সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ফুলুরির টানে ফ্রেডরিক নগরে


আসলে কি জানেন তো একেই বলে নেই ঘরে খাই বেশি। সত্যিই তো হাভাতের ঘরে মানে যাদের ঘরে কম ভাতের বন্দোবস্ত থাকে, তাদের ঘরে খাই খাই ভাব নাকি বেশি ঘুরে বেড়ায় আর উড়ে বেড়ায়, এদিক ওদিক করে ঘরের ঠিক মাঝে জুড়ে বেড়ায়। ঠিক যেনো মথ থেকে গুটি ভেঙে বেরিয়ে আসে। ওই নতুন উড়তে দেখা হলদে সবুজ ডোরা কাটা প্রজাপতির মতই। কখনও চিলেকোঠার মাথায় আবার কোনসময় স্যাঁতস্যাঁতে সেই অন্ধকার ভাঁড়ার ঘরের মধ্যে থেকে বেরিয়ে পড়ে সুরুৎ করে। খাই খাই রোগ আর কি ঠিক যেনো ওই ভেনো মাছির মতই যখন তখন উড়ে বেড়ানো। 


আমারও ইদানিং ঠিক সেই অবস্থাই হয়েছে। সারাদিন ঘরে শুয়ে, বসে, পাশ ফিরে, কাত হয়ে, এদিক আর ওদিক করে, কড়ি বরগার দিন গোনার কাজ শেষ হয়েছে কবেই। দেশলাই বাক্সের ভিতর পর্দা ঘেরা ছোটো খুপড়ির ভিতর বাস করে, আর মাঝে মাঝেই উল্টোপাল্টা লেখালেখি করে সময় যেনো কাটতেই চায় না আর কিছুতেই আমার। আর ঠিক তার ওপর সন্ধ্যা হলেই মনটা কেমন যেনো নিশির মতই ডাকে আমায় এদিক ওদিক। সেই গরম লাল গনগনে উনুন ধরানোর পালা সাঙ্গ হয়েছে কবেই সেই ক্রিকেটার সঙ্গকারার আমলেই। তবু সেই সবুজ দ্বীপের রাজার দেশে সিনেমার মতই সেই লাল গনগনে আগুনের গোলার মতোই টান যেনো একটা জাগে আমার। এখন তো আর সেই সব কিছুই নেই। তবু সন্ধ্যায় সেই ঝুড়ির ওপর ফুলুরির হাসি মুখ দেখতেই কেমন করে যেন হেঁটে হেঁটে চলে যাওয়া বাড়ী থেকে বেরিয়ে একা একাই নিশির টানে নয় ফুলুরির টানে।

শ্রীরামপুরে বহু বছর আগে সেই স্টেশনের কাছে শিবুদার দোকানে ফুলুরি আর চপ এর দোকান ছিল একসময়ে বেশ জমজমাট। অফিস ফেরত লোকজন ঘরে ফেরার পথে চপ, ফুলুরি নিয়েই ঘরে ফিরত হাতে করে। তখনও বাজারে সুন্দরী স্লিম ডানা কাটা পরীর মতই মোমো সুন্দরীর উদয় হয়নি। সেই সুন্দর রং বেরঙ এর চামচ, লাল টুকটুকে ঠোঁটে আলতো করে ঠেকিয়ে স্যুপ খাবার চল শুরু হয়নি তখনও রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে পড়ে সেজেগুজে গায়ে দামী অদামী সেন্ট ছড়িয়ে। ফুচকা ছিল সেই সময় ঠিক যেনো নতুন বউ এর মতই ঘোমটার আড়ালে একটু লাজবতী কন্যার মতই কম দেখা এক খাবার জিনিস মাত্র।

 আর সেই সময়ে খালি গায়ে জবজবে ঘামে ভেজা স্যান্ডো গেঞ্জি পরে একমনে কাঠি দিয়ে আর বড়ো লোহার ছাঞ্চা দিয়ে চপ আর ফুলুরি ভাজতেন শিবু মামা দ্রুত হাতে। বাবাকে সাহায্য করত সেই সময় তিন ছেলে হারু, শ্যামল আর বুড়ো। সেই আজ থেকে কত বছর আগেই তো এই ফুলুরির দোকান ছিল স্টেশনের কাছেই। শিবু দা চলে গেলেন তিন ছেলের সংসার হলো। জোড়া লাগা সংসারে ভাঙনের চিহ্ন ফুটে উঠলো ধীরে ধীরে ঠিক যেনো আমগাছের শিকড় ছড়িয়ে পড়া দেয়ালের ভিতর। একে একে এক হাঁড়ির ভাত তিনহাঁড়ি হলো বেশ দ্রুত লয়ে। ঠিক যেনো কাহারবা নয় দাদরা বাজাও এই লয়ে‌। সেই শোন হে শশীকান্তর মত করে। হারু বাবার মান রেখে চপ আর ফুলুরি ভেজেই সংসার টানে এখন। বাকি দুজন একজনের তো মোবাইল ফোনে নানা ধরনের জিনিস এর দোকান। শ্যামল এর দোকানেও টুকটাক জিনিস বিক্রি হয় নানা ধরনের জিনিস। কিন্তু সেই চপ আর ফুলুরির দোকান বন্ধ সেই কবে থেকেই স্টেশন এর কাছে। শিবুদার দোকান আজ অতীত ইতিহাসের পাতায় চলে গেছে কবেই।

পাড়ার এক জ্যাঠাইমা তো এক থালা ভাত খেতেন নাকি সামনে একটা ফুলুরি রেখেই। শুধু দেখে দেখেই তাঁর খাওয়া হয়ে যেতো নুন আর লংকা আর তেল দিয়েই। আমিও তাই সন্ধ্যা বেলায় ফুলুরি খেতে হাজির হলাম শ্রীরামপুরে গঙ্গার ধারে সেই নেতাজী সুভাষ এভিনিউ এর রাস্তার পাশের একটি ছোট্ট দোকানে। রাস্তায় মেলা ভীড়। তবু এই প্রেমের মিষ্টি ফাঁদে আটকে যাওয়া শহরেও কেমন যেন চপ আর ফুলুরির টানেও ভীড় উপচে পড়ছে এই ছোট্টো দোকানেও ধোঁকা, নবরত্ন চপ, পাঁউরুটি দিয়ে ভাজা চপ, টমেটোর চপ নানা জিনিসের সমাহার। সবটাই নিরামিষ আহার কিন্তু।

 ছোট্ট দোকানে মা, ছেলে আর বোধহয় ছেলের বউ এর ব্যস্ততার ভরা সংসার। দোকানের তেলচিটে দেওয়ালে নানা ঠাকুরের মূর্তির মাঝে শুকনো মালা পড়ে আটকে থাকা দোকানের আসল স্থপতির ম্যাড়মেড়ে ছবি। আমিও ভীড়ের মাঝে অপেক্ষায় আছি কখন আসবে প্রাণের ফুলুরি। যা খেতে বোলপুর থেকে শ্রীরামপুরে চলে আসা আমার। সেই সমীর আর আমার এই দোকানে দাঁড়িয়ে ফুলুরি খাওয়া। পাঁচ টাকার একটি ফুলুরি আর দু বা তিন টাকার মুড়ি যদি দেয়। তাহলে সন্ধ্যার টিফিন হলো দশ টাকায়। সাথে এক কাপ ভাঁড়ে চা পাঁচ টাকার। দশ থেকে পনেরো টাকার টিফিন করে ঘুরে বেড়ানো যাবে এই ফ্রেডরিক নগরের বিভিন্ন জায়গায় ভীড় আলো ঝলমলে রাস্তায়। ফুলুরি খেয়ে আর ভাজা ধোঁকা নিয়ে সারাজীবন তো কম ধোঁকা খেলাম না সেটাকে মনে না রেখেই নিঃশব্দে ঘরে ফিরে আসলাম আমি। রাস্তায় দেখা হলো মৌসুমীর সাথে। ওর মেয়েকেও দেখলাম। মা আর মেয়ের নতুন জুটি। ভেঙে যাওয়া তিনজনের সংসারে এখন দুজনের জুটি বেশ দিব্যি মানিয়ে আর মেনে নিয়েছে ওরা। স্টেশনের কাছে পাঁচ টাকার চা কিনে খেয়ে ঘরে ফেরা আমার।

মনে মনে ভাবলাম সামনেই আবার বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন। কত শিল্প, কত বিনিয়োগ, কত ঝাঁ চকচকে শিল্পপতির আগমন হবে এই বঙ্গে। যে বাংলায় একদিন শিল্প ছেড়ে চলে যেতে হয়েছিল এক শিল্পপতিকে টাটা করে সেই বঙ্গেই আজ শিল্পের নতুন করে আবাহন। সত্যিই একদম উল্টো চিত্র। সৌজন্যে মা মাটি আর মানুষের সরকার। শুধু তার মাঝে এই সন্ধ্যা হলেই চপ, ফুলুরির সুবাস আমায় কেনো যে মোহিত করে কে জানে। প্রতিদিন কম করে খরচ বাদ দিয়ে হাজার টাকা রোজগার মাসে তিরিশ হাজার। তিনজনের সংসারে মন্দ কি। পাড়ার দাদাকে মাঝে মাঝে তাঁর পার্টি অফিসে একটু ফ্রী জিনিস পৌঁছে দেওয়া। আর প্রতি দিন সন্ধ্যা হলেই ভীড় উপচে পড়া দোকানে গরম চপ আর ফুলুরির সুবাসে মন ভালো করা রোজগার।

 বেশ মন্দ নয় কিন্তু। সারাদিন কোনোও কাজ না করে সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত কয়েক ঘণ্টা কাজ করে বেশ কিছু রোজগার। বৃহৎ শিল্প না হোক ঘরে ঘরে এমন ছোটো ছোটো চপ আর ফুলুরির মিষ্টি সুন্দর শিল্প কিন্তু মন্দ নয় কি বলেন। তাহলে কে বলে বাংলায় শিল্প হয়না। কে বলে বাঙালি কর্মবিমুখ জাতি। কে বলে বাঙালি উচ্ছনে চলে গেছে। কে বলে এই বাংলার মান ক্রমেই তলানিতে এসে ঠেকেছে। চুপ একদম চুপ। চপ, ফুলুরির সুবাসে সব যে ঢাকা পড়ে গেছে কবেই। পাড়ার চেনা কেলো, ভুলোর দল সন্ধ্যা হলেই ভীড় করে এই ছোটো দোকানে। আর গলা ফুলিয়ে বলে চপ শিল্প যুগ যুগ জিও। 

ফুলুরির টানে ফ্রেডরিক নগরে -, অভিজিৎ বসু।
চার ফেব্রুয়ারি দু হাজার পঁচিশ। 
ছবি নিজের মোবাইল ক্যামেরায় তোলা।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ইটিভির পিনাকপাণি ঘোষ

কিছু মানুষ কত কাছে থেকেও পাশাপাশি এক জায়গায় বাস করেও একসাথে একসময় কাজ করেও যে কত দূরে রয়ে যান নিজের হাসিমুখ নিয়ে আর সেই চেনা ছন্দ নিয়ে সত্যিই বেশ ভালো মজার ব্যাপার কিন্তু এটা জীবনের মেঠো পথে। সেই ইটিভির বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে ঘুরে ঘুরে স্ট্রীট ফুডের ছবি তোলা আর নানা খবর করে খাওয়া দাওয়ার এপিসোড করে একসময়ে বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে যাওয়া ইটিভি নিউজে। আর আমাদের জেলায় বসে সেইসব হাঁ করে দেখা আর কেমন মনের ভেতর অস্থিরতা তৈরি হওয়া। একেই বলে কলকাতার রাজপথের সাংবাদিক বলে কথা।  সেই যে বার রাষ্ট্রপতি এলেন জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে সেই অনুষ্ঠানের বিশেষ কার্ড জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করা ইটিভির চাকরি করার সুবাদে। কোনো রকমে সেই কার্ড জোগাড় করে এনে দেওয়া তাঁকে আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য। আর সেই একদিন দুপুর বেলায় খুব সম্ভবত করোনা শেষ পর্বে বালিঘাট স্টেশন থেকে অফিস যাওয়ার সময় এসি পঞ্চাশ এর বাস এর ভিতরে দেখা হওয়ায় কত গল্প করা দুজন মিলে পুরনো দিনের। আবার উত্তরপাড়ার সেই বিখ্যাত চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে হাসি মুখে দেখা হয়ে যাওয়া রাতের বেলায় কাঁঠালবা...

আমাদের সবার মৃনাল দা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক বাবা আর ছেলের লড়াই এর গভীর গোপন কাহিনী। এই সাংবাদিকতার পেশায় এসে কত লড়াই, কত অসম যুদ্ধ, করে যে কেউ সংসার টিকিয়ে রাখতে পারে হাসি মুখে কাউকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে। এমন করে কেউ টিকে থাকার চেষ্টা করেন সেটা বোধহয় আমার জানা হয়ে উঠত না কিছুতেই। যদি না এই পেশায় আমি গা ভাসাতাম এমন করে। জীবনের এই নানা টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ ভেসে ওঠে এই রাতের অন্ধকারে আচমকা আমার মনের মাঝে। আর আমি চমকে উঠি কেমন করে তাদের সেই কোলাজ দেখে।  এমন এক চরিত্র, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়ে কেমন আলগোছে, হাসিমুখে, নির্মোহ ভাবে, শুধু নিজের কাঁচা পাকা দাড়িতে হাত বুলিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিলো সে শুধুই আকাশ পানে তাকিয়ে। যে নীল আকাশের গা ঘেঁষে উড়ে যাওয়া সাদা বকের ডানায় লেগে থাকে মেঘের হালকা টুকরো। একদম যেনো সিনেমার পর্দার হিরোর মতোই। দেখে বোঝার উপায় নেই একদম। পেটে খাবার না থাকলেও মুখের হাসিটা অমলিন হয়েই বেঁচে আছে আজও এতোদিন পরেও। আর সেই বিখ্যাত সাদা পাকা নাসিরউদ্দিন স্টাইলের দাড়ি, কালো চুল, আর সব সময় ধোপদুরস্ত ফিটফাট একজন মানুষ। রাত নটা বাজলেই যাকে শ্রীরামপুরে...

শপিং মলের উদ্বোধনে সিঙ্গুর আন্দোলনের দাপুটে মন্ত্রী

নালিকুল স্টেশন বাজারে একটি শপিং মলের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বেচারাম মান্না হাজির। একসময় যাঁর অন্দোলনের ঠেলায় পড়ে দৌড়ে একপ্রকার পালিয়ে চলে যেতে হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে টাটা কোম্পানিকে। যে আন্দোলনের দগদগে ঘা আর সেই স্মৃতি ধীরে ধীরে আজ প্রায় মিলিয়ে যেতে বসেছে আমাদের কাছ থেকে। আজ সেই চাষার ঘরের মানুষ না হলেও সেই কৃষক আর শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকার নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেন সেই মানুষটাকেই কেমন যেন আজ শপিং মলের উদ্বোধনে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার।  একদম নালিকুল স্টেশনের কাছে ঝাঁ চকচকে শপিং মল। দোকানে সাজানো জিনিস পত্র। আর সেখানেই আমাদের মাননীয় মন্ত্রী বেচারাম মান্না। একদম কেমন একটু আমার অচেনা লাগলো যেন। সেই মুড়ি খেয়ে আলুর তরকারি বা শশা খেয়ে আন্দোলন শুরু করা জমি আন্দোলন এর অন্যতম পথিকৃৎ নেতা আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তাহলে টাটা কোম্পানির বিরুদ্ধে যে জমি দখল নিয়ে আন্দোলন সেই আন্দোলন এর মধ্যে ছিল জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যদিও সেখানেও সেই সময়ের শাসকদলের কর্মসংস্থানের যুক্তি।তবে এই নতুন শপিং মলের উদ্বোধনে তো আর ...

ভীড়ের মাঝে একা

জীবন জুড়ে শুধুই ভীড় আর ভীড়। নানা ধরনের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় মানুষের গন্ধে, বর্ণে , স্বাদের ভীড়ে আমি একদম একা হয়ে যেতে চাই। যে ভীড় উপচে পড়া রাস্তায় শুধুই হেমন্তের ভোরে শিশিরের ফিসফিস শব্দ, পাখির কিচির মিচির আওয়াজ,ধানসিড়ি ওই নদীটির তীর ধরে ঘুঘুর আকুল মন কেমন করা ডাক, উদাসী শালিকের ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া ওই হেমন্তের হলুদ ধানের মাঠ এর পাশ দিয়ে, হলুদ বসন্ত বৌরীর সেই আমলকীর গাছের পাতায়,আড়ালে আবডালে বসে কেমন যেন আমায় দেখে লজ্জা পাওয়া, আর তারপর চোখ নামিয়ে হঠাৎ করেই তার উড়ে চলে যাওয়া। আর মেঘের কোল ঘেঁষে সেই সাদা বকের, বুনো হাঁসের, আর সেই পানকৌড়ির জলে ভেজা ডানা মেলে উড়ে যাওয়া আকাশ জুড়ে। সত্যিই ওরাও যে ভিড়ের মাঝেই বড়ো একা। একা একাই ওদের যে এই বেঁচে থাকা। কেমন নিপাট হৈ চৈ হুল্লোড়হীন একটা জীবন নিয়ে বেশ মজা করে, আনন্দ করে। আর সেই ভোরের আলোয় আলোকিত হয়ে রাস্তার একপাশে গুটি শুটি মেরে শুয়ে থাকা ওই সাদা কালো ভুলো নামের কুকুরের। যে অন্তত এই সব মানুষদের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় একটু যেনো আলাদা , একটু যেনো অন্য রকমের। একটু একা একাই যেনো ওর এই আলগোছে জীবন কাটিয়...

গৌড় প্রাঙ্গণে আনন্দবাজার

গৌরপ্রাঙ্গনে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যের আনন্দের মেলা আনন্দবাজার। মহালয়ার ভোরবেলায় ঢাকের বাদ্যি আর সানাইয়ের মন কেমন করা সুরে মেতে উঠলো শান্তিনিকেতনের গৌড়প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও যে হবে আনন্দমেলা আনন্দবাজার। হ্যাঁ সত্যিই যেনো আনন্দের এই হাটে বেচাকেনার পসরা নিয়ে একদিনের জন্য বসে পড়া মন প্রাণ খুলে হৈ হুল্লোড় করে। এই মেলা শুরু হয় 1915 সালের 15 এপ্রিল নববর্ষের দিনে। কিন্তু আগে এই মেলাকে একসময় বলা হতো বৌঠাকুরাণীর হাট। সেই সময় আশ্রমের মহিলারা নিজেদের হাতের তৈরি জিনিস নিয়ে মেলায় বসতেন। মেলার আয়োজন করতেন তারা। আনন্দ করে বেচাকেনা হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় একবার গরমের ছুটির আগে এমন মেলা নাকি হয়েছিল। যার নাম ছিল আনন্দবাজার। পরে এই মেলার নামে হয়ে যায় আনন্দমেলা। সত্যিই আনন্দের এই মিলন মেলা।  প্রথমদিকে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই মেলা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে বিশ্বভারতীর সব বিভাগের পড়ুয়ারা এই মেলায় যোগদান করে। এই মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের বেচা কেনার লাভের টাকার কিছু অংশ জমা পরে বিশ্বভারতীর সেবা বিভাগে। সেখান থেকে এ...