সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

জীবনের সাপ লুডো আর বাজেটের আয়কর ছাড়ের গল্প

চারিদিকেই শুধু টাকা, টাকা, আর টাকা। ঠিক সেই নায়ক সিনেমার দৃশ্য যেন। উত্তম কুমার টাকার ওপর দিয়ে হেঁটে চলেছেন ধীরে ধীরে। মাথা উঁচু করে গর্বের সাথে। চারিদিক থেকেই উড়ে উড়ে আসছে টাকা। আজ যেনো ঠিক তেমনি করেই সারা দেশ জুড়েই টাকার নিরবিচ্ছিন্ন জলপ্রপাত এর ধারা বইছে চারিদিক থেকেই। মানুষের লক্ষ লক্ষ টাকা আয় আর তার বিনিময়ে সরকারকে কিছুই ট্যাক্স না দেওয়া। শুধুই আমদানি নিজের ঘরে কিছুই বিনিময়ে না দিয়ে।

 সত্যিই অসাধারণ এই বাজেট অধিবেশন। গোটা দেশ বছরের এই একটি দিনেই তাকিয়ে থাকে টিভির দিকে। কত আয় আর বার্ষিক সরকারকে কত ট্যাক্স দিতে হবে। সে নিয়ে রাস্তায়, বাসে, ট্রামে ট্রেনে জোর আলোচনা। রিক্সাওয়ালা, সবজিওলা, সরকারি চাকরি করা বাবুরা, ব্যবসায়ীরাও এই খবরে নজর রাখেন। কারণ একটাই আজ যে বাজেটের দিন। নতুন কর কাঠামো কি হলো সেটা নিয়ে চাকরি করা আর বেকার থাকা মানুষদের কম চিন্তা নেই। 

পাড়ার চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে দেখি পাড়ার এক সময়ের দাপুটে সরকারী অফিসার সেই লাহিড়ী বাবু যিনি বর্তমানে সুগার এর রোগে আক্রান্ত হয়ে অস্থি চর্মসার দুর্দশা হয়েছে তাঁর। আগে কথায় কথায় বেশ এই বাজেটের দিন নাতিদীর্ঘ ভাষণ দিয়ে বোঝাতেন তাঁর কিছু টাকা ট্যাক্স বাঁচাতে কি কসরৎ করতে হবে তাঁকে এই আগামী একটা বছরে। কত টাকা জমিয়ে তারপর এই হার্ডেল পার হবেন তিনি ঠিক পি টি ঊষার মতই হাসি মুখে।

 সত্যিই সেই কত হিসেব করে ট্যাক্স এর হাত থেকে বেঁচে হাসি মুখে ব্যাগ ঝুলিয়ে। অফিস থেকে ঘরে ফেরা সেই সরকারী অফিসার লাহিড়ী বাবু এখন আর ট্যাক্স এর হিসেব কষেন না। তিনি এখন তাঁর শরীরে মিস্টি কমলো না বাড়লো সেটার হিসেব রেখেই নিঃশব্দে দিনযাপন করেন ঘরের কোণে, আর মাঝে মাঝেই বৌ এর কথা শোনেন এই বাজার থেকে করলা আনতে ভুলে যেওনা কিন্তু, যা ভুলো মন তোমার। 

যে লোকটা সারাজীবন দাপটে কাজ করলো কোন ফাইল কার কাছে সই করতে হবে মনে রাখলো ঠিক করে। এলআইসির কত প্রিমিয়াম বাড়াতে পারলে দু হাজার টাকা ট্যাক্স কাটবে না আর সেটা ভুলে যাননি কোনোদিন তিনি। আজ সেই মানুষটাই ভুলোমনা হয়ে গেলো এই সংসারে। সত্যিই জীবন বড়ই অদ্ভুত। যে জীবনে জড়িয়ে আছে এই সিঁড়ি বেয়ে করের কাঠামো বেয়ে ওপরে ওঠার গল্প। শুধুই ওপরে ওঠা আর ওপরে ওঠা। এগিয়ে চলা আর এগিয়ে চলা। পকেট থেকে বেতনের টাকা ট্যাক্স না কাটলে কি আর মান ইজ্জত থাকে নাকি স্ট্যাটাস আপডেট হয়।

আর আজ ঠিক তেমন একটি দিন। কোন স্ল্যাব এ আপনি পড়লেন কোন ধাপে আর কোন ক্লাসে আপনার গতিবিধি আর যাতায়াত সেটার একটা রূপরেখা ফুটে ওঠা। আর সেটা থেকেই তো আপনার সমাজে, ঘরে, অফিসে, বাইরে সব জায়গায় একটা হাসি মুখের ছবি ফুটে ওঠা। ঠিক ওই নায়ক সিনেমার পর্দায় উত্তম কুমার এর মতোই। সত্যিই তো জীবনের এই হাসি মুখের ছবি সর্বত্র। কত টাকা বাঁচানো গেলো। আর কত টাকা ঘরে আনা গেলো। সেই নিয়েই তো বেঁচে থাকা।

 আর তাই সমাজ মাধ্যমের দেওয়াল জুড়ে শুধুই সগর্ব উপস্থিতি। নানা ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের হিসেব নিকেষ পেশ করা। নানা জনের নানা উক্তি ছড়িয়ে পড়ছে ফেসবুকের দেওয়াল জুড়ে। কেউ পক্ষে কেউ বিপক্ষে। কারুর মতে লাখ টাকার মালামাল আছে এমন লোকের সংখ্যা হাতে গুনে আর কারুর মতে তাতে কি মধ্যবিত্তের পাশে যে শুধুই নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদী আছেন আর তো কেউ ভাবে না মধ্যবিত্তের কথা। যাঁর ভুবন ভুলানো হাসি মুখ, গর্বের চেহারা আর বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়ানো সেই এক স্টাইলে সত্যিই অসাধারণ এই বাজেট অধিবেশন আর বাজেট পেশ। 

মাসে এক লক্ষ টাকা আয় করলেও ট্যাক্স দিতে হবে না আপনাকে আর এতেই খুশি আমজনতা না হলেও কিছু শ্রেনীর সেই মধ্যবিত্ত মানুষ। যাঁদের পকেটে মাসের শেষে পঞ্চাশ, ষাট বা সত্তর কিম্বা আশি হাজার টাকা বেতন আসে। যাঁরা সংসার চালাতে হিমসিম খান না। নুন আনতে পান্তা ফুরোয় না তাঁদের কোনওদিন। বছরে নিয়ম করে বেড়াতে যান তাঁরা একবার কখনও প্লেনে বা দ্রুতগামী বন্দে ভারতের এক্সিকিউটিভ ক্লাসে। বছরে মেডিক্যাল ট্রিটমেন্ট করতে বুক কাঁপে না যাদের কারণ মোটা টাকার মেডিক্লেম করা আছে যে তাঁর। তাহলে তাদের পকেটে সত্তর হাজার টাকা বেঁচে গেলে তো একটা দীঘা, পুরী বা সাকুল্যে বকখালি বেড়ানো হয়ে যাবে। 


তাহলে ওই যে দুয়ারে সরকারের ক্যাম্পে দাঁড়ানো রোগা ক্ষয়াটে চেহারার সব আর্থিকভাবে দুর্বল শ্রেনীর মানুষজন। যাঁরা মাসে কটা টাকা পাবার আশায় ভীড় করেছেন পাড়ার স্কুলের মাঠে, বুকে হাজার কষ্ট চেপে রেখে আর হাসিমুখের ভান করে। হাতে যাবতীয় সরকারি কার্ড নিয়ে আর নিজের প্রমাণ নিয়ে পাড়ার কাউন্সিলরকে তদবির করছেন অনেক করে যাতে এইবার তাঁরটা মঞ্জুর হয়। আর লাল ঝকঝকে জামা পড়া নেতা বলছেন সব হবে চিন্তা নেই দিদি আছেন তো। 


যাঁদের পর পর দু মাস এর টাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে না এলেই পাড়ার মাতব্বরদের কাছে হাতজোড় করে ছুটে যেতে হয় কি হলো বলে। যাঁদের ঘরে একশো ইউনিট পার হয়ে গেলেই ইলেকট্রিক বিলের টাকা একবারে না দিয়ে তিন মাসে দিতে হয় আর কপালে গভীর চিন্তার ভাঁজ পড়ে যায় কোথা থেকে আসবে সেই টাকা। তাহলে তাদের জন্য এই বাজেট ঘোষণা যে কিছুই কাজে লাগবে না আর। এরা তো আর সেই বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর বাবু শ্রেণীর দলভুক্ত নয়। এরা একদম সেই শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এর গফুর মিঞার দল। যাঁরা ঘরে শুধুই নুন আর পান্তা নয় ফ্যান জোটাতেই হিমসিম খান সারাটা জীবন। তাহলে এরাই যে এই স্বাধীন ভারতের সিংহভাগ দখল করে আছে। এরাই যে দেশের সরকার গড়ার কারিগর। এরাই যে দেশের উজ্জ্বল ভারতের প্রতিচ্ছবি। যে ক্ষয়াটে মুখের ম্লান হাসিমুখের ছবি সারা ভারতের সিংহভাগ দখল করে আছে। যে ভারতে মেলে অমৃত কুম্ভের সন্ধান। বিষপান করে পেটের ক্ষিধে চেপে শুধুই অমৃতের খোঁজে ছুটে বেড়ানো। 

জীবনের সাপ লুডো আর বাজেটের আয়কর ছাড়ের গল্প - অভিজিৎ বসু।
পয়লা ফেব্রুয়ারি, দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ইটিভির পিনাকপাণি ঘোষ

কিছু মানুষ কত কাছে থেকেও পাশাপাশি এক জায়গায় বাস করেও একসাথে একসময় কাজ করেও যে কত দূরে রয়ে যান নিজের হাসিমুখ নিয়ে আর সেই চেনা ছন্দ নিয়ে সত্যিই বেশ ভালো মজার ব্যাপার কিন্তু এটা জীবনের মেঠো পথে। সেই ইটিভির বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে ঘুরে ঘুরে স্ট্রীট ফুডের ছবি তোলা আর নানা খবর করে খাওয়া দাওয়ার এপিসোড করে একসময়ে বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে যাওয়া ইটিভি নিউজে। আর আমাদের জেলায় বসে সেইসব হাঁ করে দেখা আর কেমন মনের ভেতর অস্থিরতা তৈরি হওয়া। একেই বলে কলকাতার রাজপথের সাংবাদিক বলে কথা।  সেই যে বার রাষ্ট্রপতি এলেন জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে সেই অনুষ্ঠানের বিশেষ কার্ড জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করা ইটিভির চাকরি করার সুবাদে। কোনো রকমে সেই কার্ড জোগাড় করে এনে দেওয়া তাঁকে আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য। আর সেই একদিন দুপুর বেলায় খুব সম্ভবত করোনা শেষ পর্বে বালিঘাট স্টেশন থেকে অফিস যাওয়ার সময় এসি পঞ্চাশ এর বাস এর ভিতরে দেখা হওয়ায় কত গল্প করা দুজন মিলে পুরনো দিনের। আবার উত্তরপাড়ার সেই বিখ্যাত চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে হাসি মুখে দেখা হয়ে যাওয়া রাতের বেলায় কাঁঠালবা...

আমাদের সবার মৃনাল দা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক বাবা আর ছেলের লড়াই এর গভীর গোপন কাহিনী। এই সাংবাদিকতার পেশায় এসে কত লড়াই, কত অসম যুদ্ধ, করে যে কেউ সংসার টিকিয়ে রাখতে পারে হাসি মুখে কাউকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে। এমন করে কেউ টিকে থাকার চেষ্টা করেন সেটা বোধহয় আমার জানা হয়ে উঠত না কিছুতেই। যদি না এই পেশায় আমি গা ভাসাতাম এমন করে। জীবনের এই নানা টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ ভেসে ওঠে এই রাতের অন্ধকারে আচমকা আমার মনের মাঝে। আর আমি চমকে উঠি কেমন করে তাদের সেই কোলাজ দেখে।  এমন এক চরিত্র, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়ে কেমন আলগোছে, হাসিমুখে, নির্মোহ ভাবে, শুধু নিজের কাঁচা পাকা দাড়িতে হাত বুলিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিলো সে শুধুই আকাশ পানে তাকিয়ে। যে নীল আকাশের গা ঘেঁষে উড়ে যাওয়া সাদা বকের ডানায় লেগে থাকে মেঘের হালকা টুকরো। একদম যেনো সিনেমার পর্দার হিরোর মতোই। দেখে বোঝার উপায় নেই একদম। পেটে খাবার না থাকলেও মুখের হাসিটা অমলিন হয়েই বেঁচে আছে আজও এতোদিন পরেও। আর সেই বিখ্যাত সাদা পাকা নাসিরউদ্দিন স্টাইলের দাড়ি, কালো চুল, আর সব সময় ধোপদুরস্ত ফিটফাট একজন মানুষ। রাত নটা বাজলেই যাকে শ্রীরামপুরে...

শপিং মলের উদ্বোধনে সিঙ্গুর আন্দোলনের দাপুটে মন্ত্রী

নালিকুল স্টেশন বাজারে একটি শপিং মলের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বেচারাম মান্না হাজির। একসময় যাঁর অন্দোলনের ঠেলায় পড়ে দৌড়ে একপ্রকার পালিয়ে চলে যেতে হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে টাটা কোম্পানিকে। যে আন্দোলনের দগদগে ঘা আর সেই স্মৃতি ধীরে ধীরে আজ প্রায় মিলিয়ে যেতে বসেছে আমাদের কাছ থেকে। আজ সেই চাষার ঘরের মানুষ না হলেও সেই কৃষক আর শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকার নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেন সেই মানুষটাকেই কেমন যেন আজ শপিং মলের উদ্বোধনে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার।  একদম নালিকুল স্টেশনের কাছে ঝাঁ চকচকে শপিং মল। দোকানে সাজানো জিনিস পত্র। আর সেখানেই আমাদের মাননীয় মন্ত্রী বেচারাম মান্না। একদম কেমন একটু আমার অচেনা লাগলো যেন। সেই মুড়ি খেয়ে আলুর তরকারি বা শশা খেয়ে আন্দোলন শুরু করা জমি আন্দোলন এর অন্যতম পথিকৃৎ নেতা আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তাহলে টাটা কোম্পানির বিরুদ্ধে যে জমি দখল নিয়ে আন্দোলন সেই আন্দোলন এর মধ্যে ছিল জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যদিও সেখানেও সেই সময়ের শাসকদলের কর্মসংস্থানের যুক্তি।তবে এই নতুন শপিং মলের উদ্বোধনে তো আর ...

ভীড়ের মাঝে একা

জীবন জুড়ে শুধুই ভীড় আর ভীড়। নানা ধরনের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় মানুষের গন্ধে, বর্ণে , স্বাদের ভীড়ে আমি একদম একা হয়ে যেতে চাই। যে ভীড় উপচে পড়া রাস্তায় শুধুই হেমন্তের ভোরে শিশিরের ফিসফিস শব্দ, পাখির কিচির মিচির আওয়াজ,ধানসিড়ি ওই নদীটির তীর ধরে ঘুঘুর আকুল মন কেমন করা ডাক, উদাসী শালিকের ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া ওই হেমন্তের হলুদ ধানের মাঠ এর পাশ দিয়ে, হলুদ বসন্ত বৌরীর সেই আমলকীর গাছের পাতায়,আড়ালে আবডালে বসে কেমন যেন আমায় দেখে লজ্জা পাওয়া, আর তারপর চোখ নামিয়ে হঠাৎ করেই তার উড়ে চলে যাওয়া। আর মেঘের কোল ঘেঁষে সেই সাদা বকের, বুনো হাঁসের, আর সেই পানকৌড়ির জলে ভেজা ডানা মেলে উড়ে যাওয়া আকাশ জুড়ে। সত্যিই ওরাও যে ভিড়ের মাঝেই বড়ো একা। একা একাই ওদের যে এই বেঁচে থাকা। কেমন নিপাট হৈ চৈ হুল্লোড়হীন একটা জীবন নিয়ে বেশ মজা করে, আনন্দ করে। আর সেই ভোরের আলোয় আলোকিত হয়ে রাস্তার একপাশে গুটি শুটি মেরে শুয়ে থাকা ওই সাদা কালো ভুলো নামের কুকুরের। যে অন্তত এই সব মানুষদের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় একটু যেনো আলাদা , একটু যেনো অন্য রকমের। একটু একা একাই যেনো ওর এই আলগোছে জীবন কাটিয়...

গৌড় প্রাঙ্গণে আনন্দবাজার

গৌরপ্রাঙ্গনে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যের আনন্দের মেলা আনন্দবাজার। মহালয়ার ভোরবেলায় ঢাকের বাদ্যি আর সানাইয়ের মন কেমন করা সুরে মেতে উঠলো শান্তিনিকেতনের গৌড়প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও যে হবে আনন্দমেলা আনন্দবাজার। হ্যাঁ সত্যিই যেনো আনন্দের এই হাটে বেচাকেনার পসরা নিয়ে একদিনের জন্য বসে পড়া মন প্রাণ খুলে হৈ হুল্লোড় করে। এই মেলা শুরু হয় 1915 সালের 15 এপ্রিল নববর্ষের দিনে। কিন্তু আগে এই মেলাকে একসময় বলা হতো বৌঠাকুরাণীর হাট। সেই সময় আশ্রমের মহিলারা নিজেদের হাতের তৈরি জিনিস নিয়ে মেলায় বসতেন। মেলার আয়োজন করতেন তারা। আনন্দ করে বেচাকেনা হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় একবার গরমের ছুটির আগে এমন মেলা নাকি হয়েছিল। যার নাম ছিল আনন্দবাজার। পরে এই মেলার নামে হয়ে যায় আনন্দমেলা। সত্যিই আনন্দের এই মিলন মেলা।  প্রথমদিকে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই মেলা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে বিশ্বভারতীর সব বিভাগের পড়ুয়ারা এই মেলায় যোগদান করে। এই মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের বেচা কেনার লাভের টাকার কিছু অংশ জমা পরে বিশ্বভারতীর সেবা বিভাগে। সেখান থেকে এ...