চারিদিকে উজ্জ্বল ফাগুনে রঙিন, সব চিত্রায়িত মুখ আর মুখোশের ভীড়।
হাসি মাখা উজ্জ্বল মুখের ভারে ন্যুব্জ, আমার বসন্তের লজ্জা মাখা ভোর।
দুমড়ে মুচড়ে গেছে আমার সকাল, শালিখের ডানায় ভর করে কেমন অলস পায়ে।
ডাহুকের ডাকে থমকে দাঁড়িয়ে গেছে নিস্তরঙ্গ দুপুর, চলমান ভঙ্গুর শরীর, দাঁড়িয়ে গেছে ল্যাম্প পোস্টের ছায়া, গোটা একটা নাতিদীর্ঘ জীবন, আরও কত কি।
পুরোনো অ্যালবামে এখন শুধুই জীবনের ছায়া, প্রচ্ছায়া মাখা, রঙিন ভালবাসার স্মৃতির উত্তাপের, খস খস আওয়াজ।
ঘরের ঘুলঘুলিতে রং মাখা, চেনা চেনা টুকরো মুখের, সারি।
দেওয়াল বেয়ে এগিয়ে আসে সব, হাসি মাখা মুখ, চুপি সাড়ে।
তালগাছের ডালে বাবুইয়ের বাসার মত দোল খায় ওরা, আমার চোখের সামনে, ঠিক পেন্ডুলামের মত।
কত চেনা মুখ, অচেনা মানুষের ভীড়, উপচে পড়া রাস্তায়, হাজারো মানুষের আনাগোনা।
এদিক ওদিক ছুটে বেড়ায় কাক,সাদা বকের দল।
ছাদের কার্নিশে বসে থাকে বসন্তের রোদ গায়ে মেখে, কালো দোয়েল।
শুকিয়ে যাওয়া টবে শুকনো ফুলের ওপর, ঘুরে বেড়ায় রং বেরঙের প্রজাপতির দল।
যা দেখে বিধূর মনের ভারে, ক্লান্ত হই আমি বার বার, বসন্তের ছায়ায়।
ভীড়ের মাঝে হাতড়ে বেড়াই, একটুকরো নিজের কাছের মনের মানুষকে।
যার মুখের ওপর কোনো আঁকি বুকি নেই, মুখোশ নেই।
মুখোশের ভারে ক্লান্ত নয় সে।
বসন্তের রঙ মাখা ভেজা সকালের রোদ, ঝলমল করে সেই মুখে।
যে মুখের দিকে তাকিয়ে উড়ে যায় সাদা বক, চুপটি করে ছাদের কার্নিশে বসে থাকে দোয়েল আনমনে।
নিদাঘ দুপুরে মন কেমন করা ডাক ভুলে যায় ডাহুক।
যে মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে বাঁচা যায়, ভরসা করা যায়, ভালোবাসা যায়।
জীবনের জলছবিতে তুলি বুলিয়ে আঁকা যায়, ভালোবাসার নতুন নতুন মুখ।
যে মুখের ওপর কোনো মুখোশ নেই, শুধুই ভালবাসার গভীর গোপন রেখায় চিত্রায়িত সেই সব মুখ।
বসন্তের মুখ - অভিজিৎ বসু।
চব্বিশ মার্চ, দু হাজার চব্বিশ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন