দোল পূর্ণিমার দিন শেখ শাহজাহান এর জন্মদিন। শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর এই প্রেমের দিনে শেখ শাহজাহান এর আবির্ভাব দিবস। বেশ ভালো ব্যাপার কিন্তু এটা। সত্যিই মোবাইল ঘাঁটতে ঘাঁটতে হঠাৎ করেই রাতে সেটা জানতে পারলাম আমি। একটু অবাক হলাম আমি সেটা জেনে। সেই শ্রীরামপুরে তারাপুকুর এলাকার কাউন্সিলর উত্তম রায় এর পরিচিত ড্রাইভার ও। একদিন আমার খুব ড্রাইভার দরকার ওকে পেলাম আমি উত্তম রায়কে ধরেই। সেই আজ থেকে পাঁচ বা ছয় বছর আগের কথা হবে সেদিন।
সেই ওর সাথে আমার আলাপ এর শুরু। তারপর তো ওই আমার গাড়ীর একমাত্র ভরসা। ওকে ছাড়া আমি অচল, আর আমার গাড়িও অচল। দিনে রাতে যেখানে যেতে হবে ওই একমাত্র আমার ভরসা। কলকাতার পঁচিশে ডিসেম্বরে পার্ক স্ট্রীট যাওয়া হোক আর সেই রাত নটায় শ্রীরামপুর থেকে বেরিয়ে রাত বারোটায় বোলপুর পৌঁছে যাওয়া হোক। মেয়ের ভর্তি, বোলপুরে বাড়ী ভাড়া নেওয়া, প্রতি সপ্তাহে গাড়ি নিয়ে বোলপুর চলে আসা শ্রীরামপুর থেকে। আবার সেই আমার মায়ের কাজে সবার প্রথম আমার রিষড়ার বাড়ীতে চলে যাওয়া দাদা এসেছি বলে।
সত্যিই এমন কিছু কিছু মানুষ থাকেন যাঁরা এইভাবেই কেমন জীবনের সাথে জড়িয়ে যায় হাসিমুখে। কোনোও হিসেব নিকেশ না করেই। কোনোও বাছ বিচার না করেই। জাতপাতের হিসেব না করেই। আমি হিন্দু আর ও মুসলমান না মনে করেই। আমি আর ও কত যে পরিকল্পনা করেছি দুজনে মিলে মিশে একসাথে। সব আকাশকুসুম কল্পনা আর উদ্ভট পরিকল্পনা। আমি নেতা হলে ভোটে দাঁড়িয়ে সেখানে ও হবে আমার ড্রাইভার। সেই রাতের অন্ধকারে ওর গাড়ির স্টিয়ারিং হাতে ছুটে চলা অন্ধকারের বুক চিরে। আমাদের সবাইকে নিশ্চিন্তে নিরাপদে ঘুরিয়ে বাড়ী ফিরিয়ে আনা। শেখ শাহজাহান এর হাতে আমরা সবাই নিরাপদে নির্ভয়ে ঘুরে বেড়িয়েছি সব সময়।
আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায় সেই আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় সেই শেখ শাহজাহান এর কথা। দেখতে সুন্দর, মুখে হাসি লেগে আছে ওর সবসময়। সাধারণত মাথা গরম করতে দেখিনি আমি কোনসময় ওকে। গাড়ী নিয়ে কাশ্মীর থেকে প্রয়াগ বা পুরী, দীঘা তো আছেই সেটা তো যায় ও যখন তখনই। আর সেই গাড়ী নিয়েই ওর সাথে আমার আলাপ শুরু। কিন্তু সেই গাড়ী ছেড়ে বাড়ীর কাছের লোক হয়ে গেলো ও ধীরে ধীরে। সেই মা বাবার বোলপুর আসা প্রথম। ভুল ট্রেন করে তারকেশ্বর লাইন ধরে দিয়ারা স্টেশন চলে যাওয়া। চন্দননগর না গিয়ে। আর সেই শ্রীরামপুর থেকে গ্যারাজ থেকে গাড়ী বের করে ওর সময় মতো ব্যান্ডেল স্টেশন পৌঁছে দেওয়ার কথা আমার বাবা মাকে সেটা কোনোদিন ভুলতে পারব না আমি।
সেই দুর্গাপুজোয় উত্তমদার পূজো দেখতে গেলেই লাইন না দিয়ে আলাদা করে পূজো দেখিয়ে দেওয়া আমার মেয়েকে সেই ছোটবেলা থেকেই এটা ওর পাওনা। একটা আলাদা অনুভূতি মনে হয় আমার সেটা। যেখানে রাজনীতির আঙিনায় এত হৈ চৈ আর হুল্লোড় চলছে গোটা দেশ জুড়ে আর গোটা রাজ্য জুড়ে। সেখানে দিব্যি আমি আর শাহজাহান, আমার পরিবার কেমন নিশ্চিন্তে ঘুরে বেড়িয়েছি অনেক জায়গায় যেটা নিয়ে কিছু মনে হয়নি আমার। আজ এই গভীর রাতে এমন টুকরো টুকরো নানা কোলাজ আমায় ঘিরে ধরেছে যেনো। আমি ওর জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে এইসব কথা মনে পড়ে গেলো। ভালো থেকো তুমি দাদা। সুস্থ থাকো তুমি। হ্যাপি বার্থডে।
হ্যাপি বার্থডে দাদা - অভিজিৎ বসু।
চৌদ্দ মার্চ, দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন