সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বানরের উৎপাত

শীত একটু কম। ঠাণ্ডার প্রকোপ কমতেই ওরা বেরিয়ে পড়েছে সঙ্গী নিয়ে, দল বল নিয়ে। একদম যেনো ঠিক চড়ুইভাতির মুডে। এই গাছ থেকে ওই গাছ কোনো জায়গা ঠিক পছন্দ হচ্ছে না ওদের। ভীষন খুঁতখুঁতে স্বভাবের জন্য ওরা, স্থির হয়ে দু দণ্ড এক জায়গায় বসতেই পারে না ওরা। খালি এই ডাল আর ওই ডাল ধরে ঝাঁপ দেওয়া। 

শান্তিনিকেতনের বাংলাদেশ ভবনের ফাঁকা রাস্তায় দুপুরের দিকে লোক জন কম। একদম সুন সান রাস্তা। আর তাই সুযোগ পেয়ে ওরা দুপুর বেলায় পেটের টানে, খাবারের খোঁজে বের হয়ে পড়েছে। আসলে পেট বড়ো বালাই যে। গাছ পালা কমছে এই শহরেও। কমছে ফলের গাছও। আগে যেভাবে সহজে কিছু পাওয়া যেত খাবার দাবার এখন সেটা অনেক কষ্টকর হয়ে গেছে। আর তাই ওদেরও মাথার ঘাম পায়ে ফেলে পেট ভরাতে হচ্ছে বেশ কসরৎ করেই। 

গরম কালে তাও আম আদমির আম, জাম, কাঁঠাল খেয়ে পেট ভরানো যায়। কিন্তু শীতকালে খুব বেশি ফল পাওয়া মুশকিল। আর চারিদিকে যেভাবে সহজেই ফ্ল্যাট বাড়ি উঠছে তাতে যে বাড়িতে দু একটা কলা গাছ বসাত সেগুলো সব আর নেই। এই সব নিয়ে বেশ চিন্তায় ওরা। কিন্তু উপায় কি। বেঁচে থাকার লড়াই করতেই হবে। না হলে বিলুপ্ত হয়ে যেতে হবে সাধের পৃথিবী থেকে। 

বানর স্তন্যপায়ী প্রাণী। এদের কেউ কেউ বানর, বান্দর বা বাঁদর নামেও ডাকে।এক প্রকারের স্তন্যপায়ী প্রাণী এটি। মূলত সিমিয়ান প্রাইমেট গণের তিনটি দলের মধ্যে দুইটির সদস্যরা সাধারণ ভাবে বানর নামে পরিচিত। এই দলগুলি হলো, নতুন পৃথিবীর বানর, পুরাতন পৃথিবীর বানর এবং নরবানর। এদের প্রধানত দেখা যায় দক্ষিণ এশিয়া ও উত্তর আফ্রিকায়।

 বানর খুব বুদ্ধিমান ও সামাজিক জন্তু; অধিকাংশ প্রজাতিই গাছে বাস করে। নিরামিষভোজী হলেও এদের বাসস্থান ও খাদ্যে পর্যাপ্ত বৈচিত্র্য আছে। বাংলাদেশে ১০ প্রজাতির প্রাইমেটের মধ্যে রয়েছে ৫ প্রজাতির বানর। পৃথিবীতে বর্তমানে বিদ্যমান ১৯ প্রজাতির বানরের মধ্যে এক প্রজাতি ছাড়া অন্য সবগুলি ছড়িয়ে আছে এশিয়ায় আফগানিস্তান থেকে জাপান, ফিলিপাইন থেকে বোর্নিও পর্যন্ত।


'বানর'.
বৈজ্ঞানিক শ্রেণীবিন্যাস
জগৎ:
প্রাণী জগৎ
পর্ব:
কর্ডাটা
শ্রেণী:
স্তন্যপায়ী
বর্গ:
প্রাইমেট in part
উপগোষ্ঠী
"শ্রেণীবিন্যাস দেখুন"

বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে বানরের আবাসস্থল লাল বর্ণে চিহ্নিত।অনুমান করা হয় বানরের উৎপত্তি সুদূর ৩.৫-৪ মিলিয়ন বছর পূর্বে।


আবাসস্থল

বর্তমানে দুই দলের বানর রয়েছে। যারা হল নব বিশ্বের বানর আর পুরাতন বিশ্বের বানর। নব বিশ্বের বানরেরা দক্ষিণ আমেরিকায় বাস করে। পুরাতন বিশ্বের বানরেরা আফ্রিকা এবং এশিয়ায় বাস করে। নব বিশ্বের বানরেরা পুরাতন বিশ্বের বানরদের থেকে ছোট। বানরদের প্রজাতির মধ্যে সবচেয়ে ছোট প্রজাতি হল পাইগিমিই মারমোসেট। সাধারণত এদের দৈর্ঘ্য হয়ে থাকে ১২ থেকে ১৫ সেন্টিমিটার । এদের ওজন প্রায় ১২০গ্রাম। এরা ব্রাজিল, কলম্বিয়া ও ইকুয়েডরে বাস করে।

বানরদের লম্বা হাত ও পা আছে যার সাহায্যে এরা এক গাছ থেকে অন্য গাছে লাফ দেয়। যে সব বানরদের লম্বা লেজ আছে তারা তাদের লম্বা লেজ দিয়ে গাছে ঝুলে থাকতে পারে। বানরের দেহ লোমে আবৃত। উষ্ণ রক্তের প্রাণী। হৃৎপিণ্ড চার প্রকোষ্ঠ বিশিষ্ট।

শ্রেণীবিন্যাস
বানরের প্রজাতিগুলি হচ্ছে:

রেসাস বানর (Rhesus Macaque, Macaca mulatta)
খাটোলেজি বানর (Stumptail Macaque, Macaca arctoides)
আসামি বানর (Assamese Macaque, Macaca assamensis)
প্যারাইল্লা বা লম্বালেজী বানর (Crab-eating Macaque/Long-tailed Macaque, Macaca fascicularis)

মুখপোড়া হনুমান
চশমাপরা হনুমান
লাল বান্দর প্রাচীন বিশ্বের বানর প্রজাতির মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত বানর বিশেষ।
আসামি বানর স্তন্যপায়ী প্রাণীর প্রজাতি।
উল্টোলেজি বানর স্তন্যপায়ী প্রাণীর প্রজাতি।

 আসল কথা হলো বিবর্তনের মধ্য দিয়ে ধীরে ধীরে এরা এক সময় ধীরে ধীরে মানুষ রূপ পেয়েছে কি না সেটা নিয়ে অনেক বিতর্ক, অনেক মত আছে। সে প্রসঙ্গ বাদ দিলেও তবু এরা কথা না বলতে পারলেও বোধ হয় অনেক কিছু বোঝে। আকারে ইঙ্গিতে বোঝালে বুঝতে পারে। এদের পোষ মানানো যায়। এসব নিয়ে গেছোরা গাছে বেশ ভালই আছে। বন্যরা বনে সুন্দর, শিশুরা মাতৃক্রোড়ে।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ইটিভির পিনাকপাণি ঘোষ

কিছু মানুষ কত কাছে থেকেও পাশাপাশি এক জায়গায় বাস করেও একসাথে একসময় কাজ করেও যে কত দূরে রয়ে যান নিজের হাসিমুখ নিয়ে আর সেই চেনা ছন্দ নিয়ে সত্যিই বেশ ভালো মজার ব্যাপার কিন্তু এটা জীবনের মেঠো পথে। সেই ইটিভির বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে ঘুরে ঘুরে স্ট্রীট ফুডের ছবি তোলা আর নানা খবর করে খাওয়া দাওয়ার এপিসোড করে একসময়ে বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে যাওয়া ইটিভি নিউজে। আর আমাদের জেলায় বসে সেইসব হাঁ করে দেখা আর কেমন মনের ভেতর অস্থিরতা তৈরি হওয়া। একেই বলে কলকাতার রাজপথের সাংবাদিক বলে কথা।  সেই যে বার রাষ্ট্রপতি এলেন জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে সেই অনুষ্ঠানের বিশেষ কার্ড জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করা ইটিভির চাকরি করার সুবাদে। কোনো রকমে সেই কার্ড জোগাড় করে এনে দেওয়া তাঁকে আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য। আর সেই একদিন দুপুর বেলায় খুব সম্ভবত করোনা শেষ পর্বে বালিঘাট স্টেশন থেকে অফিস যাওয়ার সময় এসি পঞ্চাশ এর বাস এর ভিতরে দেখা হওয়ায় কত গল্প করা দুজন মিলে পুরনো দিনের। আবার উত্তরপাড়ার সেই বিখ্যাত চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে হাসি মুখে দেখা হয়ে যাওয়া রাতের বেলায় কাঁঠালবা...

আমাদের সবার মৃনাল দা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক বাবা আর ছেলের লড়াই এর গভীর গোপন কাহিনী। এই সাংবাদিকতার পেশায় এসে কত লড়াই, কত অসম যুদ্ধ, করে যে কেউ সংসার টিকিয়ে রাখতে পারে হাসি মুখে কাউকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে। এমন করে কেউ টিকে থাকার চেষ্টা করেন সেটা বোধহয় আমার জানা হয়ে উঠত না কিছুতেই। যদি না এই পেশায় আমি গা ভাসাতাম এমন করে। জীবনের এই নানা টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ ভেসে ওঠে এই রাতের অন্ধকারে আচমকা আমার মনের মাঝে। আর আমি চমকে উঠি কেমন করে তাদের সেই কোলাজ দেখে।  এমন এক চরিত্র, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়ে কেমন আলগোছে, হাসিমুখে, নির্মোহ ভাবে, শুধু নিজের কাঁচা পাকা দাড়িতে হাত বুলিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিলো সে শুধুই আকাশ পানে তাকিয়ে। যে নীল আকাশের গা ঘেঁষে উড়ে যাওয়া সাদা বকের ডানায় লেগে থাকে মেঘের হালকা টুকরো। একদম যেনো সিনেমার পর্দার হিরোর মতোই। দেখে বোঝার উপায় নেই একদম। পেটে খাবার না থাকলেও মুখের হাসিটা অমলিন হয়েই বেঁচে আছে আজও এতোদিন পরেও। আর সেই বিখ্যাত সাদা পাকা নাসিরউদ্দিন স্টাইলের দাড়ি, কালো চুল, আর সব সময় ধোপদুরস্ত ফিটফাট একজন মানুষ। রাত নটা বাজলেই যাকে শ্রীরামপুরে...

শপিং মলের উদ্বোধনে সিঙ্গুর আন্দোলনের দাপুটে মন্ত্রী

নালিকুল স্টেশন বাজারে একটি শপিং মলের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বেচারাম মান্না হাজির। একসময় যাঁর অন্দোলনের ঠেলায় পড়ে দৌড়ে একপ্রকার পালিয়ে চলে যেতে হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে টাটা কোম্পানিকে। যে আন্দোলনের দগদগে ঘা আর সেই স্মৃতি ধীরে ধীরে আজ প্রায় মিলিয়ে যেতে বসেছে আমাদের কাছ থেকে। আজ সেই চাষার ঘরের মানুষ না হলেও সেই কৃষক আর শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকার নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেন সেই মানুষটাকেই কেমন যেন আজ শপিং মলের উদ্বোধনে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার।  একদম নালিকুল স্টেশনের কাছে ঝাঁ চকচকে শপিং মল। দোকানে সাজানো জিনিস পত্র। আর সেখানেই আমাদের মাননীয় মন্ত্রী বেচারাম মান্না। একদম কেমন একটু আমার অচেনা লাগলো যেন। সেই মুড়ি খেয়ে আলুর তরকারি বা শশা খেয়ে আন্দোলন শুরু করা জমি আন্দোলন এর অন্যতম পথিকৃৎ নেতা আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তাহলে টাটা কোম্পানির বিরুদ্ধে যে জমি দখল নিয়ে আন্দোলন সেই আন্দোলন এর মধ্যে ছিল জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যদিও সেখানেও সেই সময়ের শাসকদলের কর্মসংস্থানের যুক্তি।তবে এই নতুন শপিং মলের উদ্বোধনে তো আর ...

ভীড়ের মাঝে একা

জীবন জুড়ে শুধুই ভীড় আর ভীড়। নানা ধরনের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় মানুষের গন্ধে, বর্ণে , স্বাদের ভীড়ে আমি একদম একা হয়ে যেতে চাই। যে ভীড় উপচে পড়া রাস্তায় শুধুই হেমন্তের ভোরে শিশিরের ফিসফিস শব্দ, পাখির কিচির মিচির আওয়াজ,ধানসিড়ি ওই নদীটির তীর ধরে ঘুঘুর আকুল মন কেমন করা ডাক, উদাসী শালিকের ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া ওই হেমন্তের হলুদ ধানের মাঠ এর পাশ দিয়ে, হলুদ বসন্ত বৌরীর সেই আমলকীর গাছের পাতায়,আড়ালে আবডালে বসে কেমন যেন আমায় দেখে লজ্জা পাওয়া, আর তারপর চোখ নামিয়ে হঠাৎ করেই তার উড়ে চলে যাওয়া। আর মেঘের কোল ঘেঁষে সেই সাদা বকের, বুনো হাঁসের, আর সেই পানকৌড়ির জলে ভেজা ডানা মেলে উড়ে যাওয়া আকাশ জুড়ে। সত্যিই ওরাও যে ভিড়ের মাঝেই বড়ো একা। একা একাই ওদের যে এই বেঁচে থাকা। কেমন নিপাট হৈ চৈ হুল্লোড়হীন একটা জীবন নিয়ে বেশ মজা করে, আনন্দ করে। আর সেই ভোরের আলোয় আলোকিত হয়ে রাস্তার একপাশে গুটি শুটি মেরে শুয়ে থাকা ওই সাদা কালো ভুলো নামের কুকুরের। যে অন্তত এই সব মানুষদের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় একটু যেনো আলাদা , একটু যেনো অন্য রকমের। একটু একা একাই যেনো ওর এই আলগোছে জীবন কাটিয়...

গৌড় প্রাঙ্গণে আনন্দবাজার

গৌরপ্রাঙ্গনে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যের আনন্দের মেলা আনন্দবাজার। মহালয়ার ভোরবেলায় ঢাকের বাদ্যি আর সানাইয়ের মন কেমন করা সুরে মেতে উঠলো শান্তিনিকেতনের গৌড়প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও যে হবে আনন্দমেলা আনন্দবাজার। হ্যাঁ সত্যিই যেনো আনন্দের এই হাটে বেচাকেনার পসরা নিয়ে একদিনের জন্য বসে পড়া মন প্রাণ খুলে হৈ হুল্লোড় করে। এই মেলা শুরু হয় 1915 সালের 15 এপ্রিল নববর্ষের দিনে। কিন্তু আগে এই মেলাকে একসময় বলা হতো বৌঠাকুরাণীর হাট। সেই সময় আশ্রমের মহিলারা নিজেদের হাতের তৈরি জিনিস নিয়ে মেলায় বসতেন। মেলার আয়োজন করতেন তারা। আনন্দ করে বেচাকেনা হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় একবার গরমের ছুটির আগে এমন মেলা নাকি হয়েছিল। যার নাম ছিল আনন্দবাজার। পরে এই মেলার নামে হয়ে যায় আনন্দমেলা। সত্যিই আনন্দের এই মিলন মেলা।  প্রথমদিকে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই মেলা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে বিশ্বভারতীর সব বিভাগের পড়ুয়ারা এই মেলায় যোগদান করে। এই মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের বেচা কেনার লাভের টাকার কিছু অংশ জমা পরে বিশ্বভারতীর সেবা বিভাগে। সেখান থেকে এ...