সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ব্যারাকপুরের অনন্ত

শ্রীরামপুরে গঙ্গা পার হয়ে ওপার গেলেই সেই ব্যারাকপুরের অনন্ত চট্টোপাধ্যায়। সেই ওপারে কিছু খবর হলেই ওকে ফোনে যোগাযোগ করে জেনে নেওয়া। সেই ২৪ ঘন্টার চ্যানেলের অনন্ত। সেই ২৪ ঘন্টা ছেড়ে টিভি নাইনে চলে যাওয়া অনন্ত। সেই আমার জন্য একে ওকে কাজের জন্য বলে দেওয়া অনন্ত। আবার সেই বিন্নীর সরকারী চাকরির সময় ews সার্টিফিকেট বের করে দেবার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে হাসিমুখে সব কাজ করে দেওয়া অনন্ত। যার জন্য বিন্নীর একটা চাকরী হলো। যেটা আজকাল কেউ সচরাচর করে না আর। আর সেই বিন্নীর চাকরি হয়ে যাওয়া সেই ews কোটায়। সেই এলআইসির চাকরি করে আর বিয়ে করে সুখে আছে মেয়েটি। আজ আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগে সেই অনন্তর কথা। সেই রিপোর্টার অনন্ত। সেই বিখ্যাত সাংবাদিক উত্তর ২৪ পরগণার জেলার অনন্ত চট্টোপাধ্যায়।


২৪ ঘন্টা চ্যানেলের চাকরির সুবাদে ওর সাথে আলাপ আর কথা বলা অল্প অল্প করে। তারপর ২৪ ছেড়ে ওর চলে যাওয়া নতুন চ্যানেলে টিভি নাইন এর পর্দায়। সেই ওর উত্তর ২৪ পরগণার বিখ্যাত দাদা অধীরদার হাত ধরে। ব্যারাকপুরে অর্জুন সিং যদি হয় রাজনীতির মানচিত্রে উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক। তাহলে খবরের মানচিত্রে অনন্ত উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো ভাস্বর এই এলাকায়। যে কোনোও খবর পেতে আমি ওকেই ফোন করি ব্যস্ত সমীরন পাল বা অরুণ এর আগে। হাজার কাজের ভীড়ে কেমন মনে রাখে আমায়। বিরক্ত হয় না একদম। সেই বারবার নানা কাজের জায়গায় আমার জন্য বলে দেওয়া যেটা আজকাল কেউ আর কারুর জন্য করেই না একদম। 

এই রাতের বেলায় আমার মনে পড়ে গেল অনন্তর কথা। যে অনন্ত মানুষ হিসেবে বেশ ভালো। যা এই আজকালের সমাজে আর খবরের জগতে দ্রুত হারে কমছে। ভালো মানুষের কথা। যে সব মানুষের কাছে ভরসা করা যায়, বিশ্বাস করা যায়, আস্থা অর্জন করে তার সাথে কথা বলা যায়, টোটো চালক বলে কিছুতেই দূরে ঠেলে সরিয়ে দেয় না কিছুতেই। এটাই বেশ ভালো লাগে আমার। সেই ওর টিভির পর্দায় লাইভ দেওয়া, সেই অর্জুন সিং এর খবর হলেই ওকে বলা, আর সেই ব্যারাকপুরের যে কোনো খবরে ওকে রেখেই খবর করা ওর বাইরে কেউ নেই এই এলাকায়। একদম একটা ভালো খবরের সিন্ডিকেট গড়ে একে ওকে নিয়ে তাদের পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্য করে দেওয়া হাসি মুখে। 

এই ভাবেই হাসিমুখে কাজ করে যাওয়া ওর। সেই অজয় ঠাকুর খুব সম্ভবত সেই বিখ্যাত পুলিশ অফিসার এর খবর নেওয়া ওর কাছে। কথা হয়েছে দুজনের মধ্যে আমরা গঙ্গা পেরিয়ে একদিন আড্ডা মারবো ওর এলাকায়। সেটা আর যাওয়া হয়নি আর আমার। সেই শুভ্রাংশু চট্টোপাধ্যায়কে করোনার সময় ওর বাড়ীতে ওষুধ পৌঁছে দেওয়া ওর ভাইয়ের। সেই ব্যারাকপুর থেকে সল্টলেকে। সত্যিই ওর এই যে কোনোও মানুষের পাশে একগাল হাসি মুখে দাঁড়িয়ে পড়া দেখে বেশ ভালো লাগে আমার। যদিও পড়ে সেই বিখ্যাত সাংবাদিক শুভ্রাংশু চট্টোপাধ্যায় সেই ওর উপকার নাকি ভুলে যায় বলে এমন কথাও শোনা যায়। যাকগে উপকারী মানুষ পরের উপকার করা যার নেশা তিনি উপকার করবেন কে ভুলে যাবে আর মনে রাখবে সেটা ভেবে কেউ পরের উপকার করবেন না এমনটা হয়না। 

সেই অনন্ত চট্টোপাধ্যায়ের কথা মনে পড়ে গেলো আজ আমার। তাই লিখে ফেললাম আমি কিছু কথা। সেই এন কে বাংলার চ্যানেলে বারাকপুরে ওর দেওয়া লোক নিতে পারিনি আমি অনেক চেষ্টা করেও। একটা ক্ষোভ হয়তো আছে আমার ওপর। কিন্তু তবুও আমার মনে হয় দীর্ঘ দিন এই মিডিয়ার সাংবাদিকদের জীবন এর বাইরে থেকেও অনন্ত আমায় ভুলে যায়নি আজও এতদিন পরেও। ইটিভির কাজ করে অনেকেই মনে না রাখলেও অনন্ত উজ্জ্বল হয়েই আমার কাছে আজও হিরো হয়ে আছে। শুধু একজন জিরো মানুষকে মনে রেখে। ভালো থেকো তুমি। এইভাবেই মানুষের পাশে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে কাজ করে তাদের উপকার করে দিও। যা সাধারণ মানুষের পক্ষে খুব কঠিন কাজ যেটা এক লহমায় সাংবাদিকরা করতে পারে সেটা করে দিও। জীবনে এর থেকে ভালো কাজ আর কিছুই নয়। ভালো থেকো তুমি অনন্ত।

ব্যারাকপুরের অনন্ত - অভিজিৎ বসু।
তেইশ ফেব্রুয়ারী দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

  1. সাংবাদিক অনন্ত চট্টোপাধ্যায়, আর মানুষ অনন্ত চট্টোপাধ্যায়ের মধ্যে আমি মানুষ অনন্ত চট্টোপাধ্যায়কে অনেক বেশি এগিয়ে রাখবো। ওর মতো সাহসী এবং যে কারোর বিপদে পাশে থাকা মানুষ আমি খুব কম দেখেছি। রাগ বিহীন, সব সময় হাসি মুখের একজন প্রাণবন্ত মানুষ। ওর পুরো পরিবার সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত। আজকের দিনে ওর মতন বন্ধু পাওয়া বিরল।

    উত্তরমুছুন

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

জামালপুরের প্রদীপ দা

আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায় বর্ধমানের জামালপুরের সেই দাপুটে ঠোঁট কাটা সাংবাদিক প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় এর কথা। সেই বিখ্যাত সুভাষ তালুকদার এর কাগজ সংবাদে মাত্র এক টাকার কাগজে কাজ করা সংবাদ পত্রিকার দাপুটে সাংবাদিক সেই প্রদীপ দা। সেই মুখ্যমন্ত্রীর সভায় বাঁশের ব্যারিকেডের এপারে দূরে দাঁড়িয়েও যে খবর করা যায় সেটা বড়ো মিডিয়ার সাংবাদিকদের হাসি মুখে দেখিয়ে দিয়ে, আর তাদের খবরের ময়দানে গোল দিয়ে শুধু খবরকে ভালোবেসে ছোটো কাগজে কাজ করে চলা সর্বদা হাসি মুখের সেই আমাদের প্রদীপ চ্যাটার্জী দা।  কোথাও কোনো অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদে মুখর হয়ে যাওয়া আর এক দৌড়ে বেরিয়ে পড়া ঝোলা কাঁধে সেই খবরের খোঁজে সেই জামালপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের সেই প্রদীপ দা। সেই বিখ্যাত পন্ডিত রবিশঙ্কর আর উদয়শঙ্কর এর আপন মাসতুত ভাই এর ছেলে সেই প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় দাদা। সেই বামদের আমলে জামালপুরের এলাকায় দাপিয়ে খবর করে ছুটে বেড়ানো সেই প্রদীপ দা। সেই তৃণমূল আমলেও একভাবেই ছুটে বেরিয়ে কাজ করা আমাদের সদা ব্যস্ত প্রদীপ দা।  সেই বাবার অসুস্থতার কারনে বড়ো সংবাদ মাধ্যমে কাজ না করেও...

আমার স্যার কাজীদা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ আমার স্যার এর কথা। যার লেখা আজ হঠাৎ চোখে পড়লো একটি কাগজে। আর স্যার এর নামটা দেখেই মনে পড়ে গেলো নানান কথা। হ্যাঁ, সেই কাজী গোলাম গাউস সিদ্দিকী। যাঁর সাথে আমার আলাপ আর দেখা হয়েছিল সেই অজিতদার ফ্রিল্যান্স ছকু খানসামা লেনের ফ্রীল্যান্স প্রেস ক্লাবের অফিসে খুব সম্ভবত। হাসিখুশি বেশ অজাতশত্রু এই মানুষটিকে দেখেই আমার মনে হয়েছিল যে রিপোর্টারদের প্রভূত ক্ষমতা থাকে বোধহয়। তাই পকেটে পেন আর সেই ফোনের ছোট্টো নোটবুক দেখেই আমার মনে হয়, যে ক্ষমতার স্বাদ পাবার জন্য সেই সদ্য গ্র্যাজুয়েশন করে আমার কচি মনে সাংবাদিক হবার বাসনা জাগে সেই সময়।  কোনো প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক নয়, কোনো অফিসে মাছি মারা দশটা পাঁচটার লোয়ার ডিভিশন এর কেরানি নয়, মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ নয়, ল্যাবরেটরিতে টেকনিশিয়ান এর কাজ নয়, এল আই সি বা পোষ্ট অফিস এর এজেন্ট নয়, কোনো মুদি দোকানে হিসেব পত্র লেখার কাজ নয়, স্বাধীন ব্যবসা করা নয়। শুধুই সাংবাদিক হবার স্বাদ।  কাগজে সাদা কালো অক্ষরে নিজের নাম ছাপা হবে, সেই নাম দেখে বুক ফুলে যাবে, পাড়ায় প্রতিবেশীরা সহ স...

কুড়ি থালা দশ টাকা আর রসিক মুলুর জীবন

নাম মুলু হাঁসদা। বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানার চরিচা গ্রাম পঞ্চায়েত এর চর ইচ্ছা রঘুবরপুরের বাসিন্দা মুলু। আজ মুলুর জীবন কথা। গ্রামের নামটা ভারী অদ্ভুত। চর ইচ্ছা রঘুবরপুর। যে গ্রাম অন্য পাঁচটা গ্রামের মতই।সাদামাটা এই গ্রামে দারিদ্র্য, অপুষ্টি আর কর্মহীন জীবনের জলছবি সুস্পষ্ট। আর সেই গ্রামের মহিলারা নিজেদের সংসার রক্ষা করতে গাছের পাতাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে। গাছের পাতা মুলুদের জীবনের জিয়ন কাঠি। যে জিয়ন কাঠিতে তারা ভোর হতেই পেটের টানে চলে যায় জঙ্গলে। খস খস শব্দ করে পায় হেঁটে তারা পাতা তোলে। গাছ থেকে টুপ টাপ করে ঝড়ে পড়া পাতাকে একটা একটা করে নিজের শাড়ির আঁচলে ভরে নেয়। তার পর সব পাতাকে বস্তায় ভরে ঘরে ফেরে।  ঠিক যেভাবে তারা পুকুরে নেমে শামুক গেঁড়ি আর গুগলি তোলে। যে ভাবে তাদের উদর পূর্তি হবে বলে। আর এই পাতাও যে তাদের পেট ভরায়। একটা একটা পাতাকে নিজের সন্তানের মতো আলগোছে ছুঁয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে চুমু খায় মুলু, বলে তোরা না থাকলে কি করতাম কে জানে। মাথার ওপর শাল সেগুনের বিশাল আকারের গাছগুলো চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে আর তারা চুপ করে শোনে মুলুর কথা।  একে অপ...

শুভ মকর সংক্রান্তি

মকর মানেই নতুন জামা কাক ভোরে স্নান, রাত্রি জেগে মিঠে সুরে টুসুমণির গান। মকর মানেই পিঠে - পুলির গন্ধে ম - ম হাওয়া, ডুলুং পাড়ে টুসুর মেলায় দল বেঁধে যাওয়া। মকর মানেই মোরগ লড়াই পাহুড় জেতার সুখ, সন্ধ্যা - রাতে মাংস পিঠের স্বাদে ভরা মুখ। মকর মানেই হাতি - ঘোড়ার পুজো করম তলে, সান্ধ্য হাওয়ায় মন উদাসী দিমির দিমির বোলে। আসলে আজ এই মকর সংক্রান্তির দিন, টুসু মেলার দিন, টুসু গানে নিজেকে মাতিয়ে দেবার দিন। অজয় এর ধারে জয়দেব কেঁদুলির মেলায় ভীড়ের মাঝে নিজেকে হারিয়ে দেবার দিন। অজয় এর জলে ডুব দিয়ে স্নান করে পূণ্য অর্জনের দিন। আর নদীর ধারে মোরগ লড়াই এর দিন। আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর দিন, সুতো লাটাই হাতে আকাশ পানে তাকিয়ে থাকার দিন। কেমন যেনো রাশির একটি স্থান থেকে অন্য রাশিতে স্থান পরিবর্তনের দিন। সূর্যের দেবতাকে সকালে উঠে স্নান সেরে প্রণাম জানিয়ে শক্তি সঞ্চয় এর দিন। সূর্যের উত্তর দিকে চলে যাবার দিন। ধীরে ধীরে শীতকাল চলে যাওয়ার দিন।  এই মকর সংক্রান্তি এর ইতিহাস ও ভারতীয় ঐতিহ্যের গভীর শিকড় রয়েছে। এটি কৃষি চক্র এবং ফসল কাটার মৌসুমের সাথে জড়িত। এই মকর সংক্রান্তি চ...