সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

লাট্টু

ছোট্টো হাতের তালুতে গোটা পৃথিবীটা যেনো বন বন করে ঘুরছে। নিজের ইচ্ছায় নয়, শুধু তার ইচ্ছায়। হলুদ, সবুজ, লাল, মেরুন পৃথিবীর আলোর রোশনাই ছড়িয়ে পড়ছে এদিক থেকে ওদিকে চুঁয়ে চুঁয়ে হাতের তালুর মধ্যে। ছোটো ছোটো জীবন গুলো কেমন যেনো একটা অদ্ভুত মায়াময় মেদুর চোখে অপলক নয়নে তাকিয়ে রয়েছে সেই দিকে, এক দৃষ্টিতে। নজর রেখেছে সেই বন বন করে ঘোরা লাট্টুর দিকে। এক মনে, এক দৃষ্টিতে দেখে যাচ্ছে বন বন করে ঘোরা লাট্টু কে। চোখের পাতা পড়ছে না এক মিনিটও তার। অন্য হাতে দড়ি ঝুলিয়ে ব্যালেন্সের খেলায়‌ মেতে উঠেছে ছোটো ছেলে বকুলাল। 

আসলে বকুলালের বড়ো সখ যে সে পৃথিবী ঘুরে বেড়ায় ঠিক এমন করেই, লাট্টুর মতোই বনবন করে। ওই যে বইতে পড়েছে বছরে ছ মাস ঠাণ্ডায় কাঁপে যে দেশটার কথা। সেই যে বরফের ঘরে বাস করে সেই সব ইগলুদের ঘরে যদি বসে থাকা যেত শীতের দুপুরে। যদি সেখানে যাওয়া যেত। কি ভালই না লাগতো তার। আর ওই যে সাত সমুদ্র তেরো নদী পেরিয়ে যে দেশের কথা বইতে পড়েছে সে। যদি সেখানে গিয়ে ঘুরতে পারতো সে কি মজাই না হতো। মা বলে ভালো করে পড়াশোনা কর, তাহলে বড়ো হয়ে যেতে পারবে, সে সব জায়গায়। সত্যিই তো কোনো দিন কি আর সে সব সম্ভব হবে তার। কে জানে। 


স্কুল ফেরত গ্রামের মেঠো রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে বকুলাল দাঁড়িয়ে যায় লাল পলাশ গাছের তলায় আপন মনে। সবে পাতা ঝরতে শুরু করেছে লাল পলাশের শুকনো ডালে। কেমন যেনো ন্যাড়া ন্যাড়া লাগে গাছটাকে দেখে দুর থেকে। ঠিক সেই দুপুর বেলায় ন্যাড়া আকাশের কোনে ধূসর চাঁদের দেখা পাওয়া যায়। দিনের বেলায় সূয্যি মামার কোলে চাঁদের ঢলে পড়া দেখে কেমন যেনো আনমনে চুপ করে দাঁড়িয়ে যায় বকুলাল রাস্তায় নিজেও। চাঁদের হাসিটা কেমন যেন ম্লান লাগে তার।

 পকেট থেকে বের করে লাট্টু আর লেটটিকে সে। তারপর কষে কষে লেটটিকে ঘুরিয়ে বাঁধে লাট্টুর গায়ে। ঠিক যেনো সেই সমুদ্র মন্থনের সময় যেভাবে 
বাসুকী নিজেকে কষে বাঁধে এদিক ওদিক ঠিক সেই ভাবেই। আসলে এই কষে বাঁধাই তো জীবনের আসল কথা। যে যত নিজেকে কষে বাঁধতে পারে সে টিকে যায় ঠিক করে বাঁচে জীবনে। না হলেই বড়ো বিপদ যে। লাট্টুও ঠিক মত কষে বাঁধা না হলে বন্ধ হয়ে যাবে যে কোনো সময়। ঘুরবে না হাতের ওপর দম দিয়ে। দম ফুরিয়ে যাবে তার। এটাই নিয়ম যে জীবনের।

একমনে জরিপ করে লাল, হলুদ লাট্টু কে সে। তারপর প্রাণপণে ছেড়ে দিয়ে হাতের তালুতে বন্দী করে তাকে চোখের নিমেষে। ঘুরতে থাকে সেই লাট্টু নিজের অজান্তেই।জোরে আরো জোরে। কেমন যেনো ঠিক দম দেওয়া পুতুলের মতো ঘোরা। দম শেষ হলেই থমকে যাওয়া জীবনের রাস্তায়। এমন দম দেওয়া পুতুলকে দেখে মাঝে মাঝে অবাক হয় বকুলাল। সত্যিই কি দাপট তাদের সব। 

ওই তো সেদিন মুদি দোকানের চাচা বললো তার মাকে, শুন,শুন, যদি কাল না টাকা দিস আর চাল দিবনি কিন্তু তুকে। এটা জেনে যা তুই। ফুলমনি চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে দোকানের সামনে। উত্তেজিত চাচার গলায় কি জোর। বন বন করে ঘোরা লাট্টুর মত তেজ দেখিয়ে ফরমান দিচ্ছে সে তার মাকে। লাট্টু হাতে সব শোনে সে চুপটি করে।

আমার এই বকুলালের লাট্টুর কথা লিখতে লিখতে মনে পরে যায় সেই যে স্কুল যাওয়ার পথে রাস্তার ধারে ছোটো মুদি দোকানে বসে থাকতো যে বামুন কাকা। কি বেশ বলতাম, বাঙালদের দোকান ওটা। একদিকে কাঁচের বয়ামে রাখা থাকতো চক চকে কাঁচের গুলি নীল,সবুজ, সাদার মাঝেই লুকিয়ে যেনো গোটা জগৎ সংসার। দোকানের ধুলো পড়া দেওয়ালে হেলান দিয়ে রাখা থাকতো নানা রঙের লাট্টু। আর ঝাল, মিষ্টি হজমি গুলি। স্কুল যাওয়ার পথে দেখে কেমন যেনো থমকে যেতাম আমি নিজেও।

স্কুল থেকে ফিরেই গিন্নি মার দুয়ারে ছুটে যেতাম লাট্টুর টানে আমিও। পিল করে হাতের মুঠোয় রাখা গুলি ছেড়ে ছোট্ট ডিম এর মত গুলি দিয়ে জিতে আমার চোখে ফুটত দিগবিজয়ের উজ্জ্বল হাসি। পকেট ভর্তি গুলি নিয়ে ভাবতাম আজ সত্যিই আমি বড়লোক হলাম অন্য সবার থেকে। 

আর সেই যে লাট্টু ছুড়তে গিয়ে পিনের লোহা চোখের ওপরে লেগে রক্ত ঝরলো বিশুর। তারপরেও তো লাট্টুর নেশা ছাড়তে পারিনি আমরা কেউই। বিশু, বুড়ো, ভোঁদা, বাপি, তরুণ, সব কেমন যেন একটা নেশার ঘোরে শৈশবের দুরন্ত স্বপ্নচারী হয়ে ঘুরে বেড়াতাম মাঠে, ঘাটে। 


এঁদো পুকুরের জলের গন্ধে পা চুলকে ফুলে গেলেও সেই যে সাদা, নীল ফুলের কচুরি পানার টানে জলে পা ডুবিয়ে ওদের কান ধরে টেনে আনতাম পাড়ে। একজন অন্য জনের হাত ধরে রাখত যাতে পুকুরে পড়ে না যাই কেউ আমরা। তারপর ওদের নিয়ে খেলা করতাম আমরা সবাই মিলে মিশে। এই ভাবে হাতে হাত ধরে টেনে রেখে বেঁচে থাকার যে কি মজা ছিল তখন জীবনের জলছবিতে। 

আর কচুরি পানার ফুল এর ওপর জল রঙের ছোপ ছোপ ফড়িংটা কেমন লজ্জায় তখন এদিক ওদিক উড়ে বেড়াতো। আমাদের পায়ের আওয়াজ পেলেই সে দৌড়ে দূরে চলে যেত দূরে অনেক দূরে। আর সেই যে নীল রং এর মাছরাঙা পাখিটা গম্ভীর মুখে রং মিলিয়ে বসে থাকতো চুপটি করে ঘাপটি মেরে। আমাদের আওয়াজ পেলেই সে উড়ে যেত অনেক দূরে মাঝ পুকুরে। কচুরি পানার ফুল এর নীল রঙের ছোপ ছোপ রং কে গায় মেখে মিলিয়ে যেত সে।

বকুলালের হাতের লাট্টুর গতিও কমতে থাকে ধীরে ধীরে। বকুলাল ভাবে যদি লাট্টুর মতই জীবনটা বদলে যেত এক দমে ঘুরে গিয়ে তাদের। ঘরে বসে মাকে আর ভাবতে হতো না চালের জন্য। মুখ নিচু করে দোকানে গিয়ে চাচার কাছে দাঁড়াতে হতো না। বলতে হতো না কিছু চাল দাও গো , না হলে যে ঘরে দানা ফুটবে না যে। বেটাকে খেতে দিবো কি। চাচার কথা শুনে মুখ বুজে লুকিয়ে লুকিয়ে মাকে চোখের পানি ফেলতে হতো না আর। তাহলে কি ভালই যে লাগতো আর কি ভালই যে হতো। 

আসলে জীবনের এই ব্যালেন্সের ঘোরা, দম দেওয়া লাট্টুর ঘোরা ঠিক হলো গোটা জীবনের যাত্রা পথের মতই। যে পথে ইতি উতি ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে ভালো আর মন্দ। সুখ আর দুঃখ। অনাবিল সুখের পরশ আবার কঠিন দুঃখের পরীক্ষাও। বন্ধুত্বের অধিকার নিয়ে হাত বাড়িয়ে ধরা, সাহায্য করা।আর বন্ধুত্বের ম্লান হাসি হেসে শুধুই দেখে যাওয়া চুপ করে।

 এসবকে সাথে নিয়েই তো হাতের মুঠোয় জীবনকে আগলে রেখে চলতে হয় ঠিক বকুলালের মতই। নিজেকে বাঁচিয়ে, জীবনকে রক্ষা করে, উপভোগ করে। ঠিক বকুলালের মতই নির্নিমেষ নয়নে জীবনকে দেখতে হয় চেটেপুটে। 

লাল, নীল হলুদ,সবুজ হাতের মুঠোয় ঘুরে যাওয়া লাট্টুর মতই চূঁইয়ে পড়া ভালোবাসাকে উপভোগ করে বেঁচে থাকতে হয়, অমলিন হাসি মুখে ঠিক বকুলালের মতই। যেখানে আশা, আকাঙ্খা, চাহিদার অতিরিক্ত ওজন নেই জীবনের মাঠে,ঘাটে। শুধু মাত্র ব্যালেন্সের ঘোরা আছে। ঠিক ওই বকুলালের হাতের লাট্টুর মতই।

লাট্টু - অভিজিৎ বসু।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ইটিভির পিনাকপাণি ঘোষ

কিছু মানুষ কত কাছে থেকেও পাশাপাশি এক জায়গায় বাস করেও একসাথে একসময় কাজ করেও যে কত দূরে রয়ে যান নিজের হাসিমুখ নিয়ে আর সেই চেনা ছন্দ নিয়ে সত্যিই বেশ ভালো মজার ব্যাপার কিন্তু এটা জীবনের মেঠো পথে। সেই ইটিভির বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে ঘুরে ঘুরে স্ট্রীট ফুডের ছবি তোলা আর নানা খবর করে খাওয়া দাওয়ার এপিসোড করে একসময়ে বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে যাওয়া ইটিভি নিউজে। আর আমাদের জেলায় বসে সেইসব হাঁ করে দেখা আর কেমন মনের ভেতর অস্থিরতা তৈরি হওয়া। একেই বলে কলকাতার রাজপথের সাংবাদিক বলে কথা।  সেই যে বার রাষ্ট্রপতি এলেন জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে সেই অনুষ্ঠানের বিশেষ কার্ড জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করা ইটিভির চাকরি করার সুবাদে। কোনো রকমে সেই কার্ড জোগাড় করে এনে দেওয়া তাঁকে আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য। আর সেই একদিন দুপুর বেলায় খুব সম্ভবত করোনা শেষ পর্বে বালিঘাট স্টেশন থেকে অফিস যাওয়ার সময় এসি পঞ্চাশ এর বাস এর ভিতরে দেখা হওয়ায় কত গল্প করা দুজন মিলে পুরনো দিনের। আবার উত্তরপাড়ার সেই বিখ্যাত চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে হাসি মুখে দেখা হয়ে যাওয়া রাতের বেলায় কাঁঠালবা...

আমাদের সবার মৃনাল দা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক বাবা আর ছেলের লড়াই এর গভীর গোপন কাহিনী। এই সাংবাদিকতার পেশায় এসে কত লড়াই, কত অসম যুদ্ধ, করে যে কেউ সংসার টিকিয়ে রাখতে পারে হাসি মুখে কাউকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে। এমন করে কেউ টিকে থাকার চেষ্টা করেন সেটা বোধহয় আমার জানা হয়ে উঠত না কিছুতেই। যদি না এই পেশায় আমি গা ভাসাতাম এমন করে। জীবনের এই নানা টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ ভেসে ওঠে এই রাতের অন্ধকারে আচমকা আমার মনের মাঝে। আর আমি চমকে উঠি কেমন করে তাদের সেই কোলাজ দেখে।  এমন এক চরিত্র, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়ে কেমন আলগোছে, হাসিমুখে, নির্মোহ ভাবে, শুধু নিজের কাঁচা পাকা দাড়িতে হাত বুলিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিলো সে শুধুই আকাশ পানে তাকিয়ে। যে নীল আকাশের গা ঘেঁষে উড়ে যাওয়া সাদা বকের ডানায় লেগে থাকে মেঘের হালকা টুকরো। একদম যেনো সিনেমার পর্দার হিরোর মতোই। দেখে বোঝার উপায় নেই একদম। পেটে খাবার না থাকলেও মুখের হাসিটা অমলিন হয়েই বেঁচে আছে আজও এতোদিন পরেও। আর সেই বিখ্যাত সাদা পাকা নাসিরউদ্দিন স্টাইলের দাড়ি, কালো চুল, আর সব সময় ধোপদুরস্ত ফিটফাট একজন মানুষ। রাত নটা বাজলেই যাকে শ্রীরামপুরে...

শপিং মলের উদ্বোধনে সিঙ্গুর আন্দোলনের দাপুটে মন্ত্রী

নালিকুল স্টেশন বাজারে একটি শপিং মলের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বেচারাম মান্না হাজির। একসময় যাঁর অন্দোলনের ঠেলায় পড়ে দৌড়ে একপ্রকার পালিয়ে চলে যেতে হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে টাটা কোম্পানিকে। যে আন্দোলনের দগদগে ঘা আর সেই স্মৃতি ধীরে ধীরে আজ প্রায় মিলিয়ে যেতে বসেছে আমাদের কাছ থেকে। আজ সেই চাষার ঘরের মানুষ না হলেও সেই কৃষক আর শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকার নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেন সেই মানুষটাকেই কেমন যেন আজ শপিং মলের উদ্বোধনে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার।  একদম নালিকুল স্টেশনের কাছে ঝাঁ চকচকে শপিং মল। দোকানে সাজানো জিনিস পত্র। আর সেখানেই আমাদের মাননীয় মন্ত্রী বেচারাম মান্না। একদম কেমন একটু আমার অচেনা লাগলো যেন। সেই মুড়ি খেয়ে আলুর তরকারি বা শশা খেয়ে আন্দোলন শুরু করা জমি আন্দোলন এর অন্যতম পথিকৃৎ নেতা আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তাহলে টাটা কোম্পানির বিরুদ্ধে যে জমি দখল নিয়ে আন্দোলন সেই আন্দোলন এর মধ্যে ছিল জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যদিও সেখানেও সেই সময়ের শাসকদলের কর্মসংস্থানের যুক্তি।তবে এই নতুন শপিং মলের উদ্বোধনে তো আর ...

ভীড়ের মাঝে একা

জীবন জুড়ে শুধুই ভীড় আর ভীড়। নানা ধরনের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় মানুষের গন্ধে, বর্ণে , স্বাদের ভীড়ে আমি একদম একা হয়ে যেতে চাই। যে ভীড় উপচে পড়া রাস্তায় শুধুই হেমন্তের ভোরে শিশিরের ফিসফিস শব্দ, পাখির কিচির মিচির আওয়াজ,ধানসিড়ি ওই নদীটির তীর ধরে ঘুঘুর আকুল মন কেমন করা ডাক, উদাসী শালিকের ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া ওই হেমন্তের হলুদ ধানের মাঠ এর পাশ দিয়ে, হলুদ বসন্ত বৌরীর সেই আমলকীর গাছের পাতায়,আড়ালে আবডালে বসে কেমন যেন আমায় দেখে লজ্জা পাওয়া, আর তারপর চোখ নামিয়ে হঠাৎ করেই তার উড়ে চলে যাওয়া। আর মেঘের কোল ঘেঁষে সেই সাদা বকের, বুনো হাঁসের, আর সেই পানকৌড়ির জলে ভেজা ডানা মেলে উড়ে যাওয়া আকাশ জুড়ে। সত্যিই ওরাও যে ভিড়ের মাঝেই বড়ো একা। একা একাই ওদের যে এই বেঁচে থাকা। কেমন নিপাট হৈ চৈ হুল্লোড়হীন একটা জীবন নিয়ে বেশ মজা করে, আনন্দ করে। আর সেই ভোরের আলোয় আলোকিত হয়ে রাস্তার একপাশে গুটি শুটি মেরে শুয়ে থাকা ওই সাদা কালো ভুলো নামের কুকুরের। যে অন্তত এই সব মানুষদের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় একটু যেনো আলাদা , একটু যেনো অন্য রকমের। একটু একা একাই যেনো ওর এই আলগোছে জীবন কাটিয়...

গৌড় প্রাঙ্গণে আনন্দবাজার

গৌরপ্রাঙ্গনে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যের আনন্দের মেলা আনন্দবাজার। মহালয়ার ভোরবেলায় ঢাকের বাদ্যি আর সানাইয়ের মন কেমন করা সুরে মেতে উঠলো শান্তিনিকেতনের গৌড়প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও যে হবে আনন্দমেলা আনন্দবাজার। হ্যাঁ সত্যিই যেনো আনন্দের এই হাটে বেচাকেনার পসরা নিয়ে একদিনের জন্য বসে পড়া মন প্রাণ খুলে হৈ হুল্লোড় করে। এই মেলা শুরু হয় 1915 সালের 15 এপ্রিল নববর্ষের দিনে। কিন্তু আগে এই মেলাকে একসময় বলা হতো বৌঠাকুরাণীর হাট। সেই সময় আশ্রমের মহিলারা নিজেদের হাতের তৈরি জিনিস নিয়ে মেলায় বসতেন। মেলার আয়োজন করতেন তারা। আনন্দ করে বেচাকেনা হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় একবার গরমের ছুটির আগে এমন মেলা নাকি হয়েছিল। যার নাম ছিল আনন্দবাজার। পরে এই মেলার নামে হয়ে যায় আনন্দমেলা। সত্যিই আনন্দের এই মিলন মেলা।  প্রথমদিকে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই মেলা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে বিশ্বভারতীর সব বিভাগের পড়ুয়ারা এই মেলায় যোগদান করে। এই মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের বেচা কেনার লাভের টাকার কিছু অংশ জমা পরে বিশ্বভারতীর সেবা বিভাগে। সেখান থেকে এ...