সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

কলকাতা টিভির নির্মাল্য জানা

কিছু বিখ্যাত সাংবাদিক এর জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানানোর আগে আমায় একটু ভাবতে হয় আর কি। থমকে দাঁড়াতে হয় একটু। কিছুটা ভয়, আর কিছুটা সেই বাংলার মুখ এর পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এই ব্যক্তি। যদি কিছু মনে করে সে। যতই পুরোনো দিনের চেনা সম্পর্ক হোক। সেই দূরের হায়দরাবাদ এর চেনা বা কলকাতার চেনা হোক। সেই চেনা আর অচেনা যে সব এক হয়ে যায় ক্ষমতা আর কর্তৃত্ব নামক ঘেরাটোপে বন্দী এই জেলখানায়। মাঝে মাঝেই সেই জেলখানায় ওয়ার্ডেন পাগলা ঘণ্টা বাজায় আর তখন হাসিমুখে ডাক পড়ে কাঁচের ঘরে। বেশ ভালো লাগে আমার এই ঘণ্টার আওয়াজ কিন্তু। যে ঘণ্টার আওয়াজ শুনে একদিন আমিও পাঁচিল টপকে পালিয়ে যাই। সে বাদ দিন এইসব কথা। 


সেই বাংলার বিখ্যাত জনপ্রিয় ২৪ ঘণ্টার ছেড়ে আসা সুন্দর অফিস। সেই চেনা পোদ্দার কোর্টের অফিসে বাঘ এর মতই ঘুরে বেড়ানো তাঁর চারিদিকে কড়া নজর দিয়ে। সব দেখতে দেখতে একটু ধীর পায়ে হেঁটে হেঁটে ভারী চেহারা নিয়ে। তাঁর চোখ এড়িয়ে কেউ যেনো কিছু করতে না পারে। সেই বোলপুরে করোনার সময় এক বিকেল বেলায় আমার কাছে ফোন এলো একদিন অভিজিৎ দা তোমার কপাল খুলে গেলো যে।

 কি খবর কোথায় তুমি। ভালো আছো। আমি বললাম হ্যাঁ। কিন্তু যে কাজের জন্য আমার কপাল।খুলে গেলো বলে সেদিন নির্মাল্য জানার ফোন এলো। সেই পি সি আর এর কাজ আমি করতে পারবো না বলেই জানিয়ে দিলাম তাঁকে। যদিও আমি আমার কাজের অভিজ্ঞতা জানিয়ে এস এম এস করেছিলাম বলেই ফোনটা সেই দিন এসেছিল আমার কাছে। সেটা পরে পরিষ্কার হয়ে যায়। সেই রতনপল্লীর মাঠের কাছে দাঁড়িয়ে ছিলাম আমি। ফোন করে কথা বলেছিল অনেকক্ষণ। বেশ ভালো লেগেছিল আমার।

তার বহুদিন পরে সেই আবার রাতের বেলায় দীপেন্দ্র গোস্বামীর সহায়তায় আর তাঁর উদ্যোগে পোদ্দার কোর্টের অফিসে গিয়ে দেখলাম তাঁকে সেই কাঁচের ঘরের ভিতর। হাসিমুখে সবার দিকে নজর করে চলেছেন তিনি আর হাসি ঠাট্টা মশকরা করে কাজ করে চলেছেন বেশ নিজের আপন স্টাইলে। কাউকেই বুঝতে না দিয়ে যে সেই এই জায়গার অন্যতম সেরা একজন key man, যাঁর হাতে এই মিডিয়ার আসল চাবিকাঠি। একদম ঠিক ব্যপার কিন্তু এটাই। 

সেই অনেকক্ষণ বাইরের সোফায় বসে কাঁচের ঘরে প্রবেশ। আলাপপর্ব মিটিয়ে হাসি মুখে মাস্ক খুলে মুখ দেখানো। সেই কাজের সুযোগ পেয়ে লাফিয়ে ঝাঁপিয়ে কাজ করা একটু পেছনে থাকা চ্যানেলের‌ জন্য। আর চেষ্টা করা আসল কী ম্যানের দেখা পাওয়া। সেই নির্মাল্য জানার কথা। সেই অন্য শিবির থেকে অন্য চ্যানেল থেকে লোক এনে তাঁর নিজের খেলার মাঠে দল নামিয়ে হাসি মুখে জিতে যাওয়া সেই লীগ খেলায় উয়াড়ী দল এর জয়লাভ এর মতোই ব্যাপারটা বেশ।

সেই আজ সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় সেই কলকাতা টিভির সেরা নির্ভরযোগ্য মজিদ বাস্কার স্টাইলের স্ট্রাইকার তাঁকে নিয়ে লিখে ফেললাম আমি কিছু কথা। সেই বিখ্যাত নির্মাল্য জানার কথা। যাঁর জন্মদিনের এই হুল্লোড় নানা উপহার, শুভেচ্ছা বিনিময়, এই কেক কাটার নানা ছবি দেখে মনে হলো একটু ওকে নিয়ে লিখলে কেমন হয়। 

সেই যেখানে আমিও কিছুদিন টাইপের কাজ করতাম আমার সাথে কাজ করতো ইটিভির পুরোনো দিনের আমার হাওড়ার বন্ধু শ্বাশত চট্টোপাধ্যায় । সেই হাফ আর ফুল স্ক্রীন এর ব্রেকিং লেখার মধ্যে দিয়ে আমাদের দুজনের জীবন চলতো দ্রুত তালে ঠিক ব্রেকিং এর মতোই। কত লোক ঘুরে বেড়াতো আমাদের সেই লেখার আশপাশে শুধুই ভুল ধরে থাকার জন্য দিব্যি হাসি মুখেই। আমার আর আমার ইটিভির বন্ধু শাশ্বতর কাজ করা সেই পোদ্দার কোর্টে। আজ অনেকেই আর নেই সেই পুরোনো দিনের অফিসে।‌

সেই পোদ্দার কোর্টে আজ নির্মাল্য জানার জন্মদিন পালন করা দেখে কত কিছুই না মনে পড়ে গেলো আমার এই ভোররাতে। সত্যিই অসাধারণ এই জীবন। যে জীবনের চারপাশে এমন নানা মানুষের আনাগোনা আর ভীড়। যে ভীড় আমার খুব অপছন্দের। তবু সেই ভীড়ের মাঝে একা একাই হেঁটে চলে ঘুরে বেড়ানো এই বিখ্যাত সাংবাদিক এর জন্মদিন পালন। ভালো থেকো তুমি। শুভ জন্মদিন দাদা। আমার প্রনাম নিও তুমি। 

কলকাতা টিভির নির্মাল্য জানা - অভিজিৎ বসু।
দোসরা ফেব্রুয়ারী দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ইটিভির পিনাকপাণি ঘোষ

কিছু মানুষ কত কাছে থেকেও পাশাপাশি এক জায়গায় বাস করেও একসাথে একসময় কাজ করেও যে কত দূরে রয়ে যান নিজের হাসিমুখ নিয়ে আর সেই চেনা ছন্দ নিয়ে সত্যিই বেশ ভালো মজার ব্যাপার কিন্তু এটা জীবনের মেঠো পথে। সেই ইটিভির বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে ঘুরে ঘুরে স্ট্রীট ফুডের ছবি তোলা আর নানা খবর করে খাওয়া দাওয়ার এপিসোড করে একসময়ে বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে যাওয়া ইটিভি নিউজে। আর আমাদের জেলায় বসে সেইসব হাঁ করে দেখা আর কেমন মনের ভেতর অস্থিরতা তৈরি হওয়া। একেই বলে কলকাতার রাজপথের সাংবাদিক বলে কথা।  সেই যে বার রাষ্ট্রপতি এলেন জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে সেই অনুষ্ঠানের বিশেষ কার্ড জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করা ইটিভির চাকরি করার সুবাদে। কোনো রকমে সেই কার্ড জোগাড় করে এনে দেওয়া তাঁকে আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য। আর সেই একদিন দুপুর বেলায় খুব সম্ভবত করোনা শেষ পর্বে বালিঘাট স্টেশন থেকে অফিস যাওয়ার সময় এসি পঞ্চাশ এর বাস এর ভিতরে দেখা হওয়ায় কত গল্প করা দুজন মিলে পুরনো দিনের। আবার উত্তরপাড়ার সেই বিখ্যাত চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে হাসি মুখে দেখা হয়ে যাওয়া রাতের বেলায় কাঁঠালবা...

আমাদের সবার মৃনাল দা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক বাবা আর ছেলের লড়াই এর গভীর গোপন কাহিনী। এই সাংবাদিকতার পেশায় এসে কত লড়াই, কত অসম যুদ্ধ, করে যে কেউ সংসার টিকিয়ে রাখতে পারে হাসি মুখে কাউকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে। এমন করে কেউ টিকে থাকার চেষ্টা করেন সেটা বোধহয় আমার জানা হয়ে উঠত না কিছুতেই। যদি না এই পেশায় আমি গা ভাসাতাম এমন করে। জীবনের এই নানা টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ ভেসে ওঠে এই রাতের অন্ধকারে আচমকা আমার মনের মাঝে। আর আমি চমকে উঠি কেমন করে তাদের সেই কোলাজ দেখে।  এমন এক চরিত্র, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়ে কেমন আলগোছে, হাসিমুখে, নির্মোহ ভাবে, শুধু নিজের কাঁচা পাকা দাড়িতে হাত বুলিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিলো সে শুধুই আকাশ পানে তাকিয়ে। যে নীল আকাশের গা ঘেঁষে উড়ে যাওয়া সাদা বকের ডানায় লেগে থাকে মেঘের হালকা টুকরো। একদম যেনো সিনেমার পর্দার হিরোর মতোই। দেখে বোঝার উপায় নেই একদম। পেটে খাবার না থাকলেও মুখের হাসিটা অমলিন হয়েই বেঁচে আছে আজও এতোদিন পরেও। আর সেই বিখ্যাত সাদা পাকা নাসিরউদ্দিন স্টাইলের দাড়ি, কালো চুল, আর সব সময় ধোপদুরস্ত ফিটফাট একজন মানুষ। রাত নটা বাজলেই যাকে শ্রীরামপুরে...

শপিং মলের উদ্বোধনে সিঙ্গুর আন্দোলনের দাপুটে মন্ত্রী

নালিকুল স্টেশন বাজারে একটি শপিং মলের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বেচারাম মান্না হাজির। একসময় যাঁর অন্দোলনের ঠেলায় পড়ে দৌড়ে একপ্রকার পালিয়ে চলে যেতে হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে টাটা কোম্পানিকে। যে আন্দোলনের দগদগে ঘা আর সেই স্মৃতি ধীরে ধীরে আজ প্রায় মিলিয়ে যেতে বসেছে আমাদের কাছ থেকে। আজ সেই চাষার ঘরের মানুষ না হলেও সেই কৃষক আর শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকার নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেন সেই মানুষটাকেই কেমন যেন আজ শপিং মলের উদ্বোধনে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার।  একদম নালিকুল স্টেশনের কাছে ঝাঁ চকচকে শপিং মল। দোকানে সাজানো জিনিস পত্র। আর সেখানেই আমাদের মাননীয় মন্ত্রী বেচারাম মান্না। একদম কেমন একটু আমার অচেনা লাগলো যেন। সেই মুড়ি খেয়ে আলুর তরকারি বা শশা খেয়ে আন্দোলন শুরু করা জমি আন্দোলন এর অন্যতম পথিকৃৎ নেতা আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তাহলে টাটা কোম্পানির বিরুদ্ধে যে জমি দখল নিয়ে আন্দোলন সেই আন্দোলন এর মধ্যে ছিল জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যদিও সেখানেও সেই সময়ের শাসকদলের কর্মসংস্থানের যুক্তি।তবে এই নতুন শপিং মলের উদ্বোধনে তো আর ...

ভীড়ের মাঝে একা

জীবন জুড়ে শুধুই ভীড় আর ভীড়। নানা ধরনের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় মানুষের গন্ধে, বর্ণে , স্বাদের ভীড়ে আমি একদম একা হয়ে যেতে চাই। যে ভীড় উপচে পড়া রাস্তায় শুধুই হেমন্তের ভোরে শিশিরের ফিসফিস শব্দ, পাখির কিচির মিচির আওয়াজ,ধানসিড়ি ওই নদীটির তীর ধরে ঘুঘুর আকুল মন কেমন করা ডাক, উদাসী শালিকের ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া ওই হেমন্তের হলুদ ধানের মাঠ এর পাশ দিয়ে, হলুদ বসন্ত বৌরীর সেই আমলকীর গাছের পাতায়,আড়ালে আবডালে বসে কেমন যেন আমায় দেখে লজ্জা পাওয়া, আর তারপর চোখ নামিয়ে হঠাৎ করেই তার উড়ে চলে যাওয়া। আর মেঘের কোল ঘেঁষে সেই সাদা বকের, বুনো হাঁসের, আর সেই পানকৌড়ির জলে ভেজা ডানা মেলে উড়ে যাওয়া আকাশ জুড়ে। সত্যিই ওরাও যে ভিড়ের মাঝেই বড়ো একা। একা একাই ওদের যে এই বেঁচে থাকা। কেমন নিপাট হৈ চৈ হুল্লোড়হীন একটা জীবন নিয়ে বেশ মজা করে, আনন্দ করে। আর সেই ভোরের আলোয় আলোকিত হয়ে রাস্তার একপাশে গুটি শুটি মেরে শুয়ে থাকা ওই সাদা কালো ভুলো নামের কুকুরের। যে অন্তত এই সব মানুষদের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় একটু যেনো আলাদা , একটু যেনো অন্য রকমের। একটু একা একাই যেনো ওর এই আলগোছে জীবন কাটিয়...

গৌড় প্রাঙ্গণে আনন্দবাজার

গৌরপ্রাঙ্গনে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যের আনন্দের মেলা আনন্দবাজার। মহালয়ার ভোরবেলায় ঢাকের বাদ্যি আর সানাইয়ের মন কেমন করা সুরে মেতে উঠলো শান্তিনিকেতনের গৌড়প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও যে হবে আনন্দমেলা আনন্দবাজার। হ্যাঁ সত্যিই যেনো আনন্দের এই হাটে বেচাকেনার পসরা নিয়ে একদিনের জন্য বসে পড়া মন প্রাণ খুলে হৈ হুল্লোড় করে। এই মেলা শুরু হয় 1915 সালের 15 এপ্রিল নববর্ষের দিনে। কিন্তু আগে এই মেলাকে একসময় বলা হতো বৌঠাকুরাণীর হাট। সেই সময় আশ্রমের মহিলারা নিজেদের হাতের তৈরি জিনিস নিয়ে মেলায় বসতেন। মেলার আয়োজন করতেন তারা। আনন্দ করে বেচাকেনা হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় একবার গরমের ছুটির আগে এমন মেলা নাকি হয়েছিল। যার নাম ছিল আনন্দবাজার। পরে এই মেলার নামে হয়ে যায় আনন্দমেলা। সত্যিই আনন্দের এই মিলন মেলা।  প্রথমদিকে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই মেলা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে বিশ্বভারতীর সব বিভাগের পড়ুয়ারা এই মেলায় যোগদান করে। এই মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের বেচা কেনার লাভের টাকার কিছু অংশ জমা পরে বিশ্বভারতীর সেবা বিভাগে। সেখান থেকে এ...