সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

প্রতিদিনের দিব্যেন্দু মজুমদার

হাতে ক্যামেরা আর কাঁধে একটা কালো সাইড ব্যাগ নিয়ে জেলার এদিক ওদিক ছুটে বেড়ানো ওর গোটা হুগলী জেলা জুড়ে দাপিয়ে। দিন এর শেষে খবর করে ছবি তুলে এসে তাড়াতাড়ি লিখে ছবি পাঠিয়ে বসদের ফোনে সেটা জানিয়ে তারপর একটু নিশ্চিত হয়ে দুটো খাবার খাওয়া সারাদিন এর পরে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। বিনিময়ে একটু পরদিন কাগজে নাম বের হওয়া। আর মাসের শেষে বেতন বা যার অর্থমূল্য খুবই কম আর কি। তাতে মন ভরলেও পেট ভরে না যে।

তবুও কোনোভাবেই মেনে নেওয়া আর মানিয়ে নেওয়া। এটাই যে একটা সেই বড়ো নেশার মিডিয়ার জীবন আমাদের। যে নেশায় জীবন,যৌবন, বার্ধক্য কাটিয়ে মৃত্যুমুখে পৌঁছেও আমাদের আর নেশা যায় না কিছুতেই। সিস্টেম এর থেকে বেরিয়ে গেলেই যে ছিটকে যেতে হবে একদিন। বেরিয়ে যেতে হবে এই মিডিয়া নামক বাবুদের জীবন ছেড়ে অন্ধ গলির খানাখন্দে ভরা এক অনাড়ম্বর পাত্তা না পাওয়া জীবনে। আর তাই ঠিক ছিনে জোঁকের মতোই লেগে থাকা এই মিডিয়া নামক তেল চিটচিটে জগতে গুবড়ে পোকার মতোই গায়ে খোলস পড়ে গোমড়া মুখে। 

 আর তাই একটি কম সার্কুলেশন এর বেশ পুরোনো দৈনিকে প্রায় কুড়ি বছর বা তার কিছু কম সময় কাজ করেও হঠাৎ করেই একদিন বোল্ড আউট হয়ে ছিটকে যেতে হলো তাকে একদিন আচমকাই। সে ঠিক বুঝতে পারেনি বলটা এই ভাবে সুইং করতে পারে এই মরা পিচেও। দিব্যি ধীরে সুস্থে ধরেই ব্যাট করছিল সে মাথায় হেলমেট পরে টুকটুক করে ধীরে ধীরে। মাঝে অল্প কিছুদিনের জন্য একজন এসেছিল জেলার দায়িত্ব নিয়ে কিন্তু সেটাকে কোনোভাবে সামলে দেওয়া গেছে ধীরে সুস্থে মাথা ঠাণ্ডা রেখে। সে নিজেই কাজ ছেড়ে চলে যায় হঠাৎ করেই একদম মাথাগরম ছিল লোকটার তাই একটু সুবিধা হয়। কিন্তু লোকটা রিপোর্টার ভালো ছিল বেশ। কিন্তু এইবার আর সেটা সম্ভব হলো না কিছুতেই। নিজেই বোল্ড আউট হয়ে ছিটকে যেতে হলো তাকে হঠাৎ করেই এই বহু পুরোনো দিনের মাঠ ছেড়ে মনের কষ্টে।

 হ্যাঁ, আজ সেই হুগলী জেলার প্রতিদিনের দিব্যেন্দু মজুমদার এর কথা আমার সাদা জীবনের কালো কথায়। আমার এই আঁকাবাঁকা পথ ধরে জীবনে চলা আঁকিবুঁকি ব্লগের লেখায়। সেই রিপোর্টার কাম ফটোগ্রাফার কাম জেলার সর্বময় ক্ষমতা ভোগ করা জেলার একনিষ্ঠ রিপোর্টার সেই দিব্যেন্দু মজুমদার এর কথা। ছবি আর লেখা লিখে যে একাই দিব্যি জেলায় কাজ করা সেই একা জেলা সামলানো কম হাসি আর উচ্ছাসহীন সাংবাদিক দিব্যেন্দু।‌

 যার মুখে অনেক হাসি কম কিন্তু জীবনে দুঃখ অনেক বেশি আছে অন্ততঃ আমার সেটাই মনে হয় ওকে দেখে ওর জীবনের প্রাপ্তি কম কিন্তু অপ্রাপ্তির ভাগ অনেক বেশি। ওর জীবনে ওর মতে আরও কিছু পেলে ভালো হতো হয়তো কিন্তু সেটা না পেয়ে কিছুটা হলেও বিমর্ষ সে। কিন্তু আমার মনে হয় জীবনকে একটু অন্য ভাবে দেখতে পারে ও। নতুন করে দেখা এই জীবন কিন্তু মন্দ নয়। 

 যাঁর সাথে আমার প্রায় এখন উত্তরপাড়ার কাঁঠাল বাগান এলাকায় গুপির চায়ের দোকানে দেখা হয় প্রায় প্রতিদিন সন্ধ্যায় রাত নটার পরে। কিন্তু যখন এক কাগজে আমরা কাজ করেছি দুজন এই জেলায় তখন সেই সদ্ভাব ছিল না এতটা, এখন যতটা কাছে আসতে পেরেছি আমরা এমনটাই মনে হয় আমার আজকাল ওর সাথে মিশে। আসলে সময় আর সময়ের পরিবর্তনে বদলে যায় এই হাত পা ওলা মানুষ। বদলে যায় মানুষের অনেক কিছুই। বদলে যায় মানুষের ভাগ্য। বদলে যায় মানুষের জীবনও।

 আজ আমরা দুজনেই এক পথেরই পথিক। রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে চা খেয়ে জীবন কাটিয়ে দি আমরা বেশ খুশি মনেই। আর সেই বিখ্যাত গুপির হাতের লাল চা খেয়ে আর উত্তরপাড়ার পুরপ্রধান দিলীপ যাদব এর আতিথ্য গ্রহণ করেই জীবন কাটে আমাদের দুজনের হাসতে হাসতেই। সত্যিই অসাধারণ এই জীবন আর জীবনের নানা অধ্যায়।‌ যেখানে জীবনের কোথাও সাদা আবার কোথাও কালো। যেখানে কোথাও হাসি আবার কোথাও কান্না লুকিয়ে আছে এমন গভীর গোপন ভালোবাসার সম্পর্কের মাঝেই। যার সন্ধান পাওয়া যায় না কিছুতেই। হঠাৎ করেই বোল্ড আউট এর মতোই বেরিয়ে পড়ে সে নিজের মতো করেই আপন ছন্দে।

ওর মেয়ে বেশ গুণী মেয়ে। পড়াশোনায় বেশ ভালো।ওর কোনো রকমে দিন চলে গেলেও এই একটা নিশ্চিত মেয়ের ভবিষ্যৎ তৈরি হয়েছে ওর নিজের দক্ষতায় আর এটাই দিব্যেন্দুর সবথেকে বড় সফলতা ওর এই দীর্ঘ সংগ্রামের জীবনে। ওর কর্মজীবনে ও হঠাৎ করেই বোল্ড আউট হলেও ওর মেয়ে কিন্তু এইভাবে বোল্ড আউট হয়ে যাবে না কিছুতেই হঠাৎ করেই। সেই ওর সাথে ভোর বেলায় বন্ধ ডানলপ কারখানায় ছুটে যাওয়া খবরের জন্য। সেই সিঙ্গুরের মাঠে মাঠে ঘুরে বেড়ানো। সেই প্রবীরদার পল্লীডাক প্রেসে খবরের জন্য ঘুরে বেড়ানো। এসব তো আমাদের আজও মনে পড়ে যায় এতদিন পরেও। 

সেই ওর বউ এর হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে যাওয়া। অনেক কষ্টে সুস্থ হয়ে তাঁর ঘরে ফিরে আসা। ওর মুখে স্বস্তির ছাপ দেখে ভালো লাগে আমার। সেই মেয়ের কাছে বাইরে থাকে ওর মেয়ে,যাওয়ার আগে ওর মুখে একটা খুশির ভাব দেখে বেশ ভালো লাগে আমার। সত্যিই এই সারা জীবন ধরে ওর মাঠে ঘাটে ছুটে বেড়ানো দৌড়ে বেড়ানো বোধহয় সার্থক হলো কিছুটা ওর মেয়ের এই সাফল্য অর্জন করে জীবনে নিজের পায়ে দাঁড়ানোয়। নিজে হয়তো আমরা দুজন সফলতা পাইনি কিন্তু আমাদের মেয়েরা সেটা পেলে ভালো লাগে। মনে হয় তাহলে আমরা হেরে গেলেও ক্ষতি কি আর। 

ওর মুখে পুরোনো দিনের কথা শুনে মনে মনে ভালো লাগে আমার। নানা ঘটনার কথা শুনে মনে হয় ও এইসব ঘটনার সাক্ষী ছিল একদিন আমার সাথেও। মনে মনে আমিও একটু খুশি হই ওর মুখে পুরোনো দিনের কথা শুনে। এই সাংবাদিক জীবন আর জীবনের আশেপাশে এমন বর্ণময় উজ্জ্বল অভিজ্ঞতা বোধহয় আর কেউ পাবেই না আর কোনোদিন। যে দিন, যে কাল, যে সময়, যে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট আমরা কাটিয়ে এসেছি আমাদের সাংবাদিক জীবনে সেটা বোধহয় আর আমরা কোনোদিন ফিরেই পাবোনা আর। যে যাই বলুক আর আমাদের কটাক্ষ করে বলুক কবে কী ঘি খেয়েছে ওসব কথা বাদ দিক এই সব বুড়োদের দল।

তবু সেই স্বর্ণযুগের খবরের মাধ্যমের একজন সৈনিক হিসেবে আমি, দিব্যেন্দু মজুমদার, বিধান সরকার, ছোটু, তাপস লাহা, বাপি, মিন্টে, মিল্টন সেন, উপেন কল্যা, সুব্রত যশ, সৌগত রায়, সৌরভ বন্দোপাধ্যায়, কিট্টু, রানা, নির্মল, গৌতম ধলে, তরুণ দা, গৌতম দা, ফাল্গুনী দা, মুরলী, নীলুদা, রথীন দা আজও গর্ব অনুভব করি। হয়তো আরও পুরোনো দিনের লোক ছিলেন মনে পড়লো না বলে নাম লেখা হলো না আমার। সেটা কিন্তু ইচ্ছাকৃত নয়। বেশ কঠিন লাল কমরেডদের ঘুর্ণি পিচে ব্যাট করেও সুইং বলে ছয় মেরে আমরা কিন্তু আউট হয়ে যাইনি সেই সময় দিব্যি হাসিমুখে ব্যাট করে গেছি আমরা সেই মাঠে। আজ এই মরা পিচেও কেমন করে যেন সব পটপট করে বোল্ড আউট হয়ে যেতে হচ্ছে নিজে নিজেই কিছু না বুঝেই। সত্যিই আজ মনে হয় সেই ফেলে আসা স্বর্ণযুগ এর দিন বেশ ভালোই ছিল। এই মা মাটি আর মানুষের একটু বেশি ভালবাসা দিনের থেকেও।

 ভালো থেকো তুমি দিব্যেন্দু। আমার মতোই হাসিমুখে বিন্দাস হয়ে এমন এলোমেলো আর এলেবেলে জীবন নিয়ে ঘুরে বেড়াও রাস্তায়। দেখবে ভালোই লাগবে বেশ তোমার। জীবন মজার,জীবন উপভোগের আর জীবন বেশ আনন্দের। নাই বা থাকলো ক্ষমতার আস্ফালন আর ছোটো বড়ো মেজো সেজো কুচো নেতাদের, হাফ বা ফুল মন্ত্রীদের, আর পুলিশের কাছে অনায়াসে পৌঁছে যাওয়া হাতে খাতা আর পেন নিয়ে হাসি মুখ করে। 

নাই বা থাকলো সাদা কালো অক্ষরে ছাপা নিজের নামের মোহ আর সেই নাম দেখে খিদে পেটে হাত বুলিয়ে মনে মনে আনন্দ পাওয়া। সবকিছু ছেড়ে দিয়ে আমি আর তুমি না হয় একটু সাধারণ জীবন কাটাই এই বুড়ো বয়সে জীবনের বাকি কটা দিন। যে জীবনে এইসব কিছুই নেই আর আমাদের। শুধু গুপির মুখের অমলিন হাসি আর একটা বড় মাটির ভাঁড়ে লাল চা আছে। ক্ষতি কি বলো তাতে। গুপি গাইন আর বাঘা বাইনকে নিয়েই না হয় আমাদের এই জীবন কেটে যাক শেষ বয়সে। কোনো দৌড় ছাড়াই এলোমেলো এলেবেলে হয়ে একটা বিন্দাস জীবন নিয়ে। যে জীবনে হঠাৎ করেই বোল্ড আউট নেই।

প্রতিদিনের দিব্যেন্দু মজুমদার - অভিজিৎ বসু।
সাত ফেব্রুয়ারী দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ইটিভির পিনাকপাণি ঘোষ

কিছু মানুষ কত কাছে থেকেও পাশাপাশি এক জায়গায় বাস করেও একসাথে একসময় কাজ করেও যে কত দূরে রয়ে যান নিজের হাসিমুখ নিয়ে আর সেই চেনা ছন্দ নিয়ে সত্যিই বেশ ভালো মজার ব্যাপার কিন্তু এটা জীবনের মেঠো পথে। সেই ইটিভির বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে ঘুরে ঘুরে স্ট্রীট ফুডের ছবি তোলা আর নানা খবর করে খাওয়া দাওয়ার এপিসোড করে একসময়ে বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে যাওয়া ইটিভি নিউজে। আর আমাদের জেলায় বসে সেইসব হাঁ করে দেখা আর কেমন মনের ভেতর অস্থিরতা তৈরি হওয়া। একেই বলে কলকাতার রাজপথের সাংবাদিক বলে কথা।  সেই যে বার রাষ্ট্রপতি এলেন জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে সেই অনুষ্ঠানের বিশেষ কার্ড জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করা ইটিভির চাকরি করার সুবাদে। কোনো রকমে সেই কার্ড জোগাড় করে এনে দেওয়া তাঁকে আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য। আর সেই একদিন দুপুর বেলায় খুব সম্ভবত করোনা শেষ পর্বে বালিঘাট স্টেশন থেকে অফিস যাওয়ার সময় এসি পঞ্চাশ এর বাস এর ভিতরে দেখা হওয়ায় কত গল্প করা দুজন মিলে পুরনো দিনের। আবার উত্তরপাড়ার সেই বিখ্যাত চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে হাসি মুখে দেখা হয়ে যাওয়া রাতের বেলায় কাঁঠালবা...

আমাদের সবার মৃনাল দা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক বাবা আর ছেলের লড়াই এর গভীর গোপন কাহিনী। এই সাংবাদিকতার পেশায় এসে কত লড়াই, কত অসম যুদ্ধ, করে যে কেউ সংসার টিকিয়ে রাখতে পারে হাসি মুখে কাউকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে। এমন করে কেউ টিকে থাকার চেষ্টা করেন সেটা বোধহয় আমার জানা হয়ে উঠত না কিছুতেই। যদি না এই পেশায় আমি গা ভাসাতাম এমন করে। জীবনের এই নানা টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ ভেসে ওঠে এই রাতের অন্ধকারে আচমকা আমার মনের মাঝে। আর আমি চমকে উঠি কেমন করে তাদের সেই কোলাজ দেখে।  এমন এক চরিত্র, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়ে কেমন আলগোছে, হাসিমুখে, নির্মোহ ভাবে, শুধু নিজের কাঁচা পাকা দাড়িতে হাত বুলিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিলো সে শুধুই আকাশ পানে তাকিয়ে। যে নীল আকাশের গা ঘেঁষে উড়ে যাওয়া সাদা বকের ডানায় লেগে থাকে মেঘের হালকা টুকরো। একদম যেনো সিনেমার পর্দার হিরোর মতোই। দেখে বোঝার উপায় নেই একদম। পেটে খাবার না থাকলেও মুখের হাসিটা অমলিন হয়েই বেঁচে আছে আজও এতোদিন পরেও। আর সেই বিখ্যাত সাদা পাকা নাসিরউদ্দিন স্টাইলের দাড়ি, কালো চুল, আর সব সময় ধোপদুরস্ত ফিটফাট একজন মানুষ। রাত নটা বাজলেই যাকে শ্রীরামপুরে...

শপিং মলের উদ্বোধনে সিঙ্গুর আন্দোলনের দাপুটে মন্ত্রী

নালিকুল স্টেশন বাজারে একটি শপিং মলের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বেচারাম মান্না হাজির। একসময় যাঁর অন্দোলনের ঠেলায় পড়ে দৌড়ে একপ্রকার পালিয়ে চলে যেতে হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে টাটা কোম্পানিকে। যে আন্দোলনের দগদগে ঘা আর সেই স্মৃতি ধীরে ধীরে আজ প্রায় মিলিয়ে যেতে বসেছে আমাদের কাছ থেকে। আজ সেই চাষার ঘরের মানুষ না হলেও সেই কৃষক আর শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকার নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেন সেই মানুষটাকেই কেমন যেন আজ শপিং মলের উদ্বোধনে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার।  একদম নালিকুল স্টেশনের কাছে ঝাঁ চকচকে শপিং মল। দোকানে সাজানো জিনিস পত্র। আর সেখানেই আমাদের মাননীয় মন্ত্রী বেচারাম মান্না। একদম কেমন একটু আমার অচেনা লাগলো যেন। সেই মুড়ি খেয়ে আলুর তরকারি বা শশা খেয়ে আন্দোলন শুরু করা জমি আন্দোলন এর অন্যতম পথিকৃৎ নেতা আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তাহলে টাটা কোম্পানির বিরুদ্ধে যে জমি দখল নিয়ে আন্দোলন সেই আন্দোলন এর মধ্যে ছিল জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যদিও সেখানেও সেই সময়ের শাসকদলের কর্মসংস্থানের যুক্তি।তবে এই নতুন শপিং মলের উদ্বোধনে তো আর ...

ভীড়ের মাঝে একা

জীবন জুড়ে শুধুই ভীড় আর ভীড়। নানা ধরনের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় মানুষের গন্ধে, বর্ণে , স্বাদের ভীড়ে আমি একদম একা হয়ে যেতে চাই। যে ভীড় উপচে পড়া রাস্তায় শুধুই হেমন্তের ভোরে শিশিরের ফিসফিস শব্দ, পাখির কিচির মিচির আওয়াজ,ধানসিড়ি ওই নদীটির তীর ধরে ঘুঘুর আকুল মন কেমন করা ডাক, উদাসী শালিকের ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া ওই হেমন্তের হলুদ ধানের মাঠ এর পাশ দিয়ে, হলুদ বসন্ত বৌরীর সেই আমলকীর গাছের পাতায়,আড়ালে আবডালে বসে কেমন যেন আমায় দেখে লজ্জা পাওয়া, আর তারপর চোখ নামিয়ে হঠাৎ করেই তার উড়ে চলে যাওয়া। আর মেঘের কোল ঘেঁষে সেই সাদা বকের, বুনো হাঁসের, আর সেই পানকৌড়ির জলে ভেজা ডানা মেলে উড়ে যাওয়া আকাশ জুড়ে। সত্যিই ওরাও যে ভিড়ের মাঝেই বড়ো একা। একা একাই ওদের যে এই বেঁচে থাকা। কেমন নিপাট হৈ চৈ হুল্লোড়হীন একটা জীবন নিয়ে বেশ মজা করে, আনন্দ করে। আর সেই ভোরের আলোয় আলোকিত হয়ে রাস্তার একপাশে গুটি শুটি মেরে শুয়ে থাকা ওই সাদা কালো ভুলো নামের কুকুরের। যে অন্তত এই সব মানুষদের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় একটু যেনো আলাদা , একটু যেনো অন্য রকমের। একটু একা একাই যেনো ওর এই আলগোছে জীবন কাটিয়...

গৌড় প্রাঙ্গণে আনন্দবাজার

গৌরপ্রাঙ্গনে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যের আনন্দের মেলা আনন্দবাজার। মহালয়ার ভোরবেলায় ঢাকের বাদ্যি আর সানাইয়ের মন কেমন করা সুরে মেতে উঠলো শান্তিনিকেতনের গৌড়প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও যে হবে আনন্দমেলা আনন্দবাজার। হ্যাঁ সত্যিই যেনো আনন্দের এই হাটে বেচাকেনার পসরা নিয়ে একদিনের জন্য বসে পড়া মন প্রাণ খুলে হৈ হুল্লোড় করে। এই মেলা শুরু হয় 1915 সালের 15 এপ্রিল নববর্ষের দিনে। কিন্তু আগে এই মেলাকে একসময় বলা হতো বৌঠাকুরাণীর হাট। সেই সময় আশ্রমের মহিলারা নিজেদের হাতের তৈরি জিনিস নিয়ে মেলায় বসতেন। মেলার আয়োজন করতেন তারা। আনন্দ করে বেচাকেনা হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় একবার গরমের ছুটির আগে এমন মেলা নাকি হয়েছিল। যার নাম ছিল আনন্দবাজার। পরে এই মেলার নামে হয়ে যায় আনন্দমেলা। সত্যিই আনন্দের এই মিলন মেলা।  প্রথমদিকে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই মেলা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে বিশ্বভারতীর সব বিভাগের পড়ুয়ারা এই মেলায় যোগদান করে। এই মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের বেচা কেনার লাভের টাকার কিছু অংশ জমা পরে বিশ্বভারতীর সেবা বিভাগে। সেখান থেকে এ...