দাদার জন্মদিনে ভাইয়ের শুভেচ্ছা। দাদা আর ভাই এর এই জুটি দেখে আমার বেশ ভালোই লাগে। যেখানে চারিদিক জুড়েই শুধু জুটি ভাঙার চেষ্টা, জুটি ভাঙার জন্য ছটফট করা, সেখানে কেমন মিলেমিশে একাকার হয়ে একসাথে লড়াই করে বেঁচে থাকার চেষ্টা করা দাদা আর ভাইয়ের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে, হাতে হাত ধরে হাসি মুখে দুজনে মিলে। সেই ছোটো থেকেই তো দাদা আর ভাইয়ের এই অমলিন মিস্টি মধুর জুটি।
সেই কবে থেকেই একসাথে বড়ো হওয়া ওদের দুজনের। একসাথে দুজনের স্কুলে যাওয়া। একসাথে কাজ করা। দাদার হাত ধরে ঘুরতে যাওয়া। দাদার সাথে একসাথে কাজ করা। আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় সেই দাদা আর ভাইয়ের গল্প। সেই পার্থ আর দেবাশীষ এর গল্প। সেই শ্রীরামপুরের মান্না পাড়ায় বাড়ী ওদের। সেই শ্রীরামপুরে নন্দী মাঠে নতুন ইটিভির রিপোর্টার এর চাকরী পেয়ে ওদের সাথে দেখা হওয়া আমার। সালটা ২০০০ সাল হবে মনে হয়। নতুন চ্যানেল নতুন চাকরি নতুন এলাকায় সেলুনে গিয়ে চুল কেটে হিরো হবার চেষ্টা করা মাত্র আর কি।
হ্যাঁ, সেই শ্রীরামপুরে সেলুনের দোকানেই প্রথম দেখলাম আমি ওদের দুজনকে। বেশ হাসিখুশি সুন্দর একটা দাদা ভাইয়ের মিলে মিশে থাকা সংসারের তখনও শুরু হয়নি। মাকে নিয়ে মাকে জড়িয়ে আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকা দুই ভাইয়ের। সেই ছুরি আর কাঁচি চালিয়ে কষ্ট করে ধীরে ধীরে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করা ওদের। কঠিন লড়াই করে বেঁচে থাকার চেষ্টা করা আর কি। আর ধীরে ধীরে দুই ভাইয়ের এগিয়ে চলা।
দাদার জন্মদিনে ভাইয়ের শুভেচ্ছা জানাই। এই দাদার জন্য ভাইয়ের প্রার্থনা মা তারার কাছে। সত্যি বেশ ভালো লাগে এটা দেখে। যেখানে এক বাড়ীর ভিটেতে দুজন ভাই হাতে হাত ধরে মিলে মিশে বেঁচে থাকে। একজন অন্য জনকে আগলে রাখে। দাদা ভাইকে বুকে জড়িয়ে ধরে রাখে। ভাই দাদাকে জড়িয়ে ধরে বেঁচে থাকে। এটা দেখে অবাক হই আমি। আবার বেশ ভালো লাগে। কত ভাঙা সংসারের মাঝে জুড়ে থাকার এই ছবি দেখে। দাদা-ভাই এর এই হাসিমুখে জুড়ে থাকা।
সত্যিই সেই চুল কাটতে গিয়ে নিত্য নতুন স্টাইল পরিবর্তন করে হিরো হবার চেষ্টা করা। সেই ২৪ ঘন্টার চাকরি ছেড়ে দিয়ে টোটো চালক হয়ে যাবার পর মাঝে মাঝেই ওদের কাছে ওদের দোকানে যাওয়া সেই বোলপুর থেকে শ্রীরামপুরে এসে। সেই নিউ হেয়ার স্টাইল নিয়ে নতুন করে বাঁচবো বলে। যদিও তখন পকেটের জোর যে আমার কম সেটা ওরাও বুঝে গেছে সেই সময় আমায় দেখেই ততোদিনে।
সেই একদিন বোধহয় আমার পক্স এর পরে ওদের দোকানে চুল দাড়ি কাটতে গিয়ে ফেরৎ আসা। কাটবে না বলে দেওয়া দাদার। একটু মন খারাপ করে চলে আসা দোকান থেকে। সেই গরমের সময় তরুণদার সেই দোকানে চুল কাটতে যাওয়া, সেই এস ডি পি ও থাকার সময় শ্রীরামপুরে শঙ্খশুভ্র বাবুর জিজ্ঞাসা করা কে এমন চুলের ছাঁট দিলো আপনার। আজ সেই দাদার জন্মদিনে ভাইয়ের শুভেচ্ছা দেখে কত কিছুই না মনে পড়ে গেলো আমার আজ এই বুড়ো বয়সে।
শুধু কিছু স্মৃতি, কিছু পুরোনো দিনের গল্প, সেই অঙ্কিত এর ফ্ল্যাট বিক্রি করব বলেও না করা। এমন সব হাজার কথা মনে পড়ে গেলো আজ আমার এই গভীর রাতে। শুধু একটা কথাই মনে মনে ভাবলাম বলি ওদের দুজনকে, এই চারিদিকে জুটি ভাঙার যুগে যেনো এই ভাবে জুটি গড়ে থাকতে পারো তোমরা। আর সেটাই বোধহয় এই ভেঙে যাওয়া সংসারে, ভেঙে যাওয়া জীবনে উজ্জ্বল ছবি হয়েই বেঁচে থাকবে আমাদের কাছে। হ্যাপি বার্থডে লাল্টু। ভালো থেকো তুমি।
দাদা ভাই এর জুটি - অভিজিৎ বসু।
নয় ফেব্রুয়ারী, দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন