সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আমার ব্রিগেড দর্শন

সাদা জীবনের কালো কথায় কোনো দিন আমি রাজনীতির কথা, রাজনীতির কারবারিদের কথা নিয়ে কিছু লিখি না লিখতে চাই না। কারণ রাজনীতির কঠিন  পাঁকাল মাছেদের পঙ্কিল জীবনের কথা লেখার ইচ্ছা হয় না আমার। এই সব হড়কে যাওয়া জীবন নিয়ে কোনো কথা লিখতে ইচ্ছা হয় না আমার। এক সময় সাংবাদিকতার কাজ করার সুবাদে জীবনে এই ভোটের সময় কত ব্যস্ততা থাকতো এক সময় আমার। দৌড় ঝাঁপ থাকতো জীবনের পথের বাঁকে বাঁকে।

 ভোটের আগে এই প্রার্থী পদ নিয়ে কত অঙ্ক কষা হত গ্রামে গঞ্জে,শহরে, পাড়ায় , মহল্লায়। পাড়ায় পাড়ায় চায়ের ঠেকে চলতো জোর আলোচনা আর গুজব। তারপর তালিকা তৈরি হতো, নাম ঘোষণা হতো, শুরু হতো দেওয়াল লিখন, মাইকে প্রচার হত। সব নিয়ে একদম জম জমাট লড়াই ভোটের অধিকার নিয়ে। যে ভোটের অধিকার নিয়ে এত কিছু আয়োজন হতো সেই সব দিনগুলোর বদল হয়েছে ধীরে ধীরে।

 আসলে আজকে এই ভোটের ঢাকে কাঠি পড়ার সঙ্গে সঙ্গে একটা নতুন জিনিস চোখে পড়লো। সেটা হলো মাঠে ময়দানের খেটে খাওয়া মানুষ গুলো কেমন করে সব দূরে, অনেক দূরে সরে যাচ্ছে ধীরে ধীরে। যারা একদিন গ্রামে গঞ্জে হাত ছেড়ে ঘাসের ওপর জোড়া ফুল ফুটিয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মার খেয়ে লড়াই করে দলকে শহর, গ্রাম, মফস্বলে ফুল ফুটিয়ে তুলতে সাহায্য করল। তারা কেমন দুর থেকে ব্রিগেডের সভায় দেখছেন সেই সব রাম্পে হাঁটা দলের ভোটের রং বেরঙের কুশীলবদের। 

যাদের হাতের নাগালে পেতে অনেক কষ্ট করতে হতো একসময় তাদেরও। সেই সব দুর গ্রহের মানুষ গুলো এক ঝটকায় কেমন কল্প লোক ছেড়ে মর্ত্য লোকে ফিরে এসেছে তাদের দিদির ডাকে। সত্যিই তো ক্ষমতা আছে বলতে হবে দিদির। ফিস ফিস করে বলে পুরুলিয়ার বাঘমুন্ডির লক্ষী বাগদি। চুপি চুপি এই কথা বলে সন্তর্পনে, যেনো কেউ শুনতে না পায় তার মনের কথাটা। আর মনে মনে ভাবে সেদিন তো টিভিতে ওই দিদিমনিটা আর তাদের ঘরের দিদি রুটি বেলার খেলা খেলছিল। আর আজ অবাক বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে তাকিয়ে থাকে লক্ষী সেই টিভির দিদির দিকে অপলক নয়নে যে ঠিক তার কাছ ঘেঁষে হাত নেড়ে চলে গেলো।

যারা এত দিন ধরে দিন রাত অবিরাম দৌড়ে ঝাঁপিয়ে মার খেয়ে পেটে কিল মেরে দলকে প্রতিষ্ঠা করলেন সেই সব তৃণমূল স্তরের নেতা কর্মীরা তারা দেখলেন এই প্রথম রাম্পের শো। যে শোতে একঝাঁক তারকা অভিনেত্রী,খেলোয়ার, সব দলে দলে হাঁটছেন মর্তের ব্রিগেডের মাটিতে যেনো স্বর্গের ফুল বিছানো রাস্তা ধরে। প্রজাপতির মতো ডানা মেলে কল্পলোক ছেড়ে ধরায় এসে উড়ে বেড়াচ্ছেন, হাত নাড়ছেন আর মিটি মিটি হাসছেন তারা তাদের দিকে তাকিয়ে। এত জনগণের উচ্ছাস গায়ে মেখে তারা সব মনে মনে ভাবছেন ভাগ্য ভালো লাল বাস্তিল দুর্গের পতনটা হয়েছিল না হলে কি আর এই সুযোগ হতো তাদেরও। 

এটা ঠিক যে ঝাঁ চকচকে পাঁচতারা হোটেলের রাম্পে মডেলদের এই হাঁটা নয়। যা জনগন দেখে অভ্যস্ত বরাবর। যেখানে মডেলরা নানাভঙ্গিতে হাঁটেন, মিটি মিটি হাসি হেসে ঘোরেন এদিক ওদিক। বাংলা এই প্রথমবার দেখল রাজনৈতিক দলের সমাবেশে এক বিরাট রাম্পের আয়োজন। মার্চের এই রবিবাসরীয় ব্রিগেডে নজর কাড়ল তৃণমূলের সমাবেশের রাম্প সহ মঞ্চ। যা আর পাঁচটা রাজনৈতিক সমাবেশের সঙ্গে এর তুলনা করতে গেলে কিছুটা হোঁচট খেতে হবেই। পুরো অনুষ্ঠানে একটা কর্পোরেট লুক আনা হয়েছে সুনিপুন পরিকল্পনা করে। বলা যেতে পারে তৃণমূলের নবজোয়ারের পরে আরও একটা জোয়ার আনার মরিয়া চেষ্টা করা। যে জোয়ারে ভাসছে কল্পলোকের বাসিন্দারা সব গা এলিয়ে দিয়ে।

নবজোয়ার যাত্রায় জেলায় জেলায় এসি তাবু দেখা গিয়েছিল। যা নিয়ে হৈ চৈ কম হয়নি। এবার ব্রিগেডে সংযোজন হলো রাম্প কালচার। রাজনৈতিক সমাবেশকে ইভেন্ট হিসেবে তুলে আনা হয়েছে একদম সুনিপুণ ভাবে। যার জন্য অনেক মাথা খাটিয়ে এটা করা হয়েছে। এই গোটা মঞ্চ, কুশীলব, গোটা অভিনয়ের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে আমাদের সকলের সামনে যার জুড়ি মেলা ভার।

মূল প্রশ্নটা ঠিক এখানেই। মা, মাটি, মানুষের পাঁচতারা হোটেলে যাওয়ার সুযোগ নেই। চোখ ধাঁধানো আলোর নিচে রাম্পে মডেলদের নানা পোশাকে হেঁটে বেড়ানো কেউ আগে দেখেননি,এটা হলফ করে বলা যায়। বলা যেতে পারে কাঠফাটা রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে গ্রাম থেকে আসা মানুষের রাম্প দেখার আগ্রহ মিটল অনেকটাই। কিন্তু আয়োজনের সঙ্গে মাটির সেই সোঁদা গন্ধ কোথায়? যে মাটির সোঁদা গন্ধ গায়ে মেখে সেই ছেঁড়া ব্যাগে একটাকা পঁচিশ পয়সা নিয়ে সেই সবার চেনা দিদি আমাদের ঘুরে বেড়াতেন গ্রাম থেকে শহরে। যে দিদির টানে গ্রাম, শহর সব উন্মাদ হয়ে যেত এক সময়। সেটায় কি তাহলে একটু ভাঁটার টান এই নব জোয়ারের উচ্ছাসে কে জানে।

আর তাই তো পুরুলিয়ার লক্ষী, কেশপুরের রফিক, গোঘাটের ফরিদ, সন্দেশখালির যমুনাকে মাটি থেকেও রাম্পের দিকে তাকাতে হচ্ছে একটু মাথা উঁচু করে। যা তারা আগে কখনো দেখেনি। অবাক বিস্ময়ে ফিস ফিস করে একে অপরের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয় তাদের। গ্রামে ফিরে যারা আসেনি তাদের গল্প করতে হবে এই না হলে আমাদের দিদি। যে দিদি জানে কি করে এত সব কিছু সম্ভব করতে হয়। 

পরিকল্পনা অভিনব হলেও মা, মাটি, মানুষের দলের সঙ্গে কতটা সামঞ্জস্যপূর্ণ?  সেটা নিয়ে কি আর কেউ প্রশ্ন করতে সাহস পাবেন বলে মনে হয় না। কে আর এসব রাজসূয় যজ্ঞ দেখে প্রশ্ন করবে। কাকেই বা প্রশ্ন করবে। ভয় কে বুকে চেপে তাই অবাক চোখে তাকিয়ে দেখে লক্ষীরা। 

যারা গ্রামে গিয়ে গল্প করবে গরীবের দিদির গল্প। কল্পলোকের বাসিন্দাদের রাস্তায় নেমে হেঁটে চলার গল্প। যাদের হাতের নাগালে পাওয়ার গল্প। যে গল্পের মেঠো রাস্তায় হারিয়ে যাবে মাটির সোঁদা গন্ধ। যে গন্ধ গায়ে মেখে গরীবের মসিহা হয়ে এত দিন বেঁচে ছিল মা, মাটি, মানুষ, ঘাস, ফুল, প্রজাপতি, পাখি, আজ তারা সব দূরে অনেক দূরে সরে যাচ্ছে ধীরে ধীরে এক অচেনা অজানা কল্পলোকের রাজ্যে হারিয়ে যাচ্ছে।

আমার ব্রিগেড দর্শন - অভিজিৎ বসু।
দশ মার্চ, দু হাজার চব্বিশ।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ইটিভির পিনাকপাণি ঘোষ

কিছু মানুষ কত কাছে থেকেও পাশাপাশি এক জায়গায় বাস করেও একসাথে একসময় কাজ করেও যে কত দূরে রয়ে যান নিজের হাসিমুখ নিয়ে আর সেই চেনা ছন্দ নিয়ে সত্যিই বেশ ভালো মজার ব্যাপার কিন্তু এটা জীবনের মেঠো পথে। সেই ইটিভির বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে ঘুরে ঘুরে স্ট্রীট ফুডের ছবি তোলা আর নানা খবর করে খাওয়া দাওয়ার এপিসোড করে একসময়ে বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে যাওয়া ইটিভি নিউজে। আর আমাদের জেলায় বসে সেইসব হাঁ করে দেখা আর কেমন মনের ভেতর অস্থিরতা তৈরি হওয়া। একেই বলে কলকাতার রাজপথের সাংবাদিক বলে কথা।  সেই যে বার রাষ্ট্রপতি এলেন জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে সেই অনুষ্ঠানের বিশেষ কার্ড জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করা ইটিভির চাকরি করার সুবাদে। কোনো রকমে সেই কার্ড জোগাড় করে এনে দেওয়া তাঁকে আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য। আর সেই একদিন দুপুর বেলায় খুব সম্ভবত করোনা শেষ পর্বে বালিঘাট স্টেশন থেকে অফিস যাওয়ার সময় এসি পঞ্চাশ এর বাস এর ভিতরে দেখা হওয়ায় কত গল্প করা দুজন মিলে পুরনো দিনের। আবার উত্তরপাড়ার সেই বিখ্যাত চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে হাসি মুখে দেখা হয়ে যাওয়া রাতের বেলায় কাঁঠালবা...

আমাদের সবার মৃনাল দা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক বাবা আর ছেলের লড়াই এর গভীর গোপন কাহিনী। এই সাংবাদিকতার পেশায় এসে কত লড়াই, কত অসম যুদ্ধ, করে যে কেউ সংসার টিকিয়ে রাখতে পারে হাসি মুখে কাউকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে। এমন করে কেউ টিকে থাকার চেষ্টা করেন সেটা বোধহয় আমার জানা হয়ে উঠত না কিছুতেই। যদি না এই পেশায় আমি গা ভাসাতাম এমন করে। জীবনের এই নানা টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ ভেসে ওঠে এই রাতের অন্ধকারে আচমকা আমার মনের মাঝে। আর আমি চমকে উঠি কেমন করে তাদের সেই কোলাজ দেখে।  এমন এক চরিত্র, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়ে কেমন আলগোছে, হাসিমুখে, নির্মোহ ভাবে, শুধু নিজের কাঁচা পাকা দাড়িতে হাত বুলিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিলো সে শুধুই আকাশ পানে তাকিয়ে। যে নীল আকাশের গা ঘেঁষে উড়ে যাওয়া সাদা বকের ডানায় লেগে থাকে মেঘের হালকা টুকরো। একদম যেনো সিনেমার পর্দার হিরোর মতোই। দেখে বোঝার উপায় নেই একদম। পেটে খাবার না থাকলেও মুখের হাসিটা অমলিন হয়েই বেঁচে আছে আজও এতোদিন পরেও। আর সেই বিখ্যাত সাদা পাকা নাসিরউদ্দিন স্টাইলের দাড়ি, কালো চুল, আর সব সময় ধোপদুরস্ত ফিটফাট একজন মানুষ। রাত নটা বাজলেই যাকে শ্রীরামপুরে...

শপিং মলের উদ্বোধনে সিঙ্গুর আন্দোলনের দাপুটে মন্ত্রী

নালিকুল স্টেশন বাজারে একটি শপিং মলের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বেচারাম মান্না হাজির। একসময় যাঁর অন্দোলনের ঠেলায় পড়ে দৌড়ে একপ্রকার পালিয়ে চলে যেতে হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে টাটা কোম্পানিকে। যে আন্দোলনের দগদগে ঘা আর সেই স্মৃতি ধীরে ধীরে আজ প্রায় মিলিয়ে যেতে বসেছে আমাদের কাছ থেকে। আজ সেই চাষার ঘরের মানুষ না হলেও সেই কৃষক আর শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকার নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেন সেই মানুষটাকেই কেমন যেন আজ শপিং মলের উদ্বোধনে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার।  একদম নালিকুল স্টেশনের কাছে ঝাঁ চকচকে শপিং মল। দোকানে সাজানো জিনিস পত্র। আর সেখানেই আমাদের মাননীয় মন্ত্রী বেচারাম মান্না। একদম কেমন একটু আমার অচেনা লাগলো যেন। সেই মুড়ি খেয়ে আলুর তরকারি বা শশা খেয়ে আন্দোলন শুরু করা জমি আন্দোলন এর অন্যতম পথিকৃৎ নেতা আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তাহলে টাটা কোম্পানির বিরুদ্ধে যে জমি দখল নিয়ে আন্দোলন সেই আন্দোলন এর মধ্যে ছিল জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যদিও সেখানেও সেই সময়ের শাসকদলের কর্মসংস্থানের যুক্তি।তবে এই নতুন শপিং মলের উদ্বোধনে তো আর ...

ভীড়ের মাঝে একা

জীবন জুড়ে শুধুই ভীড় আর ভীড়। নানা ধরনের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় মানুষের গন্ধে, বর্ণে , স্বাদের ভীড়ে আমি একদম একা হয়ে যেতে চাই। যে ভীড় উপচে পড়া রাস্তায় শুধুই হেমন্তের ভোরে শিশিরের ফিসফিস শব্দ, পাখির কিচির মিচির আওয়াজ,ধানসিড়ি ওই নদীটির তীর ধরে ঘুঘুর আকুল মন কেমন করা ডাক, উদাসী শালিকের ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া ওই হেমন্তের হলুদ ধানের মাঠ এর পাশ দিয়ে, হলুদ বসন্ত বৌরীর সেই আমলকীর গাছের পাতায়,আড়ালে আবডালে বসে কেমন যেন আমায় দেখে লজ্জা পাওয়া, আর তারপর চোখ নামিয়ে হঠাৎ করেই তার উড়ে চলে যাওয়া। আর মেঘের কোল ঘেঁষে সেই সাদা বকের, বুনো হাঁসের, আর সেই পানকৌড়ির জলে ভেজা ডানা মেলে উড়ে যাওয়া আকাশ জুড়ে। সত্যিই ওরাও যে ভিড়ের মাঝেই বড়ো একা। একা একাই ওদের যে এই বেঁচে থাকা। কেমন নিপাট হৈ চৈ হুল্লোড়হীন একটা জীবন নিয়ে বেশ মজা করে, আনন্দ করে। আর সেই ভোরের আলোয় আলোকিত হয়ে রাস্তার একপাশে গুটি শুটি মেরে শুয়ে থাকা ওই সাদা কালো ভুলো নামের কুকুরের। যে অন্তত এই সব মানুষদের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় একটু যেনো আলাদা , একটু যেনো অন্য রকমের। একটু একা একাই যেনো ওর এই আলগোছে জীবন কাটিয়...

গৌড় প্রাঙ্গণে আনন্দবাজার

গৌরপ্রাঙ্গনে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যের আনন্দের মেলা আনন্দবাজার। মহালয়ার ভোরবেলায় ঢাকের বাদ্যি আর সানাইয়ের মন কেমন করা সুরে মেতে উঠলো শান্তিনিকেতনের গৌড়প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও যে হবে আনন্দমেলা আনন্দবাজার। হ্যাঁ সত্যিই যেনো আনন্দের এই হাটে বেচাকেনার পসরা নিয়ে একদিনের জন্য বসে পড়া মন প্রাণ খুলে হৈ হুল্লোড় করে। এই মেলা শুরু হয় 1915 সালের 15 এপ্রিল নববর্ষের দিনে। কিন্তু আগে এই মেলাকে একসময় বলা হতো বৌঠাকুরাণীর হাট। সেই সময় আশ্রমের মহিলারা নিজেদের হাতের তৈরি জিনিস নিয়ে মেলায় বসতেন। মেলার আয়োজন করতেন তারা। আনন্দ করে বেচাকেনা হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় একবার গরমের ছুটির আগে এমন মেলা নাকি হয়েছিল। যার নাম ছিল আনন্দবাজার। পরে এই মেলার নামে হয়ে যায় আনন্দমেলা। সত্যিই আনন্দের এই মিলন মেলা।  প্রথমদিকে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই মেলা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে বিশ্বভারতীর সব বিভাগের পড়ুয়ারা এই মেলায় যোগদান করে। এই মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের বেচা কেনার লাভের টাকার কিছু অংশ জমা পরে বিশ্বভারতীর সেবা বিভাগে। সেখান থেকে এ...