ত, অঞ্জন বন্দোপাধ্যায়, আর অরিন্দম চক্রবর্তীর আস্থার, ভরসার সেই বিখ্যাত সাংবাদিক মানুষের জন্মদিনে আমার শুভেচ্ছা ও ভালবাসা ও প্রণাম। দাদা ভালো থাকবেন আপনি। এই ভাবেই হাসিমুখে কাজ করে যান আপনি। আপনার রাজনৈতিক আদর্শকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকুন নিজেকে বদলে না ফেলে। আর আমাদের মতো চুনো পুঁটি মাছদের তাচ্ছিল্য না করে যে কোনও দরকার হলে ফোনে বলুন হ্যাঁ, বল কি হলো। সেটা রাত বারোটা বা তারপরে। এটাই বা আজকাল আর কে বলে এই স্বার্থ সঙ্কুল পৃথিবীতে। শুভ জন্মদিন দাদা। ভালো থাকবেন আপনি।
২৪ ঘণ্টার অঞ্জন রায় দা - অভিজিৎ বসু।
বিশে জানুয়ারী, দু হাজার চব্বিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন