সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

দেবাশিস ভট্টাচার্যের স্মরণে

দেখতে দেখতে প্রায় দুবছর হতে চললো তিনি আর আমাদের মধ্যে নেই আজ। এই মাসের ১৯ ফেব্রুয়ারী বিশিষ্ট সাংবাদিক দেবাশিস ভট্টাচার্যের মৃত্যুর দু বছর পূর্তি হবে। তাঁকে নিয়ে একটা স্মরণ সভাও হবে। কিছু কিছু মানুষকে নিয়ে লিখতে বসে মনে হয় কি লিখবো এমন এক ব্যক্তিকে নিয়ে লেখার কোনোও যোগ্যতা আমার নেই যে। যাঁর সাথে কোনোদিন কাজ করিনি আমি। কোনওদিন সান্নিধ্যে আসিনি আমি। তাঁকে নিয়ে লেখা আমার দুঃসাধ্য ব্যাপার। 

যিনি শুধু একটা গোটা জীবন কাটিয়ে দিলেন শুধুই নিজের কথা না ভেবে, বাড়ীর আত্মীয় স্বজনের কারুর কথা না ভেবে, কারুর জন্য কিছুই না করে। শুধু সবাইকে আপনি বলে কথা বলে আর যে কোনোও বয়সের সহকর্মীকে সম্মান জ্ঞাপন করে কাজ করিয়ে নিতেন তিনি হাসিমুখে। হাতে চাবুক নিয়ে আর গালমন্দ করে নয় একদমই আজকাল যেটার চল খুব বেশী এই হাল আমলে।

 একজন মানুষ যিনি যে কোনোও বিষয় নিয়ে জিজ্ঞাসা করলে একবারেই বলে দেন সেই ঘটনার সাল, তারিখ তার ঠিকুজি,কুষ্ঠী সব কিছুই ঠিক যেনো নিজেই একটা চলন্ত এনসাইক্লোপিডিয়া তিনি সেই কবে থেকেই এই বাংলা সংবাদ মাধ্যমে। সেই নকশাল আন্দোলন থেকে শুরু করে বাম আন্দোলন। পরে কংগ্রেসের রাজত্ব দেখে ফের তৃণমুল এর শাসনকালকে একদম কাছ থেকে দেখা। এই দীর্ঘ সময়ের তাঁর প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকতা জীবনে নানা ধরনের মুখ্যমন্ত্রীদের ঘনিষ্ঠ ক্ষমতার বৃত্তের মধ্যে থেকেও কেমন তাঁর নিজের জীবনে ক্ষমতাকে ভোগ না করে ফুলে ফেঁপে উঠলেন না একদমই। আঙুল ফুলে কলা গাছ হলো না তাঁর ভাগ্না, ভাগ্নী আত্মীয় স্বজন থেকে শুরু করে পরিবারের অন্য আত্মীয়দের কারুরই। এমনকি তাঁর পরিবারের লোকদেরও।

যাঁকে সেই আজকাল এর অফিস এর গাড়ী রাতের বেলায় বাড়ীর সামনে ড্রপ করতে এলে বাড়ির সামনে গাড়ী থেকে নামলে তাঁর হাঁটার অভ্যাস চলে যাবে আর যেদিন গাড়ী বন্ধ হয়ে যাবে সেদিন কি বলবে পাড়ার লোক জন শুধু এই অজুহাত দেখিয়ে একজন প্রথিত যশা সাংবাদিক রাত একটায় বাড়ির শেষ কিছুটা পথ হেঁটেই ঘরে ফিরতেন কুকুরের সাথে মজা করে নিজে নিজেই। আসলে এটাই বোধহয় তাঁকে আজও বাঁচিয়ে রেখেছে আমাদের মাঝে তাঁর মৃত্যুর প্রায় দুবছর পরেও এইসব কথা বলতে স্মরণ করতে বেশ ভাল লাগে। এমন জীবন দর্শনের একজন মানুষকে আজ বড্ড মিস করি আমরা। যেখানে সবাই একদিকে দৌড়চ্ছে সেখানে এই চিত্র অন্য রকম বার্তা দেয় আমায়। 

শুধুই ব্যাংকে ই এম আই জমা করে ক্ষমতায় টিকে থাকা আর বেঁচে থাকা নয়, ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে শুধুই তাকে যে কোনোও উপায়ে উপভোগ করা নয়। একটু কেমন হেলাচ্ছেদা করেই বেঁচে থাকার চেষ্টা করা নিজেকে নিয়ে একদম অন্যরকম ভাবেই। একদম মাটির কাছে তাঁর সারাটা জীবন বেঁচে থাকা। মাটির গন্ধ নিয়ে ক্ষমতাবানদের একটু দূরে সরিয়ে রেখেই হাসিমুখেই তাঁর দিনযাপন করা। হোকনা শীতের উত্তুরে হাওয়া ভাঙা জানলার কাঁচ গলে আসুক না তাতে ক্ষতি কী। জানলায় কাগজ আটকেই না হয় ঠাণ্ডার মোকাবিলা করা গেলো একটা বা দুটো শীত তাতে তাঁর যে কিছুই মনে হয় না কোনোদিন।

 আর তাই বোধহয় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে মিটিং এর পর নিজের গাড়িতে ওঠার আমন্ত্রণ জানালেও তিনি একটু চুপিসারে গুটি গুটি পায়ে মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ীকে প্রত্যাখ্যান করেন কিছুটা হাসিমুখেই নিজেই স্বেচ্ছায়। কারণ তাহলে যে অনেকেই তাঁর কাছে তদ্বির করতে পারেন। বলতে পারেন এটা একটু বলে দেবেন সিএমকে আপনি। এটা আপনি বললে ম্যাডাম আপনার কথা ফেলতে পারবেন না। কারন তিনি যে মুখ্যমন্ত্রীর খুব কাছের লোক এই মা মাটি আর মানুষের আমলেও। 

আর তাই বোধহয় রাজনীতির বৃত্তের ভেতরে ঘুরপাক খেলেও রাজনীতির লোকদের হাতের ক্রীড়নক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন নি তিনি কোনওদিন কোনোভাবেই। আর সেটাতেই তাঁর কৃতিত্ব। তিনি একশো শতাংশ সফল। যা বোধহয় এই হাল আমলের নানা ধরনের ক্ষমতাবান সেই ছোটো, বড়ো, মেজো, সেজো, ছোটো এমনকী ন আকারের নানা মাপের সাংবাদিকরা ভাবতেই পারেন না আজকাল। তারা মনে করেন এটাই তার জীবনের একমাত্র হক। খাতা পেন হাতে নিয়ে, ক্যামেরা আর বুম হাতে নিয়ে সেটা বুমেরাং হবার আগে পর্যন্ত যে করেই হোক আমাকে ভালো থাকতেই হবে। একটু অন্যরকম ভাবে আড়ে আর বহরে একটু আড়াল করেই প্রচুর ক্ষমতা ভোগ করতে হবে আর আমায় শ্রীবৃদ্ধি লাভ করতে হবেই না হলে যে এই সাংবাদিক জীবনের ষোলো আনাই বৃথা গেলো আমার। 

আর সেটাকে একদম আমল না দিয়েই কেমন সেই সাধারন থেকে অতি সাধারন একটা জীবন যাপন করেই হাফ শার্ট জামা আর সেই একটা ঢোলা প্যান্ট পড়েই হাসিমুখে কাটিয়ে দিলেন তিনি শুধুই একটা আদর্শকে আঁকড়ে ধরেই। এসব শুনে অনেকেই বলবেন রাত দুপুরে এসব লিখে কি লাভ। এসব বলেই বা কি লাভ। কিন্তু আমার সাদা জীবনের কালো কথায় সেই আঁকিবুঁকি ব্লগে নানা ধরনের মানুষের পাশে এমন একজন এর কথাও লেখা দরকার। 

যাঁর কথা পড়ে মনে হবে সত্যিই তো এমন একজনকে আমরা পেয়েছিলাম যিনি হেলায় ক্ষমতাকে কুক্ষিগত না করে, শুধুই নিজের জন্যে আড়ে বহরে না বেঁচে থেকে তাকে নিয়ে হাসি মুখে খেলতে পারেন। আর তাই বোধহয় এমন একজন ব্যক্তির ভাগ্নে হয়েও পিটিআই এর সেই হুগলীর সাংবাদিক সৌম্য মুখোপাধ্যায় মামার কাছে কোনো সাহায্যে পেলো না কোনোদিন যা পেলে কিছুটা হলেও নিশ্চিত জীবন পেতো সে। যদিও মামার কথা বলতে গিয়ে সে আজও গর্ব অনুভব করে।

 এই ভেঙে পড়া ক্ষয়িষ্ণু সমাজে আজও যেটা একটা দৃষ্টান্ত হয়েই বেঁচে থাকবে আমাদের কাছে এই সাংবাদিক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক, দেবাশিস ভট্টাচার্যের জীবন। মিডিয়ার লোক মানেই প্রভূত ক্ষমতার অধিকারী, মূখ্যমন্ত্রীর পরামর্শদাতা বা ঘনিষ্ঠ সাংবাদিক মানেই তাঁর অনেক ক্ষমতা। সেই ক্ষমতাই তাঁকে চিচিং ফাঁক করে দিয়ে আলিবাবার চল্লিশ চোর এর গুহার সন্ধান দেয় যেখানে সে সব পায় আর আনন্দে মশগুল হয়ে তাঁর জীবন কাটায়। না, এটা কিছুতেই করতে পারেন নি আমাদের সেই অতি ভালো মানুষ দেবাশিস ভট্টাচার্যদা। যিনি এখনও আমাদের এই ক্রমেই আত্মসম্মান হারিয়ে ফেলা এই সংবাদ মাধ্যমে একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র হয়েই বেঁচে থাকবেন তিনি। আমার প্রণাম নেবেন আপনি দেবাশিস দাদা। 

দেবাশিস ভট্টাচার্যের স্মরণে - অভিজিৎ বসু।
এগারো ফেব্রুয়ারী দু হাজার পঁচিশ। 
ছবি সৌজন্য সৌম্য মুখোপাধ্যায়।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

জামালপুরের প্রদীপ দা

আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায় বর্ধমানের জামালপুরের সেই দাপুটে ঠোঁট কাটা সাংবাদিক প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় এর কথা। সেই বিখ্যাত সুভাষ তালুকদার এর কাগজ সংবাদে মাত্র এক টাকার কাগজে কাজ করা সংবাদ পত্রিকার দাপুটে সাংবাদিক সেই প্রদীপ দা। সেই মুখ্যমন্ত্রীর সভায় বাঁশের ব্যারিকেডের এপারে দূরে দাঁড়িয়েও যে খবর করা যায় সেটা বড়ো মিডিয়ার সাংবাদিকদের হাসি মুখে দেখিয়ে দিয়ে, আর তাদের খবরের ময়দানে গোল দিয়ে শুধু খবরকে ভালোবেসে ছোটো কাগজে কাজ করে চলা সর্বদা হাসি মুখের সেই আমাদের প্রদীপ চ্যাটার্জী দা।  কোথাও কোনো অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদে মুখর হয়ে যাওয়া আর এক দৌড়ে বেরিয়ে পড়া ঝোলা কাঁধে সেই খবরের খোঁজে সেই জামালপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের সেই প্রদীপ দা। সেই বিখ্যাত পন্ডিত রবিশঙ্কর আর উদয়শঙ্কর এর আপন মাসতুত ভাই এর ছেলে সেই প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় দাদা। সেই বামদের আমলে জামালপুরের এলাকায় দাপিয়ে খবর করে ছুটে বেড়ানো সেই প্রদীপ দা। সেই তৃণমূল আমলেও একভাবেই ছুটে বেরিয়ে কাজ করা আমাদের সদা ব্যস্ত প্রদীপ দা।  সেই বাবার অসুস্থতার কারনে বড়ো সংবাদ মাধ্যমে কাজ না করেও...

আমার স্যার কাজীদা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ আমার স্যার এর কথা। যার লেখা আজ হঠাৎ চোখে পড়লো একটি কাগজে। আর স্যার এর নামটা দেখেই মনে পড়ে গেলো নানান কথা। হ্যাঁ, সেই কাজী গোলাম গাউস সিদ্দিকী। যাঁর সাথে আমার আলাপ আর দেখা হয়েছিল সেই অজিতদার ফ্রিল্যান্স ছকু খানসামা লেনের ফ্রীল্যান্স প্রেস ক্লাবের অফিসে খুব সম্ভবত। হাসিখুশি বেশ অজাতশত্রু এই মানুষটিকে দেখেই আমার মনে হয়েছিল যে রিপোর্টারদের প্রভূত ক্ষমতা থাকে বোধহয়। তাই পকেটে পেন আর সেই ফোনের ছোট্টো নোটবুক দেখেই আমার মনে হয়, যে ক্ষমতার স্বাদ পাবার জন্য সেই সদ্য গ্র্যাজুয়েশন করে আমার কচি মনে সাংবাদিক হবার বাসনা জাগে সেই সময়।  কোনো প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক নয়, কোনো অফিসে মাছি মারা দশটা পাঁচটার লোয়ার ডিভিশন এর কেরানি নয়, মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ নয়, ল্যাবরেটরিতে টেকনিশিয়ান এর কাজ নয়, এল আই সি বা পোষ্ট অফিস এর এজেন্ট নয়, কোনো মুদি দোকানে হিসেব পত্র লেখার কাজ নয়, স্বাধীন ব্যবসা করা নয়। শুধুই সাংবাদিক হবার স্বাদ।  কাগজে সাদা কালো অক্ষরে নিজের নাম ছাপা হবে, সেই নাম দেখে বুক ফুলে যাবে, পাড়ায় প্রতিবেশীরা সহ স...

কুড়ি থালা দশ টাকা আর রসিক মুলুর জীবন

নাম মুলু হাঁসদা। বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানার চরিচা গ্রাম পঞ্চায়েত এর চর ইচ্ছা রঘুবরপুরের বাসিন্দা মুলু। আজ মুলুর জীবন কথা। গ্রামের নামটা ভারী অদ্ভুত। চর ইচ্ছা রঘুবরপুর। যে গ্রাম অন্য পাঁচটা গ্রামের মতই।সাদামাটা এই গ্রামে দারিদ্র্য, অপুষ্টি আর কর্মহীন জীবনের জলছবি সুস্পষ্ট। আর সেই গ্রামের মহিলারা নিজেদের সংসার রক্ষা করতে গাছের পাতাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে। গাছের পাতা মুলুদের জীবনের জিয়ন কাঠি। যে জিয়ন কাঠিতে তারা ভোর হতেই পেটের টানে চলে যায় জঙ্গলে। খস খস শব্দ করে পায় হেঁটে তারা পাতা তোলে। গাছ থেকে টুপ টাপ করে ঝড়ে পড়া পাতাকে একটা একটা করে নিজের শাড়ির আঁচলে ভরে নেয়। তার পর সব পাতাকে বস্তায় ভরে ঘরে ফেরে।  ঠিক যেভাবে তারা পুকুরে নেমে শামুক গেঁড়ি আর গুগলি তোলে। যে ভাবে তাদের উদর পূর্তি হবে বলে। আর এই পাতাও যে তাদের পেট ভরায়। একটা একটা পাতাকে নিজের সন্তানের মতো আলগোছে ছুঁয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে চুমু খায় মুলু, বলে তোরা না থাকলে কি করতাম কে জানে। মাথার ওপর শাল সেগুনের বিশাল আকারের গাছগুলো চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে আর তারা চুপ করে শোনে মুলুর কথা।  একে অপ...

শুভ মকর সংক্রান্তি

মকর মানেই নতুন জামা কাক ভোরে স্নান, রাত্রি জেগে মিঠে সুরে টুসুমণির গান। মকর মানেই পিঠে - পুলির গন্ধে ম - ম হাওয়া, ডুলুং পাড়ে টুসুর মেলায় দল বেঁধে যাওয়া। মকর মানেই মোরগ লড়াই পাহুড় জেতার সুখ, সন্ধ্যা - রাতে মাংস পিঠের স্বাদে ভরা মুখ। মকর মানেই হাতি - ঘোড়ার পুজো করম তলে, সান্ধ্য হাওয়ায় মন উদাসী দিমির দিমির বোলে। আসলে আজ এই মকর সংক্রান্তির দিন, টুসু মেলার দিন, টুসু গানে নিজেকে মাতিয়ে দেবার দিন। অজয় এর ধারে জয়দেব কেঁদুলির মেলায় ভীড়ের মাঝে নিজেকে হারিয়ে দেবার দিন। অজয় এর জলে ডুব দিয়ে স্নান করে পূণ্য অর্জনের দিন। আর নদীর ধারে মোরগ লড়াই এর দিন। আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর দিন, সুতো লাটাই হাতে আকাশ পানে তাকিয়ে থাকার দিন। কেমন যেনো রাশির একটি স্থান থেকে অন্য রাশিতে স্থান পরিবর্তনের দিন। সূর্যের দেবতাকে সকালে উঠে স্নান সেরে প্রণাম জানিয়ে শক্তি সঞ্চয় এর দিন। সূর্যের উত্তর দিকে চলে যাবার দিন। ধীরে ধীরে শীতকাল চলে যাওয়ার দিন।  এই মকর সংক্রান্তি এর ইতিহাস ও ভারতীয় ঐতিহ্যের গভীর শিকড় রয়েছে। এটি কৃষি চক্র এবং ফসল কাটার মৌসুমের সাথে জড়িত। এই মকর সংক্রান্তি চ...