অবসরে উজ্জ্বল হাসি মুখের ছবি। কিছু আশপাশের মানুষজন। আর তাদের সাথে পাশে বসে বেশ কয়েকটি বছর কাটিয়ে দেওয়া। একসাথে কাজ করা আর তাদেরকে বিদায় জানিয়ে দিয়ে চলে আসা হাসিমুখে। বেশ ভালই লাগে কিন্তু। একটা গোটা জীবন, ছুটে চলা আর দৌড়ে চলা জীবন। যে জীবনের গতি হঠাৎ করেই থেমে যায় একদিন। কাজের অবসর। হাসিমাখা সম্পর্কের অবসর। চেনা মুখের একসাথে কাজ করার অবসর। একসাথে ছুটে বেড়ানো, দৌড়ে বেড়ানোর অবসর। চারিদিক জুড়ে শুধু মাত্র অবসর এর বিষণ্ন কাঁটাতার এর ঘেরাটোপে বন্দী হয়ে যাওয়া। এই বহু বছর আগের সেই অবসর যাপনের এই ছবি দেখে কত কথাই না মনে পড়ে গেলো আমার আজ এই পাখি ডাকা ভোরবেলায়।
আসলে হয়তো স্মৃতি মেদুরতার ভারে আমি আক্রান্ত ঠিক গুটি বসন্তের মতই। কত চেনা চেনা টুকরো মুখ। কত চেনা মুখের সারি। একসাথে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করা। দৌড়ঝাঁপ করে খবর ধরিয়ে দেওয়া। সব কিছুরই কেমন যেনো অবসর হয়ে যাওয়া এক লহমায়। আসলে কি জানেন জীবনের এই অবসর যাপন নিয়ে আমার কেমন ভয় ভয় করে আজকাল। আমি তো সেই কবেই অবসরে চলে গেছি বহুদিন আগেই। কিছুটা স্বেচ্ছা অবসরে বলা যায় টোটো চালক হবো বলে। কিন্তু যাঁরা অবসরে না বলেন সেই সদ্য ৬৮ বছরে অবসর নেওয়া এক বাংলার বিখ্যাত জনপ্রিয় কাগজের সাংবাদিক যিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। তিনিও আবার অবসর এরপর সরকার এর অস্থায়ী কাজে যোগ দিয়েছেন। কিছুতেই অবসরে যেতে নারাজ তিনি এই বয়সেও কিছুতেও।
বাদ দিন যাই হোক সেই সূচিক্কনদার অবসর এর ছবি দেখে আমার এই সব নানা কথা মনে পড়ে গেলো। সেই পোদ্দার কোর্টের ভরা অফিস। সুখের নিরিবিলির আমাদের বড়ো দাদার ভরা সংসার। আর দাদার সংসারে নানা ধরনের ভাইদের ( বড়ো, মেজো, সেজো, ছোটো, ন ভাই, খুড়তুতো, মাসতুতো) সুখের আবদার দাদার কাছে। নানা জনের নানা আবদার মিটিয়ে দাদাও কেমন খুশি খুশি ভাব বেশ। আসলে দাদা আর ভাইয়ের সম্পর্ক বলে কথা। যে সম্পর্ক বড়ই অমলিন। এতদিন পরেও। ঠিক যেনো রাম আর লক্ষণ এর মতোই।
একটা মানুষের অবসর গ্রহণ এর ছবি দেখে কত কিছুই যে মনে পড়ে যায় আমার। সেই চেনা লাল সাদা অফিস। সেই চেনা টুকরো মুখের সারি। সেই দাদার পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ভীড় করে সব চেনা নানা মানুষজন। সেই অবসরে চলে যাওয়া মানুষটাকে ঘিরে ধরে। আর তারপর ধীরে ধীরে সেই অবসরে চলে যাওয়া মানুষটা একটু একটু করে হারিয়ে যাওয়া আমাদের স্মৃতি থেকে, পাশ থেকে, আমাদের কাছ থেকে একদম একা হয়েই বেঁচে থাকা তাঁর এই ধূলিধুসর পৃথিবীতে।
সত্যিই অসাধারণ এই জীবন আর জীবনের অবসর গ্রহণ এর পালা। যে পালা জীবনের রঙ্গমঞ্চে বেশ সুন্দর হয়েই প্রতিভাত হয় আমাদের কাছে। আর তাই এই অবসর গ্রহণ এর ছবি দেখে মনটা বিধুর হয়ে যায়। চেনা মুখের সারিকে ফেলে রেখে একা বেঁচে থাকার কথা ভাবলেই মনটা কেমন যেনো মুচড়ে ওঠে। সেই একসাথে জুড়ে জুড়ে হৈ চৈ হুল্লোড় করে বেঁচে থাকার কর্মময় জীবন কাটিয়ে অবসরে চলে যাওয়া। যে অবসরের পর আর কেউ কোনোও খবর নেয়না কারুর তবু তো অবসর আসে এই দৌড়ে বেড়ানো ছুটে বেড়ানো জীবনে। যাকে নিয়েই বেঁচে থাকতে হয় একা একদম একা। ভালো থাকবেন আপনি দাদা। অবসরে ভালো থাকবেন আপনি দাদা।
অবসর জীবন, উজ্জ্বল ছবি ও আমরা - অভিজিৎ বসু
সাত এপ্রিল, দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন