দ্রুত দিন শেষ হয় এই চরাচরে পাখির ডাক শোনার দিন। দ্রুত দিন শেষ হয় ভালোবাসার মানুষের সাথে নিনড় বন্ধনের আর যোগাযোগের দিন। পলাশের হাসি মাখা সকালে এখন শুধুই অপেক্ষা আর অপেক্ষার প্রহর গোনা। তবুও আমরা বেঁচে থাকি একবুক আশা আর অপেক্ষা নিয়ে। ঘুঘুর ডাক শুনে আর বিরহী কোকিলের মন কেমনের কথা শুনে, কাঁচ পোকার গুনগুন আওয়াজ। শুকনো পাতার ফিসফিস নিঃশ্বাস,
মন কেমনের ভোরকে আঁকড়ে ধরে আষ্টেপৃষ্টে বেঁচে থাকা।
আর এটাই তো জীবন এর জলছবি, যেখানে দৌড় নেই, তাড়া নেই, হুটপুটি নেই, লুটোপুটি নেই,হৈ হুল্লোড় আর চিৎকার চেঁচামেচি নেই, শুধুই ভালোবাসার স্পর্শ আর বসন্তের বাতাস মাখা শিরশিরে ভোর আছে। যে
ভোরে আমায় ঘুম ভাঙিয়ে দেয় দোয়েল, ফিঙে, কোকিল, আর ঘুঘুর মন কেমন করা ডাক। আর আমি চুপ করে ওদের ডাক শুনি। কেমন যেনো থমকে যায় সেই আমার হারিয়ে যাওয়া দ্রুত ছুটে চলা জীবন।
মাঠের ধারে সবুজ ক্ষেতে যখন সুয্যি মামা ধীরে ধীরে জেগে ওঠে। ধানের শীষের ডগায় লাগে বসন্তের ঝিম ধরা ভালোবাসার বাতাস। যে বাতাসে আমের বৌলে ভালোবাসা জন্মায় ধীরে ধীরে গুটিপোকার মতোই। বৌলের গন্ধে মন ভরে যায়। লাল মাটির ধূসর পথে হাতছানি দেয় লাল পলাশের বুক কাঁপানো মিষ্টি হাসি। যে হাসির আবাহনীর সুরে মনের ভেলায় ভালবাসার জোয়ারে ভেসে যেতে ইচ্ছা হয় আবার। সেই যে বসন্তের প্রথম দিনে বলতে ইচ্ছা হয় আবার ভালবাসি ভালবাসি আজও আমি তোমায় ভালোবাসি।
শাল শিমুলের জঙ্গলে হারিয়ে যায় আমার করুণ আর্তি। ভালবাসার জন তো কবেই উধাও হয়ে গেছে আলপথ ধরে, সেই মেঠো রাস্তা ধরে, লাল মাটির ধূসর গন্ধ গায়ে মেখে অজানা অচেনা পথে। যে পথের সন্ধান পাইনি আমি আজও। এই বসন্তের ঝিম ধরা ভোরে ভালোবাসার আগুনে বাতাস গায়ে মেখে বেঁচে থাকতে সাধ হয় আমার। লাল পলাশের ডালে তখন হলুদ বসন্ত বৌরীর খেলা করা হুটোপুটি আর লুটোপুটি খাওয়া। গ্রামের সেই মংলা তখন ওর কালো মিষ্টি বউকে কাছে টেনে নেয় মাটির নিকানো ঘরে। ফিসফিসিয়ে বৌ বলে লজ্জা লাগে যে। আড়চোখে দুর থেকে দেখে লজ্জা পায় হলুদ বসন্ত বৌরি। লাল পলাশ, ভোরের আকাশ আরও কতজন। দূরে মাদল বাজে। টুপ করে মাটিতে খসে পরে পলাশ। ভালোবাসায় সিক্ত হয় ওরা দুজন। বসন্ত এসে গেছে যে দুয়ারে আমার।
আজি দখিন পবনে....
দোলা লাগিল বনে বনে......
বসন্ত এসে গেছে - অভিজিৎ বসু।
দশ মার্চ, দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন