সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আমলকী গাছের বন্ধুত্ব ও দীপেন্দ্র

এই আমলকী গাছের বন্ধুত্ব আমাদের দুজনের কী ভাবে শুরু হয়েছিল সেটা আজ আর ঠিক মনে নেই আমার। পোস্টমর্টেম করলে ঠিক তার সঠিক রিপোর্ট কী ছিল সেটা আজ আর মনে পড়ে না আমার এই গভীর রাতে। কিন্তু এটা মনে পড়ে যে যাকে আমি একদিন সেই ২৪ ঘণ্টার চাকরি ছেড়ে দিয়ে ফোনের ওপর প্রান্তে জোর গলায় চিৎকার করে বলে দিলাম কোনোও কথা বলার সুযোগ না দিয়েই, দাদা টোটো চালিয়ে ঘুরে বেড়াবো আর আমি অফিস যাবো না বলে দিলাম আমি তোমায়। এই বলেই কোনোও নোটিস না দিয়ে কারুর সই করা রিলিজ লেটার লাগবে না বলে ফোন কেটে দিলাম হঠাৎ করেই। সেই মানুষটার সাথেই আজ আমার সব থেকে বেশি করে যোগাযোগ আর আদান প্রদান আর বন্ধুত্ব তৈরি হলো। একে অপরের সুখে দুঃখে, ব্যথিত চিত্তে আর আনন্দের কথা বলতে গিয়ে তাঁর কাছেই ফোনের নম্বর ডায়াল করে ফেলি আমি অনায়াসে দিনে,রাতে, দুপুরে, ভর সন্ধ্যায় যে কোনোও সময় কিছু না মনে করেই। 


সেই রতনপল্লীর ভাড়া বাড়ী, সেই জানলার ধার, সেই সেই বিখ্যাত আমলকী গাছের পাতায় তখন বিকেলের পড়ন্ত রোদের ছায়া, আর সেই বসন্ত বৌরির আনা আর গোনা, এদিক ওদিক ঘাড় ঘুরিয়ে উঁকি মারা চোখ পিট পিট করে দেখা। আমি চুপটি করে ওকে দেখে মনে মনে ভাবি সত্যিই অসাধারণ এই আমলকী গাছের সাথে এই পাখির অমলিন বন্ধুত্ব। যে বন্ধুত্ব কোনোও লেনা আর দেনার নয়। যে বন্ধুত্ব কোনোও স্বার্থ আর সিদ্ধির ঘেরাটোপে বন্দী নয়। যে বন্ধুত্ব কেমন মায়াময়, ছায়াময় শুধুই অনুভবের আর উপভোগের। আসলে সেই দিনগুলোর কথা মনে পড়ে গেলেই আমি কেমন আবেগে আপ্লুত হয়ে ভেসে যাই এই মাঝরাতেও। আর আজ তাই সেই আমলকী গাছের বন্ধুত্ব কে মনে করেই সেই হঠাৎ করেই সেক্টর ফাইভের ফাঁকা রাস্তায় যাকে দেখে মাথা নিচু করে পাশ দিয়ে চলে যেতাম একসময় আমি কিছুটা দ্বিধা আর সঙ্কোচ নিয়ে। সেই কম দিনের আলাপের সেই বন্ধুর জন্মদিনে আমার ফুলেল শুভেচ্ছা আর এই বন্ধুত্ব অটুট থাকার করুন আর্তি আমার।

 আসলে এই আমার সাদা জীবনের কালো কথায় আমার আঁকিবুঁকি ব্লগের পাতায় নানা জনের কথা নানা মানুষের কথা লিখে যাই আমি। কেউ বলেন কি হবে কেউ বলেন নেই কাজ তো খই ভাজ। তবু আজ সেই বেশিদিন নয় খুব কম দিনের বন্ধুত্ব টিকে থাকার স্মৃতিকে আঁকড়ে ধরে এই লিখে যাওয়া। জীবনের বন্ধুর পথে এগিয়ে চলা নানা চড়াই আর উৎরাই পেরিয়ে আমাদের দুজনের। আর হাত বাড়িয়ে তার কাছেই সাহায্য চাওয়া নিশ্চিন্তে নির্দ্বিধায় দাদা আমায় সাহায্যে করো টাকা দিয়ে নয় শুধু পাশে থাকার চেষ্টা করে। 

সেই এক সময়ের সেই স্বর্ণযুগের সেই বাংলা মিডিয়ার ২৪ ঘণ্টার অঞ্জন বন্দোপাধ্যায় এর ডান হাত দীপেন্দ্রর আজ জন্মদিন। সেই দীপেন্দ্র গোস্বামী। সেই শিল্পাঞ্চল দুর্গাপুরের দীপেন্দ্র। সেই সিপিএমের প্রবল প্রতাপ যুক্ত নেতা প্রয়াত অভীক দত্তর স্নেহের দীপেন্দ্র। সেই দোর্দণ্ড প্রতাপ বাম আমলের ডাকাবুকো কলেজে পড়া এক ছাত্র নেতা দীপেন্দ্র। সেই হঠাৎ করেই এক সিপিএমের সাংবাদিক সম্মেলনে বেফাঁস প্রশ্ন করে দলকে বেকায়দায় ফেলে দিয়ে ফেলায় আলিমুদ্দিনে ঢোকা নিষেধ হয়ে যাওয়া সেই আকাশ বাংলার দীপেন্দ্র। আরও কত যে কথা মনে পড়ে যায় আমার। 

সেই চেনা মিডিয়ার পিসিআর, নিউজ রুম, স্টুডিও, অ্যাকশন, লাইট, বুম, নেতা, মন্ত্রী, লালবাতির ঝলকানির ঘেরাটোপে আর ক্ষমতার শিখরে বসেও নির্মোহভাবে জীবনকে উপভোগ করা, সেই পোদ্দার কোর্টের অফিসে দাপিয়ে কাজ করা যুবক দীপেন্দ্র। আর হাজার হাজার মানুষের ভীড়ে একদম একা হয়ে বেঁচে থাকা সুখ আর দুঃখের নানা অনুভূতি নিয়ে বেঁচে থাকা এক একা হয়ে যাওয়া মানুষ দীপেন্দ্র। যাঁর ক্ষমতার অধিকারী হয়ে বেঁচে থাকার সময় কত ভীড় তার আশপাশে আর ক্ষমতাহীন হয়ে যাবার পর একদম একা একাই বেঁচে থাকা তাঁর শিরদাঁড়া সোজা করে মাথা উঁচু করে। দৃষ্টি সামনে রেখে কিছুটা উদ্ধত ভঙ্গিতে আর নাকউঁচু মনোভাব বজায় রেখেই নিজের ঘেরাটোপে। 

আজ আমার সেই আমলকী গাছের গন্ধ মাখা,হলুদ ছোপ ছোপ দাগ গায়ে মেখে উড়ে বেড়ানো এক বন্ধুত্বের মেঠো সম্পর্ক গড়ে ওঠা এক বন্ধুর জন্মদিনে আমার টোটো চালকের ছোট্ট শুভেচ্ছা। যে শুভেচ্ছায় নেই কোনোও আওয়াজ, নেই কোনোও ঢক্কানিনাদ, নেই কোনোও হিসেব আর নিকেশের অঙ্ক কষে সম্পর্ক স্থাপন করা বা ধীর পায়ে এগিয়ে চলা। হয়তো অনেকেই এই লেখা পড়ে নানা কথাই বলবেন আমায়। শুধু এটা স্পষ্ট আমি জানি চেনা টুকরো মুখ এর হঠাৎ করেই অচেনা হয়ে যাওয়া। আর অচেনা টুকরো মুখ এর কাছে চলে আসা গুটি গুটি পায়ে সিঁদ কেটে এই অনুভূতির অনুরণন এর মজাই আলাদা। ভালো থেকো তুমি দাদা। শুভ জন্মদিন দাদা। 

এই জীবনে জোনাকী আছে, আমলকী গাছের ছায়া সুনিবিড় বন্ধুত্ব আছে, গ্রামের উঠোনে দাঁড়িয়ে থাকা খিদে পেটে আনন্দ নিয়ে বাঁচতে জানা ছোটো ছোটো জীবন আছে। অক্লেশে ক্ষমতা পেয়ে তাকে আড়াল করে ছেড়ে দিয়ে, চলে আসা কিছু মানুষ আছে। যারা মুখোশ পড়া লোকদের থেকে দূরে সরে থাকতে ভালবাসে। সেই সব মানুষ আছে,যাদের লুকিয়ে বাঁচতে হয় না এই পঙ্কিল পৃথিবীতে। যাদের জীবনের লেজার বুক একদম শুন্য, কিন্তু তারা বেঁচে থাকে হলুদ বসন্ত বৌরির মতোই। কিছুটা হলেও নিজের কলজের জোরে আর ভালোবাসার মানুষদের উত্তাপ নিয়ে। যারা মুখোশ না পরে সত্যিই তাকে ভালোবাসে, ছায়া দেয়, সাহায্য করে। 

এই জীবনে তাহলে শুধু দুঃখ নয়। আরো অনেক কিছুই আছে যা নিয়ে বাঁচা যায় অক্লেশে। শুধু লেজার বুক আগলে আর মই বেয়ে ওপরে ওঠার তাড়া নিয়ে বাঁচতে হয় না তাদের। ভাবতে থাকি আমি অবাক বিস্ময়ে অভিভূত হয়ে ভাবি। যে রাগ হয়েছিল ধীরে ধীরে সেই রাগ, অনুরাগে মুক্তি পায়। সৃষ্টি কর্তাকে মনে মনে প্রনাম জানাই আমি। সত্যিই তিনি ঠিক করেছেন এই দু ধরনের মানুষ তৈরি করে। না হলে যে আমিও সেই লেজার বুক আর মই নিয়ে কাড়াকাড়ি করতাম। চোখে পড়ত না ঘরের পাশের আমলকী গাছের পাতা। চোখে পড়ত না হলুদ ছোপ ছোপ সেই বসন্ত বৌরির, ঘাড় ঘুরিয়ে ছোটো চোখে তাকিয়ে থাকা। দেখতে পেতাম না খিদে পেটে চেপে, হাসি মুখে খুশি মনে বেঁচে থাকা শিশুদের অমলিন বন্ধুত্বের বন্ধন কে। এগুলো নজর এড়ালে বাঁচতে সত্যিই কষ্ট হতো আমার।

চোখের সামনে এদের দেখেও যদি না দেখতে পেতাম চোখের সামনে ঝাপসা দেখতাম এদের তাহলে বোধহয় যন্ত্রণা আরও পেতাম। ভাবতে থাকি আমি, সত্যি বলতে কি এই ভাবনা ভুল না ঠিক বুঝে উঠতে পারি না আমি। জীবনের দৌড়ে পিছিয়ে যেতে যেতে ভাবি সত্যিই কি কোনো দাম আছে এই সবের। আদর্শ নিয়ে বাঁচা, শিরদাঁড়া সোজা রেখে চলা, মই নিয়ে দৌড়ে যাওয়া বন্ধুর মুখোশ পরা লোকদের থেকে দূরে থাকা। এসবের কি কোনো দাম মেলে জীবনে কে জানে।

জানলা দিয়ে চোখে পড়ে সেই একা দাঁড়িয়ে থাকা আমলকী গাছকে। তার পাতার ঝিরি ঝিরি হাওয়া অনুভব করি আমি এই বৈশাখের সন্ধ্যায়। ওরা যেনো ফিস ফিস করে আমায় বলে,তুমি বদলে যেও না। যে বিশ্বাস,যে আদর্শ নিয়ে বেঁচে আছো এত দিন ধরে, তাকে আঁকড়ে ধরে বেঁচে থাকো বাকি জীবন। দেখো ঠিক ভালো থাকবে আমাদের মতই। ভুল করেও পা পিছলে পড়ে যেও না তুমি। আমিও ওদের কথা শুনে একটু ভরসা পাই। বাকি জীবন, এই ভাবে না হয় কাটিয়ে দেব কোনো ভাবে ওদের মতোই।কি দরকার আর এই বুড়ো বয়সে এসে নিজেকে বদলে ফেলার। জানলা দিয়ে আমি একদৃষ্টিতে ওই আমলকী গাছের দিকে তাকিয়ে থাকি। আর আমি মনে মনে বলি সেই আমলকী গাছের বন্ধুত্ব আমাদের দীর্ঘস্থায়ী হোক দাদা। তোমার জন্মদিনে এটাই চাই আমি। 

আমলকী গাছের বন্ধুত্ব ও দীপেন্দ্র - অভিজিৎ বসু।
আট মে, দু হাজার পঁচিশ।
ছবি সৌজন্য ফেসবুক।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ইটিভির পিনাকপাণি ঘোষ

কিছু মানুষ কত কাছে থেকেও পাশাপাশি এক জায়গায় বাস করেও একসাথে একসময় কাজ করেও যে কত দূরে রয়ে যান নিজের হাসিমুখ নিয়ে আর সেই চেনা ছন্দ নিয়ে সত্যিই বেশ ভালো মজার ব্যাপার কিন্তু এটা জীবনের মেঠো পথে। সেই ইটিভির বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে ঘুরে ঘুরে স্ট্রীট ফুডের ছবি তোলা আর নানা খবর করে খাওয়া দাওয়ার এপিসোড করে একসময়ে বিখ্যাত সাংবাদিক হয়ে যাওয়া ইটিভি নিউজে। আর আমাদের জেলায় বসে সেইসব হাঁ করে দেখা আর কেমন মনের ভেতর অস্থিরতা তৈরি হওয়া। একেই বলে কলকাতার রাজপথের সাংবাদিক বলে কথা।  সেই যে বার রাষ্ট্রপতি এলেন জয়কৃষ্ণ লাইব্রেরী প্রাঙ্গণে সেই অনুষ্ঠানের বিশেষ কার্ড জোগাড় করে দেওয়ার অনুরোধ করা ইটিভির চাকরি করার সুবাদে। কোনো রকমে সেই কার্ড জোগাড় করে এনে দেওয়া তাঁকে আর তাঁর পরিবারের সদস্যদের জন্য। আর সেই একদিন দুপুর বেলায় খুব সম্ভবত করোনা শেষ পর্বে বালিঘাট স্টেশন থেকে অফিস যাওয়ার সময় এসি পঞ্চাশ এর বাস এর ভিতরে দেখা হওয়ায় কত গল্প করা দুজন মিলে পুরনো দিনের। আবার উত্তরপাড়ার সেই বিখ্যাত চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে হাসি মুখে দেখা হয়ে যাওয়া রাতের বেলায় কাঁঠালবা...

আমাদের সবার মৃনাল দা

সাদা জীবনের কালো কথায় আজ এক বাবা আর ছেলের লড়াই এর গভীর গোপন কাহিনী। এই সাংবাদিকতার পেশায় এসে কত লড়াই, কত অসম যুদ্ধ, করে যে কেউ সংসার টিকিয়ে রাখতে পারে হাসি মুখে কাউকে কিছুই বুঝতে না দিয়ে। এমন করে কেউ টিকে থাকার চেষ্টা করেন সেটা বোধহয় আমার জানা হয়ে উঠত না কিছুতেই। যদি না এই পেশায় আমি গা ভাসাতাম এমন করে। জীবনের এই নানা টুকরো টুকরো ছবির কোলাজ ভেসে ওঠে এই রাতের অন্ধকারে আচমকা আমার মনের মাঝে। আর আমি চমকে উঠি কেমন করে তাদের সেই কোলাজ দেখে।  এমন এক চরিত্র, বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী হয়ে কেমন আলগোছে, হাসিমুখে, নির্মোহ ভাবে, শুধু নিজের কাঁচা পাকা দাড়িতে হাত বুলিয়ে জীবনটা কাটিয়ে দিলো সে শুধুই আকাশ পানে তাকিয়ে। যে নীল আকাশের গা ঘেঁষে উড়ে যাওয়া সাদা বকের ডানায় লেগে থাকে মেঘের হালকা টুকরো। একদম যেনো সিনেমার পর্দার হিরোর মতোই। দেখে বোঝার উপায় নেই একদম। পেটে খাবার না থাকলেও মুখের হাসিটা অমলিন হয়েই বেঁচে আছে আজও এতোদিন পরেও। আর সেই বিখ্যাত সাদা পাকা নাসিরউদ্দিন স্টাইলের দাড়ি, কালো চুল, আর সব সময় ধোপদুরস্ত ফিটফাট একজন মানুষ। রাত নটা বাজলেই যাকে শ্রীরামপুরে...

শপিং মলের উদ্বোধনে সিঙ্গুর আন্দোলনের দাপুটে মন্ত্রী

নালিকুল স্টেশন বাজারে একটি শপিং মলের শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বেচারাম মান্না হাজির। একসময় যাঁর অন্দোলনের ঠেলায় পড়ে দৌড়ে একপ্রকার পালিয়ে চলে যেতে হয়েছিল সিঙ্গুর থেকে টাটা কোম্পানিকে। যে আন্দোলনের দগদগে ঘা আর সেই স্মৃতি ধীরে ধীরে আজ প্রায় মিলিয়ে যেতে বসেছে আমাদের কাছ থেকে। আজ সেই চাষার ঘরের মানুষ না হলেও সেই কৃষক আর শ্রমিকের ন্যূনতম অধিকার নিয়ে যে আন্দোলন শুরু করে সারাটা জীবন কাটিয়ে দিলেন সেই মানুষটাকেই কেমন যেন আজ শপিং মলের উদ্বোধনে দেখে বেশ ভালই লাগলো আমার।  একদম নালিকুল স্টেশনের কাছে ঝাঁ চকচকে শপিং মল। দোকানে সাজানো জিনিস পত্র। আর সেখানেই আমাদের মাননীয় মন্ত্রী বেচারাম মান্না। একদম কেমন একটু আমার অচেনা লাগলো যেন। সেই মুড়ি খেয়ে আলুর তরকারি বা শশা খেয়ে আন্দোলন শুরু করা জমি আন্দোলন এর অন্যতম পথিকৃৎ নেতা আজ এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে। তাহলে টাটা কোম্পানির বিরুদ্ধে যে জমি দখল নিয়ে আন্দোলন সেই আন্দোলন এর মধ্যে ছিল জোর করে জমি অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা। যদিও সেখানেও সেই সময়ের শাসকদলের কর্মসংস্থানের যুক্তি।তবে এই নতুন শপিং মলের উদ্বোধনে তো আর ...

ভীড়ের মাঝে একা

জীবন জুড়ে শুধুই ভীড় আর ভীড়। নানা ধরনের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় মানুষের গন্ধে, বর্ণে , স্বাদের ভীড়ে আমি একদম একা হয়ে যেতে চাই। যে ভীড় উপচে পড়া রাস্তায় শুধুই হেমন্তের ভোরে শিশিরের ফিসফিস শব্দ, পাখির কিচির মিচির আওয়াজ,ধানসিড়ি ওই নদীটির তীর ধরে ঘুঘুর আকুল মন কেমন করা ডাক, উদাসী শালিকের ঝাঁক বেঁধে উড়ে যাওয়া ওই হেমন্তের হলুদ ধানের মাঠ এর পাশ দিয়ে, হলুদ বসন্ত বৌরীর সেই আমলকীর গাছের পাতায়,আড়ালে আবডালে বসে কেমন যেন আমায় দেখে লজ্জা পাওয়া, আর তারপর চোখ নামিয়ে হঠাৎ করেই তার উড়ে চলে যাওয়া। আর মেঘের কোল ঘেঁষে সেই সাদা বকের, বুনো হাঁসের, আর সেই পানকৌড়ির জলে ভেজা ডানা মেলে উড়ে যাওয়া আকাশ জুড়ে। সত্যিই ওরাও যে ভিড়ের মাঝেই বড়ো একা। একা একাই ওদের যে এই বেঁচে থাকা। কেমন নিপাট হৈ চৈ হুল্লোড়হীন একটা জীবন নিয়ে বেশ মজা করে, আনন্দ করে। আর সেই ভোরের আলোয় আলোকিত হয়ে রাস্তার একপাশে গুটি শুটি মেরে শুয়ে থাকা ওই সাদা কালো ভুলো নামের কুকুরের। যে অন্তত এই সব মানুষদের ভীড়ে ঠাসা রাস্তায় একটু যেনো আলাদা , একটু যেনো অন্য রকমের। একটু একা একাই যেনো ওর এই আলগোছে জীবন কাটিয়...

গৌড় প্রাঙ্গণে আনন্দবাজার

গৌরপ্রাঙ্গনে শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহ্যের আনন্দের মেলা আনন্দবাজার। মহালয়ার ভোরবেলায় ঢাকের বাদ্যি আর সানাইয়ের মন কেমন করা সুরে মেতে উঠলো শান্তিনিকেতনের গৌড়প্রাঙ্গণ। প্রতি বছরের মতো এই বছরও যে হবে আনন্দমেলা আনন্দবাজার। হ্যাঁ সত্যিই যেনো আনন্দের এই হাটে বেচাকেনার পসরা নিয়ে একদিনের জন্য বসে পড়া মন প্রাণ খুলে হৈ হুল্লোড় করে। এই মেলা শুরু হয় 1915 সালের 15 এপ্রিল নববর্ষের দিনে। কিন্তু আগে এই মেলাকে একসময় বলা হতো বৌঠাকুরাণীর হাট। সেই সময় আশ্রমের মহিলারা নিজেদের হাতের তৈরি জিনিস নিয়ে মেলায় বসতেন। মেলার আয়োজন করতেন তারা। আনন্দ করে বেচাকেনা হতো। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সময় একবার গরমের ছুটির আগে এমন মেলা নাকি হয়েছিল। যার নাম ছিল আনন্দবাজার। পরে এই মেলার নামে হয়ে যায় আনন্দমেলা। সত্যিই আনন্দের এই মিলন মেলা।  প্রথমদিকে পাঠভবন ও শিক্ষাসত্রের ছেলেমেয়েদের নিয়ে এই মেলা শুরু হয়। পরে ধীরে ধীরে বিশ্বভারতীর সব বিভাগের পড়ুয়ারা এই মেলায় যোগদান করে। এই মেলার অন্যতম উদ্দেশ্য হলো ছাত্রছাত্রীদের বেচা কেনার লাভের টাকার কিছু অংশ জমা পরে বিশ্বভারতীর সেবা বিভাগে। সেখান থেকে এ...