রাম এর মিছিলে পা মিলিয়েছে সেই সিউড়ির কিরণ মাহারা।ওর এই ছবিটা দেখে কত কথা যে মনে পড়ে গেলো আমার। সেই কিরণ, হাসিমুখের কিরণ। সব সময় টেনশন করা কিরণ। কাজ নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকা কিরণ। ভুলে যাওয়া আর টেনশন করা কিরণ তাহলে টেনশন কাটিয়ে কিছুটা বুকে বল ফিরে পেয়েছে যে রামের জন্য পথে নামতে পেরেছে অবশেষে। প্রভু শ্রীরামচন্দ্রের নামে এই যে রাস্তায় নেমে ওর বুকের ভয় উবে যাওয়া এটা দেখে আমার বেশ ভালো লাগলো।
সেই সিউড়ির বাস স্ট্যান্ডে অফিস এর জিনিস নিতে এসে টেনশনে ঘরের মায়ের জন্য কেনা আটা, সুজি, আরও কত কী সব ব্যাগ সমেত হারিয়ে ফেলা আর ওর মাথা চাপড়ানো। আর সেটা শুনে পল্লবীর আমায় বলা দাদা গো ও যে টেনশনে টেনশনে গেলো যে। সেই কাজে গিয়ে বাসে উঠেই ওর টেনশনে গা বমি করা। কী করবে এই ভেবেই টেনশন হয়ে যাওয়া ওর সব সময়। আর ওর সেই টেনশন এক নিমেষে কাটিয়ে দিলেন প্রভু শ্রী রামচন্দ্র। সেই ওর বাড়িতে যাবো আমার কথা হয়েছিল। দেখা হয়েছিল মহম্মদ বাজারে ওর সাথে আমার কাজে গিয়ে। সেই কিরণ, অমিত, পল্লবী, সেই রাম আর লক্ষণ, সেই শান্তনু, বাপ্পা, অসীম আর শামীম এর টিম সেই সময় মহম্মদ বাজারে।
আর জলের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়া গ্রামের মেঠো রাস্তায় এইসব ছেলেমেয়েদের। দিনভর ছুটে বেড়ানো এই গ্রাম থেকে ওই গ্রামে। আর সেই ছুটে বেড়ানোর মাঝে কিরণকে দেখলাম। টেনশন করা কিরণ এর উদ্বিগ্ন মুখ। ওর মুখের হাসি উবে যাওয়া বড্ড ভালো মনের কিরণকে দেখলাম আমি। আজ ওর এই রামের মিছিলে গেরুয়া পোশাক পরে আর গলায় উত্তরীয় পরে হাসি মুখে বন্ধুদের সাথে ওকে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার। তাহলে প্রভু শ্রী রামচন্দ্র আর যাই হোক ওর টেনশন কাটিয়ে চিন্তামুক্ত করে রাস্তায় নামতে বুকে সাহস জুগিয়েছে কিছুটা এটা অনেক বড়ো ব্যাপার কিন্তু।
কিছু কিছু মানুষ এমন করেই মনে থেকে যায়। যাঁদের কথা মনে পড়ে যায় আমার। সেই ব্যাগ কাঁধে এদিক ওদিক ঘুরে বেড়ানো কাজ করতে ছুটে চলা কিরণকে মনে পড়ে যায় আমার। সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় ওর কথা লিখতে ইচ্ছা হয় আমার। শুধু টেনশন নয়, ও যে আমায় বলেছিল শীতের দুপুরে ওর বাড়ী যেতে ওর মা পিঠে করে রাখবে খাওয়াবে বলে। সত্যিই কত কম চেনা টুকরো মুখ তাঁরাও কেমন করে কত কাছের আর আপন করে নেয় কে জানে। কি করে যে কাছের মানুষ হয়ে যায় কে জানে। আসলে জীবন বোধহয় এমন। আমার যাওয়া হয়নি কিন্তু ওর এই ভালোবাসার কথা অনস্বীকার্য। সেটাই বলে ফেললাম আজ আমার ব্লগে।
গ্রামের নয় সদর শহরের ছেলে কিরণ। কাজের নিশ্চয়তা নেই কোনো যাদের। কী করে জীবন চলবে সেটা নিয়েও ভাবনা চিন্তার শেষ নেই কোনোও। তবু সেই কিরণ মাহারা আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের জন্য আজ মনে পড়ল এই ভোরবেলায়। কই বহু বছর ধরে চেনা একসাথে কাজ করা মানুষজন তো কে আর এইভাবেই মনে পড়ে না আমার আজকাল বিশেষ। কারুর কথা মনে পড়ে না আর যাদের অধিকাংশই আজ দূরে সরে চলে গেছেন এই জীবন থেকে। কিন্তু সেই টেনশন করা কিরণ কে ভুলতে পারিনি আজও আমি। ভালো থেকো তুমি কিরণ। টেনশন কম করে এইভাবেই বুকে বল নিয়ে সাহস নিয়ে এগিয়ে চলো আগামীদিনে তোমার জীবনে। ভালো থেকো তুমি ভাই।
সিউড়ির টেনশন করা কিরণ - অভিজিৎ বসু।
সাত এপ্রিল, দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন