সেই তারকেশ্বরের সুভাষ। সেই তারকেশ্বর বার্তার সুভাষ। সেই একদা বিখ্যাত সাংবাদিক ফাল্গুনীদার দক্ষিণহস্ত সুভাষ। সাংবাদিক হতে চেয়ে বারবার কোনোও সাংবাদিক তারকেশ্বর মন্দিরে পূজো দিতে গেলেই ওর সাথে দেখা হলেই ও বলতো দাদা একটু দেখো দাদা ভাইকে। যদি কিছু করা যায়। সেই সুভাষের তারকেশ্বর বার্তাকে দেখে আমার বেশ ভালো লাগলো। সেই ওর চ্যানেলে নানাজনের শুভেচ্ছার বার্তা দেখে মনে পড়ে গেলো পুরোনো দিনের কথা। সেই ওর হাতে চ্যানেলের বুম দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার। সুভাষ আজ টিভির সাংবাদিক। সুভাষ ওর নিজের চ্যানেলের মালিক অনেক চড়াই আর উৎরাই পার করে।
আগে মাঝে মাঝেই কথা হতো ওর সাথে দরকারে বা অদরকারে। বিখ্যাত সাংবাদিক ফাল্গুনীদার একদম ন্যাওটা বলা যায়। সেই কবে কতবছর আগে যে তারকেশ্বর মন্দিরে পূজো দিতে গিয়ে ওর সব ব্যবস্থা করে দেওয়া। একদম নিজে দাঁড়িয়ে থেকে। তখন ও প্রায় কিছুই করে না। এদিক ওদিক ঘুরে বেড়ায় সে। মনে ইচ্ছা একটাই সাংবাদিক হবে সে। তবু মন্দিরের পান্ডাদের হাত থেকে ওর আমার পরিবারকে সামলে দেওয়া। সেই সুভাষের কথা আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায়। যে সুভাষ বেশ লাজুক ছিল। যে সুভাষ বেশ আমাদের শ্রদ্ধা আর সম্মান করতো। যে সুভাষ ফাল্গুনীদার বেশ কাজের লোক ছিল।
গ্রামের সহজ সরল ছেলে সুভাষ। সিএন চ্যানেলের পর্দায় ওকে দেখে বেশ ভালই লাগে। ওর চ্যানেলের নানা লিংক পাঠিয়ে দেয় আমার মোবাইলে। একদিন হঠাৎ করেই ফোনে যোগাযোগ হলো ওর সাথে দাদা কেমন আছো তুমি। আমি বললাম ভালই। দাদা এদিকে এলে বলো তুমি। অনেকদিন আসনি তুমি এইদিকে। সত্যিই কতজন যে ডাকে আমায়। যেতে বলে তাদের জায়গায়। কিন্তু যাওয়া হয় না আমার। আজ সেই সুভাষের কথা, তারকেশ্বর মন্দিরের কথা, সেই স্বপন সামন্তর কথা, সেই আশীষ রানার কথা, সেই পুরোহিত সন্দীপ চক্রবর্তীর কথা মনে পড়ে গেলো আমার। সেই পরিবেশবিদ সুভাষ দত্তের কথা, সেই দুধপুকুরের জলের দূষণ এর কথা, সেই খবর করতে গিয়ে সাংবাদিকদের পান্ডাদের হাতে মার খাওয়ার কথা সেই সব কী আর ভোলা যায়।
সেই ফাল্গুনীদার মায়ের কথা। বাবা এসেছিস, বৌমাকে নিয়ে এসেছিস খুব ভালো হয়েছে। সেই কত যে স্মৃতি জড়িয়ে আছে এই জায়গায়। সুভাষের কথা লিখতে বসে মনে পড়ে গেলো সবকিছুই। সেই তারকেশ্বর স্টেশনে নেমে দৌড়ে আরামবাগের বাস ধরা সিট পাবার জন্য। তারপর ধীরে ধীরে সব কিছুই বদলে যাওয়া। রেলপথ তৈরি হওয়া। আরামবাগ যেতে আর বাস ধরতে হয়না যাত্রীদের এখন ট্রেন থেকে নেমে দৌড়ে। ট্রেনে চেপে চলে যাওয়া যায় এখন আরামবাগ। আর কদিন বাদে কামারপুকুর হয়ে জয়রামবাটি যাবে এই ট্রেন। সত্যিই বেশ ভালই হবে তাহলে কিন্তু।
আজ সেই ফেলে আসা দিনগুলোর কথা মনে পড়ে যায় আমার। সেই তারকেশ্বর থেকে ভোটে জিতে দমকল মন্ত্রী হয়ে এলাকায় ঘুরে বেড়ানো প্রতীম চট্টোপাধ্যায় এর কথা মনে পড়ে যায় আমার। রাম চ্যাটার্জীর তারকেশ্বরে এখন উত্তম কুন্ডুর দাপাদাপি। স্বপন সামন্ত এখন অনেকটা অস্তমিত সূর্য। সত্যিই লাল মুছে শৈব তীর্থ তারকেশ্বর এখন সবুজের দখলে। মা মাটি মানুষের সরকার। সেই দুধুপুকরে এখন দূষণ হয়না। সেই তারকেশ্বর এ এখন পান্ডাদের অত্যাচার এর গল্প কাগজে আর টিভিতে দেখা যায় না একদম।
অনেকটাই বদলে গেছে যে বাবার ধাম। বদলে গেছে রাস্তাঘাট, মন্দির এর ব্যবস্থা অনেক কিছুই। মন্দির উন্নয়নে তৈরি হয়েছে ডেভেলপমেন্ট বোর্ড। যাঁরা সবকিছু সামলে রাখে যে চেপেচুপে।
সেই দণ্ডী বাবার আশীর্বাদ। সেই মন্দিরের পাশের বারান্দায় বসে দুপুর বেলায় শালপাতায় প্রসাদ খাওয়া। সব কথা যে সুভাষকে নিয়ে লিখতে বসেই হু হু করে বেরিয়ে আসছে আজ আমার স্মৃতির জানলা বেয়ে। কতদিন যাওয়া হয়নি সেই পুরোনো মন্দির এর শহরে। দেখা হয়নি সুভাষের সাথে। সেই ওর হাসি মুখ। দাদা আবার এসো দাদা বলে কথা বলা। ট্রেনে তুলে দিতে আসা ওর। সত্যিই কত অচেনা মানুষ যে চেনা হয়ে যায় এই পোড়া জীবনে তার ঠিক নেই। আর কত চেনা মানুষ অচেনা হয়ে যায় কেমন করে কে জানে। ভালো থেকো তুমি সুভাষ। তোমার চ্যানেল এর শ্রী বৃদ্ধি হোক। ভালো থেকো তুমি ভাই।
তারকেশ্বর এর সুভাষ - অভিজিৎ বসু।
আঠাশে মার্চ, দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন