বহুদিন একসাথে রাতে অফিস করে এস টুয়েলভ এর বাসে করে আর আমাদের ফেরা হয়নি সেই সেক্টর ফাইভ থেকে। সেই ওর খবর পড়ার সময় হয়ে গেছে বলে এক দৌড়ে পোদ্দার কোর্টের অফিস বা মিডিয়া সিটির সেই ঝাঁ চকচকে অফিসের স্টুডিওতে প্রবেশ করে খবর পড়া ওর। আর বেরিয়ে এসে বলা, এই রে আর একটু হলেই দেরী হয়ে যেতো স্টুডিওতে প্রবেশ করতে কি যে হতো তাহলে কে জানে। সেই ওর স্টুডিও, অ্যাকশন, লাইট, শুনে উজ্জ্বল আলোয় খবর পড়া আর হাসি মুখে খবরের দুনিয়ায় ভেসে থাকা সেই চেনা হাসি মুখ নিয়ে। আর পূজো এলেই টিভির পর্দায় সব সেজে গুজে বসে পড়া। রাস্তায় নেমে পূজো মণ্ডপে ঘুরে ঘুরে লাইভ করা সেই চেনা পরিচিত মেয়েটির সেই বিখ্যাত অ্যাঙ্কর এর।
ধীরে ধীরে সেই স্টুডিও, অ্যাকশন আর লাইট এর জীবন থেকে কেমন দূরে সরে গেলো সে একটু একটু করে। সেই চেনা অফিস ছেড়ে, চেনা পরিবেশ ছেড়ে, চেনা দুনিয়া ছেড়ে, একদম অন্য কাজের জগতে প্রবেশ করলো সে। হাতে আর সেই ২৪ ঘণ্টা ছুটে বেড়ানো দৌড়ে বেড়ানো চেনা বুম নেই আর তার কাছে। তার বদলে গেছে ঘর। বদলে গেছে কাজের জগৎ। বদলে গেছে আশপাশের মানুষজন। শুধু সে একা একাই নিজের চেনা জগৎ ছেড়ে অন্য কাজের জগতে বিচরণ করছে সে হাসিমুখে।
আজ সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় সেই ২৪ ঘণ্টার খবর পড়া অ্যাঙ্কর পূজার কথা। সেই পূজা বসু। সেই সদা হাস্যময় পূজা। সেই ওর কথা আজ ভোরবেলায় মনে পড়ে গেলো আমার হঠাৎ করেই কেনো কে জানে। সেই চেনা পোদ্দার কোর্টের সোনার সংসার। সেই গুরু গম্ভীর পরিবেশ। সেই সব নানা অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ বিখ্যাত মানুষজন। যাঁদের কাছে কাজ শিখে নিজেকে প্রস্তুত করে ফেলা একটু একটু করে। আর এর মাঝেই মিলে মিশে একসাথে একাকার হয়ে থাকা বেশ কিছু হাসিঠাট্টার মিষ্টি মধুর জীবন। যে জীবনের অনুষঙ্গে আর মায়ায় বেঁচে থাকার রসদ জুটে যায়। যে কর্মময় জীবন কেমন করে যে ভালোলাগার আর ভালোবাসার হয়ে যায় কে জানে।
বহুদিন পর হঠাৎ করেই ওর কথা মনে এলো আজ। সেই খবর পড়া ছেড়ে বিনোদন এর রিপোর্টার হয়ে যাওয়া ওর। সেই নতুন জায়গায় কাজ করা ওর একদম নতুন ফিল্ডে। সেই বউ বাজারের ঘিঞ্জি এলাকা থেকে এসে অফিস করা। সেই পূজা, কোয়েল, মিমি, সঞ্চিতার সুখের নিরিবিলির ভালোবাসার সংসার। একে অপরের সাথে মিষ্টি মধুর সম্পর্ক। একে অপরকে জড়িয়ে আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকা। একসাথে টিফিন ভাগ করে খাওয়া। একসাথে শীত গ্রীষ্ম বর্ষা কাটিয়ে দেওয়া সেই চেনা পোদ্দার কোর্টের অফিসে।
যে জায়গায় আজ অন্য চ্যানেলের অফিস বিদ্যমান। যেখানে সেই সব পুরোনো দিনের লোকজন আর নেই কেউই। ভেঙে গেছে পুরোনো সংসার। ভেঙে গেছে একান্নবর্তী পরিবার আর পরিবারের মানুষজন। সব এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে গেছে শহরের এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্তে, দূরে অনেক দূরে। শুধু কিছু উজ্জ্বল স্মৃতি আর স্মৃতির ছায়াঘেরা পথে আজও উজ্জ্বল হয়ে বেঁচে আছে পূজা, কোয়েল, মিমি, সঞ্চিতা আরও কত সব জন। বেঁচে আছে স্বর্ণযুগের সেই ভেঙে পড়া সংসার আর সেই সোনার অতীত। ভালো থেকো তুমি দিদি।
হাসি মুখের অ্যাঙ্কর পূজা - অভিজিৎ বসু।
আট এপ্রিল, দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন