সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

উত্তরবঙ্গের গৌতম সরকার

সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় উত্তরবঙ্গের গৌতমদার কথা না লিখলে কি আর হয় আমার এই ব্লগ লেখার সিরিজ। সেই কুচবিহারের গৌতম সরকার। আমাদের সবার সেই গৌতম দা। জানিনা কি লিখবো আমি আমার ঝুলিতে কোনোও গল্প নেই তাঁকে নিয়ে লেখার মত। কারণ সেই আদিম যুগের আমলে আমরা যখন খবর করা জীব। খবর করে সেই ছবি পাঠাবো কি করে সেটা ভাবতে ভাবতেই দিন কাবার হতো আমাদের। খবর জোগাড় করা বেশ সহজ থাকলেও এখনকার মতো খবর হলে সেটা পাঠানোর হ্যাপা কম ছিল না সেই প্রস্তর যুগের আমলে এই প্রত্যন্ত গ্রামে্য বিভিন্ন জায়গায়। 

সেই ইটিভির পুরোনো আমলে পূজোর সময় আমার বাংলার বেড়াতে যাওয়ার অনুষ্ঠানে খবরের প্যাকেজে দেখতাম জঙ্গল থেকে ইটিভির সেই চেনা লাল বুম হাতে ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছেন তিনি পিটুসি দিতে দিতে সেই এক রঙের জামা পড়ে। আসলে উত্তরবঙ্গের নবেন্দু দা আর গৌতম দা দুজনকেই বেশ সমঝে চলতাম আমি অন্ততঃ। একে সিনিয়র তাঁর উপর বসদের তাঁকে দাদা বলে সম্বোধন করা। আর তাই আমাদের দাদা কেমন আছেন সেটা বলতেও বেশ ভয়ে বুক কাঁপতো আমার। সেই পুরোনো দিনের ইটিভির পাট উঠে গেছে অনেক আগেই সেই পুরোনো আমলে।

 মাঝে মাঝেই সেই সব দিন, সেই সব মানুষের কথা মনে পড়ে যায় আমার। গৌতম দার একটা ছবি আর তাঁর পোস্ট দেখে মনে হলো কিছু লেখা যেতে পারে নিশ্চয়ই রাগ করবেন না আর এতদিন পরে তিনি। কিছুটা বুকে বল ঠুকে লেগে পরা। সেই কাগজে নাম দেখা, সেই নাম দেখে মনে হতো বাহ দারুন সুন্দর তো। টিভির পর্দায় কাজ শেষ করে খবরের কাগজের পাতায় দিব্যি কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। কেমন ট্র্যাক চেঞ্জ করে টিকে আছেন এই বয়সেও দিব্যি। এটাই ভালো লাগে আমার।

 সেই ইটিভির স্বর্ণযুগ বলে বলা যাবে কি তাকে, না দরকার নেই। এই সমাজ মাধ্যমে সোনা, রূপা, লোহার যুগ বললে কি হবে কে জানে। কেউ বলবেন কি দাদা যুগ হাতড়ে লাভ নেই আর এখন তো আর লাইনে নেই আপনি। তবু এটা জানি আমি আজও এই বুড়ো বয়সে মনে পড়ে যায় আমার ইটিভির উত্তরবঙ্গের সেই গৌতম সরকার সেই খেলার মাঠের প্লেয়ারের মতই খেলে বেড়াতেন এই গোলপোস্ট থেকে অন্য প্রান্তে দৌড়ে বেরিয়ে হাঁফিয়ে যেতে দেখিনি তাঁকে। 

বেশ নিখুঁত শটে গোল মারতেন তিনি হাসতে হাসতেই। কিন্তু খুব বেশি তিনি উচ্ছাস দেখাতেন না একদমই নানা সময়ে সফল হলেও। আবার আমাদের মত জুনিয়রদের একদম হেলচ্ছেদাও করতেন না তিনি সেই সময়। এটা একটা বড় পাওনা ছিল আমাদের সেই সময় আজ যেটা পাওয়া খুব মুশকিল ব্যাপার। আজ আর সেই সব দিন ফিরে পাওয়া মুশকিল। এই প্রাচীন যুগের আদিম যুগের মিডিয়া এখন রাজনৈতিক অনুগ্রহে অনেক সাবলীল হয়ে গেছে।

 সেই প্রত্যন্ত গ্রামে গিয়ে খবর করে সেটা পাঠাতে গিয়ে এখন আর হিমসিম খেতে হয়না আমাদের মত এই আধুনিক যুগের সাংবাদিকদের। এক নিমেষে সেই সব খবর দ্রুত পৌঁছে যায় এই মোবাইল থেকে অন্য মোবাইলে। আর সেই খবর পৌঁছে যায় হেড অফিসে হাসতে হাসতেই। গৌতমদার সেই একটা ছবি দেখেই মনে পড়ে গেলো আমার সেই সব কথা। যে কথা বলতে পেরে বেশ ভালই লাগছে আমার। 

সেই উত্তরবঙ্গের নবেন্দু গুহ, সেই গৌতম সরকার, সেই বৈজু আগরওয়াল, সেই পল্লব চট্টোপাধ্যায় খুব সম্ভবত, সেই সুরজ শর্মা, কতজন এর কথা যে মনে পড়ে যায় আমার আজ। সত্যিই ফেলে আসা দিন, ফেলে আসা স্মৃতি, সেই আমার বাংলার খবরে উত্তরবঙ্গের নানা মন ভালো করা স্পটের ছবি, সেই খবরের দুনিয়ায় উত্তর থেকে দক্ষিণে জেলার বিভিন্ন খবরকে তুলে ধরে হৈ চৈ হুল্লোড় ফেলে দেওয়া একটা চ্যানেল। 

যে চ্যানেলে প্রচার করা খবরকে ভালোবেসে মানুষ দেখে। যে খবরকে রাজনীতির দাদা দিদিরা নিজেদের দখলে আনতে পারেন না কোনোভাবেই সে বাম আর ডান যেই হোক। সেই সব দিনগুলোর কথা মনে পড়ে যায় আমার। সেই উত্তরবঙ্গের এক কাগজে লোক নেওয়া হবে বলে বিজ্ঞাপন দেখে গৌতমদাকে জিজ্ঞাসা করা ফেসবুকের মাধ্যমে।‌ এইটুকুই অভিজ্ঞতা সম্বল আমার। আর বেশি কিছুই নেই আর। 

তবু গৌতমদা কে মনে পড়ে যায় আমার বাংলা টিমের সদস্য হিসেবে। ভালো থাকবেন আপনি দাদা। সুস্থ থাকবেন। আর আপনার সাদা চোখে সাদা কথায় লিখে যাবেন। যে লেখার ভক্ত আমি খুব। যেমন আমার বাংলায় আপনার খবর দেখতাম আমি ঠিক তেমনি একজন বরিষ্ঠ সাংবাদিকের লেখার ভক্ত আমি। দাদা আবার জানাই ভালো থাকবেন আপনি দাদা। 

উত্তরবঙ্গের গৌতম সরকার - অভিজিৎ বসু।
এগারো ফেব্রুয়ারী দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ইটিভির পিনাকপাণি ঘোষ

কিছু মানুষ কত কাছে থেকেও পাশাপাশি এক জায়গায় বাস করেও একসাথে একসময় কাজ করেও যে কত দূরে রয়ে যান নিজের হাসিমুখ নিয়ে আর সেই চেনা ছন্দ নিয়ে সত্যিই বেশ ভালো মজার ব্যাপার কিন্তু এটা জীবনের মেঠো পথে। সেই ইটিভির বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে ঘুরে ঘুরে স্ট্রীট ফুডের ছবি তোলা আর নানা খবর করে খাওয়া দাওয়ার এপিসোড করে একসময়ে বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে যাওয়া ইটিভি নিউজে। আর আমাদের জেলায় বসে সেইসব হাঁ করে দেখা আর কেমন মনের ভেতর অস্থিরতা তৈরি হওয়া। একেই বলে কলকাতার রাজপথের সাংবাদিক বলে কথা।  সেই যে বার রাষ্ট্রপতি এলেন জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে সেই অনুষ্ঠানের বিশেষ কার্ড জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করা ইটিভির চাকরি করার সুবাদে। কোনো রকমে সেই কার্ড জোগাড় করে এনে দেওয়া তাঁকে আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য। আর সেই একদিন দুপুর বেলায় খুব সম্ভবত করোনা শেষ পর্বে বালিঘাট স্টেশন থেকে অফিস যাওয়ার সময় এসি পঞ্চাশ এর বাস এর ভিতরে দেখা হওয়ায় কত গল্প করা দুজন মিলে পুরনো দিনের। আবার উত্তরপাড়ার সেই বিখ্যাত চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে হাসি মুখে দেখা হয়ে যাওয়া রাতের বেলায় কাঁঠালবা...

আমাদের সবার মৃনাল দা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক বাবা আর ছেলের লড়াই এর গভীর গোপন কাহিনী। এই সাংবাদিকতার পেশায় এসে কত লড়াই, কত অসম যুদ্ধ, করে যে কেউ সংসার টিকিয়ে রাখতে পারে হাসি মুখে কাউকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে। এমন করে কেউ টিকে থাকার চেষ্টা করেন সেটা বোধহয় আমার জানা হয়ে উঠত না কিছুতেই। যদি না এই পেশায় আমি গা ভাসাতাম এমন করে। জীবনের এই নানা টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ ভেসে ওঠে এই রাতের অন্ধকারে আচমকা আমার মনের মাঝে। আর আমি চমকে উঠি কেমন করে তাদের সেই কোলাজ দেখে।  এমন এক চরিত্র, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়ে কেমন আলগোছে, হাসিমুখে, নির্মোহ ভাবে, শুধু নিজের কাঁচা পাকা দাড়িতে হাত বুলিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিলো সে শুধুই আকাশ পানে তাকিয়ে। যে নীল আকাশের গা ঘেঁষে উড়ে যাওয়া সাদা বকের ডানায় লেগে থাকে মেঘের হালকা টুকরো। একদম যেনো সিনেমার পর্দার হিরোর মতোই। দেখে বোঝার উপায় নেই একদম। পেটে খাবার না থাকলেও মুখের হাসিটা অমলিন হয়েই বেঁচে আছে আজও এতোদিন পরেও। আর সেই বিখ্যাত সাদা পাকা নাসিরউদ্দিন স্টাইলের দাড়ি, কালো চুল, আর সব সময় ধোপদুরস্ত ফিটফাট একজন মানুষ। রাত নটা বাজলেই যাকে শ্রীরামপুরে...

শপিং মলের উদ্বোধনে সিঙ্গুর আন্দোলনের দাপুটে মন্ত্রী

নালিকুল স্টেশন বাজারে একটি শপিং মলের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বেচারাম মান্না হাজির। একসময় যাঁর অন্দোলনের ঠেলায় পড়ে দৌড়ে একপ্রকার পালিয়ে চলে যেতে হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে টাটা কোম্পানিকে। যে আন্দোলনের দগদগে ঘা আর সেই স্মৃতি ধীরে ধীরে আজ প্রায় মিলিয়ে যেতে বসেছে আমাদের কাছ থেকে। আজ সেই চাষার ঘরের মানুষ না হলেও সেই কৃষক আর শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকার নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেন সেই মানুষটাকেই কেমন যেন আজ শপিং মলের উদ্বোধনে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার।  একদম নালিকুল স্টেশনের কাছে ঝাঁ চকচকে শপিং মল। দোকানে সাজানো জিনিস পত্র। আর সেখানেই আমাদের মাননীয় মন্ত্রী বেচারাম মান্না। একদম কেমন একটু আমার অচেনা লাগলো যেন। সেই মুড়ি খেয়ে আলুর তরকারি বা শশা খেয়ে আন্দোলন শুরু করা জমি আন্দোলন এর অন্যতম পথিকৃৎ নেতা আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তাহলে টাটা কোম্পানির বিরুদ্ধে যে জমি দখল নিয়ে আন্দোলন সেই আন্দোলন এর মধ্যে ছিল জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যদিও সেখানেও সেই সময়ের শাসকদলের কর্মসংস্থানের যুক্তি।তবে এই নতুন শপিং মলের উদ্বোধনে তো আর ...

ভীড়ের মাঝে একা

জীবন জুড়ে শুধুই ভীড় আর ভীড়। নানা ধরনের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় মানুষের গন্ধে, বর্ণে , স্বাদের ভীড়ে আমি একদম একা হয়ে যেতে চাই। যে ভীড় উপচে পড়া রাস্তায় শুধুই হেমন্তের ভোরে শিশিরের ফিসফিস শব্দ, পাখির কিচির মিচির আওয়াজ,ধানসিড়ি ওই নদীটির তীর ধরে ঘুঘুর আকুল মন কেমন করা ডাক, উদাসী শালিকের ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া ওই হেমন্তের হলুদ ধানের মাঠ এর পাশ দিয়ে, হলুদ বসন্ত বৌরীর সেই আমলকীর গাছের পাতায়,আড়ালে আবডালে বসে কেমন যেন আমায় দেখে লজ্জা পাওয়া, আর তারপর চোখ নামিয়ে হঠাৎ করেই তার উড়ে চলে যাওয়া। আর মেঘের কোল ঘেঁষে সেই সাদা বকের, বুনো হাঁসের, আর সেই পানকৌড়ির জলে ভেজা ডানা মেলে উড়ে যাওয়া আকাশ জুড়ে। সত্যিই ওরাও যে ভিড়ের মাঝেই বড়ো একা। একা একাই ওদের যে এই বেঁচে থাকা। কেমন নিপাট হৈ চৈ হুল্লোড়হীন একটা জীবন নিয়ে বেশ মজা করে, আনন্দ করে। আর সেই ভোরের আলোয় আলোকিত হয়ে রাস্তার একপাশে গুটি শুটি মেরে শুয়ে থাকা ওই সাদা কালো ভুলো নামের কুকুরের। যে অন্তত এই সব মানুষদের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় একটু যেনো আলাদা , একটু যেনো অন্য রকমের। একটু একা একাই যেনো ওর এই আলগোছে জীবন কাটিয়...

গৌড় প্রাঙ্গণে আনন্দবাজার

গৌরপ্রাঙ্গনে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যের আনন্দের মেলা আনন্দবাজার। মহালয়ার ভোরবেলায় ঢাকের বাদ্যি আর সানাইয়ের মন কেমন করা সুরে মেতে উঠলো শান্তিনিকেতনের গৌড়প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও যে হবে আনন্দমেলা আনন্দবাজার। হ্যাঁ সত্যিই যেনো আনন্দের এই হাটে বেচাকেনার পসরা নিয়ে একদিনের জন্য বসে পড়া মন প্রাণ খুলে হৈ হুল্লোড় করে। এই মেলা শুরু হয় 1915 সালের 15 এপ্রিল নববর্ষের দিনে। কিন্তু আগে এই মেলাকে একসময় বলা হতো বৌঠাকুরাণীর হাট। সেই সময় আশ্রমের মহিলারা নিজেদের হাতের তৈরি জিনিস নিয়ে মেলায় বসতেন। মেলার আয়োজন করতেন তারা। আনন্দ করে বেচাকেনা হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় একবার গরমের ছুটির আগে এমন মেলা নাকি হয়েছিল। যার নাম ছিল আনন্দবাজার। পরে এই মেলার নামে হয়ে যায় আনন্দমেলা। সত্যিই আনন্দের এই মিলন মেলা।  প্রথমদিকে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই মেলা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে বিশ্বভারতীর সব বিভাগের পড়ুয়ারা এই মেলায় যোগদান করে। এই মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের বেচা কেনার লাভের টাকার কিছু অংশ জমা পরে বিশ্বভারতীর সেবা বিভাগে। সেখান থেকে এ...