সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

হরিণসিঙ্গা গ্রামের গল্প

আজ এক গ্রামের গল্প। বাংলার আদি অকৃত্তিম একটি গ্রামের কিছু ধূলোমলিন মানুষের পাথুরে জীবনের গল্প। সেই যে গ্রামের নামটি বেশ সুন্দর কিন্তু। বীরভূম জেলার সেই হরিণসিঙ্গা গ্রাম। কী সুন্দর মিষ্টি একটা গ্রাম। বীরভূমের বিখ্যাত পাথর ভাঙার জন্য বিখ্যাত বা কুখ্যাত সেই দেউচার আর পাঁচামির সেই ধুলো ভরা সংসার আর পাথুরে মাটির সংসারের রুখা শুখা কঠিন কষ্টের জীবনের কিছু কালো কাহিনী। যে কাহিনী আজ সবারই আমাদের জানা হয়ে গেছে এতদিনে। 


সেই ধুলো ভরা আদিবাসী গ্রামে আজ কতই না ব্যস্ততা আর কত মানুষের যে আনাগোনা বেড়েছে ইদানীং হঠাৎ করেই কে জানে। লাল, নীল, বাতির কালো কাঁচ ঢাকা গাড়ির আনাগোনা বেড়েছে বেশ কিছুদিন ধরেই। এই সব আদিবাসীদের নিঃস্তব্ধ, ক্ষয়িষ্ণু,অনুন্নত সব শান্ত গ্রামে। বেড়েছে শহর থেকে সরকারি বাবুদের আসা আর যাওয়া বেশ কিছুদিন ধরেই ইদানিং। কেমন যেনো বেড়েছে নেতাদের হাসিমুখের আনাগোনাও ঘনঘন। কী রে তুরা সব খুশী বটেক।‌ দেখ দেখ তুদের ভালোর জন্য আমরা কত কিছুই কাজ করি। এই মা মাটির আর মানুষের সবুজ ঘাস পাতার সরকারের সংসার। খবরের কাগজের পাতায় আর সেই টিভির খবরের নানা বিষয়েও আজ কত হৈ চৈ আর হুল্লোড়। তাদের গ্রামের মেঠো কথা শোনা যায় আজকাল বেশ ঘন ঘনও সিঙ্গা বাজিয়ে ঢাক ঢোল পিটিয়ে আর মাদল বাজিয়ে।

 ধীরে ধীরে কেমন যেন বদলে যাচ্ছে তাদের এই শান্ত শীতল সুন্দর হরিণসিঙ্গা গ্রাম। বদলে যাচ্ছে তাদের পাথর ভাঙা জীবন, শুধু এই পাথরের দৌলতেই। যে মাটির নিচের পাথর যে আজ বড্ড দামী তাদের কাছে বরাবর গোটা জীবনভোর। এই পাথর চাপা জীবন নিয়েই যে তাদের জন্ম আর মৃত্যু, প্রেম আর ভালোবাসা আর তাদের হাসি মুখে বেঁচে থাকা। পাথর চাপা যুগের কত গল্প আর কাহিনী নিয়েই তো আজ তাদের বেঁচে থাকা বছর বছর ধরে। হাসিমুখে নিঃস্তব্ধ জঙ্গলের মাঝে সংগোপনে লুকিয়ে থাকা। বুকের মাঝে কষ্ট চেপে রেখেই মুখে কুলুপ এঁটে কোনোও কথা না বলে। মুখে জোর করে হাসি ফুটিয়ে। আর উন্নয়নের জোয়ারে ভেসে যাওয়া সংসারেও কেমন যেনো অনিয়মের আর অনুন্নয়নের ছোঁয়া স্পষ্ট হয়ে যাওয়া ধীরে ধীরে এই সব গ্রামের মেঠো জীবনে। এটাই যে নিয়ম আর দস্তুর হয়ে গেছে এইসব আদিবাসী গ্রামের।

তাদের পাথুরে জীবনেও কত যে ঘটনা ঘটে যায় এই এত বছর পরেও তার আর ঠিক নেই। সেই জন্ম থেকেই যে মাটি আর পাথরের মিলমিশের কঠিন সংসারে কেমন করে যেনো আজ সরকারের দৌলতে নরম রোদ এর আলোর প্রবেশ ঘটেছে এই কিছুদিন হলো হঠাৎ করেই।‌ জন্ম থেকেই সেই কবে থেকেই যে পাথর খোদাই গ্রাম হিসেবেই পরিচিত এই হরিনসিঙ্গা, চাঁদা গ্রামের কেন্দপাহাড়ি, মুরগাবনী, যে সব গ্রামের জলছবি আঁকা ঘরে ঘরে মাটির দেওয়ালে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা অনিয়ম, বেনিয়ম, অনুন্নয়ন, আর গরুর ডাক্তারের ফোন নম্বর উজ্জ্বল হয়ে প্রতীয়মান। গ্রামের মাঝে দাঁড়িয়ে থাকা পানীয় জলের গাড়ী। যার গায়ে লেখা মেরা ভারত মহান। সত্যিই তো মেরা ভারত মহানই , আল্লা আর ঈশ্বরের দোয়ায় আর সরকারের সহায়তায় সেই কবে থেকেই কতদিন ধরেই।

সেই সাত সকালেই তাই আমার গাড়ী নিয়ে বেরিয়ে পড়া। ভোরের হালকা ঠাণ্ডায় বোলপুর থেকে সিউড়ি সদর হয়ে সেই তিলপাড়ার ব্যারেজ পার হয়ে সেই মহম্মদ বাজারের দেউচা পঞ্চায়েত পার হয়ে দেউচা মোড় পার হয়ে সেই সদ্য নীল সাদা রঙের প্রলেপ দেওয়া দেউঁচা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র পার করে সেই হিংলো পঞ্চায়েত যাবার উঁচুনিচু সেই ধুলো ভরা পথ পেরিয়ে সেই হরিণসিঙ্গা গ্রামে। 

যে গ্রামের মানুষ, যে গ্রামের ছেলে, মেয়ে, বুড়ো, জোয়ান, মদ্দ শুধুই পাথর ভাঙ্গে, আর পাথর তোলে, আর বালি তোলে, পাথরের লরির হিসেব করে সেই ছোট্ট কালো পকেট ফোনে আর সেই হালফ্যাশনের ওয়াকিটকিতে খবর আদানপ্রদান করে এদিক থেকে ওদিক সেই বীরভূম আর ঝাড়খণ্ডের সীমান্তে। সবুজ আর নীল প্যাড ছেপে তারা লরি আটকে পাথর বোঝাই লরির হিসেব রাখে একমনে। সেই পাথর বোঝাই জাহাজ যে তাদের এই পাথুরে কঠিন উপত্যকায় কেমন যেনো থমকে যাওয়া জীবনে, তাদের অনুন্নয়ন আর কর্মহীন জীবনে কেমন করে যে কিছু টাকা এনে দিয়েছে সেটা তারা ঠিক বুঝতেই পারে না আজকাল।

 ধুলো পড়া মোটর সাইকেল হাঁকিয়ে তাই গাড়ি ছুটিয়ে এদিক ওদিক দৌড়ে বেড়ানো ওদের। দিনের শেষে পাখির ডাক শুনে আর পাথর ভাঙার আওয়াজ শুনে কেমন করে মাতাল হয়ে যাওয়া গ্রামের মিষ্টি নেশার টানে গ্রামের ভেতরেই সংগোপনে। নেশার ঘোরে ঢলে পড়া। সত্যিই অসাধারণ এই জীবন আর হরিনসিঙ্গা গ্রামের জীবনের কিছু সংসার। যে সব সংসারে টাকা আছে, যে সব সংসারে কিছু কাঁচা টাকা আয় আছে, কিছু কাজ আছে শুধুই এই পাথরের কল্যাণে।

 যে পাথর ভেঙে আজ নাকি কয়লা তুলবে এই মা মাটি আর মানুষের উন্নয়নের আর কল্যাণের সরকার। বদলে যাবে তাদের এই পাথুরে জীবন। বদলে যাবে এই জীবনের লড়াই এর জলছবি। আরও কাজ মিলবে তাদের সবার, সরকারী ঘর মিলবে, শুধু আফশোষ একটাই সাধের এই বাপ ঠাকুর্দার জমি, ভিটে, গাছ পালা সবকিছুই হারিয়ে চলে যেতে হবে দূরে অনেক দূরে এই পাথুরে মাটি ছেড়ে, তাদের মাটির চেনা গন্ধ ছেড়ে এদিক ওদিক ছন্নছাড়া হয়ে অন্য কোথাও।

 স্বাধীনতার পর থেকেই যে সব গ্রাম আর গ্রামের মানুষ এইভাবেই তাদের চেনা জীবন কাটিয়ে দিলো হাসি মুখে কখনও লাল ফুলের আর কখনও জোড়া ফুলের আশ্রয়ে নির্ভয়ে আর নির্ভাবনায়। আজ সেই মানুষগুলোই যে কেমন করে যেন কষ্ট পায় এই বাপ ঠাকুর্দার জমি ছেড়ে, চেনা জীবন ছেড়ে, অন্যত্র চলে যেতে হবে বলে মনে মনে কষ্ট পায় তারাই। কালো কাঁচের ঘেরাটোপে বন্দী হয়ে হাসিমুখে সরকারি বাবুরা আসে, কত ভালো ভালো কথাই যে বলে সেসব কিছুই যে তাদের মাথায় ঢোকে না আর। গ্রামের তাদেরই চেনা জানা সব বদলে যাওয়া গ্রামের ছেলে সদ্য নেতা বনে যাওয়া ছেলেপুলেরা আসে আর বলে, কি খুবর গো তুমাদের চাচা ভালো আছো তো সব। 

আর সেই পাথরের রাস্তা পেরিয়ে নীল সাদা পোশাক পড়ে কচিমুখের শিশুরা স্কুলে এসে ভীড় করে। নীল সাদা সাইকেল চালিয়ে কাঁধে ব্যাগ ঝুলিয়ে, হাসিমুখে তারা গল্প করে স্কুলের গেটে। দিদিমনি আসে সেই দুর থেকে, পড়া করে তারা দুলে দুলে আর এইসব গ্রামের ছোট্ট ছেলে-মেয়েরা স্বপ্ন দেখে সেই কচি মুখের শিশুরা দিদিমনির বলা কথা বিড়বিড় করে আউড়ে বলে, মেরা ভারত মহান। 

হরিণসিঙ্গা গ্রামের গল্প - অভিজিৎ বসু।
আঠারো ফেব্রুয়ারী, দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য নিজের মোবাইল ফোনে তোলা।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ইটিভির পিনাকপাণি ঘোষ

কিছু মানুষ কত কাছে থেকেও পাশাপাশি এক জায়গায় বাস করেও একসাথে একসময় কাজ করেও যে কত দূরে রয়ে যান নিজের হাসিমুখ নিয়ে আর সেই চেনা ছন্দ নিয়ে সত্যিই বেশ ভালো মজার ব্যাপার কিন্তু এটা জীবনের মেঠো পথে। সেই ইটিভির বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে ঘুরে ঘুরে স্ট্রীট ফুডের ছবি তোলা আর নানা খবর করে খাওয়া দাওয়ার এপিসোড করে একসময়ে বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে যাওয়া ইটিভি নিউজে। আর আমাদের জেলায় বসে সেইসব হাঁ করে দেখা আর কেমন মনের ভেতর অস্থিরতা তৈরি হওয়া। একেই বলে কলকাতার রাজপথের সাংবাদিক বলে কথা।  সেই যে বার রাষ্ট্রপতি এলেন জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে সেই অনুষ্ঠানের বিশেষ কার্ড জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করা ইটিভির চাকরি করার সুবাদে। কোনো রকমে সেই কার্ড জোগাড় করে এনে দেওয়া তাঁকে আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য। আর সেই একদিন দুপুর বেলায় খুব সম্ভবত করোনা শেষ পর্বে বালিঘাট স্টেশন থেকে অফিস যাওয়ার সময় এসি পঞ্চাশ এর বাস এর ভিতরে দেখা হওয়ায় কত গল্প করা দুজন মিলে পুরনো দিনের। আবার উত্তরপাড়ার সেই বিখ্যাত চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে হাসি মুখে দেখা হয়ে যাওয়া রাতের বেলায় কাঁঠালবা...

আমাদের সবার মৃনাল দা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক বাবা আর ছেলের লড়াই এর গভীর গোপন কাহিনী। এই সাংবাদিকতার পেশায় এসে কত লড়াই, কত অসম যুদ্ধ, করে যে কেউ সংসার টিকিয়ে রাখতে পারে হাসি মুখে কাউকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে। এমন করে কেউ টিকে থাকার চেষ্টা করেন সেটা বোধহয় আমার জানা হয়ে উঠত না কিছুতেই। যদি না এই পেশায় আমি গা ভাসাতাম এমন করে। জীবনের এই নানা টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ ভেসে ওঠে এই রাতের অন্ধকারে আচমকা আমার মনের মাঝে। আর আমি চমকে উঠি কেমন করে তাদের সেই কোলাজ দেখে।  এমন এক চরিত্র, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়ে কেমন আলগোছে, হাসিমুখে, নির্মোহ ভাবে, শুধু নিজের কাঁচা পাকা দাড়িতে হাত বুলিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিলো সে শুধুই আকাশ পানে তাকিয়ে। যে নীল আকাশের গা ঘেঁষে উড়ে যাওয়া সাদা বকের ডানায় লেগে থাকে মেঘের হালকা টুকরো। একদম যেনো সিনেমার পর্দার হিরোর মতোই। দেখে বোঝার উপায় নেই একদম। পেটে খাবার না থাকলেও মুখের হাসিটা অমলিন হয়েই বেঁচে আছে আজও এতোদিন পরেও। আর সেই বিখ্যাত সাদা পাকা নাসিরউদ্দিন স্টাইলের দাড়ি, কালো চুল, আর সব সময় ধোপদুরস্ত ফিটফাট একজন মানুষ। রাত নটা বাজলেই যাকে শ্রীরামপুরে...

শপিং মলের উদ্বোধনে সিঙ্গুর আন্দোলনের দাপুটে মন্ত্রী

নালিকুল স্টেশন বাজারে একটি শপিং মলের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বেচারাম মান্না হাজির। একসময় যাঁর অন্দোলনের ঠেলায় পড়ে দৌড়ে একপ্রকার পালিয়ে চলে যেতে হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে টাটা কোম্পানিকে। যে আন্দোলনের দগদগে ঘা আর সেই স্মৃতি ধীরে ধীরে আজ প্রায় মিলিয়ে যেতে বসেছে আমাদের কাছ থেকে। আজ সেই চাষার ঘরের মানুষ না হলেও সেই কৃষক আর শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকার নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেন সেই মানুষটাকেই কেমন যেন আজ শপিং মলের উদ্বোধনে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার।  একদম নালিকুল স্টেশনের কাছে ঝাঁ চকচকে শপিং মল। দোকানে সাজানো জিনিস পত্র। আর সেখানেই আমাদের মাননীয় মন্ত্রী বেচারাম মান্না। একদম কেমন একটু আমার অচেনা লাগলো যেন। সেই মুড়ি খেয়ে আলুর তরকারি বা শশা খেয়ে আন্দোলন শুরু করা জমি আন্দোলন এর অন্যতম পথিকৃৎ নেতা আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তাহলে টাটা কোম্পানির বিরুদ্ধে যে জমি দখল নিয়ে আন্দোলন সেই আন্দোলন এর মধ্যে ছিল জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যদিও সেখানেও সেই সময়ের শাসকদলের কর্মসংস্থানের যুক্তি।তবে এই নতুন শপিং মলের উদ্বোধনে তো আর ...

ভীড়ের মাঝে একা

জীবন জুড়ে শুধুই ভীড় আর ভীড়। নানা ধরনের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় মানুষের গন্ধে, বর্ণে , স্বাদের ভীড়ে আমি একদম একা হয়ে যেতে চাই। যে ভীড় উপচে পড়া রাস্তায় শুধুই হেমন্তের ভোরে শিশিরের ফিসফিস শব্দ, পাখির কিচির মিচির আওয়াজ,ধানসিড়ি ওই নদীটির তীর ধরে ঘুঘুর আকুল মন কেমন করা ডাক, উদাসী শালিকের ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া ওই হেমন্তের হলুদ ধানের মাঠ এর পাশ দিয়ে, হলুদ বসন্ত বৌরীর সেই আমলকীর গাছের পাতায়,আড়ালে আবডালে বসে কেমন যেন আমায় দেখে লজ্জা পাওয়া, আর তারপর চোখ নামিয়ে হঠাৎ করেই তার উড়ে চলে যাওয়া। আর মেঘের কোল ঘেঁষে সেই সাদা বকের, বুনো হাঁসের, আর সেই পানকৌড়ির জলে ভেজা ডানা মেলে উড়ে যাওয়া আকাশ জুড়ে। সত্যিই ওরাও যে ভিড়ের মাঝেই বড়ো একা। একা একাই ওদের যে এই বেঁচে থাকা। কেমন নিপাট হৈ চৈ হুল্লোড়হীন একটা জীবন নিয়ে বেশ মজা করে, আনন্দ করে। আর সেই ভোরের আলোয় আলোকিত হয়ে রাস্তার একপাশে গুটি শুটি মেরে শুয়ে থাকা ওই সাদা কালো ভুলো নামের কুকুরের। যে অন্তত এই সব মানুষদের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় একটু যেনো আলাদা , একটু যেনো অন্য রকমের। একটু একা একাই যেনো ওর এই আলগোছে জীবন কাটিয়...

গৌড় প্রাঙ্গণে আনন্দবাজার

গৌরপ্রাঙ্গনে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যের আনন্দের মেলা আনন্দবাজার। মহালয়ার ভোরবেলায় ঢাকের বাদ্যি আর সানাইয়ের মন কেমন করা সুরে মেতে উঠলো শান্তিনিকেতনের গৌড়প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও যে হবে আনন্দমেলা আনন্দবাজার। হ্যাঁ সত্যিই যেনো আনন্দের এই হাটে বেচাকেনার পসরা নিয়ে একদিনের জন্য বসে পড়া মন প্রাণ খুলে হৈ হুল্লোড় করে। এই মেলা শুরু হয় 1915 সালের 15 এপ্রিল নববর্ষের দিনে। কিন্তু আগে এই মেলাকে একসময় বলা হতো বৌঠাকুরাণীর হাট। সেই সময় আশ্রমের মহিলারা নিজেদের হাতের তৈরি জিনিস নিয়ে মেলায় বসতেন। মেলার আয়োজন করতেন তারা। আনন্দ করে বেচাকেনা হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় একবার গরমের ছুটির আগে এমন মেলা নাকি হয়েছিল। যার নাম ছিল আনন্দবাজার। পরে এই মেলার নামে হয়ে যায় আনন্দমেলা। সত্যিই আনন্দের এই মিলন মেলা।  প্রথমদিকে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই মেলা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে বিশ্বভারতীর সব বিভাগের পড়ুয়ারা এই মেলায় যোগদান করে। এই মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের বেচা কেনার লাভের টাকার কিছু অংশ জমা পরে বিশ্বভারতীর সেবা বিভাগে। সেখান থেকে এ...