সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

টিভির পর্দায় অন্যতম নায়ক দীপক ঘোষ

সেই স্কন্দ পূরাণ আমলের বা তারও আগের যুগের ত্রেতা দ্বাপর বা আরও আগের সেই ইটিভির রাত নটার খবর। সেই লোকের বাড়ী বাড়ী রামোজি রাও এর খবরের চাকা ঘুরছে নির্দিষ্ট সময়ে ঘড়ি ধরে। সেই চেনা খবরের আওয়াজ আর সেই চেনা সুর পাড়ায় পাড়ায়, মহল্লায় মহল্লায় আর শহরে, গ্রামে সর্বত্র। তখনও বাজারে এতো টিআরপি রেটিং নিয়ে হৈ চৈ হুল্লোড় আর দূর্নীতি শুরু হয়নি রাজ্য জুড়ে। দোল পূর্ণিমার বাঁকা চাঁদের মত কার দিকে সেই টিআরপির তালিকা প্রকাশ হয়ে ঢলে পড়বে সেটাও শুরু হয়নি সপ্তাহে সপ্তাহে বারের ঠাকুরকে পূজো দেওয়ার মতই। 

আর সেই তখন প্রতিদিন মুগ্ধ হয়ে গমগমে গলায় একটা সুন্দর রিপোর্টারকে দিল্লী থেকে টিভির পর্দায় দেখতে পাওয়া। বাংলার খবরের মাধ্যমে একে কি বলবো আমি বললেই রেগে যাবে হয়তো দু চারটে গাল দেবে আমায় গম্ভীর গলায়। পাগলা এসব কি বলছিস রে। কি বলি বাংলা সংবাদ মাধ্যমের অমিতাভ বচ্চন না মিঠুন চক্রবর্তী। উত্তম কুমার না কি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। এটা পড়ে রেগে গেলে দুটো গাল দেবে আমায় আর কি করবো। সেই কুচবিহার থেকে ওর দিল্লী সফরে চলে যাওয়া। খবরের দুনিয়ায় নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা নিজের কাজ আর নিষ্ঠার জোরে। কোনোও দাদা, দিদি,কাকা, বা রাজনৈতিক জ্যাঠা ধরে নয়। 

সেই দিল্লী থেকে সংসদীয় রাজনীতি থেকে একটু সরে এসে রাজ্য রাজনীতিতে প্রবেশ করা হাসিমুখে। কাজ আর কাজের জোরে। সেই বাম আমল থেকে তৃণমূল আমল। সেই তৃণমূলের প্রথম ব্রিগেড এর সেই দাপুটে রঙিন কালার বয় মন্ত্রী মদন মিত্রের ঘরে এক্সক্লুসিভ ইন্টারভিউ নেওয়া সেই মন্ত্রীর টেবিল এ রাখা তিনটি হনুমান। যাদের চোখ চাপা নিজের হাতে, যাদের কানে। হাত দিয়ে ঢাকা আর মুখ বন্ধ বন্ধ। সেই বিখ্যাত সাক্ষাৎকার পর্বের শেষে এই ছবি দেখিয়ে শেষ করা। পরে সেই মদন মিত্রের ইন্টারভিউ নিতে গিয়ে আর অমন সাক্ষাৎকার নিতে পারেনি সেই সময় এর দু নম্বর চ্যানেলের বিখ্যাত মহাকরণের মহিলা সাংবাদিক। আসলে কার সাক্ষাৎকার কি নিতে হবে তাঁর মুখ দিয়ে কি বলাতে হবে সেটাই ছিল তার একমাত্র কাজের আসল কেরামতি। যা করেই সে বাজিমাৎ করেছে চুপ চাপ ফুলে ছাপ দিয়েই। 

আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় সেই বিখ্যাত সাংবাদিক দীপক ঘোষ এর কথা। যাঁর কথা না লিখলে সম্পূর্ণ হয়না আমার এই আঁকিবুঁকি ব্লগ। সেই মহাকরণের পাঁচ নম্বর মনে হয় সেই পেছনের গেটে আমি, সেই পিন্টু আর দীপক ঘোষের আড্ডা মারা চা খেতে খেতে বিকেল হলে। সেই পুরোনো দিনের কুচবিহার এর গল্প, দিল্লির রাজনীতির গল্প, সেই ভোট এর সময় জেলায় জেলায় ওর ঘুরে বেড়ানোর গল্প শুনে মজা পাওয়া আমাদের। 

একদম যেনো ঠিক সুনীল গাভাস্কার এর মতো ধরে ধরে শক্ত পিচে ব্যাট করা ওর এই দীর্ঘ মিডিয়ার জীবনে। অন্যদিকে উইকেট পড়লেও ওর উইকেট একদম শক্ত হয়ে ধরে আছে ও চোয়াল শক্ত করে বোলারের বাউন্সার সামলে। সেই ধীরে সুস্থে এগিয়ে চলা মহাকরণের এদিক থেকে ওদিক। এই ঘর থেকে ওই ঘর। ঝাঁপিয়ে পড়ে দৌড় ঝাঁপ করে নয়। একদম দুলকি চালে সবার শেষে মন্ত্রীর ঘরে পৌঁছেও কেমন সবকিছুই নিজের দিকে টেনে নেওয়া হাসতে হাসতে। মন্ত্রী, মন্ত্রীর পি এ, বাকি রিপোর্টারদেরও বোকা বানিয়ে। 

কেমন একটা চৌম্বকীয় ক্ষমতা আছে ওর। খুব বড়ো জায়গায় কাজ করেও সিটিভিএনের পিন্টু আর পাঁচ মিনিটের সেই ইটিভির খবর এর আমার সাথেই হাসিমুখে গল্প করতো কত। আসলে বোধহয় জেলার গন্ধটা ওর গা থেকে উবে যায়নি দিল্লীর সংসদ ভবন আর কলকাতার মহাকরণ ঘুরলেও। আর তাই বোধহয় আমাদের মত পিছিয়ে পড়া চ্যানেলের লোকদের সাথেই সুখদুঃখের কত গল্পই না হতো। সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়ে যায় আমারএই গভীর রাতে। 

পিন্টু আজ কোথায় কি করে কে জানে। সেই পিন্টুর খৈনি বানিয়ে দেওয়া। সেই চা এর ভাঁড় নিয়ে আলোচনা করা জোর কদমে মজলিশ করে। আর তার মধ্যে খবর আসা মূখ্যমন্ত্রী সাংবাদিক বৈঠক করবেন প্রেস কর্নারে। সুখের আড্ডা, মজার গল্প আর চা এর ভাঁড় ফেলে দৌড়ে যাওয়া প্রেস কর্নারে। মূখ্যমন্ত্রীর ঘরের বাইরে সাংবাদিক বৈঠকে আসতেন সেই সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ধীরে ধীরে বন্ধ হলো মহাকরণ, বন্ধ হলো আমাদের সাংবাদিক এর জীবন। পিন্টুর আর আমার। 

কিন্তু আজও কেমন করে লড়ে যাচ্ছে সে হাসিমুখে। এই শহরের রাজপথে হাসি মুখে রোদে জলে ঝড়ে কাজ করে যাচ্ছে সে হাসিমুখে আজও। সত্যিই অসাধারণ এই সাংবাদিক জীবনের ওর দৌড়। অসাধারণ এই মিডিয়ার দীর্ঘ জীবন ওর। যে জীবনের কথা লিখতে ইচ্ছা হলো আমার রঙের দিনে একটা ওর ছবি দেখেই। সেই একদিন ওর ফেসবুকের পাতায় কুন্ডু দার ছবি দেখে ওকে লিখে ফেলা কুন্ডুদার নম্বর পাওয়া যাবে। সেই ওর এই উত্তরে না শুনে একটু মুষড়ে পড়া আমার। তবু আর কিছুই বলিনি আমি।


আজ রাতের বেলায় ফিরে এলো মহাকরণের সেই প্রেস কর্নার, সেই লম্বা বারান্দা, সেই মদন মিত্রের ঘরে সুন্দর জলে মাছেদের খেলা করা। সন্ধ্যা হলেই সাংবাদিকদের ভীড় উপচে পড়া সেই ঘরে। সেই সুব্রত মুখোপাধ্যায় এর ঘরে দাঁড়ানোর জায়গা নেই। মন্ত্রী অরূপ রায় এর ঘরে তো দাঁড়ানোর জায়গা মিলতো না কিছুতেই। সেই এক কর্ণারে সরকারের ভারী মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এর ঘরে শিল্প সম্ভাবনা নিয়ে ভারী আলোচনা। সেই আমলের বিখ্যাত কাগজের সাংবাদিক বর্তমানে যিনি বিজেপির নেতা। গম্ভীর মুখে খবর না পেয়ে আমাদের সবার বেরিয়ে আসা। কিন্তু পরদিন আসল খবর লিখে দেওয়া সেই বর্তমানের নেতা সেই প্রাক্তন সাংবাদিকের। 
সত্যিই অসাধারণ দিনগুলো বেশ ছিল কিন্তু সেই সময়। সেই এত কড়া নজরদারি ছিল না আমাদের সবার উপর। কে কোন ঘরে গেলো, কোন আমলা কাকে ডেকে খবর দিলো সে নিয়ে রাজনীতি আর দলাদলি আর ভাগাভাগি ছিল না সাংবাদিকদের মধ্য। কোন সাংবাদিকরা সরকারের পক্ষে আর কারা বিরুদ্ধে এমন দুটো শ্রেণীও ছিল না ততটা প্রকট হয়ে এই বিশ্ব বাংলর সাংবাদিকতায়। যেখানে আমরা আর ওরা তৈরি হয়নি সেই ২০১১ সালে এত প্রকট হয়ে।‌ 

ধীরে ধীরে কেমন করে বদলে গেলো যেনো সবকিছুই। বদলে গেলো মহাকরণ এর জায়গা। একতলার ঘরে বসে রাজ্য চালানো সংবাদিকদের হাতের নাগালে পাওয়া মুখ্যমন্ত্রীও কেমন নবান্নের চৌদ্দ তলায় আটকে গেলেন। আটকে গেলো যখন তখন সাংবাদিকদের খবর পাওয়ার রাস্তাও। তবু এতো কিছুর মাঝেও কেমন কঠিন ঘূর্ণি পিচে আজও গম্ভীর হয়ে কপিবুক স্টাইলে ব্যাট করে যাচ্ছে আমাদের সবার প্রিয় সেই দীপক ঘোষ।

 ভালো থেকো তুমি দাদা। দোলের আর হোলির শুভেচ্ছা নিও। আর তোমার মনে হলে ভুল লিখলে একটু কম করে গাল দিও আমায় ক্ষমা করে দিয়ে। আর তোমার জানলার ধারে সেই গোলাপ এর ফুটে ওঠা, সেই জানলার ধারে গাছে ফুল ধরে মন ভালো হয়ে যাওয়ার গল্প শুনতে হবে একদিন। আর তোমার সেই বিখ্যাত ক্যাপ্টেন এর গল্প। সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় বাংলা মিডিয়ার অন্যতম নায়ক সেই রিপোর্টার এর কথা লিখে ফেললাম আমি আজ।

টিভির পর্দার অন্যতম নায়ক দীপক ঘোষ - অভিজিৎ বসু।
পনেরো মার্চ দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

জামালপুরের প্রদীপ দা

আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায় বর্ধমানের জামালপুরের সেই দাপুটে ঠোঁট কাটা সাংবাদিক প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় এর কথা। সেই বিখ্যাত সুভাষ তালুকদার এর কাগজ সংবাদে মাত্র এক টাকার কাগজে কাজ করা সংবাদ পত্রিকার দাপুটে সাংবাদিক সেই প্রদীপ দা। সেই মুখ্যমন্ত্রীর সভায় বাঁশের ব্যারিকেডের এপারে দূরে দাঁড়িয়েও যে খবর করা যায় সেটা বড়ো মিডিয়ার সাংবাদিকদের হাসি মুখে দেখিয়ে দিয়ে, আর তাদের খবরের ময়দানে গোল দিয়ে শুধু খবরকে ভালোবেসে ছোটো কাগজে কাজ করে চলা সর্বদা হাসি মুখের সেই আমাদের প্রদীপ চ্যাটার্জী দা।  কোথাও কোনো অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদে মুখর হয়ে যাওয়া আর এক দৌড়ে বেরিয়ে পড়া ঝোলা কাঁধে সেই খবরের খোঁজে সেই জামালপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের সেই প্রদীপ দা। সেই বিখ্যাত পন্ডিত রবিশঙ্কর আর উদয়শঙ্কর এর আপন মাসতুত ভাই এর ছেলে সেই প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় দাদা। সেই বামদের আমলে জামালপুরের এলাকায় দাপিয়ে খবর করে ছুটে বেড়ানো সেই প্রদীপ দা। সেই তৃণমূল আমলেও একভাবেই ছুটে বেরিয়ে কাজ করা আমাদের সদা ব্যস্ত প্রদীপ দা।  সেই বাবার অসুস্থতার কারনে বড়ো সংবাদ মাধ্যমে কাজ না করেও...

আমার স্যার কাজীদা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ আমার স্যার এর কথা। যার লেখা আজ হঠাৎ চোখে পড়লো একটি কাগজে। আর স্যার এর নামটা দেখেই মনে পড়ে গেলো নানান কথা। হ্যাঁ, সেই কাজী গোলাম গাউস সিদ্দিকী। যাঁর সাথে আমার আলাপ আর দেখা হয়েছিল সেই অজিতদার ফ্রিল্যান্স ছকু খানসামা লেনের ফ্রীল্যান্স প্রেস ক্লাবের অফিসে খুব সম্ভবত। হাসিখুশি বেশ অজাতশত্রু এই মানুষটিকে দেখেই আমার মনে হয়েছিল যে রিপোর্টারদের প্রভূত ক্ষমতা থাকে বোধহয়। তাই পকেটে পেন আর সেই ফোনের ছোট্টো নোটবুক দেখেই আমার মনে হয়, যে ক্ষমতার স্বাদ পাবার জন্য সেই সদ্য গ্র্যাজুয়েশন করে আমার কচি মনে সাংবাদিক হবার বাসনা জাগে সেই সময়।  কোনো প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক নয়, কোনো অফিসে মাছি মারা দশটা পাঁচটার লোয়ার ডিভিশন এর কেরানি নয়, মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ নয়, ল্যাবরেটরিতে টেকনিশিয়ান এর কাজ নয়, এল আই সি বা পোষ্ট অফিস এর এজেন্ট নয়, কোনো মুদি দোকানে হিসেব পত্র লেখার কাজ নয়, স্বাধীন ব্যবসা করা নয়। শুধুই সাংবাদিক হবার স্বাদ।  কাগজে সাদা কালো অক্ষরে নিজের নাম ছাপা হবে, সেই নাম দেখে বুক ফুলে যাবে, পাড়ায় প্রতিবেশীরা সহ স...

কুড়ি থালা দশ টাকা আর রসিক মুলুর জীবন

নাম মুলু হাঁসদা। বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানার চরিচা গ্রাম পঞ্চায়েত এর চর ইচ্ছা রঘুবরপুরের বাসিন্দা মুলু। আজ মুলুর জীবন কথা। গ্রামের নামটা ভারী অদ্ভুত। চর ইচ্ছা রঘুবরপুর। যে গ্রাম অন্য পাঁচটা গ্রামের মতই।সাদামাটা এই গ্রামে দারিদ্র্য, অপুষ্টি আর কর্মহীন জীবনের জলছবি সুস্পষ্ট। আর সেই গ্রামের মহিলারা নিজেদের সংসার রক্ষা করতে গাছের পাতাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে। গাছের পাতা মুলুদের জীবনের জিয়ন কাঠি। যে জিয়ন কাঠিতে তারা ভোর হতেই পেটের টানে চলে যায় জঙ্গলে। খস খস শব্দ করে পায় হেঁটে তারা পাতা তোলে। গাছ থেকে টুপ টাপ করে ঝড়ে পড়া পাতাকে একটা একটা করে নিজের শাড়ির আঁচলে ভরে নেয়। তার পর সব পাতাকে বস্তায় ভরে ঘরে ফেরে।  ঠিক যেভাবে তারা পুকুরে নেমে শামুক গেঁড়ি আর গুগলি তোলে। যে ভাবে তাদের উদর পূর্তি হবে বলে। আর এই পাতাও যে তাদের পেট ভরায়। একটা একটা পাতাকে নিজের সন্তানের মতো আলগোছে ছুঁয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে চুমু খায় মুলু, বলে তোরা না থাকলে কি করতাম কে জানে। মাথার ওপর শাল সেগুনের বিশাল আকারের গাছগুলো চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে আর তারা চুপ করে শোনে মুলুর কথা।  একে অপ...

শুভ মকর সংক্রান্তি

মকর মানেই নতুন জামা কাক ভোরে স্নান, রাত্রি জেগে মিঠে সুরে টুসুমণির গান। মকর মানেই পিঠে - পুলির গন্ধে ম - ম হাওয়া, ডুলুং পাড়ে টুসুর মেলায় দল বেঁধে যাওয়া। মকর মানেই মোরগ লড়াই পাহুড় জেতার সুখ, সন্ধ্যা - রাতে মাংস পিঠের স্বাদে ভরা মুখ। মকর মানেই হাতি - ঘোড়ার পুজো করম তলে, সান্ধ্য হাওয়ায় মন উদাসী দিমির দিমির বোলে। আসলে আজ এই মকর সংক্রান্তির দিন, টুসু মেলার দিন, টুসু গানে নিজেকে মাতিয়ে দেবার দিন। অজয় এর ধারে জয়দেব কেঁদুলির মেলায় ভীড়ের মাঝে নিজেকে হারিয়ে দেবার দিন। অজয় এর জলে ডুব দিয়ে স্নান করে পূণ্য অর্জনের দিন। আর নদীর ধারে মোরগ লড়াই এর দিন। আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর দিন, সুতো লাটাই হাতে আকাশ পানে তাকিয়ে থাকার দিন। কেমন যেনো রাশির একটি স্থান থেকে অন্য রাশিতে স্থান পরিবর্তনের দিন। সূর্যের দেবতাকে সকালে উঠে স্নান সেরে প্রণাম জানিয়ে শক্তি সঞ্চয় এর দিন। সূর্যের উত্তর দিকে চলে যাবার দিন। ধীরে ধীরে শীতকাল চলে যাওয়ার দিন।  এই মকর সংক্রান্তি এর ইতিহাস ও ভারতীয় ঐতিহ্যের গভীর শিকড় রয়েছে। এটি কৃষি চক্র এবং ফসল কাটার মৌসুমের সাথে জড়িত। এই মকর সংক্রান্তি চ...