'টোটো চালক আমার কাছে নয়, তুমি খবরের কারিগর আমার এক সময়ের প্রাক্তন সহকর্মী।' আসলে এই ফেসবুকের দেওয়ালে এই লেখাটা পড়ে কেমন যেন একটু আমি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লাম। বরাবর আমি এই আবেগ নিয়েই বেঁচে থাকতে ভালোবাসি সারাটা জীবন। যেটা মানুষের বেঁচে থাকার একমাত্র পুঁজি। হারতে হারতে বেঁচে থাকার চেষ্টা করা, প্রাণপণে লড়াই করে বেঁচে থাকার মজা আর সুখ আলাদা। তার অনুভূতিও আলাদা।
আর তাই আমার এই সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের অক্ষরের জালে জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছা হলো আমার ওকে। শুধু ওর এই লেখাটা পড়ে। কতজনের সাথে তো কতদিন একসাথে কাজ করলাম। কতজনের সাথে তো বছরের পর বছর একসাথে পাশে বসে কাজ করলাম, কই কেউ তো বলে না তুমি আমার একদা সহকর্মী ছিলে। একসময়ে খবরের কারিগর ছিলে তুমি। যে খবর নিয়েই সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেতুমি এদিক ওদিক না তাকিয়ে। মই ধরে ওপরে ওঠার চেষ্টা না করে দিব্যি জীবন কাটিয়ে দিলে শুধুই খবর খবর আর খবর নিয়ে।
আর তাই খুব কম দিন একসাথে কাজ করে ওর এই লেখা দেখে মনে হলো আমার ওর কথা লিখি আজ আমি। সেই কলকাতা টিভির দেবাশীষ। সেই সদা হাস্যময় একজন বহু পুরোনো দিনের মাঠে ময়দানে ঘোরা বহু পুরোনো সাংবাদিক। কখনও এন ই বাংলাতে , আবার কোন সময় কখনও কলকাতা টিভি তে। আবার কখনও সেই তৃণমূল ভবনে, আবার তারপর নির্বাচন কমিশনের দফতরে চলে এসেছেন তিনি।
হ্যাঁ, সারাদিন বেশীরভাগ সময় এদিক ওদিক ছুটে বেড়ানো তাঁর। সেই হাসি মুখে কাজ করে যাওয়া মুখ বুজে। বুকের মাঝে যন্ত্রণা হয় তাঁর পুরোনো সহকর্মীর কথা মনে করে এটাই যে বেশ আমায় মনে করিয়ে দেয় কত কিছুই এই গভীর গোপন ভালোবাসার কথা আর সেই কলকাতা টিভির কথা। বেশ ভালই লাগে স্মৃতির উত্তাপ গায়ে মাখতে। আর প্রেস ক্লাবে ভোটের সময় হাসিমুখে সামনে দাঁড়িয়ে পড়া হাতজোড় করে দাদা দেখবেন একটু বলে। সেই কলকাতা টিভির দেবাশীষ সেনগুপ্ত। সেই এক স্টাইল এর রিপোর্টার।
বয়স হলেও আজ মনে হয় এই জীবনের দীর্ঘ পথে কমজনের সাথে তো দেখা হলো না আমার। এই সংবাদ মাধ্যমে কাজ করে কমজনের সংস্পর্শে তো আসতে পারলাম না আমি। তবু কেউ তো আমায় বলেনি এইভাবে। খবরের কারিগর নামে ডাকে নি আর কেউই। উল্টে ব্যঙ্গ করেছে আমায় হয়তো কেউ কেউ টোটো চালক বলে। সত্যিই এই সবকে পাত্তা না দিয়ে অল্প দিন কাজ করলেও সেই পোদ্দার কোর্টের অফিসে এক সাথে অফিস করা। সেই রাত হলেও একসাথে খবর লিখে ক্লান্ত হয়ে বাড়ী ফেরা। সেই বিখ্যাত অ্যাসাইনমেন্টের টেবিল এ বসে থাকা আর টাইপ করা পোদ্দার কোর্টে।
আর সেটা দেখে আমার কেমন ভালো লাগে বেশ। যে এই অনেকে ভুলে গেলেও দু একজন চিনতে পেরে কথা বলে সেই দলেই আছেন তাঁরা। হাসিমুখে দৌড়ে বেড়িয়ে খবর করে। ওর জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে মনে হলো আমার এইসব নানা কথা যার মধ্যে এই 'খবরের কারিগর' শব্দটি বেশ খাসা লেগেছে আমার। সেই কলকাতা টিভির অফিসে কাজ করার সময় আমার সরকারী প্রেস কার্ড এনে দেওয়া নবান্ন থেকে রিনিউ হবার পর।
আজ সেইসব কথা মনে পড়ে যাচ্ছে বারবার আমার। আজ আর খবর সংগ্রহ করে বেঁচে নেই আমি। খবরের বিষয়সমূহ থেকে, সেই খবরের দেশ আর দুনিয়া থেকে অনেক দূরে সরে চলে এসেছি আমি।। তবুও একজন এর শুধু মাত্র একটি কথা দেখে কেমন আবিল হলাম আমি এই বুড়ো বয়সেও। এই গভীর রাতেও কেমন যেনো থমকে দাঁড়িয়ে পড়লাম আমি। যিনি আমার লেখা পড়েন। যিনি আমায় সহকর্মী হিসেবে ভাবেন। যিনি আমায় মনে করিয়ে দেন খবরের কারিগর হিসেবে। সত্যিই অসাধারণ বিচিত্র এই জীবন আর জীবনের কারিগর। দেবাশীষ দা ভালো থেকো তুমি। শুভ জন্মদিন।
কলকাতা টিভির দেবাশীষ সেনগুপ্ত - অভিজিৎ বসু।
তেরো মার্চ দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন