সেই পঞ্চ কন্যার এক কন্যা। জল জীবন মিশনের বাড়ী বাড়ী জল পৌঁছে দেওয়া প্রকল্পের এক জল কন্যা বা জল পরী বলা যায় তাকে। ঘরে খাওয়ার জল আসুক বা না আসুক তাতে কী কিন্তু একদম জলের জন্য জীবন দিয়ে দেওয়া সেই সিউড়ির পল্লবীর কথা আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় আজ সেই বিখ্যাত পল্লবীর কথা।
ওর এই নিদাঘ চৈত্র সেলের বাজারে ঘন ঘন সমাজ মাধ্যমে ওর ছবি বদলানো দেখে ইচ্ছা হলো ওকে নিয়ে কিছু লিখতে আমার। তবে পঞ্চকন্যার এই এক কন্যা জলের বোতল হাতে নিয়ে জল জীবন মিশন এর কাজে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে চারিদিক জেলা জুড়ে। কখনও ছবিতে আবার কখনও সশরীরে। হাসি মুখে ঘুরে বেড়ানো ওর। সেই সারাদিন না খেয়ে দিল্লী থেকে আসা কেন্দ্রীয় দলের নানা প্রতিনিধিদের সাথে মুখে মেকআপ করে লাল টকটকে লিপস্টিক পড়ে। দিনের শেষে মুড়ি আর চপ খেয়ে পেট ভরানো আমাদের। সেই অফুরন্ত প্রাণশক্তিতে ভরপুর একটি অতি সাধারণ ঘরের মেয়ে পল্লবী। অন্য আর পাঁচটা মেয়ের থেকে একটু আলাদা যেনো। পুলিশের কাজ করলেই ওকে মানাতো বেশি। ওর কথায় কে দেবে কাজ বলুন আমায়। কাজের যা বাজার পড়েছে দাদা।
ওর সাথে আলাপ হলো এই সুখা বীরভূমের জল জীবন মিশনের প্রকল্পের কাজে গিয়ে। যদিও সেই কাজ বেশি দিন রক্ষা হয়নি আমার। জলের মধ্য যে এত রাজনীতি লুকিয়ে আছে চোরাগোপ্তা সেটা বুঝতে পারিনি আমি। যাক সেটা নিয়ে কোনোও আফশোষ নেই আমার আজ এই বেশ দিব্যি আছি আমি। কারুর গুগল মিট এর জন্য ভয়ে কাঁপতে হয় না আমায় রাত দিন। কেউ আমায় সিউড়ির অফিসে ডেকে পাঠায় না তলব করে না। বলে না কেনো এটা করতে পারা যায়নি জবাব দিন। তাতে টোটো চালকের জীবন বেশ ভালো জীবন। এলোমেলো এলেবেলে বিন্দাস জীবন নিয়ে ঘুরে বেড়ানো ওই জলের জটিল আবর্তের জীবন থেকে বেশ ভালো জীবন কিন্তু আমার।
আজ হঠাৎ করেই পল্লবীর কথা মনে পড়ে গেলো আমার। যে কোনো সময় ওকে ফোন করে জিজ্ঞাসা করি আমি কি খবর গো তোমার। কিছু মনে করে না ও। স্কুটি নিয়ে ওর এদিক ওদিক ছুটে বেড়ানো। বাড়ীর কাজ সামলে ঘর এর কাজ সামলে দৌড়ে বেড়ানো। শুধুই একটু ঝকমকে ছবির জগতে উড়ে বেড়ানো। পলাশ গাছের নিচে বসে থাকা ওর। নদীর ধারে অপেক্ষায় থাকা ওর। গাছের নিচে দাঁড়িয়ে ছবি দেওয়া ওর। বেশ ভালই লাগে ওকে দেখে। কত কিছুই যে মানুষ বুকে লুকিয়ে ঘুরে বেড়ায় এই উজ্জ্বল রঙিন ছবির মাঝে সেটা আর কে জানে। নাটক করে বেড়ায় হাসি মুখে সেটা ওকে দেখে বোঝা যায়না আর।
সেই চন্দননগরে জগদ্ধাত্রী পূজো উপলক্ষে শ্রীরামপুরে যাওয়া ওদের। সেই হৈ চৈ হুল্লোড় করে কাটিয়ে দেওয়া। সেই সব একসাথে খাওয়া,ঘোরা আর আনন্দ করা। সেই কত কত ছবি তোলা ওদের। এই সবের মাঝে ভেঙে গেছে পঞ্চকন্যার সেই সুখের টিম। আজ ওর এই ছবি দেখে সেই সব ফেলে আসা দিনের কথা মনে পড়ে গেলো আমার। যা বেশ আনন্দের জোয়ারে ভাসা দিন ছিল। একটা বেঁধে থাকা বেঁধে রাখা দিন ছিল সেই সময়।
সব কী আর একভাবেই থাকে। এই দুপুর বেলায় খাঁ খাঁ রোদ মেখে জল আনার কাজ করছে ওরা। সরকারী লাল ফিতেয় ফাঁস কাটিয়ে এগোতে চাইছে ওরা সদলবলে। কিন্তু এতোই কি সোজা এগিয়ে চলা সব বাধা কাটিয়ে সরকারের কাজে। কেমন করে যেন শ্লথ হয় কাজের গতি। ঠিকাদার এর হাতে পড়ে হাবুডুবু খায় জলের কাজ। ইঞ্জিনিয়ার আর ঠিকাদার এর অশুভ আঁতাতে জল আসেনা গ্রামে গঞ্জে নানা জায়গায়। আর গ্রামে জলের কথা বলতে গিয়ে গাল শোনে জল জীবন মিশনের কর্মীরা। সত্যিই অসাধারণ এই সিস্টেম।
আর তার মাঝেও কেমন বুক চিতিয়ে লড়াই করে এরা। পল্লবী চোখে রোদ চশমা পড়ে বেড়িয়ে পরে এদিক থেকে ওদিক হাসিমুখে দৌড়ে বেড়ায়। আশ্বাস দেয় এই তো আসবে এইবার জল। শুধুই নিজের পেটের যোগান দিতে আর ঘরের মানুষদের মুখে একটু হাসি ফোটাতে। সত্যিই অসাধারণ এই জল আর জীবন। আর সেই দুই এর মিশন। যে মিশন এর মাধ্যমে আপনি, আমি সারা দেশের মানুষ বিশুদ্ধ পরিশুদ্ধ পানীয় জল পাবো বলে অপেক্ষা করি। কিন্তু সেই জল পেতেও কত যে রাজনীতি আর প্যাঁচপয়জার নেতা, মন্ত্রীর, ঠিকাদার এর, ইঞ্জিনিয়ার এর কে জানে। সত্যিই বিচিত্র আমাদের দেশ। বিচিত্র আমাদের দেশের জল জীবন আর তার মিশন। তুমি ভালো থেকো পল্লবী।
পঞ্চ কন্যার এক কন্যা পল্লবী - অভিজিৎ বসু।
আঠাশ মার্চ দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন