সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পিছনে হাঁটা ও বাংলা সাংবাদিকতা

হঠাৎ কেন পিছনে হাঁটা, তাও লন্ডনে, ঠিক বুঝলাম না! ফিটনেস! না ভার্টিগোর চিকিৎসা? নাকি মানসিক চাপ কমানো? কে জানে! মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই Back walk লন্ডনের এই বিখ্যাত হাইড পার্কে। কলকাতার কে এম ডি এর সেই বিখ্যাত সাপ বেরিয়ে পড়া পার্কে নয়। এই পিছনে হাঁটা নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে গোটা বাংলা জুড়ে শুধু নয় গোটা দেশ জুড়েই এমনকি বিদেশেও। চর্চা শুরু হয়েছে সমাজ মাধ্যমেও। শুধুই হাঁটা, হাঁটা আর হাঁটা। কখনও আবার পিছনে হাঁটা। বাংলা সাংবাদিকতার মাস্টার্স ডিগ্রির কোর্সের পরীক্ষায় এই পেছন হাঁটা নিয়ে এইবার প্রশ্ন এলেও এইবার অবাক হওয়ার কিছুই নেই কিন্তু। 

বাংলা সাংবাদিকতায় এই পিছন হাঁটা নিয়ে বেশ ভালই চর্চা চলছে এখন। মুখ্যমন্ত্রীর সফর সঙ্গী সাংবাদিকগণ পিছনে হাঁটছেন। হেসে হেসে হাত নেড়ে পিছনে হেঁটে খুশি করছেন তাঁকে। বেশ মজার দৃশ্য দেখে সমাজ মাধ্যমে চারিদিকে হৈ চৈ আর হুল্লোড় পড়ে গেছে এখন এ কেমন রঙ্গ রে বাবা, বলে রে রে রব উঠেছে। এই হাঁটা নিয়ে আমার জীবনে কোনোও আফশোষ নেই। কিন্তু না আমায় গুগল জানালো ঠিক তথ্য মিত্র বন্ধুর মতো, পেছনে হাঁটা শরীরের জন্য অনেক উপকারে আসতে পারে, যেমন - ভারসাম্য বৃদ্ধি, পায়ের পেশী মজবুত করা, হৃদরোগের ঝুঁকি কমানো এবং মানসিক চাপ কমানো ও ভারসাম্য বৃদ্ধি করা। এতো গেলো একটা দিক। সরকারী ভাবে সাংবাদিকদের সরকারী খরচে (যদি কেউ করেন এই সফর সরকারের টাকায় যা নিয়েও জোর হৈ চৈ হুল্লোড় আছে) আর যাঁরা অফিস এর অর্থে এই সফর করছেন তাঁদের জন্যও বেশ উপকারী কিন্তু এই পিছনে হাঁটা। মানসিক চাপ কমানো ও হৃদরোগের ঝুঁকিও কমে এই পিছন হাঁটায়। সেটা নিয়ে কোনোও অসুবিধাও নেই।

 কিন্তু এই বাংলার সাংবাদিকদের কি কোনো সময় এই ভাবেই পিছন হাঁটতে হয়েছে কোনোও সময়। কাউকে খুশি করার জন্য। কোনোও মূখ্যমন্ত্রীর জন্য, যে পিছন হাঁটার জন্য অনেক কসরত করতে হয়েছে তাঁদের কলম চালানোর পাশে। সেই বিখ্যাত জ্যোতি বসুর আমল, বুদ্ধবাবুর আমল, নিদেন পক্ষে সিদ্ধার্থ শঙ্কর রায় এর আমল বা প্রফুল্ল সেন এর সময়ে। ইতিহাস ঘাঁটলে এটা ঠিক পাওয়া যায় না। সেই মহাকরণের ভি আই পি লিফটের দিকে গম্ভীর মুখে হেঁটে যেতে যেতে হঠাৎ করেই পিছন দিকে হাঁটতে শুরু করেছেন জ্যোতি বসু এমন বিরল দৃশ্য বাংলায় দেখা যায়নি কোনওদিন। বা তাঁর বিদেশ সফরে গিয়ে তিনি তাঁর নিজের শরীর ঠিক রাখতে তাঁর আপ্ত সহায়ক জয়কৃষ্ণ ঘোষকে নিয়ে পিছনে হেঁটে ঘুরে বেড়িয়েছেন। কোনোও বিদেশের সুন্দর মনোরম পার্কে এই দৃশ্যও চোখে পড়েনি কারুর। স্মৃতিও এই ছবিকে ঠিক করে সাপ্লাই দিতে পারছে না আমার মস্তিষ্কে।

 আর সেই সংস্কৃতমনা, নাটক প্রিয়, কবিতা লেখা সেই বুদ্ধবাবু তো গট মট করেই লিফটে উঠে পড়তেন কাউকে বিশেষ করে কোনো সাংবাদিক নামক ব্যক্তিদের একেবারে পাত্তা না দিয়েই। একবার কেউ একটা প্রশ্ন করেছিলেন মহাকরণে সরকারের বিরোধী সেই কাগজ এর এক সাংবাদিক, যে কাগজ আবার ভগবানকে ছাড়া ভয় পায় না আর কাউকেই। সেই সাংবাদিকের অবস্থা শোচনীয় হয়ে ছিল মুখ্যমন্ত্রীর উত্তর শুনে। সেটা নিয়ে আজও চর্চা হয় তাঁর এই ধুলো জমা পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়ার পরেও। তিনি বিদেশে একবার শার্ট প্যান্ট পড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এমন একটা ছবি দেখেই হৈ চৈ হুল্লোড় পড়ে যায় সেই বাম আমলেও। আর সিদ্ধার্থ সরকার, প্রফুল্ল সেন এর আমলে এমন ঘটনাও শোনা যায়না একদম। যদিও সেই সময় সাংবাদিক আর সংবাদ মাধ্যমের এমন বাড়বাড়ন্ত ছিল না আজকের মতই। তাতে আর কী বা আসে যায়। 

সাংবাদিকরা মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ হবেন। কথায় কথায় মুখ্যমন্ত্রীর বিশেষ নম্বর থেকে ফোন আসবে এডিটর, কনসাল্টিং এডিটর,এক্সিকিউটিভ এডিটর বা নিদেন পক্ষে নবান্নের বিটের সাংবাদিকের কাছে। মুখ্যমন্ত্রীর ফোন পেয়েই আপ্লুত হয়ে পড়বেন সেই সব সাংবাদিক আর এডিটর এর দল। কাঁচের ঘরে বসেই জরুরী মিটিং করতে করতে চেয়ার ছেড়ে দিদির ফোন বলে উঠে দাঁড়িয়ে পড়বেন। অফিসে সেই সব ব্যক্তিদের পয়েন্ট বাড়বে। অফিস এর সহকর্মীদের কাছে নিজের গুরুত্ব বৃদ্ধি করবে এই ফোন। মুখ্যমন্ত্রীর না পছন্দের টিভির পর্দায় ঘুরে বেড়ানো ব্রেকিং নিউজ এর লাইন গুলো তুলে নিতে হয় আলতো করে, কেমন একটা যেনো তাঁরা সব অন্য গ্রহের জীব হিসেবে সমাজে, সংসারে, মাঠে, ঘাটে, হাটে, বাজারে এমনকি অফিস এর সুন্দর বাথরুমে হাসিমুখে বিরাজ করবেন তাঁরা গায়ে দামী সুগন্ধি মেখে। আর সেই সব মুখ্যমন্ত্রীর সফর সঙ্গী সাংবাদিকরা হাসিমুখে পিছনে হাঁটা হেঁটে পথ চলা শুরু করেছেন। যে পথ চলার শেষ নেই। কবি জীবনানন্দ দাশের 'পথ হাঁটা' কবিতায় কবি লিখেছেন, 

কি এক ইশারা যেন মনে রেখে এক-একা শহরের পথ থেকে পথে
অনেক হেঁটেছি আমি; অনেক দেখেছি আমি ট্রাম-বাস সব ঠিক চলে;
তারপর পথ ছেড়ে শান্ত হ’য়ে চ’লে যায় তাহাদের ঘুমের জগতে:

সারা রাত গ্যাসলাইট আপনার কাজ বুঝে ভালো ক’রে জ্বলে।
কেউ ভুল করেনাকো— ইঁট বাড়ি সাইনবোর্ড জানালা কপাট ছাদ সব
চুপ হ’য়ে ঘুমাবার প্রয়োজন বোধ করে আকাশের তলে।

এক-একা পথ হেঁটে এদের গভীর শান্তি হৃদয়ে করেছি অনুভব;
তখন অনেক রাত— তখন অনেক তারা মনুমেণ্ট মিনারের মাথা
নির্জনে ঘিরেছে এসে; মনে হয় কোনোদিন এর চেয়ে সহজ সম্ভব

আর-কিছু দেখেছি কি: একরাশ তারা-আর-মনুমেণ্ট-ভরা কলকাতা?
চোখ নিচে নেমে যায়— চুরুট নীরবে জ্বলে— বাতাসে অনেক ধুলো খড়;
চোখ বুজে একপাশে স’রে যাই— গাছ থেকে অনেক বাদামী জীর্ণ পাতা

উড়ে গেছে; বেবিলনে এক-একা এমনই হেঁটেছি আমি রাতের ভিতর
কেন যেন; আজো আমি জানিনাকো হাজার-হাজার ব্যস্ত বছরের পর।

হাঁটা পথ - জীবনানন্দ দাশ।

যদিও কবি সেই তাঁর কবিতায় কিন্তু পিছনে হাঁটার কথা উল্লেখ করেননি একদমই। যে পিছনে হাঁটা নিয়ে এত কিছু আলোচনা, সমালোচনা চলছে সমাজ মাধ্যমে। যে পিছনের দিকে হাঁটা নিয়ে, ছবি তোলা নিয়ে এমন ভাবে জোর চর্চা চলছে চারিদিকে। কিন্তু সেই বিখ্যাত কবি জীবনানন্দ দাশ তিনি লিখে গেছেন, একা একাই তিনি হেঁটে চলেছেন অনাড়ম্বর ভাবেই। সেই বেবিলনের পথে। রাতের অন্ধকারে। হাজার -হাজার ব্যস্ত বছরের পর। যে হাঁটার বিরাম নেই। যে হাঁটার কোনোও ছবি তোলা নেই। যে হাঁটার সমালোচনা নেই। যে হাঁটার আলোচনা নেই। তাড়াহীন নির্জন পথে একা একাই হাঁটা। 

পিছনে হাঁটা ও বাংলা সাংবাদিকতা - অভিজিৎ বসু।
পঁচিশ মার্চ, দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

জামালপুরের প্রদীপ দা

আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায় বর্ধমানের জামালপুরের সেই দাপুটে ঠোঁট কাটা সাংবাদিক প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় এর কথা। সেই বিখ্যাত সুভাষ তালুকদার এর কাগজ সংবাদে মাত্র এক টাকার কাগজে কাজ করা সংবাদ পত্রিকার দাপুটে সাংবাদিক সেই প্রদীপ দা। সেই মুখ্যমন্ত্রীর সভায় বাঁশের ব্যারিকেডের এপারে দূরে দাঁড়িয়েও যে খবর করা যায় সেটা বড়ো মিডিয়ার সাংবাদিকদের হাসি মুখে দেখিয়ে দিয়ে, আর তাদের খবরের ময়দানে গোল দিয়ে শুধু খবরকে ভালোবেসে ছোটো কাগজে কাজ করে চলা সর্বদা হাসি মুখের সেই আমাদের প্রদীপ চ্যাটার্জী দা।  কোথাও কোনো অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদে মুখর হয়ে যাওয়া আর এক দৌড়ে বেরিয়ে পড়া ঝোলা কাঁধে সেই খবরের খোঁজে সেই জামালপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের সেই প্রদীপ দা। সেই বিখ্যাত পন্ডিত রবিশঙ্কর আর উদয়শঙ্কর এর আপন মাসতুত ভাই এর ছেলে সেই প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় দাদা। সেই বামদের আমলে জামালপুরের এলাকায় দাপিয়ে খবর করে ছুটে বেড়ানো সেই প্রদীপ দা। সেই তৃণমূল আমলেও একভাবেই ছুটে বেরিয়ে কাজ করা আমাদের সদা ব্যস্ত প্রদীপ দা।  সেই বাবার অসুস্থতার কারনে বড়ো সংবাদ মাধ্যমে কাজ না করেও...

আমার স্যার কাজীদা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ আমার স্যার এর কথা। যার লেখা আজ হঠাৎ চোখে পড়লো একটি কাগজে। আর স্যার এর নামটা দেখেই মনে পড়ে গেলো নানান কথা। হ্যাঁ, সেই কাজী গোলাম গাউস সিদ্দিকী। যাঁর সাথে আমার আলাপ আর দেখা হয়েছিল সেই অজিতদার ফ্রিল্যান্স ছকু খানসামা লেনের ফ্রীল্যান্স প্রেস ক্লাবের অফিসে খুব সম্ভবত। হাসিখুশি বেশ অজাতশত্রু এই মানুষটিকে দেখেই আমার মনে হয়েছিল যে রিপোর্টারদের প্রভূত ক্ষমতা থাকে বোধহয়। তাই পকেটে পেন আর সেই ফোনের ছোট্টো নোটবুক দেখেই আমার মনে হয়, যে ক্ষমতার স্বাদ পাবার জন্য সেই সদ্য গ্র্যাজুয়েশন করে আমার কচি মনে সাংবাদিক হবার বাসনা জাগে সেই সময়।  কোনো প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক নয়, কোনো অফিসে মাছি মারা দশটা পাঁচটার লোয়ার ডিভিশন এর কেরানি নয়, মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ নয়, ল্যাবরেটরিতে টেকনিশিয়ান এর কাজ নয়, এল আই সি বা পোষ্ট অফিস এর এজেন্ট নয়, কোনো মুদি দোকানে হিসেব পত্র লেখার কাজ নয়, স্বাধীন ব্যবসা করা নয়। শুধুই সাংবাদিক হবার স্বাদ।  কাগজে সাদা কালো অক্ষরে নিজের নাম ছাপা হবে, সেই নাম দেখে বুক ফুলে যাবে, পাড়ায় প্রতিবেশীরা সহ স...

কুড়ি থালা দশ টাকা আর রসিক মুলুর জীবন

নাম মুলু হাঁসদা। বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানার চরিচা গ্রাম পঞ্চায়েত এর চর ইচ্ছা রঘুবরপুরের বাসিন্দা মুলু। আজ মুলুর জীবন কথা। গ্রামের নামটা ভারী অদ্ভুত। চর ইচ্ছা রঘুবরপুর। যে গ্রাম অন্য পাঁচটা গ্রামের মতই।সাদামাটা এই গ্রামে দারিদ্র্য, অপুষ্টি আর কর্মহীন জীবনের জলছবি সুস্পষ্ট। আর সেই গ্রামের মহিলারা নিজেদের সংসার রক্ষা করতে গাছের পাতাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে। গাছের পাতা মুলুদের জীবনের জিয়ন কাঠি। যে জিয়ন কাঠিতে তারা ভোর হতেই পেটের টানে চলে যায় জঙ্গলে। খস খস শব্দ করে পায় হেঁটে তারা পাতা তোলে। গাছ থেকে টুপ টাপ করে ঝড়ে পড়া পাতাকে একটা একটা করে নিজের শাড়ির আঁচলে ভরে নেয়। তার পর সব পাতাকে বস্তায় ভরে ঘরে ফেরে।  ঠিক যেভাবে তারা পুকুরে নেমে শামুক গেঁড়ি আর গুগলি তোলে। যে ভাবে তাদের উদর পূর্তি হবে বলে। আর এই পাতাও যে তাদের পেট ভরায়। একটা একটা পাতাকে নিজের সন্তানের মতো আলগোছে ছুঁয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে চুমু খায় মুলু, বলে তোরা না থাকলে কি করতাম কে জানে। মাথার ওপর শাল সেগুনের বিশাল আকারের গাছগুলো চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে আর তারা চুপ করে শোনে মুলুর কথা।  একে অপ...

শুভ মকর সংক্রান্তি

মকর মানেই নতুন জামা কাক ভোরে স্নান, রাত্রি জেগে মিঠে সুরে টুসুমণির গান। মকর মানেই পিঠে - পুলির গন্ধে ম - ম হাওয়া, ডুলুং পাড়ে টুসুর মেলায় দল বেঁধে যাওয়া। মকর মানেই মোরগ লড়াই পাহুড় জেতার সুখ, সন্ধ্যা - রাতে মাংস পিঠের স্বাদে ভরা মুখ। মকর মানেই হাতি - ঘোড়ার পুজো করম তলে, সান্ধ্য হাওয়ায় মন উদাসী দিমির দিমির বোলে। আসলে আজ এই মকর সংক্রান্তির দিন, টুসু মেলার দিন, টুসু গানে নিজেকে মাতিয়ে দেবার দিন। অজয় এর ধারে জয়দেব কেঁদুলির মেলায় ভীড়ের মাঝে নিজেকে হারিয়ে দেবার দিন। অজয় এর জলে ডুব দিয়ে স্নান করে পূণ্য অর্জনের দিন। আর নদীর ধারে মোরগ লড়াই এর দিন। আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর দিন, সুতো লাটাই হাতে আকাশ পানে তাকিয়ে থাকার দিন। কেমন যেনো রাশির একটি স্থান থেকে অন্য রাশিতে স্থান পরিবর্তনের দিন। সূর্যের দেবতাকে সকালে উঠে স্নান সেরে প্রণাম জানিয়ে শক্তি সঞ্চয় এর দিন। সূর্যের উত্তর দিকে চলে যাবার দিন। ধীরে ধীরে শীতকাল চলে যাওয়ার দিন।  এই মকর সংক্রান্তি এর ইতিহাস ও ভারতীয় ঐতিহ্যের গভীর শিকড় রয়েছে। এটি কৃষি চক্র এবং ফসল কাটার মৌসুমের সাথে জড়িত। এই মকর সংক্রান্তি চ...