সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আকাশবাণীর অসীমা দি

আজ সাদা জীবনের কালো কথা নয়। সাদা জীবনের এমন একজন মানুষের কথা সঙ্গীত জগৎ, সিনেমার জগত, সংস্কৃতির জগৎ সবাই যাকে এক ডাকে চেনেন। এক নামে দিদি বলে শ্রদ্ধা জানান তাঁকে। আজ সকালেই খবরটা জানতে পারলাম কলকাতার এন্টারটেইনমেন্ট বিটের এক মহিলা রিপোর্টার এর হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ দেখে। অসীমাদি নেই। মানে সেই আকাশবাণীর অসীমা মুখোপাধ্যায় আর নেই।

 অঞ্জনা ভৌমিকের প্রয়াণের দিন প্রায় সকলেরই মুখে এসেছিল সেই চৌরঙ্গী সিনেমার কথা। সেই চৌরঙ্গী সিনেমার অসীমা দি আর নেই। ভোরবেলায় ঘুমের মধ্যে তিনি অন্য সুরলোকে পাড়ি দিলেন কাউকে কিছু না বলে চুপটি করে। আসলে বয়স হয়েছে চলে যাবেন এটাই স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু এমন কিছু কাজের স্মৃতি জড়িয়ে আছে অসীমাদির সাথে তাই মনে হলো এগুলো একটু লেখা দরকার। না হলে একটা মানুষের জীবন থাকা আর না থাকার মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়ে যায়। মানুষটা চলে গেলেও তাঁর কাজ, তাঁর সান্নিধ্য, তাঁর ভালোবাসা রয়ে যায় নানা জীবনের মধ্যেই ছড়িয়ে ছিটিয়ে। এইভাবেই সেই মানুষটা পরপারে চলে গিয়েও বেঁচে থাকেন আমাদের মাঝে চিরকাল।

 কোথা থেকে শুরু করবো তাঁকে নিয়ে লেখা সেই খেই হারিয়ে ফেলছি আজ। সবে তখন আকাশবাণীর দরজায় দরজায় ঘুরছি। সালটা হবে 1992 বা 1993 সাল হবে। মাঝে মাঝে যুববানীতে অনুষ্ঠান করা আর একশো টাকা বা একশো পঁচিশ টাকার চেক পাওয়া। সেটা হাতে নিয়ে খুশীতে ডগমগ হওয়া ঘরে ফেরা এটাই সাংবাদিকতার জীবনের প্রথম ভাগ। এই ভাবেই চলছিল বেশ। হঠাৎ বেড়ালের ভাগ্যে শিকে ছিঁড়ল। আকাশবাণীর স্বাস্থ্য বিভাগের ক্যাজুয়াল কর্মী হিসেবে কাজের সুযোগ পেলাম আমি। মাসে ছয় দিনের বুকিং দেওয়া হবে। মাসের সব দিন কাজ করতে হবে। সেই থেকেই রেডিওর যাত্রা পথের শুরু। সারা মাসে আয় নশো টাকা। প্রতিদিন এর বুকিং এ দেওয়া হবে একশত পঞ্চাশ টাকা করে।

আকাশবাণীর উপ অধিকর্তা, এ এস ডি ছিলেন তখন অসীমাদি। ঘরের দরজার বাইরে নাম ঝোলানো থাকতো। প্রথম প্রথম বেশ ভয় লাগতো ওই ঘরে ঢুকতে। পরে ধীরে ধীরে সেই ভয়টা কেটে গেলো আমার। একজন এত বড় মাপের মানুষ হয়েও কেমন করে যেনো আমাদের মত একজন ক্যাজুয়াল কর্মীর কাছের মানুষ হয়ে গেলেন আমাদের অসীমা দিদি। সবার খবর নিয়ে অফিসার দিদি হয়ে গেলেন নিজের দিদির মত।

 ধীরে ধীরে আমি ওনার হাত ধরেই সিনেমার জগতের নানা লোকের কাছে যাবার সুযোগ হলো আমার। সেই টেপ রেকর্ডার নিয়ে মান্না দের বাড়ী গিয়ে সাক্ষাৎকার নেওয়া দিদির সাথে আমার আজও মনে পড়ে যায়। হোটেলে মিঠুনের সাথে দেখা করে ইন্টারভিউ নেওয়া। সুস্মিতা সেন কলকাতায় বিশ্ব সুন্দরী হয়ে আসার পর ইন্টারভিউ নেওয়া দিদির সাথে গিয়ে। এসব তো অসীমাদির হাত ধরে করেছি আমি। 

কলকাতার সিনেমা জগতের সব মানুষ এর কাছে যাবার সুযোগ তো দিদি আমায় করে দিয়েছিলেন। সন্দীপ রায়, মৃণাল সেন, বুদ্ধদেব বসু, অপর্ণা সেন, প্রসেনজিৎ, সুপ্রিয়া দেবী, রবি ঘোষ, গৌতম ঘোষ, অনিল চট্টোপাধ্যায়,কাকে ছেড়ে কার কথা বলবো সবার কাছে টেপ রেকর্ডার নিয়ে পৌঁছে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়েছিলেন তিনি। টালিগঞ্জের স্টুডিও পাড়ায় গিয়ে সেই ডাবিং করা কানে হেড ফোন দিয়ে। উত্তম কুমারের জন প্রিয় বাংলা সিনেমাকে এডিট করে তৈরি করা। সেই কাজ তো হাতে ধরে শিখিয়ে ছিলেন তিনিই আমায়। খবরের বাইরের একটা জগৎ যে জগতের সাথে যোগাযোগ ছিল না আমার কোনো দিন সেই জগৎ টা হাত ধরে চিনতে শিখিয়েছিলেন আমায় তিনি। আজ এত দিন পর মনে হচ্ছে অনেক কিছু মনে ভীড় করে আসছে।

মাত্র ছয় দিনের বুকিং এর কম টাকায় আমাদের কি করে চলবে তাই নানা আউটডোর প্রোগ্রাম দিয়ে কিছু বাড়তি টাকার ব্যাবস্থা করে দিতেন তিনি। কোনো দিন ভাবেন নি তিনি যে কেনো এরা সব বেশি টাকা পাবে। একবাক্যে নানা জায়গায় জেলায় জেলায় ঘুরে কাজ করতে পাঠিয়ে দিতেন তিনি আমাদের। এটাই আমাদের সবার দিদি। দেবাশীষ পাল যে ছিল এই বিভাগের আমাদের খুব কাছের মানুষ। যে আমাদের গাইড করতেন হাসি মুখে। বিজ্ঞান বিভাগের মানস প্রতিম দাস। আর এই কাজের সুত্রে তাঁর কলাভবনের কাছে সেই কারনানি ম্যানশন এর ফ্ল্যাটে পৌঁছে যাওয়া। পার্থ মুখোপাধ্যায় দার সাথে আলাপ হওয়া। সব নিয়ে একদম ঘরের লোক হয়ে গেলাম আমি ধীরে ধীরে। পার্থ দা চলে যাবার পর মেয়ের কাছেই থাকতেন তিনি। 

বেশ কথা হতো ফোনে মাঝে মাঝে। একদিন দিদি বললেন আমার একটা কাজ করে দেবে তুমি। আমি বললাম কী দিদি। বলে অনেক পুরোনো কাগজের লেখা বের করে দিয়ে বললেন এগুলো সব দাদার অভিনয় নিয়ে লেখা বেরিয়েছে নানা পেপারে। এগুলো একটু ভালো করে সাজিয়ে দেবে একটা খাতা কিনে। এটা আমি রেখে দেবো স্মৃতি করে। আমি বললাম মেয়েকে দিয়ে করে দেবো দিন আমায়। সেগুলো সব বাড়ী এনে মেয়েকে দিয়ে করে দিতে গেলাম একদিন। বললেন এই নাও তোমার মেয়ের জন্য একটা জামা কিনে রেখেছি আমি এটা ওকে দিও যেনো পরে। সেটাই শেষ দেখা দিদির সাথে আমার কিছু দিন আগের কথা বছর খানেক আগে। 

পরে কথা হয়েছে মাঝে মাঝে ফোনে কি তুমি কোথাও কাজ করছো না ছেড়ে দিয়ে বসে পড়েছো আবার ঘুরে বেড়াচ্ছো। আমি চুপ করে শুনতাম দিদির কথা কিছুই বলতাম না। বাড়ির খবর নিতেন নিজেই। বলতাম দিদি আপনি শান্তিনিকেতন আসুন ঘুরবেন। বলতেন ঠাণ্ডা কমলে যাবো একদিন। না তাঁর আর আসা হলো না কবি গুরুর জায়গায়। সেই আমার দিদি চলে গেলেন। বড়ো একা লাগে গানের স্রষ্টা তিনি চলে গেলেন সবাইকে ছেড়ে।

 হয়তো আরো কিছু সম্মান পেতে পারতেন তিনি তাঁর নানা সৃষ্টির জন্য কাজের জন্য। কিন্তু বরাবর নিজেকে তিনি কারুর কাছে সঁপে দিতে পারেন নি কোনো দিন। তাই বোধ হয় কিছুটা অভিমান নিয়ে চলে গেলেন সুরকার অসীমা মুখোপাধ্যায়। ঘুমের মধ্যে ঘুমের দেশে পাড়ি দিলেন তিনি। 

সেই ডাক আর আমি কোনো দিন ফোন করলে শুনতে পাবো না অভিজিৎ আমি দিদি বলছি। কেমন আছো তুমি। বাড়ির সব ভালো আছে তো। কাজ করছো তুমি। না ঘরে বসে আছো। ভালো থাকবেন দিদি। আমার প্রনাম নেবেন।

আকাশবাণীর অসীমা দি - অভিজিৎ বসু।
একুশে ফেব্রুয়ারী দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য গুগল।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

জামালপুরের প্রদীপ দা

আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায় বর্ধমানের জামালপুরের সেই দাপুটে ঠোঁট কাটা সাংবাদিক প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় এর কথা। সেই বিখ্যাত সুভাষ তালুকদার এর কাগজ সংবাদে মাত্র এক টাকার কাগজে কাজ করা সংবাদ পত্রিকার দাপুটে সাংবাদিক সেই প্রদীপ দা। সেই মুখ্যমন্ত্রীর সভায় বাঁশের ব্যারিকেডের এপারে দূরে দাঁড়িয়েও যে খবর করা যায় সেটা বড়ো মিডিয়ার সাংবাদিকদের হাসি মুখে দেখিয়ে দিয়ে, আর তাদের খবরের ময়দানে গোল দিয়ে শুধু খবরকে ভালোবেসে ছোটো কাগজে কাজ করে চলা সর্বদা হাসি মুখের সেই আমাদের প্রদীপ চ্যাটার্জী দা।  কোথাও কোনো অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদে মুখর হয়ে যাওয়া আর এক দৌড়ে বেরিয়ে পড়া ঝোলা কাঁধে সেই খবরের খোঁজে সেই জামালপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের সেই প্রদীপ দা। সেই বিখ্যাত পন্ডিত রবিশঙ্কর আর উদয়শঙ্কর এর আপন মাসতুত ভাই এর ছেলে সেই প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় দাদা। সেই বামদের আমলে জামালপুরের এলাকায় দাপিয়ে খবর করে ছুটে বেড়ানো সেই প্রদীপ দা। সেই তৃণমূল আমলেও একভাবেই ছুটে বেরিয়ে কাজ করা আমাদের সদা ব্যস্ত প্রদীপ দা।  সেই বাবার অসুস্থতার কারনে বড়ো সংবাদ মাধ্যমে কাজ না করেও...

আমার স্যার কাজীদা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ আমার স্যার এর কথা। যার লেখা আজ হঠাৎ চোখে পড়লো একটি কাগজে। আর স্যার এর নামটা দেখেই মনে পড়ে গেলো নানান কথা। হ্যাঁ, সেই কাজী গোলাম গাউস সিদ্দিকী। যাঁর সাথে আমার আলাপ আর দেখা হয়েছিল সেই অজিতদার ফ্রিল্যান্স ছকু খানসামা লেনের ফ্রীল্যান্স প্রেস ক্লাবের অফিসে খুব সম্ভবত। হাসিখুশি বেশ অজাতশত্রু এই মানুষটিকে দেখেই আমার মনে হয়েছিল যে রিপোর্টারদের প্রভূত ক্ষমতা থাকে বোধহয়। তাই পকেটে পেন আর সেই ফোনের ছোট্টো নোটবুক দেখেই আমার মনে হয়, যে ক্ষমতার স্বাদ পাবার জন্য সেই সদ্য গ্র্যাজুয়েশন করে আমার কচি মনে সাংবাদিক হবার বাসনা জাগে সেই সময়।  কোনো প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক নয়, কোনো অফিসে মাছি মারা দশটা পাঁচটার লোয়ার ডিভিশন এর কেরানি নয়, মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ নয়, ল্যাবরেটরিতে টেকনিশিয়ান এর কাজ নয়, এল আই সি বা পোষ্ট অফিস এর এজেন্ট নয়, কোনো মুদি দোকানে হিসেব পত্র লেখার কাজ নয়, স্বাধীন ব্যবসা করা নয়। শুধুই সাংবাদিক হবার স্বাদ।  কাগজে সাদা কালো অক্ষরে নিজের নাম ছাপা হবে, সেই নাম দেখে বুক ফুলে যাবে, পাড়ায় প্রতিবেশীরা সহ স...

কুড়ি থালা দশ টাকা আর রসিক মুলুর জীবন

নাম মুলু হাঁসদা। বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানার চরিচা গ্রাম পঞ্চায়েত এর চর ইচ্ছা রঘুবরপুরের বাসিন্দা মুলু। আজ মুলুর জীবন কথা। গ্রামের নামটা ভারী অদ্ভুত। চর ইচ্ছা রঘুবরপুর। যে গ্রাম অন্য পাঁচটা গ্রামের মতই।সাদামাটা এই গ্রামে দারিদ্র্য, অপুষ্টি আর কর্মহীন জীবনের জলছবি সুস্পষ্ট। আর সেই গ্রামের মহিলারা নিজেদের সংসার রক্ষা করতে গাছের পাতাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে। গাছের পাতা মুলুদের জীবনের জিয়ন কাঠি। যে জিয়ন কাঠিতে তারা ভোর হতেই পেটের টানে চলে যায় জঙ্গলে। খস খস শব্দ করে পায় হেঁটে তারা পাতা তোলে। গাছ থেকে টুপ টাপ করে ঝড়ে পড়া পাতাকে একটা একটা করে নিজের শাড়ির আঁচলে ভরে নেয়। তার পর সব পাতাকে বস্তায় ভরে ঘরে ফেরে।  ঠিক যেভাবে তারা পুকুরে নেমে শামুক গেঁড়ি আর গুগলি তোলে। যে ভাবে তাদের উদর পূর্তি হবে বলে। আর এই পাতাও যে তাদের পেট ভরায়। একটা একটা পাতাকে নিজের সন্তানের মতো আলগোছে ছুঁয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে চুমু খায় মুলু, বলে তোরা না থাকলে কি করতাম কে জানে। মাথার ওপর শাল সেগুনের বিশাল আকারের গাছগুলো চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে আর তারা চুপ করে শোনে মুলুর কথা।  একে অপ...

শুভ মকর সংক্রান্তি

মকর মানেই নতুন জামা কাক ভোরে স্নান, রাত্রি জেগে মিঠে সুরে টুসুমণির গান। মকর মানেই পিঠে - পুলির গন্ধে ম - ম হাওয়া, ডুলুং পাড়ে টুসুর মেলায় দল বেঁধে যাওয়া। মকর মানেই মোরগ লড়াই পাহুড় জেতার সুখ, সন্ধ্যা - রাতে মাংস পিঠের স্বাদে ভরা মুখ। মকর মানেই হাতি - ঘোড়ার পুজো করম তলে, সান্ধ্য হাওয়ায় মন উদাসী দিমির দিমির বোলে। আসলে আজ এই মকর সংক্রান্তির দিন, টুসু মেলার দিন, টুসু গানে নিজেকে মাতিয়ে দেবার দিন। অজয় এর ধারে জয়দেব কেঁদুলির মেলায় ভীড়ের মাঝে নিজেকে হারিয়ে দেবার দিন। অজয় এর জলে ডুব দিয়ে স্নান করে পূণ্য অর্জনের দিন। আর নদীর ধারে মোরগ লড়াই এর দিন। আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর দিন, সুতো লাটাই হাতে আকাশ পানে তাকিয়ে থাকার দিন। কেমন যেনো রাশির একটি স্থান থেকে অন্য রাশিতে স্থান পরিবর্তনের দিন। সূর্যের দেবতাকে সকালে উঠে স্নান সেরে প্রণাম জানিয়ে শক্তি সঞ্চয় এর দিন। সূর্যের উত্তর দিকে চলে যাবার দিন। ধীরে ধীরে শীতকাল চলে যাওয়ার দিন।  এই মকর সংক্রান্তি এর ইতিহাস ও ভারতীয় ঐতিহ্যের গভীর শিকড় রয়েছে। এটি কৃষি চক্র এবং ফসল কাটার মৌসুমের সাথে জড়িত। এই মকর সংক্রান্তি চ...