সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

এন্টারটেনমেন্টের অনূসূয়া


একদম রুপোলি পর্দার জগতে বিচরণ করা। সেই ওর হাসি মুখ। সেই সবার সাথে মিলে মিশে একসাথে আনন্দে অফিস করা। আড্ডা মারা, চা খেতে যাওয়া, মুড়ি খেতে যাওয়া, গান করা, অনেক দূরের হয়েও কেমন যেন কাছের মানুষ হয়ে, কাছের বন্ধু হয়েই বেঁচে থাকা সবার সাথে মিলেমিশে এক হয়ে। হাসি মুখে ঠাট্টা তামাশা করে জীবন কাটিয়ে দেওয়া। যদিও সেই বিনোদন জগতের বাসিন্দা হলেও আমি কোনো দিন ওর সাথে কাজ করিনি এক ফিল্ডে কোথাও। কিন্তু এক অফিসে কাজ করলাম অল্প কিছুদিন মাত্র। সেই অল্প কিছুদিন এর আলাপে মনে পড়ে গেলো আজ ওর কথা আমার বহুদিন পরে। 


সেই উজ্জ্বল চোখের মিষ্টি হাসির অনুসূয়া। সেই ২৫ শে ডিসেম্বর এর রাতে বা পয়লা জানুয়ারিতে ওর লাইভ দেওয়া। সেই নানা পুজোয় ফেস্টিভ্যালে দৌড়ে ঝাঁপিয়ে কাজ করা ওর। সেই নানা খবরের মাঝে আর খবরের চাপে নিজেকে কেমন করে মানিয়ে নিয়ে চলা সবার সাথে। অফিস এর বসদের কাছের মানুষ হয়ে যাওয়া কাজের গুণে। আসলে জীবন তো এমন। মেনে নেওয়া আর মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা। এই দুটোর মেলবন্ধনে বৈচিত্র্যময় এই জীবন। যে জীবনে হাসি, কান্না, সুখ আর দুঃখের অনুভব সবটাই থাকে। যার জন্য আমি কিছুটা এটা পারিনি বলেই একটু দূরেই ছিটকে গেছি সেই মোহময় মায়ার জগৎ থেকে। 

ওর সেই বিখ্যাত ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির সুপার হিরো, সুপার স্টার দেবের সঙ্গে, জিৎ এর সঙ্গে ঘুরে বেড়ানো নানা খবরে, সেই ঋতুপর্ণা, প্রসেনজিৎ এর সঙ্গে হাসি মুখে ছবি তোলা, নানা ছবিতে একদম নিজের স্টাইলে নিজের মতো করেই কাজ করে যাওয়া ওর। সত্যিই অসাধারণ এই মিডিয়ার জীবন ওর। টিভির পর্দায় ওকে দেখে বেশ ভালই লাগে আমার। সেই দুর নক্ষত্রদের সাথে ঘুরে বেড়িয়েও কেমন দিব্যি হাসি মুখে কাজ করা। আমার নানা লেখায় ওর ভালো মন্তব্য দেখে মনে পড়ে গেলো ওর কথা। আজ আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় আমার সাদা জীবনের কালো কথায় সেই বিখ্যাত দাপুটে বিনোদন রিপোর্টার অনুসূয়ার কথা। 

আসলে বয়স বাড়ছে স্মৃতি রোমন্থন আর স্মৃতির গ্রাসে ডুবে যেতে ইচ্ছা হয় আমার বারবার। এই চৈত্রের ভোর বেলায় ঘুম ভেঙে উঠে মনে পড়ে যায় আমার নানা ফেলে আসা দিনের কথা। সেই মিডিয়া সিটির অফিস, সেই পোদ্দার কোর্টের অফিস। সেই অ্যাসাইনমেন্টের টেবিলে উপচে পড়া ভীড়। সেই দৌড়ে এসে ক্যামেরা লাগবে বলে জোরাজুরি করা। সত্যিই কিন্তু বেশ মজার ছিল সেই দিনগুলো। সেই অফিস এ জন্মদিন পালন, কেক কাটা, গানের সুরে সুর মেলানো অন্যদের সাথে। এইসব নিয়েই তো ছিল আমাদের এই মিডিয়ার মহান জীবন। যে মহান পেশা থেকে আজ আমি অনেক দূরে।

 
একদিন হঠাৎ করেই ওর টিভির পর্দা ছেড়ে বোকা বাক্সের পর্দা ছেড়ে অন্য অফিসে কাজে যোগ দেওয়া। সেই সাদা বাড়ীর সিঁড়িতে পা দেওয়া। যা দেখে আমার খুব ভালো লাগে। সত্যিই তো বেশ ভালই হলো ওর। একদম অন্য আঙ্গিকে কাজ করা। অন্য ব্র্যান্ড এর মাধ্যমে নিজেকে কাজের জগতে আরও বেশি করে প্রতিষ্ঠা করা। নিজের যোগ্যতায় আর ক্ষমতায়। আর দিনের শেষে ঘরে ফিরে ওর প্রিয় কুকুরকে নিয়ে খেলায় মেতে ওঠা বেশ ভালই কিন্তু। 

আর তাই তো আজ লিখে ফেললাম ওর কথা। ওর জীবন সংগ্রামের কথা। যার কিছুই হয়তো আমার জানা নেই। কিন্তু যা দেখেছি, যা প্রত্যক্ষ করেছি সেটাই লিপিবদ্ধ করার চেষ্টা করলাম আমি। ভুল হলে ক্ষমা করবেন আপনি দিদি। আসলে জীবন তো এমন। স্মৃতির উত্তাপ অনুভব করেই বেঁচে থাকার চেষ্টা করা এই বুড়ো বয়সে। যদিও টোটো চালক হয়ে নয়। ওটা তো আমার এমনি এমনি বলা। ভালো থেকো তুমি। এইভাবেই দৌড়ে ছুটে ঝাঁপিয়ে কাজ করে আর কাজের জগতে বিচরণ করে। কখনও দেব এর হাত ধরে, প্রসেনজিতের হাত ধরে, জিৎ এর পাশে হাসি মুখে ঘুরে। আর ঋতুপর্ণার সাথে ছবি তুলে। যে বিনোদন জগৎ আমাদের কাছে অনেক দূরের লোভনীয় সেই জগতে তুমি এই ভাবেই হাসিমুখে বিরাজ করো কাজ করো। ভালো থেকো তুমি দিদি। 

এন্টারটেনমেন্টের অনুসূয়া - অভিজিৎ বসু।
এগারো এপ্রিল, দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

আনন্দবাজারের শ্যামল দা

সেই সাদা বাড়ীর অনেক বিখ্যাত সাংবাদিকের মধ্যে একজন শুধু জেলখানার খবর লিখেই যিনি বিখ্যাত হয়ে গেলেন গোটা সাংবাদিক মহলে, বাংলা সংবাদ পত্রের জগতে। সেই জেল রিপোর্টার বলেই অভিহিত হতেন তিনি মহাকরণের বারান্দায়, অলিন্দে আর রাইটার্সের কাঠের সিঁড়িতে হাসিমুখে। যে কোনোও মন্ত্রীর ঘরে হাসিমুখে যাঁর প্রবেশ ছিল অবারিত দ্বার। যিনি প্রথম জীবনে আনন্দবাজার পত্রিকায় দক্ষিণ ২৪ পরগণার জেলার রিপোর্টার হিসেবে কাজ করেছেন। পরে জেলা থেকে সোজা কলকাতায় প্রবেশ তাঁর।  সেই একদম ফিটফাট সুন্দর, সুদর্শন,সুপুরুষ, বিয়ে না করেও দিব্যি হাসি মুখে মাকে নিয়ে জীবন কাটিয়ে দিলেন ভাইপো আর সেই বর্ধমানের বড়শুল এর একান্নবর্তী পরিবারের সদস্যদের কাছে। আর শনিবার হলেই তাঁর সবাইকে থ্যাংক ইউ বলে কলকাতার সেই বিখ্যাত মেস এর জীবন ছেড়ে নিজের গ্রামের বাড়ী চলে যাওয়া তাঁর হাসি মুখে। বলতেন সবাইকে চলো সবাই মিলে গ্রামের বাড়িতে পুকুরের মাছ ধরে খাওয়া হবে বেশ আনন্দ হবে। আমার নিজের গ্রামের বাড়ীতে গেলে কোনোও অসুবিধা হবে না একদম।  আর নিজের শরীর ফিট রাখতে এই বয়সেও কেমন করে যে দুশো কপালভাতি করতেন তিনি কে জানে। একদম সবার যখ...

জামালপুরের প্রদীপ দা

আজ আমার সাদা জীবনের কালো কথায় বর্ধমানের জামালপুরের সেই দাপুটে ঠোঁট কাটা সাংবাদিক প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় এর কথা। সেই বিখ্যাত সুভাষ তালুকদার এর কাগজ সংবাদে মাত্র এক টাকার কাগজে কাজ করা সংবাদ পত্রিকার দাপুটে সাংবাদিক সেই প্রদীপ দা। সেই মুখ্যমন্ত্রীর সভায় বাঁশের ব্যারিকেডের এপারে দূরে দাঁড়িয়েও যে খবর করা যায় সেটা বড়ো মিডিয়ার সাংবাদিকদের হাসি মুখে দেখিয়ে দিয়ে, আর তাদের খবরের ময়দানে গোল দিয়ে শুধু খবরকে ভালোবেসে ছোটো কাগজে কাজ করে চলা সর্বদা হাসি মুখের সেই আমাদের প্রদীপ চ্যাটার্জী দা।  কোথাও কোনো অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদে মুখর হয়ে যাওয়া আর এক দৌড়ে বেরিয়ে পড়া ঝোলা কাঁধে সেই খবরের খোঁজে সেই জামালপুরের প্রত্যন্ত গ্রামের সেই প্রদীপ দা। সেই বিখ্যাত পন্ডিত রবিশঙ্কর আর উদয়শঙ্কর এর আপন মাসতুত ভাই এর ছেলে সেই প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় দাদা। সেই বামদের আমলে জামালপুরের এলাকায় দাপিয়ে খবর করে ছুটে বেড়ানো সেই প্রদীপ দা। সেই তৃণমূল আমলেও একভাবেই ছুটে বেরিয়ে কাজ করা আমাদের সদা ব্যস্ত প্রদীপ দা।  সেই বাবার অসুস্থতার কারনে বড়ো সংবাদ মাধ্যমে কাজ না করেও...

আমার স্যার কাজীদা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ আমার স্যার এর কথা। যার লেখা আজ হঠাৎ চোখে পড়লো একটি কাগজে। আর স্যার এর নামটা দেখেই মনে পড়ে গেলো নানান কথা। হ্যাঁ, সেই কাজী গোলাম গাউস সিদ্দিকী। যাঁর সাথে আমার আলাপ আর দেখা হয়েছিল সেই অজিতদার ফ্রিল্যান্স ছকু খানসামা লেনের ফ্রীল্যান্স প্রেস ক্লাবের অফিসে খুব সম্ভবত। হাসিখুশি বেশ অজাতশত্রু এই মানুষটিকে দেখেই আমার মনে হয়েছিল যে রিপোর্টারদের প্রভূত ক্ষমতা থাকে বোধহয়। তাই পকেটে পেন আর সেই ফোনের ছোট্টো নোটবুক দেখেই আমার মনে হয়, যে ক্ষমতার স্বাদ পাবার জন্য সেই সদ্য গ্র্যাজুয়েশন করে আমার কচি মনে সাংবাদিক হবার বাসনা জাগে সেই সময়।  কোনো প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষক নয়, কোনো অফিসে মাছি মারা দশটা পাঁচটার লোয়ার ডিভিশন এর কেরানি নয়, মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ নয়, ল্যাবরেটরিতে টেকনিশিয়ান এর কাজ নয়, এল আই সি বা পোষ্ট অফিস এর এজেন্ট নয়, কোনো মুদি দোকানে হিসেব পত্র লেখার কাজ নয়, স্বাধীন ব্যবসা করা নয়। শুধুই সাংবাদিক হবার স্বাদ।  কাগজে সাদা কালো অক্ষরে নিজের নাম ছাপা হবে, সেই নাম দেখে বুক ফুলে যাবে, পাড়ায় প্রতিবেশীরা সহ স...

কুড়ি থালা দশ টাকা আর রসিক মুলুর জীবন

নাম মুলু হাঁসদা। বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমানার চরিচা গ্রাম পঞ্চায়েত এর চর ইচ্ছা রঘুবরপুরের বাসিন্দা মুলু। আজ মুলুর জীবন কথা। গ্রামের নামটা ভারী অদ্ভুত। চর ইচ্ছা রঘুবরপুর। যে গ্রাম অন্য পাঁচটা গ্রামের মতই।সাদামাটা এই গ্রামে দারিদ্র্য, অপুষ্টি আর কর্মহীন জীবনের জলছবি সুস্পষ্ট। আর সেই গ্রামের মহিলারা নিজেদের সংসার রক্ষা করতে গাছের পাতাকে আঁকড়ে ধরে রেখেছে। গাছের পাতা মুলুদের জীবনের জিয়ন কাঠি। যে জিয়ন কাঠিতে তারা ভোর হতেই পেটের টানে চলে যায় জঙ্গলে। খস খস শব্দ করে পায় হেঁটে তারা পাতা তোলে। গাছ থেকে টুপ টাপ করে ঝড়ে পড়া পাতাকে একটা একটা করে নিজের শাড়ির আঁচলে ভরে নেয়। তার পর সব পাতাকে বস্তায় ভরে ঘরে ফেরে।  ঠিক যেভাবে তারা পুকুরে নেমে শামুক গেঁড়ি আর গুগলি তোলে। যে ভাবে তাদের উদর পূর্তি হবে বলে। আর এই পাতাও যে তাদের পেট ভরায়। একটা একটা পাতাকে নিজের সন্তানের মতো আলগোছে ছুঁয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে চুমু খায় মুলু, বলে তোরা না থাকলে কি করতাম কে জানে। মাথার ওপর শাল সেগুনের বিশাল আকারের গাছগুলো চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকে আর তারা চুপ করে শোনে মুলুর কথা।  একে অপ...

শুভ মকর সংক্রান্তি

মকর মানেই নতুন জামা কাক ভোরে স্নান, রাত্রি জেগে মিঠে সুরে টুসুমণির গান। মকর মানেই পিঠে - পুলির গন্ধে ম - ম হাওয়া, ডুলুং পাড়ে টুসুর মেলায় দল বেঁধে যাওয়া। মকর মানেই মোরগ লড়াই পাহুড় জেতার সুখ, সন্ধ্যা - রাতে মাংস পিঠের স্বাদে ভরা মুখ। মকর মানেই হাতি - ঘোড়ার পুজো করম তলে, সান্ধ্য হাওয়ায় মন উদাসী দিমির দিমির বোলে। আসলে আজ এই মকর সংক্রান্তির দিন, টুসু মেলার দিন, টুসু গানে নিজেকে মাতিয়ে দেবার দিন। অজয় এর ধারে জয়দেব কেঁদুলির মেলায় ভীড়ের মাঝে নিজেকে হারিয়ে দেবার দিন। অজয় এর জলে ডুব দিয়ে স্নান করে পূণ্য অর্জনের দিন। আর নদীর ধারে মোরগ লড়াই এর দিন। আকাশে ঘুড়ি ওড়ানোর দিন, সুতো লাটাই হাতে আকাশ পানে তাকিয়ে থাকার দিন। কেমন যেনো রাশির একটি স্থান থেকে অন্য রাশিতে স্থান পরিবর্তনের দিন। সূর্যের দেবতাকে সকালে উঠে স্নান সেরে প্রণাম জানিয়ে শক্তি সঞ্চয় এর দিন। সূর্যের উত্তর দিকে চলে যাবার দিন। ধীরে ধীরে শীতকাল চলে যাওয়ার দিন।  এই মকর সংক্রান্তি এর ইতিহাস ও ভারতীয় ঐতিহ্যের গভীর শিকড় রয়েছে। এটি কৃষি চক্র এবং ফসল কাটার মৌসুমের সাথে জড়িত। এই মকর সংক্রান্তি চ...