সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

২৪ ঘণ্টার রিপোর্টার অনুপদা

বাজারে ভবানন্দর গান হিট হবার পরেই যেটা ইদানীং সব জায়গায় সাড়া ফেলে দিয়েছে সেটা হলো অনুপের নাচ। এটা বেশ ভালোই সাড়া ফেলে দিয়েছে কিন্তু চারিদিকেই। ওর ধ্রুপদী নাচ নয়, দাদরা বা কাহারবায় কোমর দোলানো ছন্দের নাচ নয়। কিম্বা কত্থক নয় বা কুচিপুডিও এই বিশেষ নাচ নয়। এই নাচ একদম ওর নিজের স্টাইলের এক বিখ্যাত ধরনের নাচ। যে নাচ ওর এই বুড়ো বয়সের এই নাচ দেখে বেশ ভালই লাগছে কিন্তু সবার আজকাল। আর তাই আমার মনে হলো সেই হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ, হরে রাম হরে রাম এর দেশের সেই কৃষ্ণনগরের সরভাজা আর গোপাল ভাঁড়ের দেশের সেই ২৪ ঘণ্টার চ্যানেলে নদীয়ার কৃষ্ণনগরের বিখ্যাত সাংবাদিক অনুপ দাসকে নিয়ে আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় কিছু লিখে ফেলি।

সেই বহুদিন আগে একদিন পোদ্দার কোর্টের অফিসে ওকে ডাকা হলো। শুভ্রনীল আর আমি ছিলাম মনে পড়ে মনে হয় আজ। মনে হয় নকিবউদ্দীন গাজীও এসেছিল সেই মিটিং এ সেইদিন। তারপর বোধহয় সেটা নিয়ে আর কিছুই হয়নি মিটে গেছিলো সমস্যাটা। সে সব কথা যাকগে , অনুপের সেই বিখ্যাত গলায় দাদা কি খবর দাদা। তুমি যে কোনোও হেল্প লাগলে বলবা আমায়। তুমি আমাকে বলবে আমি তোমার পেজ করে দিবো দাদা। ওর এই কথা শুনে বেশ ভালই লাগে আমার। তবে ইদানীং আমার ওর এই যখন তখন লাইভে এসে নাচ করতে শুরু করাটা বেশ ভালো লাগে মন্দ নয় কিন্তু। যেটা সাধারণত সবাই পারে না। শুভ্রনীল ওর নাচের প্রশংসা করে আজকাল। বলে অনুপ কিন্তু ফাটিয়ে দিচ্ছে আজকাল।

এমন সুন্দর করে কথা বলা আর লাইভে এসে গল্প করা সবার সাথে। হাত বাড়িয়ে দিলেই বন্ধু হবার ডাক দেওয়া সবাইকে। আবার সেই কৃষ্ণনগরের বিখ্যাত রাজবাড়ীতে বসে সেই ভোট এর সময় রাণীমার সাক্ষাৎকার নেওয়া বেশ ভালো লাগে কিন্তু ওর এই নানা ধরনের কাজ দেখে। আর শীতের মনোরম সকালে হঠাৎ করেই ওর সর্ষে ক্ষেতের মাঝে হারিয়ে যাওয়া দু হাত তুলে। আবার যে কোনোও সময় টিভির পর্দায় সেই ২৪ ঘণ্টার চ্যানেলে ওকে দেখতে পাওয়া যায়। বহুমুখী প্রতিভার বিচ্ছুরণ দেখতে পাওয়া যায় ওর মধ্যে। সেই বিখ্যাত সাংবাদিক আমাদের অনুপ দাস। 

সেই হাজারও কষ্টের মাঝে হাসি মুখে দাদা বলে ডাক দেওয়া অনুপ দাস। সেই যে কোনো উপায়ে যে কোনোও কঠিন অবস্হা থেকে নিজেকে বের করে আনা অনুপ দাস। সেই মায়াপুর ইস্কনে দোল এর অনুষ্ঠানে ওকে ছবি করতে পাঠানো আর রমেশ মহারাজ এর বাইট নিতে বলা সেই অনুপ দাস। আর ওর বলা ঠিক আছে দাদা হয়ে যাবে তুমি চিন্তা করোনা একদম ভেবো না তুমি। আজকাল তো কে আর কার কথা শোনে। পরিচয় আলাপ থাকলেই শোনে না আর যদি যোগাযোগ না থাকে একদম তাহলে তো এমন ভাবে কথা না শুনে চলে যায় তারা। সেটা অনুপ করেনা কোনওদিন যেটা বেশ ভালো ব্যাপার। 

আর তাই বোধহয় জীবনে এত হিসেব আর জটিলতার মাঝেও অনুপ হাজার কষ্টের মাঝেও কেমন করে যেনো নেচে ওঠে আপন ছন্দে আপন মনে নিজের থেকেই। জিন্দেগী এমন বলে গান গেয়ে ওঠে উদাত্ত গলায়। আর ওর পরিবারকে নিয়ে হাসিমুখে দাঁড়িয়ে বেরিয়ে পরে এদিক ওদিক। আবার নবদ্বীপের টোল এর ইতিহাস তুলে ধরে আর কোনো সময় মায়াপুরে হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ বলে, জয় গৌর হরি বলে ডেকে ওঠে। এটাই আমাদের সেই অনুপ দাস। এটাই আমাদের চেনা বিখ্যাত সেই সাংবাদিক অনুপ দাস। যে বলে দাদা গঙ্গা টপকে চলে এস হরে কৃষ্ণর আশ্রয়ে। যে হরে কৃষ্ণ রয়েছেন আমাদের মজ্জায়, আমাদের অন্তরে তিনি বিরাজ করছেন হাসি মুখে। আর অনুপদা গান গেয়ে, নেচে এইভাবেই জীবন কাটিয়ে দেয়। ভালো থেকো তুমি অনুপ দা। একদিন নিশ্চয়ই চলে যাবো আমি তোমার কাছে কৃষ্ণনগরে। তোমার ডাকে সাড়া দিয়ে।

২৪ ঘণ্টার রিপোর্টার অনুপ দা - অভিজিৎ বসু।
বাইশে ফেব্রুয়ারী দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

জামালপুরের প্রদীপ দা

আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায় বর্ধমানের জামালপুরের সেই দাপুটে ঠোঁট কাটা সাংবাদিক প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় এর কথা। সেই বিখ্যাত সুভাষ তালুকদার এর কাগজ সংবাদে মাত্র এক টাকার কাগজে কাজ করা সংবাদ পত্রিকার দাপুটে সাংবাদিক সেই প্রদীপ দা। সেই মুখ্যমন্ত্রীর সভায় বাঁশের ব্যারিকেডের এপারে দূরে দাঁড়িয়েও যে খবর করা যায় সেটা বড়ো মিডিয়ার সাংবাদিকদের হাসি মুখে দেখিয়ে দিয়ে, আর তাদের খবরের ময়দানে গোল দিয়ে শুধু খবরকে ভালোবেসে ছোটো কাগজে কাজ করে চলা সর্বদা হাসি মুখের সেই আমাদের প্রদীপ চ্যাটার্জী দা।  কোথাও কোনো অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদে মুখর হয়ে যাওয়া আর এক দৌড়ে বেরিয়ে পড়া ঝোলা কাঁধে সেই খবরের খোঁজে সেই জামালপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের সেই প্রদীপ দা। সেই বিখ্যাত পন্ডিত রবিশঙ্কর আর উদয়শঙ্কর এর আপন মাসতুত ভাই এর ছেলে সেই প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় দাদা। সেই বামদের আমলে জামালপুরের এলাকায় দাপিয়ে খবর করে ছুটে বেড়ানো সেই প্রদীপ দা। সেই তৃণমূল আমলেও একভাবেই ছুটে বেরিয়ে কাজ করা আমাদের সদা ব্যস্ত প্রদীপ দা।  সেই বাবার অসুস্থতার কারনে বড়ো সংবাদ মাধ্যমে কাজ না করেও...

আমার স্যার কাজীদা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ আমার স্যার এর কথা। যার লেখা আজ হঠাৎ চোখে পড়লো একটি কাগজে। আর স্যার এর নামটা দেখেই মনে পড়ে গেলো নানান কথা। হ্যাঁ, সেই কাজী গোলাম গাউস সিদ্দিকী। যাঁর সাথে আমার আলাপ আর দেখা হয়েছিল সেই অজিতদার ফ্রিল্যান্স ছকু খানসামা লেনের ফ্রীল্যান্স প্রেস ক্লাবের অফিসে খুব সম্ভবত। হাসিখুশি বেশ অজাতশত্রু এই মানুষটিকে দেখেই আমার মনে হয়েছিল যে রিপোর্টারদের প্রভূত ক্ষমতা থাকে বোধহয়। তাই পকেটে পেন আর সেই ফোনের ছোট্টো নোটবুক দেখেই আমার মনে হয়, যে ক্ষমতার স্বাদ পাবার জন্য সেই সদ্য গ্র্যাজুয়েশন করে আমার কচি মনে সাংবাদিক হবার বাসনা জাগে সেই সময়।  কোনো প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক নয়, কোনো অফিসে মাছি মারা দশটা পাঁচটার লোয়ার ডিভিশন এর কেরানি নয়, মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ নয়, ল্যাবরেটরিতে টেকনিশিয়ান এর কাজ নয়, এল আই সি বা পোষ্ট অফিস এর এজেন্ট নয়, কোনো মুদি দোকানে হিসেব পত্র লেখার কাজ নয়, স্বাধীন ব্যবসা করা নয়। শুধুই সাংবাদিক হবার স্বাদ।  কাগজে সাদা কালো অক্ষরে নিজের নাম ছাপা হবে, সেই নাম দেখে বুক ফুলে যাবে, পাড়ায় প্রতিবেশীরা সহ স...

কুড়ি থালা দশ টাকা আর রসিক মুলুর জীবন

নাম মুলু হাঁসদা। বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানার চরিচা গ্রাম পঞ্চায়েত এর চর ইচ্ছা রঘুবরপুরের বাসিন্দা মুলু। আজ মুলুর জীবন কথা। গ্রামের নামটা ভারী অদ্ভুত। চর ইচ্ছা রঘুবরপুর। যে গ্রাম অন্য পাঁচটা গ্রামের মতই।সাদামাটা এই গ্রামে দারিদ্র্য, অপুষ্টি আর কর্মহীন জীবনের জলছবি সুস্পষ্ট। আর সেই গ্রামের মহিলারা নিজেদের সংসার রক্ষা করতে গাছের পাতাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে। গাছের পাতা মুলুদের জীবনের জিয়ন কাঠি। যে জিয়ন কাঠিতে তারা ভোর হতেই পেটের টানে চলে যায় জঙ্গলে। খস খস শব্দ করে পায় হেঁটে তারা পাতা তোলে। গাছ থেকে টুপ টাপ করে ঝড়ে পড়া পাতাকে একটা একটা করে নিজের শাড়ির আঁচলে ভরে নেয়। তার পর সব পাতাকে বস্তায় ভরে ঘরে ফেরে।  ঠিক যেভাবে তারা পুকুরে নেমে শামুক গেঁড়ি আর গুগলি তোলে। যে ভাবে তাদের উদর পূর্তি হবে বলে। আর এই পাতাও যে তাদের পেট ভরায়। একটা একটা পাতাকে নিজের সন্তানের মতো আলগোছে ছুঁয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে চুমু খায় মুলু, বলে তোরা না থাকলে কি করতাম কে জানে। মাথার ওপর শাল সেগুনের বিশাল আকারের গাছগুলো চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে আর তারা চুপ করে শোনে মুলুর কথা।  একে অপ...

শুভ মকর সংক্রান্তি

মকর মানেই নতুন জামা কাক ভোরে স্নান, রাত্রি জেগে মিঠে সুরে টুসুমণির গান। মকর মানেই পিঠে - পুলির গন্ধে ম - ম হাওয়া, ডুলুং পাড়ে টুসুর মেলায় দল বেঁধে যাওয়া। মকর মানেই মোরগ লড়াই পাহুড় জেতার সুখ, সন্ধ্যা - রাতে মাংস পিঠের স্বাদে ভরা মুখ। মকর মানেই হাতি - ঘোড়ার পুজো করম তলে, সান্ধ্য হাওয়ায় মন উদাসী দিমির দিমির বোলে। আসলে আজ এই মকর সংক্রান্তির দিন, টুসু মেলার দিন, টুসু গানে নিজেকে মাতিয়ে দেবার দিন। অজয় এর ধারে জয়দেব কেঁদুলির মেলায় ভীড়ের মাঝে নিজেকে হারিয়ে দেবার দিন। অজয় এর জলে ডুব দিয়ে স্নান করে পূণ্য অর্জনের দিন। আর নদীর ধারে মোরগ লড়াই এর দিন। আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর দিন, সুতো লাটাই হাতে আকাশ পানে তাকিয়ে থাকার দিন। কেমন যেনো রাশির একটি স্থান থেকে অন্য রাশিতে স্থান পরিবর্তনের দিন। সূর্যের দেবতাকে সকালে উঠে স্নান সেরে প্রণাম জানিয়ে শক্তি সঞ্চয় এর দিন। সূর্যের উত্তর দিকে চলে যাবার দিন। ধীরে ধীরে শীতকাল চলে যাওয়ার দিন।  এই মকর সংক্রান্তি এর ইতিহাস ও ভারতীয় ঐতিহ্যের গভীর শিকড় রয়েছে। এটি কৃষি চক্র এবং ফসল কাটার মৌসুমের সাথে জড়িত। এই মকর সংক্রান্তি চ...