সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

সাদা জীবনের কালো কথা

সাদা জীবনের কালো কথা লিখতে বসে। এক এক সময় মনে হয় অনেক কিছু উগড়ে দি, বলে ফেলি গভীর গোপন কিছু কথা। যা বলা ঠিক নয়। সেই সব কিছু কথা বলে কিছুটা হালকা হই নিজে এই রাতের অন্ধকারে। কিন্তু কেমন যেনো একটা আগল থেকে যায় মনের মাঝে।

 জীবনের বাঁকে বাঁকে থেকে যাওয়া সেই সব আগল নিয়েই তো বেঁচে থাকতে হয় আমাদের সকলকে। যা ভাবা যায়, সব কি আর বলা যায় বলুন। না লেখা যায়। না, আঁচড়ের দাগ কাটা যায়, খাতায় হিজিবিজি করে। জীবনের খাতায় একটু হিসাব কষেই চলতে হয় না হলে পদে পদে বিপদ। 

ভেবে ছিলাম এই বিষয়টা নিয়ে কি লেখা উচিৎ। না কি দরকার নেই কোনো। কি আর হবে অযথা বিতর্ক সৃষ্টি করে। জেলায় খাটা সাদা জীবনের অতি ছোট একজন সংবাদ কর্মী হয়ে আবার কেনো এসব বলার বৃথা চেষ্টা করা আমার। এসব জানার ও জানানোর কোনো দরকার আছে বলে মনে হয় না। ছোটো হয়ে বড়ো ডালে হাত না বাড়ানোই ভালো। কিন্তু ওই যে আমার বেয়াদপ মন মানেনা যে।

তবে আসলে এখন তো গোটা মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রি টাই নিজেকে জানিয়ে চলছে আর জাহির করে চলছে। মানে নিজের ঢাক নিজে পিটিয়ে চলছে আর কি। এখন কলকাতা, জেলা সব জায়গার রিপোর্টাররা বেশ বন- ভোজনের উৎসবে মেতে উঠেছে দিকে দিকে। সাথে থাকছেন রাজনৈতিক নেতারা, পুলিশ কর্তারা। বিশেষ করে কলকাতায় সাংবাদিককূল বিট নির্ভর বনভোজন করে যে যার নিজের ছবি লটকে দিচ্ছেন নিজের দেওয়ালে। যার যত বড় ভারী লোকের সাথে ছবি আছে, তত তার দাম বাড়ছে সেই বিটে। তত তার দাপট বাড়ছে তার নিজের চেনা জায়গায়। নেতা, মন্ত্রী, সান্ত্রী, পুলিশ সবাই এখন সাংবাদিকদের কাছে খুব সহজলভ্য ব্যাপার হয়ে গেছে।

 আসলে এটাই আসল উদ্দেশ্য বনভোজন বিটের সাংবাদিকদের। জেলায় প্রায় পঁচিশ বছর কাজ করে, আর কলকাতায় প্রায় দশ বছর কাজ করে এই ধরনের বনভোজনে সামিল হতে পারিনি আমি কোনো দিনই। হ্যা, কেউ কেউ বলবেন এটা তো ভাই তোমার অযোগ্যতা। তুমি হাজির হতে পারনি বলে কি লাভ। কিন্তু সেটা হলেও কেনো যাবো বলতে পারেন। নেতা, মন্ত্রীরা, আমলারা খবর পেলেও চেপে দেবেন, খবর আটকে দেওয়াই তাদের একমাত্র কাজ। আর যে হার্ডকোর সাংবাদিক সে যে কোনো উপায়ে সেটাকে প্রকাশ করবেন। এটাই নিয়ম। এটাই দস্তুর। এটাই হলো খবরের এক ও অদ্বিতীয় রাস্তা।

 এর ব্যতিরেকে বনভোজন করে, ক্রিকেট খেলে, দাবা খেলে, টেবিল টেনিস এমনকি লুডো খেলে কোনো মতেই সেই ব্যক্তি খবরটা পাবেন না। যতক্ষণ না আপনার‌ সোর্স আপনাকে নিজে উদ্যোগ নিয়ে খবরটা দিচ্ছে। বা মনে করছে আপনার সেই সোর্স এই খবর টা একটু ঠিক জায়গায় জানিয়ে দি যাতে কেউ কেউ এটা জেনে যায় আর খবরটা বেরিয়ে পড়ে রাস্তায় জন সমক্ষে। এটাই খবরের আসল দর্শন বলে মনে হয়। খবর পাবার আর খবর দেয়ার। এর বাইরে আর কোনো দর্শন নেই। 

কিন্তু আজকাল দেখছি অন্য রকম একটা সম্পর্ক খবর দেনে বালার সাথে খবরের লেনে বালার। একদম প্রেম পিরীতি আঠালো রসে টইটুম্বুর একটি মুচ মুচে সম্পর্ক যেনো। না এতে কোনো ক্ষতি নেই, এতে ভালই হয় দু পক্ষের মধ্যে। সেই সম্পর্ককে জোরালো করতে মাঝে মাঝে শীতের দুপুরে বনভোজন খুব একটা খারাপ ব্যাপার নয় কি বলেন আপনারা সবাই। তাতে লাভ হয় দু পক্ষের। কিন্তু সেই বনভোজনের ম ম গন্ধে যেনো কারুর পা আটকে না যায়। খবর হলে বা পেলে যেনো সু সম্পর্কের জেরে সেই সময় অ্যাডজাস্ট করে না নিতে হয় কাউকে সু সম্পর্কের জেরে। এটাই আসল উদ্দেশ্য যেনো না হয় বনভোজনের।


সিঙ্গুর সেই সময় উত্তাল। সালটা দু হাজার সাত হবে। আন্দোলন এর জন্য চাষীদের সাথে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হচ্ছে। এর মাঝে খবর পেলাম মেধা পাটেকর সিঙ্গুরে আসবেন। চাষীদের মাঝে এসে হাজির হবেন মেধা। বলবেন জমি আন্দোলন করে যেতে হবে। জমি ছাড়া যাবে না কিছুতেই। মেধাকে গ্রামে ঢুকতে দেওয়া যাবে না কিছুতেই। পুলিশের কাছে এলো ফরমান। পুলিশ পাহারা এড়িয়ে মেধা প্রবেশ করলেন গ্রামে। মিটিং করলেন। মেধা কে গ্রেফতার করা হলো। সবটাই আমরা জানতাম। পুলিশের সাথে সেদিন আমার সু সম্পর্ক থাকলেও সেটা কিন্তু আমায় অ্যাডজাস্ট করতে বলেনি কোনো পক্ষই। যে এস পি ছিলেন সেই সময় হুগলির আমার সাথে খুব ভালো সম্পর্ক থাকলেও আমরা কেউ কাউকে কিছুই বলিনি সেদিন। পুলিশ সুপার জানতেন কার সাহায্য নিয়ে গ্রামে ঢুকতে পারলেন মেধা পাটেকর। তিনি সেদিন চুপ করে হেসে আমায় দেখলেন এস পি সুপ্রতিম সরকার।

সেই সময় পুলিশ বনাম সাংবাদিকদের ক্রিকেট খেলা হতো না। বনভোজন তো দুর অস্ত। তবু কেমন যেন একটা অম্ল মধুর সম্পর্ক ছিল খবর চাপার লোকের সাথে খবর ছাপার লোকের। আমার আজও মনে আছে খানাকুলে সি পি এম তৃণমূল সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে তৃণমূল সমর্থক। সেই খবর পেয়ে আমি দ্রুত মোটর সাইকেলে যেতে গিয়ে দুর্ঘটনা হলো রাস্তায়। এস পি গঙ্গেশ্বর সিং, আর আরামবাগের এস ডি পি ও অজয় নন্দা নিজেদের গাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে নদী পথে নৌকা পার করে খবর করতে সাহায্য করেন আমায় সেদিন। এটাই আসল সম্পর্ক সংবাদ দাতা আর গ্রহীতার মধ্যে। আসলে সম্পর্ক স্থাপন যার যত গভীর, ভালো, সে তত বেশি নির্ভর যোগ্য তার সোর্সের কাছে।

তাই বলে কি আমাদের মধ্য মান অভিমান থাকতো না। নিশ্চয়ই মান অভিমান নিয়ে তো তৃণমূলের মমতার এক সময়ের সঙ্গী তৃণমূল সাংসদ আকবর আলী খন্দকার দলের বিরুদ্ধে খবর হচ্ছে কেনো বার বার বলে কত কথাই বললো একদিন। তার বিরুদ্ধে কেনো খবর হচ্ছে এই অভিমানে কথাও বন্ধ করে দিলেন তিনি বেশ কিছু দিন। কিন্তু সেই আকবর দা সব থেকে বেশি ভালোবাসতেন আমায়। দিল্লী থেকে উড়ে এসে আমার বিয়ের আসরে হাজির হয়ে বলেছিলেন আবার কবে যে জল ভরে দেবে কে জানে। তাই চলে এলাম আমি। এটাই সু সম্পর্ক। 

যে কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান জেলার ছোটো সাংবাদিকদের পাত্তা দিতো না কোনো দিন। সেই মান্নান দা সব থেকে বেশি ভালোবাসতেন আমায় জেলায়। যে কোনো সময় হুগলির শেওড়াফুলির বাড়িতে হাজির হলেই বলতেন কি বলবো গো অভিজিৎ। আবার এসব কেনো বলাচ্ছ আমায় দিয়ে। কিন্তু বলে দিতেন সব কিছুই। মান্নান দার সাথে সুসম্পর্ক আজও আছে আমার। মিডিয়া তে কাজ না করেও।

সাংবাদিকরা মন্ত্রী, আমলা, পুলিশ এর পেছনে জল ভরবে। তার বিরুদ্ধে খবর করবে এটাই তার একমাত্র কাজ। আর হাসি মুখে সেই সব কিছু সহ্য করেও নেতা, মন্ত্রী, সাংসদরা হাসতে হাসতে বলবে আরে দাদা যে, আবার কি হলো দেখো তুমি একটু। তার জন্য তো কোনো দিন আলাদা করে কোনো অনুষ্ঠানের দরকার হয়নি। দীর্ঘ ত্রিশ বছরের বেশি কাজ করেও এমন অবস্থা হয়নি যে সু সম্পর্ক স্থাপনের জন্য বনভোজনে হাজির হয়ে প্রেজেন্ট প্লিজ না দিলে নম্বর কাটা যাবে আমার। 

হাল আমলের এই সব অনুষ্ঠান দেখে কেমন যেনো তাই মনে হয় আমার। মনে হয় বুড়ো হলাম বলেই কি আমি একটু ব্যাক ডেটেড হয়ে যাচ্ছি। এই সব আধুনিকতা কে মনে প্রাণে মেনে নিতে পারছি না, তাই এসব বলছি।কিন্তু আবার মনে হয় সেটা কেনো সত্যিই তো বাংলা সংবাদ মাধ্যম, জাতীয় সংবাদ মাধ্যম তো আজ অ্যাডজাস্ট মুডে টিকে আছে। যে যার মতো অ্যাডজাস্ট করে দাপুটে সাংবাদিকেরা সব বেঁচে আছে, টিকে আছেন তারা। দাপুটে বাঘ হয়ে। কিন্তু তাদের সব রিমোট তো অন্যর হাতে ধরা আছে। তারা যেমন চালাবেন তেমনই চলতে হবে তাদের। এটাই তো আসল মজা।

বাম, ডান সব দলের নেতারাই এখন এই বনভোজনকে একটা বাৎসরিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ফেলেছেন। আর সাংবাদিকরাও সেটা করতে গিয়ে মাঝে মাঝে পা পিছলে পড়ে যাবার একটা ক্ষীণ সম্ভাবনাও তৈরি হচ্ছে। আর তাতে লাভ হচ্ছে এই সব রাজনীতির কারবারিদের। যারা ক্ষমতার মসনদে বসে খবর চেপে রেখে নিজেদের ফায়দা হাসিল করতে চান খুব সন্তর্পনে। আর সেই ট্র্যাপে যদি কেউ পা দেন তাহলে একদম কাম সারা। দেখবেন বনভোজনের বনে প্রবেশ করে পা যেনো পিছলে না যায় কোনো ভাবে। হড়কে না যায়। তাহলেই কিন্তু কাম সারা। শিরদাঁড়া সোজা রেখে, কারুর পা না ধরে, মন প্রাণ দিয়ে জল ভরে যান। দেখবেন এর থেকে ভালো আনন্দ, অনুভূতি আর নেই।

সাদা জীবনের কালো কথা - অভিজিৎ বসু।
পাঁচ ফেব্রুয়ারি, দু হাজার পঁচিশ।


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ইটিভির পিনাকপাণি ঘোষ

কিছু মানুষ কত কাছে থেকেও পাশাপাশি এক জায়গায় বাস করেও একসাথে একসময় কাজ করেও যে কত দূরে রয়ে যান নিজের হাসিমুখ নিয়ে আর সেই চেনা ছন্দ নিয়ে সত্যিই বেশ ভালো মজার ব্যাপার কিন্তু এটা জীবনের মেঠো পথে। সেই ইটিভির বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে ঘুরে ঘুরে স্ট্রীট ফুডের ছবি তোলা আর নানা খবর করে খাওয়া দাওয়ার এপিসোড করে একসময়ে বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে যাওয়া ইটিভি নিউজে। আর আমাদের জেলায় বসে সেইসব হাঁ করে দেখা আর কেমন মনের ভেতর অস্থিরতা তৈরি হওয়া। একেই বলে কলকাতার রাজপথের সাংবাদিক বলে কথা।  সেই যে বার রাষ্ট্রপতি এলেন জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে সেই অনুষ্ঠানের বিশেষ কার্ড জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করা ইটিভির চাকরি করার সুবাদে। কোনো রকমে সেই কার্ড জোগাড় করে এনে দেওয়া তাঁকে আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য। আর সেই একদিন দুপুর বেলায় খুব সম্ভবত করোনা শেষ পর্বে বালিঘাট স্টেশন থেকে অফিস যাওয়ার সময় এসি পঞ্চাশ এর বাস এর ভিতরে দেখা হওয়ায় কত গল্প করা দুজন মিলে পুরনো দিনের। আবার উত্তরপাড়ার সেই বিখ্যাত চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে হাসি মুখে দেখা হয়ে যাওয়া রাতের বেলায় কাঁঠালবা...

আমাদের সবার মৃনাল দা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক বাবা আর ছেলের লড়াই এর গভীর গোপন কাহিনী। এই সাংবাদিকতার পেশায় এসে কত লড়াই, কত অসম যুদ্ধ, করে যে কেউ সংসার টিকিয়ে রাখতে পারে হাসি মুখে কাউকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে। এমন করে কেউ টিকে থাকার চেষ্টা করেন সেটা বোধহয় আমার জানা হয়ে উঠত না কিছুতেই। যদি না এই পেশায় আমি গা ভাসাতাম এমন করে। জীবনের এই নানা টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ ভেসে ওঠে এই রাতের অন্ধকারে আচমকা আমার মনের মাঝে। আর আমি চমকে উঠি কেমন করে তাদের সেই কোলাজ দেখে।  এমন এক চরিত্র, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়ে কেমন আলগোছে, হাসিমুখে, নির্মোহ ভাবে, শুধু নিজের কাঁচা পাকা দাড়িতে হাত বুলিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিলো সে শুধুই আকাশ পানে তাকিয়ে। যে নীল আকাশের গা ঘেঁষে উড়ে যাওয়া সাদা বকের ডানায় লেগে থাকে মেঘের হালকা টুকরো। একদম যেনো সিনেমার পর্দার হিরোর মতোই। দেখে বোঝার উপায় নেই একদম। পেটে খাবার না থাকলেও মুখের হাসিটা অমলিন হয়েই বেঁচে আছে আজও এতোদিন পরেও। আর সেই বিখ্যাত সাদা পাকা নাসিরউদ্দিন স্টাইলের দাড়ি, কালো চুল, আর সব সময় ধোপদুরস্ত ফিটফাট একজন মানুষ। রাত নটা বাজলেই যাকে শ্রীরামপুরে...

শপিং মলের উদ্বোধনে সিঙ্গুর আন্দোলনের দাপুটে মন্ত্রী

নালিকুল স্টেশন বাজারে একটি শপিং মলের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বেচারাম মান্না হাজির। একসময় যাঁর অন্দোলনের ঠেলায় পড়ে দৌড়ে একপ্রকার পালিয়ে চলে যেতে হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে টাটা কোম্পানিকে। যে আন্দোলনের দগদগে ঘা আর সেই স্মৃতি ধীরে ধীরে আজ প্রায় মিলিয়ে যেতে বসেছে আমাদের কাছ থেকে। আজ সেই চাষার ঘরের মানুষ না হলেও সেই কৃষক আর শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকার নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেন সেই মানুষটাকেই কেমন যেন আজ শপিং মলের উদ্বোধনে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার।  একদম নালিকুল স্টেশনের কাছে ঝাঁ চকচকে শপিং মল। দোকানে সাজানো জিনিস পত্র। আর সেখানেই আমাদের মাননীয় মন্ত্রী বেচারাম মান্না। একদম কেমন একটু আমার অচেনা লাগলো যেন। সেই মুড়ি খেয়ে আলুর তরকারি বা শশা খেয়ে আন্দোলন শুরু করা জমি আন্দোলন এর অন্যতম পথিকৃৎ নেতা আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তাহলে টাটা কোম্পানির বিরুদ্ধে যে জমি দখল নিয়ে আন্দোলন সেই আন্দোলন এর মধ্যে ছিল জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যদিও সেখানেও সেই সময়ের শাসকদলের কর্মসংস্থানের যুক্তি।তবে এই নতুন শপিং মলের উদ্বোধনে তো আর ...

ভীড়ের মাঝে একা

জীবন জুড়ে শুধুই ভীড় আর ভীড়। নানা ধরনের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় মানুষের গন্ধে, বর্ণে , স্বাদের ভীড়ে আমি একদম একা হয়ে যেতে চাই। যে ভীড় উপচে পড়া রাস্তায় শুধুই হেমন্তের ভোরে শিশিরের ফিসফিস শব্দ, পাখির কিচির মিচির আওয়াজ,ধানসিড়ি ওই নদীটির তীর ধরে ঘুঘুর আকুল মন কেমন করা ডাক, উদাসী শালিকের ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া ওই হেমন্তের হলুদ ধানের মাঠ এর পাশ দিয়ে, হলুদ বসন্ত বৌরীর সেই আমলকীর গাছের পাতায়,আড়ালে আবডালে বসে কেমন যেন আমায় দেখে লজ্জা পাওয়া, আর তারপর চোখ নামিয়ে হঠাৎ করেই তার উড়ে চলে যাওয়া। আর মেঘের কোল ঘেঁষে সেই সাদা বকের, বুনো হাঁসের, আর সেই পানকৌড়ির জলে ভেজা ডানা মেলে উড়ে যাওয়া আকাশ জুড়ে। সত্যিই ওরাও যে ভিড়ের মাঝেই বড়ো একা। একা একাই ওদের যে এই বেঁচে থাকা। কেমন নিপাট হৈ চৈ হুল্লোড়হীন একটা জীবন নিয়ে বেশ মজা করে, আনন্দ করে। আর সেই ভোরের আলোয় আলোকিত হয়ে রাস্তার একপাশে গুটি শুটি মেরে শুয়ে থাকা ওই সাদা কালো ভুলো নামের কুকুরের। যে অন্তত এই সব মানুষদের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় একটু যেনো আলাদা , একটু যেনো অন্য রকমের। একটু একা একাই যেনো ওর এই আলগোছে জীবন কাটিয়...

গৌড় প্রাঙ্গণে আনন্দবাজার

গৌরপ্রাঙ্গনে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যের আনন্দের মেলা আনন্দবাজার। মহালয়ার ভোরবেলায় ঢাকের বাদ্যি আর সানাইয়ের মন কেমন করা সুরে মেতে উঠলো শান্তিনিকেতনের গৌড়প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও যে হবে আনন্দমেলা আনন্দবাজার। হ্যাঁ সত্যিই যেনো আনন্দের এই হাটে বেচাকেনার পসরা নিয়ে একদিনের জন্য বসে পড়া মন প্রাণ খুলে হৈ হুল্লোড় করে। এই মেলা শুরু হয় 1915 সালের 15 এপ্রিল নববর্ষের দিনে। কিন্তু আগে এই মেলাকে একসময় বলা হতো বৌঠাকুরাণীর হাট। সেই সময় আশ্রমের মহিলারা নিজেদের হাতের তৈরি জিনিস নিয়ে মেলায় বসতেন। মেলার আয়োজন করতেন তারা। আনন্দ করে বেচাকেনা হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় একবার গরমের ছুটির আগে এমন মেলা নাকি হয়েছিল। যার নাম ছিল আনন্দবাজার। পরে এই মেলার নামে হয়ে যায় আনন্দমেলা। সত্যিই আনন্দের এই মিলন মেলা।  প্রথমদিকে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই মেলা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে বিশ্বভারতীর সব বিভাগের পড়ুয়ারা এই মেলায় যোগদান করে। এই মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের বেচা কেনার লাভের টাকার কিছু অংশ জমা পরে বিশ্বভারতীর সেবা বিভাগে। সেখান থেকে এ...