সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

চব্বিশ ঘণ্টার অয়ন ঘোষাল

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এমন একজন সাংবাদিকের কথা লিখতে বসলাম আমি যে সাংবাদিকের পাঁচ মিনিটের লাইভে একটি শব্দ দু বার ব্যবহার করা হয় না কোনোভাবেই। যে সাংবাদিক শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ আর হেমন্তে একভাবেই সকালে খেলার মাঠে নেমে উইকেটে টিকে থাকেন হাসিমুখে ব্যাট করে। যখন আমাদের ঘুম ভাঙ্গে না কারুর সেই সময় রাস্তায় নেমে দৌড়ে খবর সংগ্রহ করেন হাসি মুখে এই বয়সেও এত দিন পরেও।


সে যে কোনও জায়গায়, যে কোনো খবরে, যে কোনও ইনসিডেন্টে, যে রিপোর্টার প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত হাসি মুখে এক স্টাইলে ব্যাট করতে পারেন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্লান্তিহীন ভাবেই। আর তারপর বাড়ী ফিরে জিম করতে নেমে পড়া যেটা ওর সবথেকে বড়ো ওষুধ সেটা করে ও হাসিমুখে। আবার পূজো এলেই যে হাসি মুখে উত্তর এর সাথে দক্ষিণের পূজো মণ্ডপের লড়াই করতে গিয়ে লাইভে নিজের এলাকার পুজোকে বা মণ্ডপকে হাসি মুখে জিতিয়ে দেয় নিজের ক্যারিশমায় নিজের স্টাইলে চার ছয় মেরে। এটাই ওর আসল কৃতিত্ব। 

 আর সেই আমরা তিনজন আমি, দীপেন্দ্র গোস্বামী, আর দিব্যেন্দু ঘোষ এর যখন কাজ নেই। একটি নতুন চ্যানেল এর সন্ধান দিয়ে ডেকে নিয়ে গিয়ে কাজের সুযোগ করে দেওয়ার কথা বলা যা বোধহয় আর কেউ এইভাবে আমাদের কথা ভাবেইনি কোনোদিন। তিন বেকার মানুষকে একটু কাজের সুযোগ করে দেয়ার চেষ্টা করা যা সত্যিই ভয় উদ্যোগ। যদিও সেই চ্যানেল তৈরি হয়নি কিন্তু একটা চেষ্টা তো ও করেছিল সেই সময় আমাদের তিনজন কর্মহীন অবস্থায় বেঁচে থাকা মানুষদের জন্য। যেটার কথা বারবার আমরা স্মরণ করি আজও, যতদিন আমরা বাঁচবো সেই ওর এই উদ্যোগের কথা স্মরণ করবো। সেই ২৪ ঘণ্টার অফিস এর ফেসিলিটিতে কাজ করা লেস্টার এর কাজ চলে গেলে তাকেও কাজের সুযোগ করে দেয় সে।

আজ নানা বিখ্যাত মানুষের জন্মদিনের মতো তাঁরও আজ জন্মদিন। সেই কলকাতার বিখ্যাত সাংবাদিক জি ২৪ ঘণ্টার বিখ্যাত প্রবীণ সাংবাদিক সেই সবার পরিচিত আমাদের অয়ন ঘোষাল। সেই জি নিউজ এর প্রথম দিন এর কর্মী। সেই আলফা নিউজ এর অয়ন ঘোষাল। সত্যিই অসাধারণ ওর সাংবাদিক জীবন। এখনও এই এত বছর ধরে রাহুল দ্রাবিড়ের মত কেমন ব্যাট করে চলেছে এখনও সে হাসি মুখে গুটখা খেয়ে আর পিক ফেলে। 

সত্যিই এই সাংবাদিকের কথা আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায় লিখতে বসলাম। সেই যে ওর খুব মিষ্টি মেয়ে ওর মামার বাড়ি গেলো পুতুলের বাক্স নিয়ে বই এর ব্যাগ নিতে ভুলে গেলো ওর প্রিয় মাম মাম। সেই গল্প যে কতবার বলেছে আমায়। সত্যিই সে আজ কত বড়ো হয়ে গেছে। বাবার জন্মদিনে নিশ্চয়ই বাবাকে শাসন করে সেই ওর মেয়ে এখন। জীবন তো এমন নানা ধরনের নানা খবরের মানুষজন নানা ভাবে ঘিরে থাকে আমাদের। 

সেই পুজোর সময় ওর সুরুচি সংঘের পাস দেওয়া আমায় লুকিয়ে লুকিয়ে কাউকে না জানিয়ে। সেই লাইভ করার সময় দেবাশীষ কুমার এর পূজো মণ্ডপে ওর কাজের ফাঁকে আমাদের সবাইকে আমার মেয়ে আর বউকে মণ্ডপে প্রবেশ করিয়ে দিয়ে ঠাকুর দেখানো টুক করে। সেই ক্যামেরাম্যান সেদিন ছিল সুনীল মুন্দ্রা। এমন কত যে স্মৃতি ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে আমার কে জানে। 

 আজ ওর জন্মদিনের দিন এই সব নানা কথা মনে পড়ে যায় আমার। সত্যিই সেই দিনগুলো কিন্তু বেশ ভালই ছিল। সেই অ্যাসাইনমেন্টের লোক কম পড়লেই ওর সেই রিপোর্টার এর কাজ ছেড়ে বসে পড়া অ্যাসাইনমেন্টের টেবিলে হাসি মুখে। আবার পূজোর সময় সেই সকালে অ্যাসাইনমেন্টের কাজ করে রাত অবধি পূজোর লাইভ করা সেটা বোধহয় ওর পক্ষেই সম্ভব ছিল একমাত্র। আর কোনো রিপোর্টারকে এমন করে কাজ করতে দেখিনি আমি। 

একজন আদর্শ রিপোর্টার এর যা গুণ থাকা দরকার সেটার সবটাই ওর ছিল। আর তাই বোধহয় আজ এতদিন পরেও ও বেশ দিব্যি হাসি মুখেই এখনও ব্যাট করে যাচ্ছে এই কঠিন মাঠে। আজ তাই ওর এই জন্ম দিনের দিন শুভেচ্ছা জানাতে আমার এই কলম ধরা। ভালো থেকো তুমি অয়ন। হাসিমুখে এই ভাবেই ব্যাট করে যাও তুমি। আর যেভাবে তুমি জুনিয়রদের সাহায্য করো, নতুন সাংবাদিকতার পাঠ নিতে আসা শিক্ষানবীশদের উপকার করো সেটা করে যাও তুমি। এতে কতজন এর যে উপকার হয় তুমি জানতেই পারো না সেটা। 

সত্যিই তোমার সাথে অল্প কিছুদিন কাজ করার সুযোগ হয়েছিল আমার। তবু আমি গর্বিত যে এমন একজন ডায়নামিক রিপোর্টারকে আমি পেয়েছিলাম বলেই হয়তো যে কোনো সময় যে কোনো ছবি আমরা পৌঁছে দিতে পেরেছি দর্শকদের কাছে ঠিক সময়ে। যার কৃতিত্ব একমাত্র তোমারই আমাদের কারুর নয়। ভালো থেকো তুমি অয়ন। আর ভুল লিখলে আমায় ক্ষমা করে দিও। 

চব্বিশ ঘণ্টার অয়ন ঘোষাল - অভিজিৎ বসু।
পাঁচ জানুয়ারি, দু হাজার পঁচিশ। 
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

জামালপুরের প্রদীপ দা

আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায় বর্ধমানের জামালপুরের সেই দাপুটে ঠোঁট কাটা সাংবাদিক প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় এর কথা। সেই বিখ্যাত সুভাষ তালুকদার এর কাগজ সংবাদে মাত্র এক টাকার কাগজে কাজ করা সংবাদ পত্রিকার দাপুটে সাংবাদিক সেই প্রদীপ দা। সেই মুখ্যমন্ত্রীর সভায় বাঁশের ব্যারিকেডের এপারে দূরে দাঁড়িয়েও যে খবর করা যায় সেটা বড়ো মিডিয়ার সাংবাদিকদের হাসি মুখে দেখিয়ে দিয়ে, আর তাদের খবরের ময়দানে গোল দিয়ে শুধু খবরকে ভালোবেসে ছোটো কাগজে কাজ করে চলা সর্বদা হাসি মুখের সেই আমাদের প্রদীপ চ্যাটার্জী দা।  কোথাও কোনো অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদে মুখর হয়ে যাওয়া আর এক দৌড়ে বেরিয়ে পড়া ঝোলা কাঁধে সেই খবরের খোঁজে সেই জামালপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের সেই প্রদীপ দা। সেই বিখ্যাত পন্ডিত রবিশঙ্কর আর উদয়শঙ্কর এর আপন মাসতুত ভাই এর ছেলে সেই প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় দাদা। সেই বামদের আমলে জামালপুরের এলাকায় দাপিয়ে খবর করে ছুটে বেড়ানো সেই প্রদীপ দা। সেই তৃণমূল আমলেও একভাবেই ছুটে বেরিয়ে কাজ করা আমাদের সদা ব্যস্ত প্রদীপ দা।  সেই বাবার অসুস্থতার কারনে বড়ো সংবাদ মাধ্যমে কাজ না করেও...

আমার স্যার কাজীদা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ আমার স্যার এর কথা। যার লেখা আজ হঠাৎ চোখে পড়লো একটি কাগজে। আর স্যার এর নামটা দেখেই মনে পড়ে গেলো নানান কথা। হ্যাঁ, সেই কাজী গোলাম গাউস সিদ্দিকী। যাঁর সাথে আমার আলাপ আর দেখা হয়েছিল সেই অজিতদার ফ্রিল্যান্স ছকু খানসামা লেনের ফ্রীল্যান্স প্রেস ক্লাবের অফিসে খুব সম্ভবত। হাসিখুশি বেশ অজাতশত্রু এই মানুষটিকে দেখেই আমার মনে হয়েছিল যে রিপোর্টারদের প্রভূত ক্ষমতা থাকে বোধহয়। তাই পকেটে পেন আর সেই ফোনের ছোট্টো নোটবুক দেখেই আমার মনে হয়, যে ক্ষমতার স্বাদ পাবার জন্য সেই সদ্য গ্র্যাজুয়েশন করে আমার কচি মনে সাংবাদিক হবার বাসনা জাগে সেই সময়।  কোনো প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক নয়, কোনো অফিসে মাছি মারা দশটা পাঁচটার লোয়ার ডিভিশন এর কেরানি নয়, মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ নয়, ল্যাবরেটরিতে টেকনিশিয়ান এর কাজ নয়, এল আই সি বা পোষ্ট অফিস এর এজেন্ট নয়, কোনো মুদি দোকানে হিসেব পত্র লেখার কাজ নয়, স্বাধীন ব্যবসা করা নয়। শুধুই সাংবাদিক হবার স্বাদ।  কাগজে সাদা কালো অক্ষরে নিজের নাম ছাপা হবে, সেই নাম দেখে বুক ফুলে যাবে, পাড়ায় প্রতিবেশীরা সহ স...

কুড়ি থালা দশ টাকা আর রসিক মুলুর জীবন

নাম মুলু হাঁসদা। বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানার চরিচা গ্রাম পঞ্চায়েত এর চর ইচ্ছা রঘুবরপুরের বাসিন্দা মুলু। আজ মুলুর জীবন কথা। গ্রামের নামটা ভারী অদ্ভুত। চর ইচ্ছা রঘুবরপুর। যে গ্রাম অন্য পাঁচটা গ্রামের মতই।সাদামাটা এই গ্রামে দারিদ্র্য, অপুষ্টি আর কর্মহীন জীবনের জলছবি সুস্পষ্ট। আর সেই গ্রামের মহিলারা নিজেদের সংসার রক্ষা করতে গাছের পাতাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে। গাছের পাতা মুলুদের জীবনের জিয়ন কাঠি। যে জিয়ন কাঠিতে তারা ভোর হতেই পেটের টানে চলে যায় জঙ্গলে। খস খস শব্দ করে পায় হেঁটে তারা পাতা তোলে। গাছ থেকে টুপ টাপ করে ঝড়ে পড়া পাতাকে একটা একটা করে নিজের শাড়ির আঁচলে ভরে নেয়। তার পর সব পাতাকে বস্তায় ভরে ঘরে ফেরে।  ঠিক যেভাবে তারা পুকুরে নেমে শামুক গেঁড়ি আর গুগলি তোলে। যে ভাবে তাদের উদর পূর্তি হবে বলে। আর এই পাতাও যে তাদের পেট ভরায়। একটা একটা পাতাকে নিজের সন্তানের মতো আলগোছে ছুঁয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে চুমু খায় মুলু, বলে তোরা না থাকলে কি করতাম কে জানে। মাথার ওপর শাল সেগুনের বিশাল আকারের গাছগুলো চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে আর তারা চুপ করে শোনে মুলুর কথা।  একে অপ...

শুভ মকর সংক্রান্তি

মকর মানেই নতুন জামা কাক ভোরে স্নান, রাত্রি জেগে মিঠে সুরে টুসুমণির গান। মকর মানেই পিঠে - পুলির গন্ধে ম - ম হাওয়া, ডুলুং পাড়ে টুসুর মেলায় দল বেঁধে যাওয়া। মকর মানেই মোরগ লড়াই পাহুড় জেতার সুখ, সন্ধ্যা - রাতে মাংস পিঠের স্বাদে ভরা মুখ। মকর মানেই হাতি - ঘোড়ার পুজো করম তলে, সান্ধ্য হাওয়ায় মন উদাসী দিমির দিমির বোলে। আসলে আজ এই মকর সংক্রান্তির দিন, টুসু মেলার দিন, টুসু গানে নিজেকে মাতিয়ে দেবার দিন। অজয় এর ধারে জয়দেব কেঁদুলির মেলায় ভীড়ের মাঝে নিজেকে হারিয়ে দেবার দিন। অজয় এর জলে ডুব দিয়ে স্নান করে পূণ্য অর্জনের দিন। আর নদীর ধারে মোরগ লড়াই এর দিন। আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর দিন, সুতো লাটাই হাতে আকাশ পানে তাকিয়ে থাকার দিন। কেমন যেনো রাশির একটি স্থান থেকে অন্য রাশিতে স্থান পরিবর্তনের দিন। সূর্যের দেবতাকে সকালে উঠে স্নান সেরে প্রণাম জানিয়ে শক্তি সঞ্চয় এর দিন। সূর্যের উত্তর দিকে চলে যাবার দিন। ধীরে ধীরে শীতকাল চলে যাওয়ার দিন।  এই মকর সংক্রান্তি এর ইতিহাস ও ভারতীয় ঐতিহ্যের গভীর শিকড় রয়েছে। এটি কৃষি চক্র এবং ফসল কাটার মৌসুমের সাথে জড়িত। এই মকর সংক্রান্তি চ...