দৃষ্টি তাঁর দুরে অনেক দূরে কিন্তু পা একদম মাটিতেই আছে তাঁর বহুদিন ধরেই। সেই কবে থেকেই তো মাটির গন্ধ মেখে ঘুরে বেড়ানো ওর। কখনও কোপাই এর তীরে আবার কখনও খোয়াই এর ধূসর হাটে ঘুরে বেড়ানো তাঁর আপনমনে বাউলের উদাস করা সুর গায়ে মেখে সোনাঝুড়ির জঙ্গলে একা একাই।
আবার কখনও লালমাটির রাস্তা ধরে আঁকাবাঁকা পথ ধরে এগিয়ে চলা তাঁর হাসিমুখে, গাড়ি ছুটিয়ে ধুলো উড়িয়ে দ্রুত গতিতে চোখে কালো রোদ চশমা পড়ে। আর সেই ভোরবেলায় ছাতিমতলায় হাজির হওয়া তাঁর নতুন সাজে নতুন রূপে প্রাণের আরাম পেতে আর একটু প্রানভরে নিঃশ্বাস নিতে।
হ্যাঁ, আজ সেই বীরভূমের বীর বিখ্যাত কলকাতা টিভির সাংবাদিক মনা বীরবংশীর কথা। আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায়। সেই আমার আঁকিবুঁকি ব্লগে। সেই বেশ সবাইকে বিখ্যাত চমকে দেওয়া খবর চমক নিউজ এর সাংবাদিক মনার কথা। সেই সাইথিয়া রেল দুর্ঘটনায় ভোরবেলায় খবর পেয়েই বোলপুর থেকে গাড়ি ছুটিয়ে দ্রুত স্পটে পৌঁছে যাওয়া কলকাতা টিভির রিপোর্টার মনা বীর বংশীর কথা। সেই বীরভূম জেলার নানা ঘটনার সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা বীরভূমের স্তম্ভ রিপোর্টার মনার কথা।
সেই যে রাত সাড়ে দশটার সময় কলকাতা থেকে অফিস করে তখন আমি কলকাতা টিভিতে কর্মরত ছিলাম উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস ধরে ফেরার সময় বোলপুরে স্টেশনে এসে দাঁড়িয়ে থাকা আমার জন্য সেই হাসিমুখের রিপোর্টার মনার কথা। অভিজিৎ দা বলে ডাক দিয়ে এক দৌড়ে চলে আসা দাদা আমি আছি সব সময়। এই মিষ্টি এনেছি আপনার জন্য নিতেই হবে আপনাকে বলে বিরাট মিষ্টির প্যাকেট দিয়ে চলে যাওয়া সেই মনার কথা।
কলকাতার এক বিখ্যাত সাংবাদিক রতন কুঠিতে শান্তিনিকেতনে অফিস এর কাজের সুত্রে এসে, গেস্ট হিসেবে থাকলেও সে অসুস্থ থাকার কারণে সেই বিখ্যাত সাংবাদিক এর জন্য নিজের বাড়ী থেকে সেদ্ধ ভাত আর সেদ্ধ সবজি নিয়ে এসে তাঁকে পোঁছে দেওয়া দুপুর বেলায় সেই পরোপকারী মনার কথা। সেই কলকাতা টিভিতে লাইভ করে দেখিয়ে দিয়ে বলা কেমন হলো দাদা কাজটা ঠিক হয়েছে তো একটু বলবেন আপনি সিনিয়র মানুষ আপনি ভুল হলে বলবেন দাদা।
সত্যিই জীবন বড়ই স্মৃতিকাতর আর বিচিত্র। সেই শান্তিনিকেতন রোডে সাইকেল করে যাবার সময় মনা আমাকে দেখেও পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়া। হয়তো আমি বর্তমানে সাংবাদিক নয় বলে আগে যদিও পঁয়ত্রিশ বছর এই মিডিয়ার পেশায় ছিলাম আমি এখন না হয় টোটো চালক হয়ে গেছি বলে আমায় একটু পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়া সেই বিখ্যাত সাংবাদিক এর কথা আজ আমার এই আঁকিবুঁকি ব্লগে। সেই দাদা আপনার কোনোও চিন্তা নেই অসুবিধা হলেই বলবেন বোন এর জন্য আমি আছি বলা বিখ্যাত মনার কথা। আজ হঠাৎ করেই মনে পড়ে গেলো আমার এই ভালোবাসার বিশেষ দিনে। যে ভালোবাসার দিনে ভালোবাসার সম্পর্কের সেই হারিয়ে যাওয়া মানুষদের কথা মনে পড়ে যায় আমার ধীরে ধীরে।
ওর বাড়িতে গিয়ে মুড়ি আর আলুভাজা এর লাল চা খাবো বলেছিলাম আমি। ও বলেছিল দাদা মাংস ভাত খেতে হবে সবাই মিলে আসবেন আপনারা যাওয়া হয়নি আর আমার ওর বাড়ী। কারণ আমি আর কাজ করিনা কোনো মিডিয়ায় কাজ করিনা কোথাও। সেই দিন গুলোর কথা আজ মনে পড়ে গেলো হঠাৎ করেই আমার। চমক নিউজ এর পর্দায়, কলকাতা টিভির পর্দায় ওকে দেখে। অল্প কিছুদিনের আলাপ আমার ওর সাথে।
সেই দুপুর বেলায় রতনপল্লীর মাঠ পেরিয়ে সেই পোস্ট অফিস এর কাছে ওর সাথে আড্ডা দেওয়া দুজন মিলে সেই রাস্তার ওপর কাগজের স্টল এর পাশে বসে দুজনে কত গল্প করা একসাথে। সেই বিখ্যাত কলকাতার সাংবাদিক দেবজিত ভট্টাচার্যের একমাত্র ভরসার ছেলে সেই মনার কথা মনে পড়ে গেলো আজ আমার এই ভ্যালেন্টাইনের দিনে। যদিও সেই বিখ্যাত দাপুটে কলকাতার সাংবাদিক দেবজিত ভট্টাচার্য কবেই অবসর নিয়ে চুপ চাপ করে বাড়ী চলে গেছেন একা একাই বিষণ্ণ মনে।
সেই মনা, সেই ভাস্কর, সেই প্রসেনজিৎ, সেই সুজিত, সেই অমর, সেই অভিষেক, সেই স্নেহময়, সেই শাওনি, সেই শুভদীপ, সেই সৌতিক কতজন যে ছিল এমন আমার চেনা মানুষের তালিকায় একদিন এই বোলপুরে। এই ভালোবাসার দিনে ধীরে ধীরে অনেকেই হারিয়ে গেছে। অল্প কিছু জন টিকে আছে। তবু আজ এই ভালোবাসার দিনের ভোরবেলায় হঠাৎ করেই মনার কথা মনে পড়ে গেলো আমার। ভালো থেকো তুমি দাদা। এমন মাটিতে পা রেখেই দূরের পানে দৃষ্টি নিয়েই চলো। ভালোবাসার দিনে আমার ভালবাসা আর শুভেচ্ছা নিও।
মাটিতে পা রাখা মনা - অভিজিৎ বসু।
চৌদ্দ ফেব্রুয়ারী দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন