সোনাঝরা রূপে শান্তিনিকেতনের অমলতাস। একদম সত্যিই অসাধারণ এই রূপ। এই কাঠফাটা প্রবল হাঁসফাঁস করা গরম আবহাওয়ায় এক চোখ জুড়ানো এই হলুদ বসন্তের ছোঁয়া। ঠিক যেনো, সেই চক্ষে লাগে গানের মাধুরী কানে বাজে আমার।
বসন্ত কাল নয়, গ্রীষ্মের খরতাপে ফুটিফাটা মাঠ ঘাট, খোয়াই এর প্রান্তর, সোনাঝুড়ির জঙ্গলে তখন পাখির ডাকে ভোর হয় ধীরে ধীরে। শুকনো কোপাই এর গা ঘেঁষে চলে যায় গরুর দল আনমনে। নদীর ধারে অপেক্ষায় থাকে মাটি আর জমি দখলের হাঙ্গরের দল। ঠিক ওত পেতে থাকে ওরা।
সেই ওরা কাজ করে মাঠে ঘাটে নগরে প্রান্তরের মাঝে। আর এইসবের মাঝেই কেমন খলবলিয়ে হেসে ওঠে একে ওপরের গায়ে পড়ে সে হলো কবির প্রিয় হলুদ অমলতাস। কবির প্রিয় অমলতাস। যে অমলতাস এর হাসি দেখে মন ভরে যায় আমার। সারারাত এর ছটফট গরমে কাহিল রাত কেটে ভোর হয়। এই পূর্বপল্লীর রাস্তায় তখন রাত কেটে ভোর হয় এলোমেলো পাখির ডাকে।
যে ভোর বেলায় দুর থেকে ওই হলুদ ফুলের ছোঁয়া পেয়ে কাছে যেতে ইচ্ছা হয় আমার। আসলে এই ফাঁকা রাস্তা, ইঁট পাটকেল দিয়ে ঘেরা ঘিঞ্জি শহর ছেড়ে একটু হলুদ অমলতাসের গন্ধ আছে কি ঠিক জানি না আমি তবু কেমন যেনো বুক ভরে ওর সুবাস নিতে মন চায় আমার। যে সুবাসে মন প্রাণ ভালো হয়ে যায়। যদিও হোকনা সে বাঁদরলাঠি নামের ক্ষতি কী তাতে।
পথের দু পাশে পড়ে থাকা সেই হলুদ ফুলের ঝাঁঝালো গন্ধ গায়ে মেখে ভোরবেলায় আমার ঘুরে বেড়ানো। গাছের ফাঁকে আড়ালে আবডালে লুকিয়ে বসে বুলবুলি পাখির গোপন অভিসার। দূরে আকাশপানে চক্কর দিচ্ছে চিল, কাক আরও কত কি। সব কিছুর মাঝেই প্রবল গরমে অসুস্থ এই বাংলায় কেমন যেনো হলুদ ফুলের ছোঁয়া। যার জন্য মনটা কেমন ভালো হয়ে গেলো। বিষন্ন বিধুর মনটা কেমন যেনো ভালো হলো এই ভোরের আলো গায়ে মেখে।
আসলে গাছ, ফুল,ফাঁকা নির্জন ভীড় হীন রাস্তা, লোকজন কম থাকা এলাকা, প্রতিযোগিতাহীন জগৎ, মিডিয়ার সেরা সেরা বিখ্যাত সব সাংবাদিকদের জানার কোনো শেষ নেই এর দুর্নিবার প্রতিযোগিতা এইসব থেকে অনেক দূরে শুধুই কবির প্রিয় অমলতাসের ছোঁয়া মেখে ঘুরে বেড়ানো। যে ছোঁয়ায় মন প্রাণ শরীর জুড়িয়ে যায় আমার। আর তাই বোধহয় এই আমার সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় সেই হলুদ উর্বশী অমলতাসের কথাই লিখে ফেললাম আমি।
জানি আমি গ্রীষ্মে প্রেম ভালোবাসা অভিসার জাগে না। বসন্তের মৃদু বাতাস নেই। তবু কেনো জানিনা এই প্রবল প্রতাপ গ্রীষ্মে কেমন করে যে হলুদ ফুলের প্রেমে পড়লাম আমি কে জানে। ভালো থেকো তুমি আমার প্রিয় হলুদ মঞ্জরী। আমার কবির প্রিয় অমলতাস। আমার সেই ডাকনামের বাঁদরলাঠি। ভালো থেকো তুমি।
অমলতাসের হলুদ ছোঁয়ায় - অভিজিৎ বসু।
পনেরো মে, দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন